ঢাকা ০৭:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রুহুল কবির রিজভী

প্রশাসনে খুঁজে খুঁজে ‘জামায়াত-শিবিরের’ লোক বসানো হচ্ছে

  • আপডেট সময় : ০৪:৫৯:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ১৫ বার পড়া হয়েছে

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশাসনে খুঁজে খুঁজে ‘শিবির ক্যাডার ও জামায়াতে ইসলামী মতাদর্শের লোকজনকে’ বসানো হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের এক বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে একথা বলেন তিনি।

রিজভী বলেন, ফ্যাসিবাদের দোসররা প্রশাসনে তো আছেই। এরপর যে সমস্ত ছেলেরা সেই বিশেষ ইসলামপন্থি দলটির, যারা একসময়ে ছাত্র জীবনে শিবির করেছেন, তারপরে তারা ক্যাডার সার্ভিসের সুযোগ পেয়েছেন, কিন্তু এরপরেও যদি তারা শিবিরের ক্যাডার থাকেন, তাহলে এই রাষ্ট্রপতি একটা ‘ফাংশনাল’ রাষ্ট্র হবে না? এই রাষ্ট্র কি একটি ‘আর্টিকুলেট’ রাষ্ট্র হবে না?

আর এভাবে যদি এভাবে খোঁজখবর নিয়ে, এই এই লোকগুলো জামায়াতের, এই এই লোকগুলো শিবিরের, এদেরকে ‘কিং পয়েন্টে’ আনতে হবে এবং তারা যদি ভূমিকা রাখতে চান তাহলে কখনই আপনি একটি অবাধ নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবেন না। যখনই দলীয় মতাদর্শের ক্যাডারদের আপনি বিভিন্ন জায়গায় প্রতিষ্ঠিত করবেন, তারা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে দেবে না, প্রশাসনই করতে দেবে না।

চব্বিশের অভ্যুত্থানে সরকারপতনের পর ‘বিএনপি-জামায়াত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশাসন ভাগ-বাটোয়ারা করে দখল করেছে’ বলে রোববার মন্তব্য করেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। এর জবাবে সোমবার রিজভী বলেন, “যে ইসলামপন্থি দলের কথা বললাম, তাদের লোকদের সুচারুভাবে বিভিন্ন জায়গায় বসানো হয়েছে। মাহফুজ আলম সাহেব বলেছেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের কামড়াকামড়ি’। আমি বলতে চাই, কোথায়? দেখান। একটি দলের সমর্থিতদের বসানো হচ্ছে।

ছাত্রদলের ব্যাকগ্রাউন্ড আছে, জাকির হোসেনকে তো আপনারা (সরকার) চুক্তিভিত্তিক নেননি। আবদুর রউফকে পদায়ন করে আবার সরিয়ে দিয়েছে অতিরিক্ত সচিব থেকে, তরিকুল ইসলামকে আপনারা গুরুত্বহীন জায়গায় ফেলে রেখেছেন। আমি এরকম অনেক উদাহরণ দেখাতে পারব। তাহলে মাহফুজ সাহেব যে বললেন, ‘বিএনপি ও জামায়াত কামড়াকামড়ি করেৃ’। কোথায়? একসময় ছাত্রদল করত এমন কর্মকর্তারা? নাই। আমি বলব, এখন একটি ইসলামপন্থি দলের লোকজনকে বসানো হচ্ছে খুঁজে খুঁজে। আমি দেখছি, সেই শেখ হাসিনার চিন্তাধারায় প্রতিফলন ঘটছে।

এ বিএনপি নেতা বলেন, তাহলে আমরা কী ভাবব না যে, কোনো একটা এজেন্ডা নিয়ে নীল নকশা নিয়ে এ সরকার এগুচ্ছে। সরকারের ভেতরে সরকার থেকে, যেটাকে কেউ কেউ বলেন, ‘ডিপ স্টেট’ থেকে কিছু একটা হচ্ছে। ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ করতে হলে অবশ্যই প্রশাসনে নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে।

সম্প্রতি বদলি হওয়া জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোখলেস উর রহমানকে নিয়ে রিজভী বলেন, ‘আমি তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম সাহেবকে বলতে চাই, দীর্ঘদিন ধরে জনপ্রশাসনের সচিব, আপনারা যাকে জনপ্রশাসন সচিব করেছিলেন চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মাধ্যমে, তিনি (মোখলেস উর রহমান) গোঁড়া থেকেই একজন বিএনপি বিরোধী লোক ছিলেন।

তিনি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও আমাদের জনাব তারেক রহমানের নামে একেবারে কীভাবে গুছিয়ে মিথ্যা মামলা সাজানো যায়, সেটা তিনি করেছিলেন। তাকে আপনার দীর্ঘদিন ওই পদে রেখেছিলেন। তিনি বা তারা যে দায়িত্বটি পালন করেছেন, খুঁজে খুঁজে যে ছেলেগুলো হয়ত ছাত্রজীবনে ছাত্রদল অথবা বিএনপি পরিবারের ছেলে, তাদেরকে দূরে রাখার কাজটি করেছেন। করেছিলেনও তাই। তাদেরকে সব গুরুত্বহীন জায়গায় ফেলে রাখা হয়েছে, ওএসডি করে রেখেছে।

খাগড়াছড়িতে চলমান অস্থিরতার প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, পাহাড়ি অঞ্চলে কিছু কিছু ঘটনা দেখতে পারছি, অশান্তি দেখতে পারছি। হঠাৎ করে এই সমস্ত বিষয়গুলো মানুষকে নানাভাবে ভাবিয়ে তুলছে। মানুষ উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে আছে। কেন এই সময়ে এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে, গার্মেন্টসে অশান্তির লক্ষণ আমরা দেখতে পারছি। এগুলো কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এসব ঘটনার সঙ্গে কোনো চক্র জড়িত আছে। তাই দৃঢ়তার সঙ্গে আমি বলতে চাই, আমাদের প্রত্যেককে কাঁধ কাঁধ মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে ওই চক্রের দেশবিরোধী যে সমস্ত কর্মকাণ্ড বা যে সমস্ত ‘মাস্টার প্ল্যান’ বা অশুভ পরিকল্পনা রয়েছে তা ব্যর্থ করে দিতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। সজাগ থাকতে হবে যাতে করে কোনো ‘মাস্টার প্ল্যান’ বা কোনো এজেন্ডা এই বাংলাদেশে বাস্তবায়িত না হয়, যেখানে ফ্যাসিবাদের উত্থান হতে পারে বা যেখানে আবারও গণতন্ত্র বিনাশের নানা উদ্যোগ থাকতে পারে।

এসি/সানা/আপ্র/২৯/০৯/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রুহুল কবির রিজভী

প্রশাসনে খুঁজে খুঁজে ‘জামায়াত-শিবিরের’ লোক বসানো হচ্ছে

আপডেট সময় : ০৪:৫৯:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশাসনে খুঁজে খুঁজে ‘শিবির ক্যাডার ও জামায়াতে ইসলামী মতাদর্শের লোকজনকে’ বসানো হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের এক বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে একথা বলেন তিনি।

রিজভী বলেন, ফ্যাসিবাদের দোসররা প্রশাসনে তো আছেই। এরপর যে সমস্ত ছেলেরা সেই বিশেষ ইসলামপন্থি দলটির, যারা একসময়ে ছাত্র জীবনে শিবির করেছেন, তারপরে তারা ক্যাডার সার্ভিসের সুযোগ পেয়েছেন, কিন্তু এরপরেও যদি তারা শিবিরের ক্যাডার থাকেন, তাহলে এই রাষ্ট্রপতি একটা ‘ফাংশনাল’ রাষ্ট্র হবে না? এই রাষ্ট্র কি একটি ‘আর্টিকুলেট’ রাষ্ট্র হবে না?

আর এভাবে যদি এভাবে খোঁজখবর নিয়ে, এই এই লোকগুলো জামায়াতের, এই এই লোকগুলো শিবিরের, এদেরকে ‘কিং পয়েন্টে’ আনতে হবে এবং তারা যদি ভূমিকা রাখতে চান তাহলে কখনই আপনি একটি অবাধ নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবেন না। যখনই দলীয় মতাদর্শের ক্যাডারদের আপনি বিভিন্ন জায়গায় প্রতিষ্ঠিত করবেন, তারা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে দেবে না, প্রশাসনই করতে দেবে না।

চব্বিশের অভ্যুত্থানে সরকারপতনের পর ‘বিএনপি-জামায়াত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশাসন ভাগ-বাটোয়ারা করে দখল করেছে’ বলে রোববার মন্তব্য করেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। এর জবাবে সোমবার রিজভী বলেন, “যে ইসলামপন্থি দলের কথা বললাম, তাদের লোকদের সুচারুভাবে বিভিন্ন জায়গায় বসানো হয়েছে। মাহফুজ আলম সাহেব বলেছেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের কামড়াকামড়ি’। আমি বলতে চাই, কোথায়? দেখান। একটি দলের সমর্থিতদের বসানো হচ্ছে।

ছাত্রদলের ব্যাকগ্রাউন্ড আছে, জাকির হোসেনকে তো আপনারা (সরকার) চুক্তিভিত্তিক নেননি। আবদুর রউফকে পদায়ন করে আবার সরিয়ে দিয়েছে অতিরিক্ত সচিব থেকে, তরিকুল ইসলামকে আপনারা গুরুত্বহীন জায়গায় ফেলে রেখেছেন। আমি এরকম অনেক উদাহরণ দেখাতে পারব। তাহলে মাহফুজ সাহেব যে বললেন, ‘বিএনপি ও জামায়াত কামড়াকামড়ি করেৃ’। কোথায়? একসময় ছাত্রদল করত এমন কর্মকর্তারা? নাই। আমি বলব, এখন একটি ইসলামপন্থি দলের লোকজনকে বসানো হচ্ছে খুঁজে খুঁজে। আমি দেখছি, সেই শেখ হাসিনার চিন্তাধারায় প্রতিফলন ঘটছে।

এ বিএনপি নেতা বলেন, তাহলে আমরা কী ভাবব না যে, কোনো একটা এজেন্ডা নিয়ে নীল নকশা নিয়ে এ সরকার এগুচ্ছে। সরকারের ভেতরে সরকার থেকে, যেটাকে কেউ কেউ বলেন, ‘ডিপ স্টেট’ থেকে কিছু একটা হচ্ছে। ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ করতে হলে অবশ্যই প্রশাসনে নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে।

সম্প্রতি বদলি হওয়া জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোখলেস উর রহমানকে নিয়ে রিজভী বলেন, ‘আমি তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম সাহেবকে বলতে চাই, দীর্ঘদিন ধরে জনপ্রশাসনের সচিব, আপনারা যাকে জনপ্রশাসন সচিব করেছিলেন চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মাধ্যমে, তিনি (মোখলেস উর রহমান) গোঁড়া থেকেই একজন বিএনপি বিরোধী লোক ছিলেন।

তিনি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও আমাদের জনাব তারেক রহমানের নামে একেবারে কীভাবে গুছিয়ে মিথ্যা মামলা সাজানো যায়, সেটা তিনি করেছিলেন। তাকে আপনার দীর্ঘদিন ওই পদে রেখেছিলেন। তিনি বা তারা যে দায়িত্বটি পালন করেছেন, খুঁজে খুঁজে যে ছেলেগুলো হয়ত ছাত্রজীবনে ছাত্রদল অথবা বিএনপি পরিবারের ছেলে, তাদেরকে দূরে রাখার কাজটি করেছেন। করেছিলেনও তাই। তাদেরকে সব গুরুত্বহীন জায়গায় ফেলে রাখা হয়েছে, ওএসডি করে রেখেছে।

খাগড়াছড়িতে চলমান অস্থিরতার প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, পাহাড়ি অঞ্চলে কিছু কিছু ঘটনা দেখতে পারছি, অশান্তি দেখতে পারছি। হঠাৎ করে এই সমস্ত বিষয়গুলো মানুষকে নানাভাবে ভাবিয়ে তুলছে। মানুষ উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে আছে। কেন এই সময়ে এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে, গার্মেন্টসে অশান্তির লক্ষণ আমরা দেখতে পারছি। এগুলো কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এসব ঘটনার সঙ্গে কোনো চক্র জড়িত আছে। তাই দৃঢ়তার সঙ্গে আমি বলতে চাই, আমাদের প্রত্যেককে কাঁধ কাঁধ মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে ওই চক্রের দেশবিরোধী যে সমস্ত কর্মকাণ্ড বা যে সমস্ত ‘মাস্টার প্ল্যান’ বা অশুভ পরিকল্পনা রয়েছে তা ব্যর্থ করে দিতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। সজাগ থাকতে হবে যাতে করে কোনো ‘মাস্টার প্ল্যান’ বা কোনো এজেন্ডা এই বাংলাদেশে বাস্তবায়িত না হয়, যেখানে ফ্যাসিবাদের উত্থান হতে পারে বা যেখানে আবারও গণতন্ত্র বিনাশের নানা উদ্যোগ থাকতে পারে।

এসি/সানা/আপ্র/২৯/০৯/২০২৫