ঢাকা ১০:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ জুন ২০২৫

পাহাড়ের নেশায় পর্যটকরা বান্দরবানে

  • আপডেট সময় : ১২:০০:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৩
  • ৭৫ বার পড়া হয়েছে

বান্দরবান সংবাদদাতা: ভোরের স্নিগ্ধ সকালে কুয়াশার চাদরে ঢাকা পাহাড়ের বিস্তীর্ণ প্রান্তর। সবুজ ঘাসের ওপর খানিকটা সূর্যের আলো পড়লেই মুক্তোর মতো জ্বল জ্বল করে শিশির বিন্দুগুলো। কুয়াশার ভোরে দূর পর্যন্ত দেখা যায় না। উঁচু-নিচু পাহাড়ে কুয়াশায় ভেসে বেড়ানোর এমন দৃশ্য দেখলে মন জুড়িয়ে যায়। অদ্ভুত অনুভূতিতে শিহরিত হয় মন। শীতের শুরুতে এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেশের দূর-দূরান্তের জেলা হতে পর্যটকদের ভিড় জমে পাহাড় কন্যা বান্দরবানে। জেলা সদর ছাড়াও উপজেলাগুলোর পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে তুলনামূলক দর্শনার্থী সংখ্যা বাড়তে থাকে। এছাড়া বেশির ভাগ পর্যটক এই সময়টা বেছে নেয় ভ্রমণের জন্য। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য দেখার নেশায় পর্যটকরা ছুটে আসছে পাহাড়, নদী আর ঝর্ণার জলরাশি উপভোগ করতে। পর্যটকদের ভ্রমণের তালিকায় স্থান পাচ্ছে মেঘলা, নীলাচল, নীলগিরি, শৈলপ্রপাত, চিম্বুক, নাফাকুম, ডিম পাহাড়, বড় পাথর, রাজা পাথর, তিন্দু, রেমাক্রি জলপ্রপাতসহ আরও অনেক পর্যটন স্পট। দিনাজপুর থেকে বান্দরবানে ঘুরতে এসেছেন রাহাত। দীর্ঘদিন পর সব পর্যটন স্পটগুলো ঘুরে পাহাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার ইচ্ছে জানান। বান্দরবান ঘুরতে এসেছেন রবিউলসহ তার কলেজের ৯ জন সহপাঠী। তারা জানান, হরতাল অবরোধ না থাকায় ঘুরতে এসেছেন। দীর্ঘদিন পর বান্দরবানের পর্যটন স্পটগুলোতে ঘুরতে পেরে তারাও আনন্দ উপভোগ করছেন। মৃদুল তালুকদার দম্পতি এসেছেন মুন্সীগঞ্জ থেকে নিলাচল। পর্যটন কেন্দ্রে উঠেছেন নীলাচলের নিজস্ব রিসোর্টে। বিয়ের পর হানিমুনের জন্য বেছে নিয়েছেন পাহাড় কন্যা বান্দরবানকে। মুগ্ধ হয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করছেন তারা। ঘুরতে আসা মুন্না দম্পতি বলেন, প্রকৃতির সৌন্দর্যের মোহে বান্দরবান ছুটে এসেছি। যাতায়াতের রাস্তাঘাট এখন আগের চেয়ে উন্নত হয়েছে ঘুরে এসেছি চিম্বুক পাহাড়, ডিম পাহাড়।
পর্যটক আসায় খুশি গাড়ি চালকরা। তারা জানালেন, পূর্বের মতো পর্যটক এলে তারা ব্যবসায়িক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবেন। শৈলপ্রপাত পর্যটন কেন্দ্রের পাশেই শৈলপ্রপাত হস্তশিল্প দোকানের দোকানি আইরিন বম বলেন, আগের চেয়ে পর্যটক বেড়েছে যদি রাজনৈতিক হরতাল অবরোধের মতো কর্মসূচি না থাকে তাহলে পর্যটক বাড়বে। ব্যবসায় সুদিন ফিরবে। আবাসিক হোটেল মালিক মোজাফফর জানান, দীর্ঘদিন পর বান্দরবানে নানা জটিলতা কাটিয়ে এখন পর্যটন স্পটগুলো উন্মুক্ত হওয়ায় আবারও পর্যটকরা আসতে শুরু করেছে। বান্দরবান আবাসিক হোটেল রিসোর্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দিন বলেন, বছরের শীতের এই সময়টাতে মূলত বিভিন্ন জেলা হতে পর্যটকদের আনাগোনা বেশি থাকে, তাই পর্যটন ব্যবসায় কিছুটা চাঙ্গা ভাব থাকে। তবে পাহাড়ে সাম্প্রতিক অস্থিরতা, বন্যা সর্বপরি রাজনৈতিক অস্তিরতা, হরতাল অবরোধের মত কর্মসূচি থাকায় পর্যটনশিল্পে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। তবে মাসের শুরুতে জেলার প্রায় সব পর্যটন স্পটগুলো খুলে দেওয়ায় পর্যটন সমাগম বৃদ্ধি পাচ্ছে এছাড়া সরকারি ছুটি ও বন্ধের দিনে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে থাকে দর্শনার্থীদের সমাগম। তাই দীর্ঘদিন ঝিমিয়ে থাকা আবাসিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, পরিবহন, টুরিস্ট গাইড ব্যবসাসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসাগুলোতে ফিরেছে ব্যস্ততা।

 

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

পাহাড়ের নেশায় পর্যটকরা বান্দরবানে

আপডেট সময় : ১২:০০:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৩

বান্দরবান সংবাদদাতা: ভোরের স্নিগ্ধ সকালে কুয়াশার চাদরে ঢাকা পাহাড়ের বিস্তীর্ণ প্রান্তর। সবুজ ঘাসের ওপর খানিকটা সূর্যের আলো পড়লেই মুক্তোর মতো জ্বল জ্বল করে শিশির বিন্দুগুলো। কুয়াশার ভোরে দূর পর্যন্ত দেখা যায় না। উঁচু-নিচু পাহাড়ে কুয়াশায় ভেসে বেড়ানোর এমন দৃশ্য দেখলে মন জুড়িয়ে যায়। অদ্ভুত অনুভূতিতে শিহরিত হয় মন। শীতের শুরুতে এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেশের দূর-দূরান্তের জেলা হতে পর্যটকদের ভিড় জমে পাহাড় কন্যা বান্দরবানে। জেলা সদর ছাড়াও উপজেলাগুলোর পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে তুলনামূলক দর্শনার্থী সংখ্যা বাড়তে থাকে। এছাড়া বেশির ভাগ পর্যটক এই সময়টা বেছে নেয় ভ্রমণের জন্য। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য দেখার নেশায় পর্যটকরা ছুটে আসছে পাহাড়, নদী আর ঝর্ণার জলরাশি উপভোগ করতে। পর্যটকদের ভ্রমণের তালিকায় স্থান পাচ্ছে মেঘলা, নীলাচল, নীলগিরি, শৈলপ্রপাত, চিম্বুক, নাফাকুম, ডিম পাহাড়, বড় পাথর, রাজা পাথর, তিন্দু, রেমাক্রি জলপ্রপাতসহ আরও অনেক পর্যটন স্পট। দিনাজপুর থেকে বান্দরবানে ঘুরতে এসেছেন রাহাত। দীর্ঘদিন পর সব পর্যটন স্পটগুলো ঘুরে পাহাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার ইচ্ছে জানান। বান্দরবান ঘুরতে এসেছেন রবিউলসহ তার কলেজের ৯ জন সহপাঠী। তারা জানান, হরতাল অবরোধ না থাকায় ঘুরতে এসেছেন। দীর্ঘদিন পর বান্দরবানের পর্যটন স্পটগুলোতে ঘুরতে পেরে তারাও আনন্দ উপভোগ করছেন। মৃদুল তালুকদার দম্পতি এসেছেন মুন্সীগঞ্জ থেকে নিলাচল। পর্যটন কেন্দ্রে উঠেছেন নীলাচলের নিজস্ব রিসোর্টে। বিয়ের পর হানিমুনের জন্য বেছে নিয়েছেন পাহাড় কন্যা বান্দরবানকে। মুগ্ধ হয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করছেন তারা। ঘুরতে আসা মুন্না দম্পতি বলেন, প্রকৃতির সৌন্দর্যের মোহে বান্দরবান ছুটে এসেছি। যাতায়াতের রাস্তাঘাট এখন আগের চেয়ে উন্নত হয়েছে ঘুরে এসেছি চিম্বুক পাহাড়, ডিম পাহাড়।
পর্যটক আসায় খুশি গাড়ি চালকরা। তারা জানালেন, পূর্বের মতো পর্যটক এলে তারা ব্যবসায়িক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবেন। শৈলপ্রপাত পর্যটন কেন্দ্রের পাশেই শৈলপ্রপাত হস্তশিল্প দোকানের দোকানি আইরিন বম বলেন, আগের চেয়ে পর্যটক বেড়েছে যদি রাজনৈতিক হরতাল অবরোধের মতো কর্মসূচি না থাকে তাহলে পর্যটক বাড়বে। ব্যবসায় সুদিন ফিরবে। আবাসিক হোটেল মালিক মোজাফফর জানান, দীর্ঘদিন পর বান্দরবানে নানা জটিলতা কাটিয়ে এখন পর্যটন স্পটগুলো উন্মুক্ত হওয়ায় আবারও পর্যটকরা আসতে শুরু করেছে। বান্দরবান আবাসিক হোটেল রিসোর্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দিন বলেন, বছরের শীতের এই সময়টাতে মূলত বিভিন্ন জেলা হতে পর্যটকদের আনাগোনা বেশি থাকে, তাই পর্যটন ব্যবসায় কিছুটা চাঙ্গা ভাব থাকে। তবে পাহাড়ে সাম্প্রতিক অস্থিরতা, বন্যা সর্বপরি রাজনৈতিক অস্তিরতা, হরতাল অবরোধের মত কর্মসূচি থাকায় পর্যটনশিল্পে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। তবে মাসের শুরুতে জেলার প্রায় সব পর্যটন স্পটগুলো খুলে দেওয়ায় পর্যটন সমাগম বৃদ্ধি পাচ্ছে এছাড়া সরকারি ছুটি ও বন্ধের দিনে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে থাকে দর্শনার্থীদের সমাগম। তাই দীর্ঘদিন ঝিমিয়ে থাকা আবাসিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, পরিবহন, টুরিস্ট গাইড ব্যবসাসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসাগুলোতে ফিরেছে ব্যস্ততা।