প্রত্যাশা ডেস্ক: ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাতে রাশিয়া দুটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সরবরাহ যোগান দেওয়া উপকেন্দ্রগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে আর এতে সাতজন নিহত হয়েছেন।
গত শনিবার (৮ নভেম্বর) সামাজিক মাধ্যম এক্স এ দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রিয় সিবিহা বলেছেন, “রাশিয়া আবার উপকেন্দ্রগুলোতে হামলা চালিয়েছে। এসব উপকেন্দ্র খ্যামেলনিট্স্কি ও রিভনিয়ে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। এগুলো কোনো দুর্ঘটনা না বরং সুপরিকল্পিত হামলা। রাশিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে ইউরোপের পারমাণবিক নিরাপত্তাকে বিপন্ন করছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়া ৪৫০টিরও বেশি ড্রোন ও ৪৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। আঞ্চলিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিপ্রোতে এক অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে একটি ড্রোন আঘাত হানার পর তিনজন নিহত ও ১২ জন আহত হন। জাপোরিঝিয়ার দক্ষিণপূর্বাঞ্চলে তিনজন নিহত এবং খারকিভ অঞ্চলের উত্তরে আরো একজন নিহত হয়েছেন।
ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ইউলিয়া সভিরিদেঙ্কো জানিয়েছেন, কিইভ, পোলতাভা ও খারকিভ অঞ্চলের জ্বালানি স্থাপনাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এতে হাজার হাজার মানুষ বিদ্যুৎ ও পানিবিহীন অবস্থায় আছেন।
পোলতাভার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পানি সরবরাহ করতে বিদ্যুৎ জেনারেটর ব্যবহার করা হচ্ছে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শনিবার স্থানীয় সময় সকালে জানায়, রাশিয়ার কিইভের হামলার জবাবে তারা ইউক্রেনের অস্ত্র কারখানা এবং গ্যাস ও জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে ‘অতি নির্ভুল দীর্ঘ পাল্লার আকাশ, স্থল ও সাগরভিত্তিক অস্ত্র দিয়ে ব্যাপক আঘাত হেনেছে’।
ইউক্রেনের রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি কোম্পানি তসেন্ত্রেনের্গো জানিয়েছে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে তাদের স্থাপনাগুলোতে হওয়া বৃহত্তম হামলা এটি। হামলার পর কিইভ ও খারকিভ অঞ্চলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে কার্যক্রম স্থগিত রাখতে বাধ্য হয়েছে তারা।
এক বিবৃতিতে ইউক্রেনের উৎপাদিত বিদ্যুতের প্রায় ৮ শতাংশের যোগান দেওয়া তসেন্ত্রেনের্গো বলেছে, আগের হামলাটি চালানোর পর এক মাসও হয়নি, শত্রু এখন আবার একযোগে আমাদের সব উৎপাদন কেন্দ্রগুলোতে আঘাত হানছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে আগুন জ্বলছে!
কিইভ রাশিয়ার ভেতরে দীর্ঘ পাল্লার ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা জোরদার করেছে। এসব ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন রাশিয়ার তেল শোধনাগার, তেলের ডিপো ও কৌশলগত সরবরাহ কেন্দ্রগুলোতে আঘাত হানছে। এসব স্থাপনা ক্রেমলিনের যুদ্ধ যন্ত্রে সরবরাহ যোগায় বলে অভিযোগ কিইভের। এসব হামলাকে রাশিয়ার চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধের বিরুদ্ধে ‘বৈধ আত্মরক্ষার প্রচেষ্টা’ বলে অভিহিত করেছে ইউক্রেইন।
ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত রাশিয়ার ৪০৬টি ড্রোন ও নয়টি ক্ষেপণাস্ত্র গুলি করে ভূপাতিত করেছে তারা, কিন্তু ২৬টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ৫২টি ড্রোন ২৫টি শহরের বিভিন্ন লক্ষ্যে আঘাত হেনেছে।
সানা/ওআ/০৯/১১/২০২৫


























