লাইফস্টাইল ডেস্ক: সুস্থ থাকতে আমাদের প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হয়। পানি পান করা সহজ মনে হলেও, অনেকেই পানি পান করার সময় সাধারণ কিছু ভুল করে থাকেন, যা স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। কয়েকটি ভুল এড়িয়ে চললে পানি পানের উপকারিতা পাবেন।
ভারতের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস অব হেলথ (এনআইএইচ)-এ প্রকাশিত এক গবেষণার রিপোর্ট অনুসারে, একজন মানুষ কতটা পানি পান করবেন তা শরীরের আকার, শারীরিক কার্যকলাপ, খাদ্যাভ্যাস এবং আবহাওয়ার উপর নির্ভর করে।
সঠিক উপায় কীভাবে পানি পান করবেন-
দাঁড়িয়ে পানি পান না করা
অনেকেই আছেন দাঁড়িয়ে পানি পান করেন। আয়ুর্বেদ চিকিৎসা অনুযায়ী, কোনো মানুষের দাঁড়িয়ে পানি করা উচিত নয়। কারণ দাঁড়িয়ে পানি পান করলে পাকস্থলীতে দ্রুত পানি পৌঁছায়। এতে পেটের উপর বিশাল চাপ পড়ে খাদ্যনালিতে সমস্যা দেখা দিতে পারে, তাই বসে পানি পান করতে হবে। বসে পানি পান করলে শরীর ঠিক মতো পানি গ্রহণ করে। পানি প্রত্যেক কোষে ঠিকমতো পৌঁছে যায়। ফলে হজমশক্তি উন্নত করে এবং রক্ত সঞ্চালন করতে সাহায্য করে।
দ্রুত পানি পান না করা
অনেকেই খুব দ্রুত পানি পান করেন। দ্রুত বেশি পানি পান করলে শরীরে সোডিয়ামের ঘনত্ব কমে যেতে পারে, যা পানির বিষক্রিয়া ঘটাতে পারে। তাই পানি পানের সময় ধীরে ধীরে চুমুক দিয়ে পান করতে হবে। এতে কিডনিকে স্থির গতিতে পানি প্রক্রিয়া করতে সাহায্য করবে।
ঠান্ডা পানি না খাওয়া
বাইরে থেকে ফিরে ফ্রিজের ঠান্ডা পানি খেয়ে থাকেন। এই অভ্যাসটিও শরীরের জন্য ক্ষতিকর। খারাপ লাগলেও ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় থাকা পানি পান করতে হবে। এতে শরীর স্বাভাবিক করতে সাহায্য করে।
খাবারের সঙ্গে পানি পান না করা
অনেকেই খাবার খাওয়ার সময়ে পানি পানের অভ্যাস রয়েছে। তারা ভাবেন এটি হজম বা ওজন কমাতে সাহায্য করে। যে খাবারই খাই না কেন, সেটি হজম হওয়ার জন্য পাকস্থলী থেকে গ্যাস্ট্রিক রস নিঃসৃত হয়। খাবার খাওয়ার পরপরই পানি পান করলে রসটি ভালোভাবে কাজ করতে পারে না। সেক্ষেত্রে পুষ্টির ঘাটতি হয়। এছাড়া খাওয়ার সময় পানি খেলে হজম প্রক্রিয়া ব্যাহত ঘটিয়ে পেট ফাঁপা, বদহজমের সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই খাওয়ার অন্তত ৩০ মিনিট আগে বা পরে পানি পান করা করতে হবে।
তৃষ্ণা ছাড়াই পানি পান করা
কেউ কেউ পিপাসা পেলে তখনই পানি পান করেন। এই অভ্যাসের ফলে দেহে পানিশূন্যতা তৈরি হতে পারে। তাই পিপাস না পেলেও নির্দিষ্ট সময়ে পানি পানের অভ্যাস তৈরি করতে হবে।
অতিরিক্ত পানি পান না করা
অতিমাত্রায় পানি পানের ফলে হাইপোনেট্রেমিয়া নামে পানির নেশা হতে পারে। এটি হলে রক্ত প্রবাহে অতিরিক্ত কম সোডিয়ামের মাত্রার কারণে কোষের ভেতরটা ফুলে যেতে পারে। আর এর ফলে খিঁচুনি, কোমার মতো মারাত্মক সমস্যা হতে পারে। তাই শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী পানি পান করতে হবে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
এসি/