ঢাকা ০২:৫২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

পাঠ্য বইয়ে সব ধর্মের আলোচনা থাকা জরুরি

  • আপডেট সময় : ১০:৫৭:৫৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ এপ্রিল ২০২২
  • ৭৭ বার পড়া হয়েছে

আরাফাত আহমেদ রিফাত : নিজ ধর্ম এবং নৈতিক শিক্ষার পাশাপাশি শিশুদের অন্য ধর্ম সম্পর্কেও জানা উচিত বলে আমি মনে করি।
কয়েক বছর আগে প্রথম থেকে দশম শ্রেণির ধর্ম বইয়ের সাথে নৈতিক শিক্ষাও যোগ করা হয়। আগে যে বইয়ের নাম ছিল ‘ইসলাম ধর্ম’ এখন সে বই হয়েছে ‘ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা’।
‘হিন্দু ধর্ম’ থেকে ‘হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা’, ‘বৌদ্ধ ধর্ম’ থেকে ‘বৌদ্ধ ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা’। শুধু নাম পরিবর্তন করা হয়নি, সংযোজন করা হয়েছে সেই ধর্মের নৈতিক শিক্ষাগুলোও। কিন্তু সব ধর্মের নৈতিক শিক্ষা কি একই রকম? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে ‘নৈতিক’ শব্দের অর্থ জেনে নেই। বাংলা একাডেমি অভিধান ঘেটে পাওয়া যায়, বিশেষ্য ‘নীতি’ > বিশেষণ ‘নৈতিক’ > বিশেষ্য ‘নৈতিকতা’। ‘নীতি’ শব্দটি এসেছে ‘ন্যায়’ শব্দ থেকে। ন্যায় অর্থ আমরা বুঝি সঠিক কাজ, ভালো কাজ।
আর আমার মনে হয় কোনো ধর্মই খারাপ কাজকে বৈধতা দেয় না। সুতরাং সকল ধর্মের নৈতিক শিক্ষা একই।
তাই আমি মনে করি সবার জন্য একটি ধর্ম বই প্রণয়ন করা উচিত। যেখানে সকল ধর্ম সম্পর্কে বিশদ আলোচনা থাকবে। এতে এক ধর্মের শিশুর অন্য ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করবে। প্রায়শই আমাদের দেশে সংখ্যালঘুর উপর নির্যাতন করতে দেখা যায়। এর প্রধান কারণ অন্য ধর্ম সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা। এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে নিজ ধর্মের পাশাপাশি অন্য ধর্ম সম্পর্কেও বিশদ জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। আর এই জ্ঞান অর্জনটা শিশু জীবন থেকেই শুরু করতে হয়। আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় শিশুরা নিজ ধর্মের বাইরে অন্য ধর্ম সম্পর্কে জানার সুযোগ পায় না। কারণ পাঠ্যপুস্তকে অন্য ধর্মের বিষয়ে কিছু লেখা থাকে না। ভিন্ন ধর্মের সকলের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব তৈরি এবং পরস্পরের মধ্যে জানা বোঝার যেন ঘাটতি না হয় সেজন্য বইয়ে সব ধর্ম সম্পর্কে আলোচনা থাকা জরুরি। বিশ্বের উন্নত দেশে এই শিক্ষা ব্যবস্থা চালু আছে। তবে আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় এটি চালু করতে গেলে প্রথমেই প্রয়োজন দক্ষ শিক্ষক। যা আমাদের নেই। আমার আশেপাশে প্রায় অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই দেখেছি ইসলাম শিক্ষার শিক্ষক হিন্দু, বৌদ্ধ ধর্মের ক্লাস নেন। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এইসব শিক্ষকদের সকল ধর্মের বিষয়ে দক্ষ করতে হবে যেন তারা শিক্ষার্থীদের সঠিক শিক্ষা দিতে পারেন। আর এভাবেই শিশুদের সকল ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞান দানের মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ উঠবে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

পাঠ্য বইয়ে সব ধর্মের আলোচনা থাকা জরুরি

আপডেট সময় : ১০:৫৭:৫৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ এপ্রিল ২০২২

আরাফাত আহমেদ রিফাত : নিজ ধর্ম এবং নৈতিক শিক্ষার পাশাপাশি শিশুদের অন্য ধর্ম সম্পর্কেও জানা উচিত বলে আমি মনে করি।
কয়েক বছর আগে প্রথম থেকে দশম শ্রেণির ধর্ম বইয়ের সাথে নৈতিক শিক্ষাও যোগ করা হয়। আগে যে বইয়ের নাম ছিল ‘ইসলাম ধর্ম’ এখন সে বই হয়েছে ‘ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা’।
‘হিন্দু ধর্ম’ থেকে ‘হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা’, ‘বৌদ্ধ ধর্ম’ থেকে ‘বৌদ্ধ ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা’। শুধু নাম পরিবর্তন করা হয়নি, সংযোজন করা হয়েছে সেই ধর্মের নৈতিক শিক্ষাগুলোও। কিন্তু সব ধর্মের নৈতিক শিক্ষা কি একই রকম? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে ‘নৈতিক’ শব্দের অর্থ জেনে নেই। বাংলা একাডেমি অভিধান ঘেটে পাওয়া যায়, বিশেষ্য ‘নীতি’ > বিশেষণ ‘নৈতিক’ > বিশেষ্য ‘নৈতিকতা’। ‘নীতি’ শব্দটি এসেছে ‘ন্যায়’ শব্দ থেকে। ন্যায় অর্থ আমরা বুঝি সঠিক কাজ, ভালো কাজ।
আর আমার মনে হয় কোনো ধর্মই খারাপ কাজকে বৈধতা দেয় না। সুতরাং সকল ধর্মের নৈতিক শিক্ষা একই।
তাই আমি মনে করি সবার জন্য একটি ধর্ম বই প্রণয়ন করা উচিত। যেখানে সকল ধর্ম সম্পর্কে বিশদ আলোচনা থাকবে। এতে এক ধর্মের শিশুর অন্য ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করবে। প্রায়শই আমাদের দেশে সংখ্যালঘুর উপর নির্যাতন করতে দেখা যায়। এর প্রধান কারণ অন্য ধর্ম সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা। এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে নিজ ধর্মের পাশাপাশি অন্য ধর্ম সম্পর্কেও বিশদ জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। আর এই জ্ঞান অর্জনটা শিশু জীবন থেকেই শুরু করতে হয়। আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় শিশুরা নিজ ধর্মের বাইরে অন্য ধর্ম সম্পর্কে জানার সুযোগ পায় না। কারণ পাঠ্যপুস্তকে অন্য ধর্মের বিষয়ে কিছু লেখা থাকে না। ভিন্ন ধর্মের সকলের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব তৈরি এবং পরস্পরের মধ্যে জানা বোঝার যেন ঘাটতি না হয় সেজন্য বইয়ে সব ধর্ম সম্পর্কে আলোচনা থাকা জরুরি। বিশ্বের উন্নত দেশে এই শিক্ষা ব্যবস্থা চালু আছে। তবে আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় এটি চালু করতে গেলে প্রথমেই প্রয়োজন দক্ষ শিক্ষক। যা আমাদের নেই। আমার আশেপাশে প্রায় অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই দেখেছি ইসলাম শিক্ষার শিক্ষক হিন্দু, বৌদ্ধ ধর্মের ক্লাস নেন। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এইসব শিক্ষকদের সকল ধর্মের বিষয়ে দক্ষ করতে হবে যেন তারা শিক্ষার্থীদের সঠিক শিক্ষা দিতে পারেন। আর এভাবেই শিশুদের সকল ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞান দানের মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ উঠবে।