ঢাকা ০৭:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫

পাঠ্যপুস্তকে ভুল সংশোধন ও তদন্তে দুই কমিটি

  • আপডেট সময় : ০১:৫২:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৩
  • ৯৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : নতুন শিক্ষাক্রমের জন্য ছাপানো পাঠ্যপুস্তকের ভুল সংশোধনে এবং কেন ভুল হল তা তদন্তে দুই কমিটি গঠনের অনুমোদন দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
গতকাল মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সরকারি মাধ্যমিক- ২ শাখা থেকে প্রকাশিত আলাদা অফিস আদেশে কমিটি গঠনের বিষয়টি জানানো হয়। প্রতি কমিটিতে সাতজন করে সদস্য রয়েছেন। এর মধ্যে ভুল খুঁজে বের করে তা সংশোধনের জন্য সুপারিশ করতে এক মাস এবং কেন ভুল হল তা তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া কমিটিকে তিন সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রথম কমিটি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে হলেও দ্বিতীয় কমিটি সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে। এ ঘটনার পেছনে ‘কারও ইচ্ছাকৃত ভুল বা অস্থিরতা সৃষ্টির উদ্দেশ্য’ ছিল কি-না তা অনুসন্ধান করবে দ্বিতীয় কমিটি। ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীর জন্য প্রণীত পাঠ্যপুস্তকের অসঙ্গতি, ভুল বা ত্রুটি চিহ্নিত করে তা সংশোধনে প্রয়োজনীয় সুপারিশের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) পরিচালক আব্দুল হালিমকে আহ্বায়ক করে গঠিত কমিটিতে সদস্য সচিব হিসেবে আছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (মাধ্যমিক) মো. আজিজ উদ্দিন। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- আইইআর এর অধ্যাপক এম ওয়াহিদুজ্জামান, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) মো. লুৎফর রহমান, মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমুন্নাহার শাহীন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ কর্তৃক মনোনীত একজন উপসচিব এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক পদমর্যদার একজন প্রতিনিধি। সুপারিশ প্রণয়নে প্রয়োজনে দুই বা তিনজন ‘বিষয় বিশেষজ্ঞের’ মতামত গ্রহণ করতে পারবে এই কমিটি।
এদিকে পাঠ্যপুস্তকে অসঙ্গতি বা ভুল তথ্য-উপাত্ত সন্নিবেশ হয়ে থাকলে তা পর্যালোচনা করে সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে কারও গাফলতি বা ইচ্ছাকৃত ভুল ছিল কি-না তা চিহ্নিত করে সুপারিশসহ প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খালেদা আক্তারকে আহ্বায়ক করে গঠিত কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন উপসচিব মিজানুর রহমান। এ কমিটিরি অন্য সদস্যরা হলেন- যুগ্মসচিব মোল্লা মিজানুর রহমান, পরিচালক (অর্থ ও ক্রয়) অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম খান, বিএএফ শাহীন স্কুলের সহকারী শিক্ষক মো. আব্দুল মান্নান মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কর্তৃক মনোনীত একজন পরিচালক এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ কর্তৃক মনোনীত একজন উপসচিব। এছাড়া প্রয়োজন হলে এই কমিটি একজন সদস্য কো-অপ্ট করতে পারবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়। কমিটির দায়িত্ব পালনে এনসিটিবি প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেবে। এর আগে গত ২৪ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি দুটি কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “বইগুলোকে ঘিরে যে ভুল ধরা পড়ছে তা নিয়ে আমরা দুটি কমিটি করছি। একটি আমাদের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে, শুধু বিষয় বিশেষজ্ঞ না, ধর্ম, স্বাস্থ্য, মানসিক স্বাস্থ্য এমন নানা বিষয়ে যে বিশেষজ্ঞরা আছেন তাদের নিয়ে আমরা একটা কমিটি করছি। আমরা একটা লিংক দিয়ে দেব, দেশ বিদেশ থেকে আমাদের এই বই নিয়ে যে কোনো মতামত আমাদের জানালে এই কমিটির মাধ্যমে কোথাও কোনো ভুল থাকলে তা সংশোধন করা হবে।
“হয়ত সর্ষের মধ্যেও কোথাও ভূত আছে। এনসিটিবির ভিতরেও যদি কেউ থেকে থাকে যে কেউ ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে এই ভুলগুলো করেছে। বই ছাপানোর বিষয়টি এত গুরুত্বপূর্ণ যে এখানে ভুল করার বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। কোথাও কারো গাফিলতি বা ইচ্ছাকৃতভাবে নেতিবাচক কোনো দিকে নেওয়ার অভিপ্রায় থেকে থাকলে তা খুঁজে বের করতে আমরা আরেকটি কমিটি করে দিচ্ছি।”
সারাদেশে ২০২৩ সালে চালু হওয়া নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন পাঠ্যপুস্তক প্রকাশ করেছে সরকার। তা শিক্ষার্থীদের হাতেও পৌঁছে গেছে এ মাসের শুরুতে। নতুন বই হাতে পাওয়ার পর থেকে বিভিন্ন শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে বিভিন্ন ভুল ও পরিবর্তন নিয়ে তুমুল আলোচনা চলছে নানা পর্যায়ে। এসব নিছকই ভুল, না উদ্দেশ্যমূলক, সে প্রশ্নও উঠেছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

পাঠ্যপুস্তকে ভুল সংশোধন ও তদন্তে দুই কমিটি

আপডেট সময় : ০১:৫২:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : নতুন শিক্ষাক্রমের জন্য ছাপানো পাঠ্যপুস্তকের ভুল সংশোধনে এবং কেন ভুল হল তা তদন্তে দুই কমিটি গঠনের অনুমোদন দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
গতকাল মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সরকারি মাধ্যমিক- ২ শাখা থেকে প্রকাশিত আলাদা অফিস আদেশে কমিটি গঠনের বিষয়টি জানানো হয়। প্রতি কমিটিতে সাতজন করে সদস্য রয়েছেন। এর মধ্যে ভুল খুঁজে বের করে তা সংশোধনের জন্য সুপারিশ করতে এক মাস এবং কেন ভুল হল তা তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া কমিটিকে তিন সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রথম কমিটি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে হলেও দ্বিতীয় কমিটি সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে। এ ঘটনার পেছনে ‘কারও ইচ্ছাকৃত ভুল বা অস্থিরতা সৃষ্টির উদ্দেশ্য’ ছিল কি-না তা অনুসন্ধান করবে দ্বিতীয় কমিটি। ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীর জন্য প্রণীত পাঠ্যপুস্তকের অসঙ্গতি, ভুল বা ত্রুটি চিহ্নিত করে তা সংশোধনে প্রয়োজনীয় সুপারিশের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) পরিচালক আব্দুল হালিমকে আহ্বায়ক করে গঠিত কমিটিতে সদস্য সচিব হিসেবে আছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (মাধ্যমিক) মো. আজিজ উদ্দিন। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- আইইআর এর অধ্যাপক এম ওয়াহিদুজ্জামান, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) মো. লুৎফর রহমান, মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমুন্নাহার শাহীন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ কর্তৃক মনোনীত একজন উপসচিব এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক পদমর্যদার একজন প্রতিনিধি। সুপারিশ প্রণয়নে প্রয়োজনে দুই বা তিনজন ‘বিষয় বিশেষজ্ঞের’ মতামত গ্রহণ করতে পারবে এই কমিটি।
এদিকে পাঠ্যপুস্তকে অসঙ্গতি বা ভুল তথ্য-উপাত্ত সন্নিবেশ হয়ে থাকলে তা পর্যালোচনা করে সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে কারও গাফলতি বা ইচ্ছাকৃত ভুল ছিল কি-না তা চিহ্নিত করে সুপারিশসহ প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খালেদা আক্তারকে আহ্বায়ক করে গঠিত কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন উপসচিব মিজানুর রহমান। এ কমিটিরি অন্য সদস্যরা হলেন- যুগ্মসচিব মোল্লা মিজানুর রহমান, পরিচালক (অর্থ ও ক্রয়) অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম খান, বিএএফ শাহীন স্কুলের সহকারী শিক্ষক মো. আব্দুল মান্নান মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কর্তৃক মনোনীত একজন পরিচালক এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ কর্তৃক মনোনীত একজন উপসচিব। এছাড়া প্রয়োজন হলে এই কমিটি একজন সদস্য কো-অপ্ট করতে পারবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়। কমিটির দায়িত্ব পালনে এনসিটিবি প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেবে। এর আগে গত ২৪ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি দুটি কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “বইগুলোকে ঘিরে যে ভুল ধরা পড়ছে তা নিয়ে আমরা দুটি কমিটি করছি। একটি আমাদের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে, শুধু বিষয় বিশেষজ্ঞ না, ধর্ম, স্বাস্থ্য, মানসিক স্বাস্থ্য এমন নানা বিষয়ে যে বিশেষজ্ঞরা আছেন তাদের নিয়ে আমরা একটা কমিটি করছি। আমরা একটা লিংক দিয়ে দেব, দেশ বিদেশ থেকে আমাদের এই বই নিয়ে যে কোনো মতামত আমাদের জানালে এই কমিটির মাধ্যমে কোথাও কোনো ভুল থাকলে তা সংশোধন করা হবে।
“হয়ত সর্ষের মধ্যেও কোথাও ভূত আছে। এনসিটিবির ভিতরেও যদি কেউ থেকে থাকে যে কেউ ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে এই ভুলগুলো করেছে। বই ছাপানোর বিষয়টি এত গুরুত্বপূর্ণ যে এখানে ভুল করার বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। কোথাও কারো গাফিলতি বা ইচ্ছাকৃতভাবে নেতিবাচক কোনো দিকে নেওয়ার অভিপ্রায় থেকে থাকলে তা খুঁজে বের করতে আমরা আরেকটি কমিটি করে দিচ্ছি।”
সারাদেশে ২০২৩ সালে চালু হওয়া নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন পাঠ্যপুস্তক প্রকাশ করেছে সরকার। তা শিক্ষার্থীদের হাতেও পৌঁছে গেছে এ মাসের শুরুতে। নতুন বই হাতে পাওয়ার পর থেকে বিভিন্ন শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে বিভিন্ন ভুল ও পরিবর্তন নিয়ে তুমুল আলোচনা চলছে নানা পর্যায়ে। এসব নিছকই ভুল, না উদ্দেশ্যমূলক, সে প্রশ্নও উঠেছে।