নীলফামারী সংবাদদাতা : ডোমারের ঐতিহ্যবাহী শতবর্ষী প্রতিষ্ঠান শহিদ ধীরাজ-মিজান স্মৃতি পাঠাগার ও মিলনায়তনের কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচনে প্রকাশ্যে অংশ নিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা ও জামায়াত-বিএনপির দায়ের করা মামলার আসামিরা। এতে নির্বাচন ঘিরে ব্যাপক বিতর্ক ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে পাঠাগার মিলনায়তনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। যদিও শুরুতে নির্বাচন ঘিরে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছিল, তবে দুপুর গড়াতেই নানা অনিয়ম ও প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ সামনে আসে।
স্থানীয় সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা সরাসরি অংশ নিয়েছেন এবং নির্বাচনি কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। শুধু তাই নয়, জামায়াত-বিএনপির দায়ের করা মামলার একাধিক আসামিকেও নির্বাচনি কাজে সরব থাকতে দেখা গেছে। ডোমার উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর একাধিক নেতাকর্মী অভিযোগ করেন, থানা প্রশাসনের সাথে যোগসাজশ করেই আওয়ামী লীগ নেতারা প্রকাশ্যে নির্বাচন পরিচালনা করছেন। তাদের দাবি, প্রশাসন এভাবে আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে পুনর্বাসন করছে এবং প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে আনছে।
তাদের আরও অভিযোগ, এই নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের বিতর্কিত নেতাদের সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। এতে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জানা গেছে, পাঠাগার নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদপ্রার্থী মো. আনজারুল হক (সাধারণ সম্পাদক পদ), উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ কমান্ডের সভাপতি ও জামায়াতে ইসলামীর দায়ের করা মামলার নামীয় আসামি আলামিন রহমান (সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক পদ), উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সাজ্জাদ কিবরিয়া পাপ্পু (সদস্য পদ), আওয়ামী লীগ সমর্থিত সহিদার রহমান মানিক (সহ-সভাপতি পদ) এবং ইলিয়াস হোসেন (গ্রন্থাগার সম্পাদক পদ) যিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। স্থানীয় সচেতন মহলের মতে, শতবর্ষী এ সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানটির নির্বাচন রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখা উচিত ছিল। অথচ বাস্তবে রাজনৈতিক উত্তাপ ও প্রশাসনিক নির্লিপ্ততায় নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।