নিজস্ব প্রতিবেদক : কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, করোনা মহামারির কারণে আমরা দুই বছর কার্যক্রমে পিছিয়ে গিয়েছি, কাজের ধারাবাহিকতা থাকলে হয়তো অর্জন আরও অনেক বেশি হতো। সম্পূর্ণ ক্রপিং সিস্টেমে, ফার্মিং সিস্টেমে পাট একটি উপাদান এবং খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। অর্থনৈতিক ভাবে এর গুরুত্বও অনেক বেশি। বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিজেআরআই)-এর প্রধান কার্যালয় বুধবার (২৯ মার্চ) আকস্মিকভাবে পরিদর্শন করেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। এসময় তিনি ইনস্টিটিউটটির যাবতীয় বর্তমান কার্যক্রম সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন। বিজেআরআইয়ের মহাপরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. আবদুল আউয়াল মন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। পরিচয়পর্ব শেষে বিজেআরআইয়ের বিজ্ঞানীরা তাদের কার্যক্রম বর্ণনা করেন এবং বিজেআরআইয়ের চলমান সব কার্যক্রম মন্ত্রীকে অবহিত করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ যে সোনার বাংলা নামে পরিচিত, বিশেষ করে আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যে জিনিসটা বেশি প্রচার করেছেন এবং বাংলাদেশকে তুলে ধরেছেন সোনার বাংলাদেশ হিসেবে, যা সোনালী আঁশ পাটকে কেন্দ্র করে হয়েছে। পাটের অর্থনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনা করে এবং আমাদের অর্থনীতিতে এর গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে পাটকে সোনালি আঁশ বলা হয়েছে এবং এটা বলে আজও আমরা গর্ববোধ করি, অহংকার করি। তিনি বলেন, পানির অভাবে আমরা সোনালি আঁশকে যেভাবে চিন্তা করি সেভাবে এখন আর হয় না। একসময় এটাকে অর্থকরী ফসল হিসেবে অনেক গুরুত্ব দেওয়া হতো। পাটের গুরুত্ব এখনো কমেনি। সম্প্রতি বহুমুখি ব্যবহারের কারণে বেসরকারি খাত পাটের দিকে এগিয়ে আসছে, ফলে গুরুত্বও বাড়ছে। প্রধানমন্ত্রী এ ব্যপারে খুবই আগ্রহী। কৃষিমন্ত্রী বলেন, বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন জাত উদ্ভাবন করেছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে বিজ্ঞানীদের যেভাবে সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়, কাজ করার পরিবেশ দেওয়া হয় এবং যে লজিস্টিক সাপোর্ট দেওয়া হয় সেটা আমাদের দেশে দেওয়া হয় না। এমনকি কৃষিকে গুরুত্বে দেওয়া হয় না। তিনি বলেন, আমাদের আগামীতে চ্যালেঞ্জ হলো মানুষের জীবন যাত্রার মান বাড়ানো। জীবনযাত্রার মান, মেধাবৃত্তি বাড়ানোর জন্য, সৃজনশীলতা বাড়ানোর জন্য আরো অনেক বহুমুখী খাবারের প্রয়োজন। পশ্চিমা বিশ্ব এখনও আবিষ্কারের দিক থেকে এগিয়ে। আপনারাও প্রযুক্তি উদ্ভাবন করবেন। পাট প্রাকৃতিক সম্পদ আমাদের আবহাওয়া, আমাদের জলবায়ুর অবস্থা এতই উপযুক্ত পাট উৎপাদনের জন্য, কিন্তু আমরা সেটা ব্যবহার করতে পারিনা। টেক্সটাইল ডিভিশনকে আরও বেশি উন্নত করা দরকার। ফলাফলকে বাড়ানো দরকার। মন্ত্রী বলেন, পাট গবেষণা বিজ্ঞানীরা আপনারা আপনাদের গবেষণাকে টেকনোলজিতে যদি রুপান্তর না করতে পারেন, বাণিজ্যিকীকরণ করতে না পারলে সেই গবেষণার কোন মূল্য নেই। সেটা আপনাদের সামনে চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করে যেতে হবে। সারা জাতি তাকিয়ে আছে পাট গবেষণার বিজ্ঞানীরা পাটের সোনালি সেই ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনবে। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন কারিগরি বিভাগের পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. মোসলেম উদ্দিন, জুট টেক্সটাইল বিভাগের পরিচালক ড. ফেরদৌস আরা দিলরুবা, কৃষি উইংয়ের পরিচালক কৃষিবিদ ড. নার্গীস আক্তার, প্রশাসন ও অর্থ বিভাগের পরিচালক কৃষিবিদ ড. এস এম মাহবুব আলীসহ বিভিন্ন কর্মকর্তারা।