ঢাকা ১২:২০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবি ছুটির পরও বুয়েটে চলছে পরীক্ষা বর্জন, আইনি লড়াইয়ে প্রশাসন টাইমের প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তির তালিকায় বাংলাদেশের মেরিনা ভোটের আগে ভারতের নির্দেশে রাজনৈতিক পোস্ট ব্লক করল এক্স ঋণ পেতে মরদেহ নিয়ে ব্যাংকে এলেন নারী প্রতিমন্ত্রী পলকের শ্যালকের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে ইসিতে আবেদন প্রথম ধাপের উপজেলা ভোটে বৈধ প্রার্থী ১৭৮৬ জন ভারতের জাতীয় নির্বাচন আজ শুরু নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‌্যাব মুখপাত্র মঈন বোতলজাত সয়াবিনের লিটারে দাম বাড়ল ৪ টাকা ২৪ এপ্রিল ব্যাংকক যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব প্রতিবেদক : থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে

পাটের অবৈধ মজুতে উৎপাদন ঝুঁকিতে মিলগুলো

  • আপডেট সময় : ১১:৪৬:০২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • ২৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : আইন অমান্য করে চলছে পাটের অবৈধ মজুত। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী অধিক মুনাফার আশায় বাজার থেকে কাঁচা পাট কিনে মজুত গড়ে তুলছেন। সরকারি কঠোর মনিটরিংয়ের অভাবে সুনির্দিষ্ট আইন থাকা সত্ত্বেও একদিকে চলছে এই মজুত, অন্যদিকে চলছে কাঁচা পাট রফতানি। এই দুই কারণে বেসরকারি পাটকলগুলোর প্রধান কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত পাটের বাজারে এক ধরনের সংকট তৈরি হয়েছে। এতে মিলগুলো রয়েছে উৎপাদন ঝুঁকিতে।
শুধু তা-ই নয়, পাটের অভাবে অনেক মিলে বন্ধ রয়েছে উৎপাদন। এই সংকট দূর করা না গেলে মহাসংকটে পড়বে এ খাতটি। একইসঙ্গে ঝুঁকিতে পড়বে পরোক্ষভাবে জড়িয়ে থাকা অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান। বেসরকারি পাটকলগুলোর সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানিয়েছে, দেশে কাঁচা পাটের সংকট তৈরি হয়েছে। এতে পাটকলগুলো উৎপাদন ঝুঁকিতে পড়েছে। পাটের অবৈধ মজুতদারদের বিরুদ্ধে দায়সারা অভিযান পরিচালনা করা হয় বলেই সুফল পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ তাদের। এ অবস্থায় পাট ও পাটজাত পণ্যের রফতানি আয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে কাঁচা পাটের সরবরাহ নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়েছেন তারা।
এদিকে পাট মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আইন অনুযায়ী লাইসেন্সবিহীন অসাধু ব্যবসায়ী, কাঁচা পাটের ডিলার বা আড়তদাররা ১ হাজার মণের বেশি কাঁচা পাট এক মাসের বেশি মজুত করতে পারবেন না। এ ছাড়াও লাইসেন্সবিহীন কাঁচা পাট ক্রয়-বিক্রয় ও মজুত থেকে বিরত রাখার বিষয়েও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভেজা পাট ক্রয়-বিক্রয় রোধ ও বাজারে কাঁচা পাটের সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য পাট অধিদফতর কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে বলে জানিয়েছে সরকারি সূত্র। কিন্তু এসব উদ্যোগ কাগজে কলমে, যা বাস্তবে অদৃশ্যমান বলেই অবৈধ মজুত ঠেকানো যাচ্ছে না- এমনটাই মনে করেন বেসরকারি উদ্যোক্তারা।
অন্যদিকে বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএমএ) ও বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের অভিযোগ, কাঁচা পাট রফতানি ও অবৈধ মজুতের ফলে বাজারে পাটের সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটেছে। এতে ঝুঁকিতে পড়েছে পাটকলগুলোর উৎপাদন। পাটের অভাবে অনেক মিল বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে রফতানি আয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেসরকারি পাটকল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবদুল বারিক খান বলেন, বাজারে চাহিদা অনুযায়ী কাঁচা পাট পাওয়া যাচ্ছে না। একদিকে রফতানি অব্যাহত রাখা, অন্যদিকে অবৈধ মজুত গড়ছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। এই দুই কারণে বাজারে চাহিদা অনুযায়ী কাঁচা পাট পাওয়া যাচ্ছে না। যা পাওয়া যাচ্ছে তার দামও বেশি। ফলে পাটপণ্যের উৎপাদন খরচের সঙ্গে দামও বাড়াতে হচ্ছে। এতে দেশি-বিদেশি ক্রেতারা এ পণ্য কিনতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। পাটের বিকল্প হিসেবে অন্য কাঁচামাল দিয়ে তৈরি পণ্য কম দামে কিনতে আগ্রহী হচ্ছেন তারা। এ কারণে বাজার নষ্ট হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে সরকারি পাটকলগুলোর মতো বেসরকারিগুলোও বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
তিনি জানান, বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের ৩৫টি দেশে কাঁচা পাট রফতানি হচ্ছে। বিশ্বের ৩৪টি দেশে সমুদ্রপথে জাহাজযোগে কাঁচা পাট রফতানি হলেও ভারতে হচ্ছে সড়ক পথে। দীর্ঘদিন ধরে বিজেএমএ’র পক্ষ থেকে এর বিরোধিতা করলেও সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে না। অবিলম্বে এর সুরাহা হওয়া প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি।
এদিকে পাটের উৎপাদন কম হওয়ায় সংকটে রয়েছেন পাটকল মালিকরা। এ পরিস্থিতিতে বেসরকারি পাটকল মালিকরা এক বছরের জন্য কাঁচা পাট রফতানি বন্ধ বা অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের পরামর্শ দিলেও তা আমলে নেয়নি সরকার। চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন কম হওয়ায় সরকারকে এ পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে বাৎসরিক পাটের উৎপাদন ৮৪ থেকে ৯০ লাখ বেল। এ ছাড়া বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় বলছে, বাংলাদেশে বাৎসরিক পাটের চাহিদা ৭০ লাখ বেল। কাজেই বছরে ১০ থেকে ১৫ লাখ বেল পাট রফতানি করলে অভ্যন্তরীণ বাজারে কোনও নেতিবাচক প্রভাব পড়ার কথা নয়। তবে এমন তথ্যের বিরোধিতা করে বেসরকারি পাটকল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবদুল বারিক খান জানান, এ তথ্য সঠিক নয়। কারণ উৎপাদন ও চাহিদার বিপরীতে সংকট হওয়ার কথা নয়, কিন্তু বাস্তব চিত্র উল্টো।
বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএমএ) ও বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএসএ) বলেছে, দেশে বিদ্যমান পাটকলের সংখ্যা ২৫৯টি। এসব পাটকলের বাৎসরিক চাহিদা ৫৫ থেকে ৬০ লাখ বেল কাঁচা পাট। এর বাইরে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদাও রয়েছে ১০ থেকে ১৫ লাখ বেল। বছরে কাঁচা পাট রফতানির পরিমাণও ৭ থেকে ১০ লাখ বেল। কিন্তু সরকারের উৎপাদন তথ্য সঠিক নয়। তারা আনুমানিক তথ্য দেয় বলে বাজারে পাটের সংকট সৃষ্টি হয়।
এ প্রসঙ্গে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেছেন, অভ্যন্তরীণ বাজারে প্রয়োজনীয় কাঁচা পাট সরবরাহ নিশ্চিত এবং পাট ও পাটপণ্য রফতানি বেগবান করতে ডিলার বা আড়তদাররা ১ হাজার মণের বেশি কাঁচা পাট এক মাসের বেশি মজুত করতে পারবেন না। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পাট অধিদফতরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, পাটের চাহিদা পূরণে প্রয়োজনীয় পাটবীজ সংগ্রহে আমদানি নির্ভরতা আর থাকবে না। পাটবীজ উৎপাদনের রোডম্যাপ বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। ধাপে ধাপে তা আগামী পাঁচ বছরে শতভাগ বাস্তবায়ন করা হবে। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় উচ্চ ফলনশীল পাটবীজ উৎপাদনে স্বয়ম্ভরতা অর্জন এবং মানসম্মত পাট উৎপাদনে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ ও সহায়তা প্রদানের লক্ষে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় ‘উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ’ শীর্ষক প্রকল্প চলমান রয়েছে। এটি ৪৬টি জেলার ২৩০ উপজেলায় বাস্তবায়ন হচ্ছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার লার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবি ছুটির পরও বুয়েটে চলছে পরীক্ষা বর্জন, আইনি লড়াইয়ে প্রশাসন

পাটের অবৈধ মজুতে উৎপাদন ঝুঁকিতে মিলগুলো

আপডেট সময় : ১১:৪৬:০২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : আইন অমান্য করে চলছে পাটের অবৈধ মজুত। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী অধিক মুনাফার আশায় বাজার থেকে কাঁচা পাট কিনে মজুত গড়ে তুলছেন। সরকারি কঠোর মনিটরিংয়ের অভাবে সুনির্দিষ্ট আইন থাকা সত্ত্বেও একদিকে চলছে এই মজুত, অন্যদিকে চলছে কাঁচা পাট রফতানি। এই দুই কারণে বেসরকারি পাটকলগুলোর প্রধান কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত পাটের বাজারে এক ধরনের সংকট তৈরি হয়েছে। এতে মিলগুলো রয়েছে উৎপাদন ঝুঁকিতে।
শুধু তা-ই নয়, পাটের অভাবে অনেক মিলে বন্ধ রয়েছে উৎপাদন। এই সংকট দূর করা না গেলে মহাসংকটে পড়বে এ খাতটি। একইসঙ্গে ঝুঁকিতে পড়বে পরোক্ষভাবে জড়িয়ে থাকা অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান। বেসরকারি পাটকলগুলোর সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানিয়েছে, দেশে কাঁচা পাটের সংকট তৈরি হয়েছে। এতে পাটকলগুলো উৎপাদন ঝুঁকিতে পড়েছে। পাটের অবৈধ মজুতদারদের বিরুদ্ধে দায়সারা অভিযান পরিচালনা করা হয় বলেই সুফল পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ তাদের। এ অবস্থায় পাট ও পাটজাত পণ্যের রফতানি আয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে কাঁচা পাটের সরবরাহ নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়েছেন তারা।
এদিকে পাট মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আইন অনুযায়ী লাইসেন্সবিহীন অসাধু ব্যবসায়ী, কাঁচা পাটের ডিলার বা আড়তদাররা ১ হাজার মণের বেশি কাঁচা পাট এক মাসের বেশি মজুত করতে পারবেন না। এ ছাড়াও লাইসেন্সবিহীন কাঁচা পাট ক্রয়-বিক্রয় ও মজুত থেকে বিরত রাখার বিষয়েও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভেজা পাট ক্রয়-বিক্রয় রোধ ও বাজারে কাঁচা পাটের সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য পাট অধিদফতর কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে বলে জানিয়েছে সরকারি সূত্র। কিন্তু এসব উদ্যোগ কাগজে কলমে, যা বাস্তবে অদৃশ্যমান বলেই অবৈধ মজুত ঠেকানো যাচ্ছে না- এমনটাই মনে করেন বেসরকারি উদ্যোক্তারা।
অন্যদিকে বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএমএ) ও বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের অভিযোগ, কাঁচা পাট রফতানি ও অবৈধ মজুতের ফলে বাজারে পাটের সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটেছে। এতে ঝুঁকিতে পড়েছে পাটকলগুলোর উৎপাদন। পাটের অভাবে অনেক মিল বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে রফতানি আয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেসরকারি পাটকল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবদুল বারিক খান বলেন, বাজারে চাহিদা অনুযায়ী কাঁচা পাট পাওয়া যাচ্ছে না। একদিকে রফতানি অব্যাহত রাখা, অন্যদিকে অবৈধ মজুত গড়ছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। এই দুই কারণে বাজারে চাহিদা অনুযায়ী কাঁচা পাট পাওয়া যাচ্ছে না। যা পাওয়া যাচ্ছে তার দামও বেশি। ফলে পাটপণ্যের উৎপাদন খরচের সঙ্গে দামও বাড়াতে হচ্ছে। এতে দেশি-বিদেশি ক্রেতারা এ পণ্য কিনতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। পাটের বিকল্প হিসেবে অন্য কাঁচামাল দিয়ে তৈরি পণ্য কম দামে কিনতে আগ্রহী হচ্ছেন তারা। এ কারণে বাজার নষ্ট হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে সরকারি পাটকলগুলোর মতো বেসরকারিগুলোও বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
তিনি জানান, বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের ৩৫টি দেশে কাঁচা পাট রফতানি হচ্ছে। বিশ্বের ৩৪টি দেশে সমুদ্রপথে জাহাজযোগে কাঁচা পাট রফতানি হলেও ভারতে হচ্ছে সড়ক পথে। দীর্ঘদিন ধরে বিজেএমএ’র পক্ষ থেকে এর বিরোধিতা করলেও সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে না। অবিলম্বে এর সুরাহা হওয়া প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি।
এদিকে পাটের উৎপাদন কম হওয়ায় সংকটে রয়েছেন পাটকল মালিকরা। এ পরিস্থিতিতে বেসরকারি পাটকল মালিকরা এক বছরের জন্য কাঁচা পাট রফতানি বন্ধ বা অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের পরামর্শ দিলেও তা আমলে নেয়নি সরকার। চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন কম হওয়ায় সরকারকে এ পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে বাৎসরিক পাটের উৎপাদন ৮৪ থেকে ৯০ লাখ বেল। এ ছাড়া বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় বলছে, বাংলাদেশে বাৎসরিক পাটের চাহিদা ৭০ লাখ বেল। কাজেই বছরে ১০ থেকে ১৫ লাখ বেল পাট রফতানি করলে অভ্যন্তরীণ বাজারে কোনও নেতিবাচক প্রভাব পড়ার কথা নয়। তবে এমন তথ্যের বিরোধিতা করে বেসরকারি পাটকল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবদুল বারিক খান জানান, এ তথ্য সঠিক নয়। কারণ উৎপাদন ও চাহিদার বিপরীতে সংকট হওয়ার কথা নয়, কিন্তু বাস্তব চিত্র উল্টো।
বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএমএ) ও বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএসএ) বলেছে, দেশে বিদ্যমান পাটকলের সংখ্যা ২৫৯টি। এসব পাটকলের বাৎসরিক চাহিদা ৫৫ থেকে ৬০ লাখ বেল কাঁচা পাট। এর বাইরে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদাও রয়েছে ১০ থেকে ১৫ লাখ বেল। বছরে কাঁচা পাট রফতানির পরিমাণও ৭ থেকে ১০ লাখ বেল। কিন্তু সরকারের উৎপাদন তথ্য সঠিক নয়। তারা আনুমানিক তথ্য দেয় বলে বাজারে পাটের সংকট সৃষ্টি হয়।
এ প্রসঙ্গে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেছেন, অভ্যন্তরীণ বাজারে প্রয়োজনীয় কাঁচা পাট সরবরাহ নিশ্চিত এবং পাট ও পাটপণ্য রফতানি বেগবান করতে ডিলার বা আড়তদাররা ১ হাজার মণের বেশি কাঁচা পাট এক মাসের বেশি মজুত করতে পারবেন না। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পাট অধিদফতরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, পাটের চাহিদা পূরণে প্রয়োজনীয় পাটবীজ সংগ্রহে আমদানি নির্ভরতা আর থাকবে না। পাটবীজ উৎপাদনের রোডম্যাপ বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। ধাপে ধাপে তা আগামী পাঁচ বছরে শতভাগ বাস্তবায়ন করা হবে। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় উচ্চ ফলনশীল পাটবীজ উৎপাদনে স্বয়ম্ভরতা অর্জন এবং মানসম্মত পাট উৎপাদনে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ ও সহায়তা প্রদানের লক্ষে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় ‘উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ’ শীর্ষক প্রকল্প চলমান রয়েছে। এটি ৪৬টি জেলার ২৩০ উপজেলায় বাস্তবায়ন হচ্ছে।