ঢাকা ০৬:৩১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবি ছুটির পরও বুয়েটে চলছে পরীক্ষা বর্জন, আইনি লড়াইয়ে প্রশাসন টাইমের প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তির তালিকায় বাংলাদেশের মেরিনা ভোটের আগে ভারতের নির্দেশে রাজনৈতিক পোস্ট ব্লক করল এক্স ঋণ পেতে মরদেহ নিয়ে ব্যাংকে এলেন নারী প্রতিমন্ত্রী পলকের শ্যালকের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে ইসিতে আবেদন প্রথম ধাপের উপজেলা ভোটে বৈধ প্রার্থী ১৭৮৬ জন ভারতের জাতীয় নির্বাচন আজ শুরু নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‌্যাব মুখপাত্র মঈন বোতলজাত সয়াবিনের লিটারে দাম বাড়ল ৪ টাকা ২৪ এপ্রিল ব্যাংকক যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব প্রতিবেদক : থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে

পাকিস্তান থেকে শুঁটকির বস্তায় আসতো ভারতীয় জাল রুপি

  • আপডেট সময় : ০২:৫৬:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • ৩৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ফজলুর রহমান। থাকেন পাকিস্তানের করাচিতে। পাকিস্তানকেন্দ্রিক মাফিয়াদের কাছ থেকে ভারতীয় জাল রুপি সংগ্রহ করে কখনও শুঁটকি মাছ, মোজাইক পাথর ও অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রীর বস্তায় সমুদ্রপথে বাংলাদেশ পাঠাতেন। এ কাজে তাকে সহযোগিতা করতো তার ভাই সাইদুর রহমান, নোমানুর রহমান এবং ভগ্নিপতি শফিকুর রহমান। আমদানিকারকদের সঙ্গে মিলে পাকিস্তানের করাচি বন্দর থেকে শ্রীলঙ্কা হয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনারের মাধ্যমে এগুলো আনা হতো।
পরবর্তীতে সেই জাল রুপি খালাস করে গোডাউনে মজুত করা, বিভিন্ন মাধ্যমে তা ডিলারদের মাধ্যমে ডিস্ট্রিবিউশন করা এবং বিক্রয়লব্ধ জাল রুপি বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে সংগ্রহ করে পরবর্তীতে হুন্ডিতে করে পাকিস্তানের পাচার করা হতো।
গতকাল বুধবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবি। বাংলাদেশের রুট ব্যবহার করে ভারতীয় রুপিসহ অন্য কোনও বিদেশি জাল নোট পাচার করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন ডিবি প্রধান এ কে এম হাফিজ আক্তার।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ও মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ডেমরা ও হাজারীবাগ এলাকা থেকে ভারতীয় জাল নোট তৈরির আন্তর্জাতিক চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করো হয়। গ্রেফতারকৃতারা হলো- আমানুল্লাহ ভূঁইয়া (৫২), কাজল রেখা (৩৭), ইয়াসিন আরাফাত কেরামত (৩৩) ও নোমানুর রহমান (৩১)।
তাদের মধ্যে গ্রেফতার আমান উল্লাহ ভূঁইয়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সরকারি গাড়ি চালক। গ্রেফতারকৃত কাজল রেখা আমান উল্লাহ ভূঁইয়ার দ্বিতীয় স্ত্রী। গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে ১৫ লাখ ভারতীয় রুপির জাল সুপার নোট এবং কয়েকটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
গ্রেফতাকৃররা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তারা দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তান থেকে আন্তর্জাতিক চক্রের মাধ্যমে ভারতীয় জাল রুপির সুপার নোট (৫০০/১০০০) কৌশলে সংগ্রহ করে বিভিন্ন পণ্যের ভিতর, ব্যক্তি বা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলাকা দিয়ে পাচার করে আসছিল।
ডিবি প্রধান এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, গত বছরের নভেম্বর মাসে সাইদুর রহমান ও ইম্পোর্টার তালেব নামে ও ফাতেমা আক্তার নামে তিন জনকে ৭ কোটি ৩৫ লাখ জাল ভারতীয় রুপিসহ গ্রেফতার করা হয়। এ বিষয়ে একটি মামলা হয় খিলক্ষেত থানায়। পরে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় ডিবি। এই মামলায় গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এই চক্রের অন্যতম সদস্য নোমানুর রহমান খানের সন্ধান পায় ডিবি। গত সোমবার ডিবি গুলশান বিভাগের একাধিক টিম পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোড এলাকা থেকে নোমানুর রহমান খানকে গ্রেফতার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নোমান জানায়, পাকিস্তানে অবস্থানকারী তার ভাই মো. ফজলুর রহমান ওরফে ফরিদ বিভিন্ন সময়ে পাকিস্তান থেকে আকাশ ও সমুদ্রপথে বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী ও ভারতীয় জাল রুপির সুপার নোট (৫০০/১০০০) বিভিন্ন ব্যক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রেরণ করে আসছে।
নোমানের দেওয়া তথ্যে মঙ্গলবার রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ২১ নম্বর মনেশ্বর রোড থেকে ইয়াসির আরাফাত ওরফে কেরামত এবং আমান উল্লাহ ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে ৬ লাখ করে মোট ১২ লাখ জাল রুপি জব্দ করা হয়। একই দিনে কাজল রেখাকে হাজারীবাগ এলাকা থেকে ৩ লাখ জাল রুপিসহ গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতাররা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তারা দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তান থেকে আন্তর্জাতিক চক্রের মাধ্যমে ভারতীয় জাল রুপির সুপার নোট (৫০০/১০০০) কৌশলে সংগ্রহ করে বিভিন্ন পণ্যের ভেতর, ব্যক্তি বা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলাকা দিয়ে পাচার করে আসছিল।

ডিবি প্রধান আরও বলেন, জাল রুপি পাচারকারী এ চক্রের কেন্দ্রে আছে মূলত দুটি পরিবার। মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থানাধীন একটি পরিবার। এই পরিবারের অধিকাংশ সদস্য একসময় পাকিস্তানের অবস্থান করতো। বর্তমানে এই পরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্য ফজলুর রহমান পাকিস্তানের করাচিতে অবস্থান করছে। সে পাকিস্তান কেন্দ্রিক মাফিয়াদের কাছ থেকে উন্নত মানের জাল রুপি সংগ্রহ করে কখনও শুঁটকি, কখনও মোজাইক পাথর ও অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রীর বস্তার মধ্যে করে সমুদ্রপথে বাংলাদেশ পাঠায়। এ কাজে তাকে সহযোগিতা করতো তার ভাই সাইদুর রহমান, নোমানুর রহমান এবং ভগ্নিপতি শফিকুর রহমান।

ইম্পোর্টারদের সঙ্গে মিলে পাকিস্তানের করাচি বন্দর থেকে শ্রীলঙ্কা হয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনারের মাধ্যমে আনা হতো। পরে সেই জাল রুপি খালাস করে গোডাউনে মজুত করা, বিভিন্ন মাধ্যমে তা ডিলারদের মধ্যে ডিস্ট্রিবিউশন করা এবং বিক্রয়লব্ধ জাল রুপি বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে সংগ্রহ করে পরবর্তীতে হুন্ডিতে করে পাকিস্তানের পাচার করতো।

তিনি বলেন, যেহেতু এটি আন্তর্জাতিক চক্র, সেহেতু এই চক্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন পাকিস্তানি নাগরিকের নাম পেয়েছি। এই চক্রের দেশি-বিদেশি সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের চেষ্টা আমরা করছি। এছাড়া ভারতীয় জাল রুপিসহ অন্য কোনও বিদেশি মুদ্রা পাচারে বাংলাদেশের রোড ব্যবহৃত হয় সেজন্য আমরা সচেষ্ট আছি।

জব্দ হওয়া জাল নোটগুলোকে কেন ‘সুপার জাল নোট’ বলা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই নোটগুলো মূলত ভারত থেকে আসেনি। নোটগুলো এসেছে পাকিস্তান থেকে। আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছি এগুলো জাল নোট কিন্তু এতটাই সূক্ষ্ম যে আসল নোটের প্রায় কাছাকাছি। এই জাল নোট চক্রের সঙ্গে জঙ্গিদের কোনও সংশ্লিষ্টতা ডিবি তদন্তে পেয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ডিবি প্রধান বলেন, জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা আমরা পাইনি। তারা জাল নোটের বিনিময় অস্ত্র-মাদক ও চোরাই মোবাইল দেশে নিয়ে আসতে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার লার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবি ছুটির পরও বুয়েটে চলছে পরীক্ষা বর্জন, আইনি লড়াইয়ে প্রশাসন

পাকিস্তান থেকে শুঁটকির বস্তায় আসতো ভারতীয় জাল রুপি

আপডেট সময় : ০২:৫৬:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : ফজলুর রহমান। থাকেন পাকিস্তানের করাচিতে। পাকিস্তানকেন্দ্রিক মাফিয়াদের কাছ থেকে ভারতীয় জাল রুপি সংগ্রহ করে কখনও শুঁটকি মাছ, মোজাইক পাথর ও অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রীর বস্তায় সমুদ্রপথে বাংলাদেশ পাঠাতেন। এ কাজে তাকে সহযোগিতা করতো তার ভাই সাইদুর রহমান, নোমানুর রহমান এবং ভগ্নিপতি শফিকুর রহমান। আমদানিকারকদের সঙ্গে মিলে পাকিস্তানের করাচি বন্দর থেকে শ্রীলঙ্কা হয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনারের মাধ্যমে এগুলো আনা হতো।
পরবর্তীতে সেই জাল রুপি খালাস করে গোডাউনে মজুত করা, বিভিন্ন মাধ্যমে তা ডিলারদের মাধ্যমে ডিস্ট্রিবিউশন করা এবং বিক্রয়লব্ধ জাল রুপি বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে সংগ্রহ করে পরবর্তীতে হুন্ডিতে করে পাকিস্তানের পাচার করা হতো।
গতকাল বুধবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবি। বাংলাদেশের রুট ব্যবহার করে ভারতীয় রুপিসহ অন্য কোনও বিদেশি জাল নোট পাচার করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন ডিবি প্রধান এ কে এম হাফিজ আক্তার।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ও মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ডেমরা ও হাজারীবাগ এলাকা থেকে ভারতীয় জাল নোট তৈরির আন্তর্জাতিক চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করো হয়। গ্রেফতারকৃতারা হলো- আমানুল্লাহ ভূঁইয়া (৫২), কাজল রেখা (৩৭), ইয়াসিন আরাফাত কেরামত (৩৩) ও নোমানুর রহমান (৩১)।
তাদের মধ্যে গ্রেফতার আমান উল্লাহ ভূঁইয়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সরকারি গাড়ি চালক। গ্রেফতারকৃত কাজল রেখা আমান উল্লাহ ভূঁইয়ার দ্বিতীয় স্ত্রী। গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে ১৫ লাখ ভারতীয় রুপির জাল সুপার নোট এবং কয়েকটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
গ্রেফতাকৃররা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তারা দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তান থেকে আন্তর্জাতিক চক্রের মাধ্যমে ভারতীয় জাল রুপির সুপার নোট (৫০০/১০০০) কৌশলে সংগ্রহ করে বিভিন্ন পণ্যের ভিতর, ব্যক্তি বা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলাকা দিয়ে পাচার করে আসছিল।
ডিবি প্রধান এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, গত বছরের নভেম্বর মাসে সাইদুর রহমান ও ইম্পোর্টার তালেব নামে ও ফাতেমা আক্তার নামে তিন জনকে ৭ কোটি ৩৫ লাখ জাল ভারতীয় রুপিসহ গ্রেফতার করা হয়। এ বিষয়ে একটি মামলা হয় খিলক্ষেত থানায়। পরে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় ডিবি। এই মামলায় গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এই চক্রের অন্যতম সদস্য নোমানুর রহমান খানের সন্ধান পায় ডিবি। গত সোমবার ডিবি গুলশান বিভাগের একাধিক টিম পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোড এলাকা থেকে নোমানুর রহমান খানকে গ্রেফতার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নোমান জানায়, পাকিস্তানে অবস্থানকারী তার ভাই মো. ফজলুর রহমান ওরফে ফরিদ বিভিন্ন সময়ে পাকিস্তান থেকে আকাশ ও সমুদ্রপথে বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী ও ভারতীয় জাল রুপির সুপার নোট (৫০০/১০০০) বিভিন্ন ব্যক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রেরণ করে আসছে।
নোমানের দেওয়া তথ্যে মঙ্গলবার রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ২১ নম্বর মনেশ্বর রোড থেকে ইয়াসির আরাফাত ওরফে কেরামত এবং আমান উল্লাহ ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে ৬ লাখ করে মোট ১২ লাখ জাল রুপি জব্দ করা হয়। একই দিনে কাজল রেখাকে হাজারীবাগ এলাকা থেকে ৩ লাখ জাল রুপিসহ গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতাররা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তারা দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তান থেকে আন্তর্জাতিক চক্রের মাধ্যমে ভারতীয় জাল রুপির সুপার নোট (৫০০/১০০০) কৌশলে সংগ্রহ করে বিভিন্ন পণ্যের ভেতর, ব্যক্তি বা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলাকা দিয়ে পাচার করে আসছিল।

ডিবি প্রধান আরও বলেন, জাল রুপি পাচারকারী এ চক্রের কেন্দ্রে আছে মূলত দুটি পরিবার। মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থানাধীন একটি পরিবার। এই পরিবারের অধিকাংশ সদস্য একসময় পাকিস্তানের অবস্থান করতো। বর্তমানে এই পরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্য ফজলুর রহমান পাকিস্তানের করাচিতে অবস্থান করছে। সে পাকিস্তান কেন্দ্রিক মাফিয়াদের কাছ থেকে উন্নত মানের জাল রুপি সংগ্রহ করে কখনও শুঁটকি, কখনও মোজাইক পাথর ও অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রীর বস্তার মধ্যে করে সমুদ্রপথে বাংলাদেশ পাঠায়। এ কাজে তাকে সহযোগিতা করতো তার ভাই সাইদুর রহমান, নোমানুর রহমান এবং ভগ্নিপতি শফিকুর রহমান।

ইম্পোর্টারদের সঙ্গে মিলে পাকিস্তানের করাচি বন্দর থেকে শ্রীলঙ্কা হয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনারের মাধ্যমে আনা হতো। পরে সেই জাল রুপি খালাস করে গোডাউনে মজুত করা, বিভিন্ন মাধ্যমে তা ডিলারদের মধ্যে ডিস্ট্রিবিউশন করা এবং বিক্রয়লব্ধ জাল রুপি বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে সংগ্রহ করে পরবর্তীতে হুন্ডিতে করে পাকিস্তানের পাচার করতো।

তিনি বলেন, যেহেতু এটি আন্তর্জাতিক চক্র, সেহেতু এই চক্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন পাকিস্তানি নাগরিকের নাম পেয়েছি। এই চক্রের দেশি-বিদেশি সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের চেষ্টা আমরা করছি। এছাড়া ভারতীয় জাল রুপিসহ অন্য কোনও বিদেশি মুদ্রা পাচারে বাংলাদেশের রোড ব্যবহৃত হয় সেজন্য আমরা সচেষ্ট আছি।

জব্দ হওয়া জাল নোটগুলোকে কেন ‘সুপার জাল নোট’ বলা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই নোটগুলো মূলত ভারত থেকে আসেনি। নোটগুলো এসেছে পাকিস্তান থেকে। আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছি এগুলো জাল নোট কিন্তু এতটাই সূক্ষ্ম যে আসল নোটের প্রায় কাছাকাছি। এই জাল নোট চক্রের সঙ্গে জঙ্গিদের কোনও সংশ্লিষ্টতা ডিবি তদন্তে পেয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ডিবি প্রধান বলেন, জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা আমরা পাইনি। তারা জাল নোটের বিনিময় অস্ত্র-মাদক ও চোরাই মোবাইল দেশে নিয়ে আসতে।