আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানে সন্ত্রাসবিরোধী ব্যাপক অভিযান চালিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী। এতে ১৫ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। এছাড়া অভিযানকালে প্রাণ হারিয়েছেন দেশটির চারজন সেনাসদস্য। নিহতদের মধ্যে একজন তরুণ সেনা কর্মকর্তাও রয়েছেন।
দেশটির খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে দুটি পৃথক অভিযানে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে। রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, শনিবার খাইবার পাখতুনখাওয়া (কেপি) প্রদেশে দুটি পৃথক লড়াইয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একজন তরুণ অফিসার এবং তিনজন সৈন্য মারা গেছেন এবং ১৫ খোয়ারিজ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছেন।
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মিডিয়া উইং ইন্টার সার্ভিস পাবলিক রিলেশনস (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে বলেছে, গোয়েন্দা তথ্যে খোয়ারিজ সন্ত্রাসীদের উপস্থিতির খবর পেয়ে ডেরা ইসমাইল খান জেলার হাথালা এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান চালায়। অভিযান চলাকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সৈন্যরা কার্যকরভাবে সন্ত্রাসীদের অবস্থানে পৌঁছাতে সক্ষম হয় এবং খোয়ারিজ সন্ত্রাসীদের নেতা ফরমান ওরফে সাকিব, খারজি আমানুল্লাহ ওরফে তুরি, খারজি সাঈদ ওরফে লিয়াকত এবং খারজি বিলালসহ ৯ জন খোয়ারিজকে হত্যা করা হয়।
নিহত এসব খোয়ারিজ সন্ত্রাসী ওই এলাকায় অসংখ্য সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিল এবং একইসঙ্গে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায়ও ছিল। এছাড়া উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলার মিরান শাহে পরিচালিত অন্য একটি অভিযানে, ছয়জন খোয়ারিজ সন্ত্রাসীকে হত্যা করে নিরাপত্তা বাহিনী।
তকে এই অভিযানে তীব্র গুলি বিনিময়ের সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট মুহাম্মদ হাসান আরশাফ নিহত হন। এসময় আরও তিনজন সেনাসদস্য প্রাণ হারান। তারা হচ্ছেন- নায়েব সুবেদার মুহাম্মদ বিলাল, সিপাহী ফারহাত উল্লাহ এবং সিপাহী হিমত খান।
আইএসপিআর বলেছে, পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী সন্ত্রাসবাদের হুমকি নিশ্চিহ্ন করার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং সাহসী সৈন্যদের এই ধরনের আত্মত্যাগ আমাদের সংকল্পকে আরও শক্তিশালী করবে।
এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত ৫: পাকিস্তানের পেশোয়ারে বন্দুকধারীর গুলিতে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ভোরে শহরের বাদাবর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ভোরে মাশোখেল এলাকায় একটি গাড়ির ওপর অতর্কিত গুলি চালায় অভিযুক্ত। এতে ঘটনাস্থলেই পাঁচজন প্রাণ হারান।
পুলিশ জানিয়েছে, হামলার কারণ ব্যক্তিগত বিরোধ। অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে।
গত মাসেও পেশোয়ারসহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যক্তিগত বিরোধের জেরে বেশ কয়েকটি প্রাণঘাতী হামলার ঘটনা ঘটেছিল। সেসময় তেহকাল এলাকায় দুই পক্ষের গোলাগুলিতে পাঁচজন নিহত ও ছয়জন আহত হন। পুলিশের দাবি, এই সংঘর্ষও ব্যক্তিগত শত্রুতার ফল।
এছাড়া, দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের ওয়ানায় পুরোনো শত্রুতার জেরে পৃথক দুটি ঘটনায় এক পুলিশ সদস্যসহ তিনজন নিহত হন।
অন্যদিকে, সাইদু শরীফের গুলকাদা এলাকায় এক সিনিয়র আইনজীবী ও তার ভাইকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সবশেষ, গত বুধবার সন্ধ্যায় করাচির বালদিয়া-৮ এলাকায় এক ৬৫ বছর বয়সী আফগান নাগরিককে গুলি করে হত্যা করা হয়।
সাঈদাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (এসএইচও) ইদ্রিস বাঙ্গাশ জানান, নিহত আলাউদ্দিন নামাজ পড়ে মসজিদের ভেতরে কুরআন তেলাওয়াত করছিলেন। এসময় ফোন বাজলে তিনি বাইরে যান। তখন মোটরসাইকেলে আসা দুই বন্দুকধারী তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। আলাউদ্দিনকে গুরুতর আহত অবস্থায় ডা. রুথ ফাউ সিভিল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশের ধারণা, এটি ব্যক্তিগত বিরোধের জেরে ঘটে থাকতে পারে। সূত্র: ডন

























