ঢাকা ০৫:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫

পাকিস্তানের সাবেক স্বৈরশাসক পারভেজ মোশাররফের মৃত্যু

  • আপডেট সময় : ০২:০৫:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • ১০৮ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট জেনারেল (অব.) পারভেজ মোশাররফ মারা গেছেন। সাবেক এ স্বৈরশাসক দুবাইয়ের একটি মার্কিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭৯ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। গতকাল রোববার তার পরিবার এ তথ্য নিশ্চিত করে। পারভেজ মোশাররফ ১৯৪৩ সালের ১১ আগস্ট ব্রিটিশ ভারতের দিল্লিতে জন্মগ্রহণ করেন। দেশভাগের পর তার পরিবার পাকিস্তানে পাড়ি জমায়। পারভেজ মোশাররফ করাচির সেন্ট প্যাট্রিক হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও করাচির ফোরম্যান ক্রিশ্চিয়ান কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬১ সালে তিনি পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমিতে যোগ দেন ও ১৯৬৪ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশনড কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। পারভেজ মোশাররফ ১৯৯৮ সালে জেনারেল পদে উন্নীত হন ও পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের দায়িত্ব পান। সেনাপ্রধানের দায়িত্ব পাওয়ার এক বছর পর ১৯৯৯ সালের ১২ অক্টোবর অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পাকিস্তানের ক্ষমতা দখল করেন মোশাররফ। পরবর্তী সময়ে ২০০২ সালে একটি গণভোটের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ও ২০০৮ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে বহাল ছিলেন। তবে এর মধ্যে ২০০৪ সালে ১৭তম সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে পুনরায় প্রেসিডেন্ট হন মোশাররফ। পাকিস্তানের ইতিহাসে তিনিই সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী প্রেসিডেন্ট। তার শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্র নাইন/ইলেভেন ঘটার পর পাকিস্তানকে ফ্রন্টলাইন মিত্র হওয়ার প্রস্তাব দেয় তৎকালীন মার্কিন সরকার। সে প্রস্তাব গ্রহণ করেছিলেন মোশাররফ। মোশাররফ ২০০৭ সালের নভেম্বরে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের পদচ্যুত করার কারণে সংবিধানবিরোধী পদক্ষেপের জন্যও পরিচিত। তার ওই সিদ্ধান্ত আইনজীবী আন্দোলনের সূচনা করেছিল, যা বিচারব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের আন্দোলন নামেও পরিচিত। সে ধারাবাহিকতকায় রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃত্বে আন্দোলনের মুখে ২০০৮ সালের ১৮ আগস্ট পদত্যাগ করতে বাধ্য হন পারভেজ মোশাররফ। পরবর্তীকালে তাকে বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করা হয়। সে মামলায় পারভেজ মোশাররফকে মৃত্যুদ-াদেশ দিয়েছিলেন দেশটির একটি আদালত। যদিও পরে সে রায় বাতিল করা হয়েছিল। ২০০৭ সালে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোকে হত্যার অভিযোগের মধ্যেই মোশাররফ বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে দুবাইতে বসবাস করে আসছিলেন। সেখানে তিনি অ্যামাইলয়েডোসিসের জন্য চিকিৎসা নিয়েছেন। এ রোগটি সংযোগকারী টিস্যু ও অঙ্গগুলোকে প্রভাবিত করে শরীরের স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা দেয়।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পাকিস্তানের সাবেক স্বৈরশাসক পারভেজ মোশাররফের মৃত্যু

আপডেট সময় : ০২:০৫:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

প্রত্যাশা ডেস্ক : পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট জেনারেল (অব.) পারভেজ মোশাররফ মারা গেছেন। সাবেক এ স্বৈরশাসক দুবাইয়ের একটি মার্কিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭৯ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। গতকাল রোববার তার পরিবার এ তথ্য নিশ্চিত করে। পারভেজ মোশাররফ ১৯৪৩ সালের ১১ আগস্ট ব্রিটিশ ভারতের দিল্লিতে জন্মগ্রহণ করেন। দেশভাগের পর তার পরিবার পাকিস্তানে পাড়ি জমায়। পারভেজ মোশাররফ করাচির সেন্ট প্যাট্রিক হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও করাচির ফোরম্যান ক্রিশ্চিয়ান কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬১ সালে তিনি পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমিতে যোগ দেন ও ১৯৬৪ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশনড কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। পারভেজ মোশাররফ ১৯৯৮ সালে জেনারেল পদে উন্নীত হন ও পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের দায়িত্ব পান। সেনাপ্রধানের দায়িত্ব পাওয়ার এক বছর পর ১৯৯৯ সালের ১২ অক্টোবর অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পাকিস্তানের ক্ষমতা দখল করেন মোশাররফ। পরবর্তী সময়ে ২০০২ সালে একটি গণভোটের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ও ২০০৮ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে বহাল ছিলেন। তবে এর মধ্যে ২০০৪ সালে ১৭তম সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে পুনরায় প্রেসিডেন্ট হন মোশাররফ। পাকিস্তানের ইতিহাসে তিনিই সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী প্রেসিডেন্ট। তার শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্র নাইন/ইলেভেন ঘটার পর পাকিস্তানকে ফ্রন্টলাইন মিত্র হওয়ার প্রস্তাব দেয় তৎকালীন মার্কিন সরকার। সে প্রস্তাব গ্রহণ করেছিলেন মোশাররফ। মোশাররফ ২০০৭ সালের নভেম্বরে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের পদচ্যুত করার কারণে সংবিধানবিরোধী পদক্ষেপের জন্যও পরিচিত। তার ওই সিদ্ধান্ত আইনজীবী আন্দোলনের সূচনা করেছিল, যা বিচারব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের আন্দোলন নামেও পরিচিত। সে ধারাবাহিকতকায় রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃত্বে আন্দোলনের মুখে ২০০৮ সালের ১৮ আগস্ট পদত্যাগ করতে বাধ্য হন পারভেজ মোশাররফ। পরবর্তীকালে তাকে বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করা হয়। সে মামলায় পারভেজ মোশাররফকে মৃত্যুদ-াদেশ দিয়েছিলেন দেশটির একটি আদালত। যদিও পরে সে রায় বাতিল করা হয়েছিল। ২০০৭ সালে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোকে হত্যার অভিযোগের মধ্যেই মোশাররফ বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে দুবাইতে বসবাস করে আসছিলেন। সেখানে তিনি অ্যামাইলয়েডোসিসের জন্য চিকিৎসা নিয়েছেন। এ রোগটি সংযোগকারী টিস্যু ও অঙ্গগুলোকে প্রভাবিত করে শরীরের স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা দেয়।