ঢাকা ১০:২৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫

পাকিস্তানের সবচেয়ে পুরোনো বৌদ্ধমন্দির আবিষ্কার

  • আপডেট সময় : ১২:৪৭:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২১
  • ৮৮ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের সোয়াত উপত্যকায় দেশটির সবচেয়ে প্রাচীন এক বৌদ্ধমন্দির আবিষ্কার করেছেন একদল প্রতœতত্ত্ববিদ। খবর ডনের। ভেনিসের কা ফসকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও ইতালির প্রতœতত্ত্ববিদের মিশন ও খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রাদেশিক প্রতœতত্ত্ব ও জাদুঘর বিভাগ যৌথভাবে এ কাজ করে। ইতালির প্রতœতত্ত্ববিদদের মিশনের পরিচালক অধ্যাপক লুকা এম ওলিভেরি জানিয়েছেন, বৌদ্ধদের এ স্থাপত্য মৌর্য যুগের। সম্ভবত খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে মন্দিরটি নির্মাণ করা হয়েছিল। খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দীতে ওই অঞ্চলে বড় ধরনের অবকাঠামোর নির্মাণকাজের কথা জানা যায়। আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের সময় গ্রিকরা পাকিস্তানের সোয়াত উপত্যকার বাজিরা নামের ওই এলাকায় আসে। সেখানে আসার পর তারা শহরটিকে তাদের দুর্গ হিসেবে গড়ে তোলে। তখন তারা মৌর্য শাসনামলে সম্রাট অশোকের সময়ে নির্মিত অবকাঠামোগুলোর খোঁজ পায়। খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে রাজা মেনান্দার পরবর্তী সময়ে স্থাপত্যকীর্তিটির আয়তন বাড়ানো হয়। তৃতীয় ও চতুর্থ শতাব্দী পর্যন্ত মন্দিরটির কার্যক্রম চলে। তবে চতুর্থ শতাব্দীতে এক ভূমিকম্পে বাজিরার কুশান শহরটি প্রায় ধ্বংস হয়ে যায়। এ সময় মন্দিরটি পরিত্যক্ত হয়ে যায়। অধ্যাপক লুকা বলছেন, বিস্ময়করভাবে এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার। কারণ, এতে গান্ধারে বৌদ্ধের অবয়বের নতুন রূপ প্রকাশ পেয়েছে। পাকিস্তানের টাক্সিলার সিরকাপ শহরে এ ধরনের মাত্র একটি মন্দির পাওয়া গেছে । তিনি আরও বলেন, নতুন করে এ মন্দির আবিষ্কার বৈপ্লবিক। কারণ, এটা প্রমাণ করে খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দী থেকে সোয়াত উপত্যকায় বৌদ্ধদের উপস্থিতি ছিল। এ ছাড়া এ আবিষ্কারের মাধ্যমে ইন্দো-গ্রিক শাসক মেনান্দার ও তাঁর উত্তরসূরিরা যে বৌদ্ধ ধর্মের সমর্থক ছিলেন, তার প্রমাণ পাওয়া যায়।
প্রতœতত্ত্ববিদেরা শুধু চার মিটার দৈর্ঘ্যের এই বৌদ্ধমন্দির আবিষ্কার করেননি, একই সঙ্গে প্রাচীন একটি রাস্তাও আবিষ্কার করেছেন। এর মধ্য দিয়ে ওই শহরের অন্যতম প্রধান প্রবেশদ্বার আবিষ্কার করা হয়েছে। পাকিস্তানের প্রতœতত্ত্ব বিভাগের পরিচালক আবদুল সামাদ খান বলেন, নানা কারণে নতুন এ আবিষ্কার গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্য দিয়ে সে সময়ের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, পরমতসহিষ্ণুতা ও বিভিন্ন সংস্কৃতির বিকাশের বিষয়টি উঠে এসেছে। তিনি বলেন, ‘খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশ ও সোয়াত উপত্যকা প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শনে বেশ সমৃদ্ধ। এ পর্যন্ত প্রতœতত্ত্ববিদেরা মাত্র এর ৫ শতাংশ আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছেন। বাকি ৯৫ শতাংশ এখনো অনাবিষ্কৃত রয়ে গেছে।’ পাকিস্তানে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্দ্রেস ফেরারেসি ডনকে বলেন, এ আবিষ্কারের সঙ্গে ইতালির প্রতœতত্ত্ববিদেরাও জড়িত থাকায় তিনি আনন্দিত।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনবহুল এলাকায় যুদ্ধবিমানের প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন

পাকিস্তানের সবচেয়ে পুরোনো বৌদ্ধমন্দির আবিষ্কার

আপডেট সময় : ১২:৪৭:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের সোয়াত উপত্যকায় দেশটির সবচেয়ে প্রাচীন এক বৌদ্ধমন্দির আবিষ্কার করেছেন একদল প্রতœতত্ত্ববিদ। খবর ডনের। ভেনিসের কা ফসকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও ইতালির প্রতœতত্ত্ববিদের মিশন ও খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রাদেশিক প্রতœতত্ত্ব ও জাদুঘর বিভাগ যৌথভাবে এ কাজ করে। ইতালির প্রতœতত্ত্ববিদদের মিশনের পরিচালক অধ্যাপক লুকা এম ওলিভেরি জানিয়েছেন, বৌদ্ধদের এ স্থাপত্য মৌর্য যুগের। সম্ভবত খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে মন্দিরটি নির্মাণ করা হয়েছিল। খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দীতে ওই অঞ্চলে বড় ধরনের অবকাঠামোর নির্মাণকাজের কথা জানা যায়। আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের সময় গ্রিকরা পাকিস্তানের সোয়াত উপত্যকার বাজিরা নামের ওই এলাকায় আসে। সেখানে আসার পর তারা শহরটিকে তাদের দুর্গ হিসেবে গড়ে তোলে। তখন তারা মৌর্য শাসনামলে সম্রাট অশোকের সময়ে নির্মিত অবকাঠামোগুলোর খোঁজ পায়। খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে রাজা মেনান্দার পরবর্তী সময়ে স্থাপত্যকীর্তিটির আয়তন বাড়ানো হয়। তৃতীয় ও চতুর্থ শতাব্দী পর্যন্ত মন্দিরটির কার্যক্রম চলে। তবে চতুর্থ শতাব্দীতে এক ভূমিকম্পে বাজিরার কুশান শহরটি প্রায় ধ্বংস হয়ে যায়। এ সময় মন্দিরটি পরিত্যক্ত হয়ে যায়। অধ্যাপক লুকা বলছেন, বিস্ময়করভাবে এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার। কারণ, এতে গান্ধারে বৌদ্ধের অবয়বের নতুন রূপ প্রকাশ পেয়েছে। পাকিস্তানের টাক্সিলার সিরকাপ শহরে এ ধরনের মাত্র একটি মন্দির পাওয়া গেছে । তিনি আরও বলেন, নতুন করে এ মন্দির আবিষ্কার বৈপ্লবিক। কারণ, এটা প্রমাণ করে খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দী থেকে সোয়াত উপত্যকায় বৌদ্ধদের উপস্থিতি ছিল। এ ছাড়া এ আবিষ্কারের মাধ্যমে ইন্দো-গ্রিক শাসক মেনান্দার ও তাঁর উত্তরসূরিরা যে বৌদ্ধ ধর্মের সমর্থক ছিলেন, তার প্রমাণ পাওয়া যায়।
প্রতœতত্ত্ববিদেরা শুধু চার মিটার দৈর্ঘ্যের এই বৌদ্ধমন্দির আবিষ্কার করেননি, একই সঙ্গে প্রাচীন একটি রাস্তাও আবিষ্কার করেছেন। এর মধ্য দিয়ে ওই শহরের অন্যতম প্রধান প্রবেশদ্বার আবিষ্কার করা হয়েছে। পাকিস্তানের প্রতœতত্ত্ব বিভাগের পরিচালক আবদুল সামাদ খান বলেন, নানা কারণে নতুন এ আবিষ্কার গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্য দিয়ে সে সময়ের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, পরমতসহিষ্ণুতা ও বিভিন্ন সংস্কৃতির বিকাশের বিষয়টি উঠে এসেছে। তিনি বলেন, ‘খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশ ও সোয়াত উপত্যকা প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শনে বেশ সমৃদ্ধ। এ পর্যন্ত প্রতœতত্ত্ববিদেরা মাত্র এর ৫ শতাংশ আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছেন। বাকি ৯৫ শতাংশ এখনো অনাবিষ্কৃত রয়ে গেছে।’ পাকিস্তানে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্দ্রেস ফেরারেসি ডনকে বলেন, এ আবিষ্কারের সঙ্গে ইতালির প্রতœতত্ত্ববিদেরাও জড়িত থাকায় তিনি আনন্দিত।