ঢাকা ১১:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নি¤œমুখী, দেড় মাসের আমদানি মূল্য পরিশোধ করা যাবে

  • আপডেট সময় : ০৯:৪৪:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ মে ২০২২
  • ৯৮ বার পড়া হয়েছে

স্কোয়াড্রন লীডার (অবঃ) :ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য ঘাটতি, উচ্চ বাহ্যিক ঋণ পরিশোধ এবং নগদ ডলারের প্রবাহ সল্পতার কারণে, পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ডিসেম্বর ২০১৯ থেকে তাদের সর্বনি¤œ স্তরে নেমে গেছে।
স্টেট ব্যাঙ্ক অফ পাকিস্তান (এসবিপি) দ্বারা প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, ৬ মে শেষ হওয়া সপ্তাহে প্রবাহ ১৬.৪ বিলিয়ন ডলার হয়েছে, যা এক সপ্তাহ আগে ১৬.৫ বিলিয়ন ডলার ছিল।
দেশের রিজার্ভ সপ্তাহে ১৭৮ মিলিয়ন ডলার বা ১.১% কমে ১৬.৩৭৬ বিলিয়নে ডলারে দাঁড়িয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য দেখায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভও ২৩ মাসের সর্বনি¤েœ নেমে এসেছে।
পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় রিজার্ভ ১৯০ মিলিয়ন ডলার কমে ১০.৩০৮ বিলিয়ন ডলার হয়েছে যা বহিরাগত ঋণ পরিশোধের সাথে সম্পর্কিত বহিঃপ্রবাহের জন্য রিজার্ভ হ্রাসকে দায়ী করেছে।
বিশ্লেষকরা অনুমান করে যে এই রিজার্ভ ১.৫৪ মাসের জন্য আমদানি মূল্য ডলারে পরিশোধ করতে পারবে। অর্থনীতির পরিভাষায় অন্তত তিন মাসের আমদানি মূল্য রিজার্ভ থেকে পরিশোধ করার সক্ষমতাকে মজবুত অর্থনীতি বলে, সে অর্থে পাকিস্তান ঝুঁকিতে আছে। পক্ষান্তরে বাংলাদেশ ছয় মাসের আমদানি মূল্য রিজার্ভ থেকে পরিশোধ করার সক্ষমতা বজায় রেখে চলছে।
তবে বাণিজ্যিক ব্যাংকের রিজার্ভ ৬.০৫৪ বিলিয়ন ডলার থেকে ৬.০৬৭ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। ক্রমবর্ধমান দ্বিগুণ ঘাটতি (কারেন্ট অ্যাকাউন্ট এবং বাণিজ্য), বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহের অভাব এবং বৈদেশিক ঋণ পরিষেবার বাধ্যবাধকতা বৃদ্ধির ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দ্রুত হ্রাস পেয়েছে।
পতনশীল রিজার্ভ মুদ্রার উপর চাপ সৃষ্টি করেছে কারণ এটি আন্তঃব্যাংক বাজারে ডলার প্রতি ১৯১.৭৭ রুপি এটা সর্বকালের সর্বনি¤েœ নেমে এসেছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বেলআউটের পুনরুজ্জীবনে বিলম্ব এবং বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলি থেকে তহবিলের প্রতিশ্রুতির অভাব বৈদেশিক রিজার্ভ এবং স্থানীয় ইউনিটের উপর চাপ বাড়াচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ, যিনি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর গত মাসে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন, আইএমএফ বেলআউটের পুনরুজ্জীবনের জন্য মোটামুটি একটি যুদ্ধের মুখোমুখি হচ্ছেন কারণ এটি অন্যান্য দ্বিপাক্ষিক এবং বহুপাক্ষিক ঋণদাতাদের কাছ থেকে আরও আর্থিক সহায়তার পূর্বশর্ত।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাসের মধ্যে আমদানি ও ঋণ পরিশোধ মেটাতে দেশের দ্রুত বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ প্রয়োজন। তবে, বর্তমান সরকারকে ব্যয়বহুল জ্বালানি ভর্তুকি কমাতে হবে, যা তৎকালীন ইমরান খানের সরকার চালু করেছিল।
পরবর্তী ঋণের কিস্তি মুক্তির জন্য আইএমেফ থেকে অনুমোদন পেতে পেট্রোলিয়াম এবং বিদ্যুতের দাম বাড়াতে হবে।
সব মিলিয়ে পাকিস্তান এক জটিল অর্থনৈতিক চাপের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, নিঃসন্দেহে নতুন সরকারের জন্য এ থেকে মুক্তি পাওয়া ‘ডু ওর ডাই’ পরিস্থিতি। দক্ষিণ এশিয়ার পারমাণবিক শক্তিধারী এই দেশ সংকট নরস নে কোন বন্ধু প্রতিষ্ঠান ও রাস্ট্রকে কাছে পায় সেটাই দেখবার বিষয়।
লেখক : সদস্য অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক উপকমিটি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

শাহবাগে একই মঞ্চে ৩০ রাজনৈতিক দলের নেতারা

পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নি¤œমুখী, দেড় মাসের আমদানি মূল্য পরিশোধ করা যাবে

আপডেট সময় : ০৯:৪৪:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ মে ২০২২

স্কোয়াড্রন লীডার (অবঃ) :ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য ঘাটতি, উচ্চ বাহ্যিক ঋণ পরিশোধ এবং নগদ ডলারের প্রবাহ সল্পতার কারণে, পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ডিসেম্বর ২০১৯ থেকে তাদের সর্বনি¤œ স্তরে নেমে গেছে।
স্টেট ব্যাঙ্ক অফ পাকিস্তান (এসবিপি) দ্বারা প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, ৬ মে শেষ হওয়া সপ্তাহে প্রবাহ ১৬.৪ বিলিয়ন ডলার হয়েছে, যা এক সপ্তাহ আগে ১৬.৫ বিলিয়ন ডলার ছিল।
দেশের রিজার্ভ সপ্তাহে ১৭৮ মিলিয়ন ডলার বা ১.১% কমে ১৬.৩৭৬ বিলিয়নে ডলারে দাঁড়িয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য দেখায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভও ২৩ মাসের সর্বনি¤েœ নেমে এসেছে।
পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় রিজার্ভ ১৯০ মিলিয়ন ডলার কমে ১০.৩০৮ বিলিয়ন ডলার হয়েছে যা বহিরাগত ঋণ পরিশোধের সাথে সম্পর্কিত বহিঃপ্রবাহের জন্য রিজার্ভ হ্রাসকে দায়ী করেছে।
বিশ্লেষকরা অনুমান করে যে এই রিজার্ভ ১.৫৪ মাসের জন্য আমদানি মূল্য ডলারে পরিশোধ করতে পারবে। অর্থনীতির পরিভাষায় অন্তত তিন মাসের আমদানি মূল্য রিজার্ভ থেকে পরিশোধ করার সক্ষমতাকে মজবুত অর্থনীতি বলে, সে অর্থে পাকিস্তান ঝুঁকিতে আছে। পক্ষান্তরে বাংলাদেশ ছয় মাসের আমদানি মূল্য রিজার্ভ থেকে পরিশোধ করার সক্ষমতা বজায় রেখে চলছে।
তবে বাণিজ্যিক ব্যাংকের রিজার্ভ ৬.০৫৪ বিলিয়ন ডলার থেকে ৬.০৬৭ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। ক্রমবর্ধমান দ্বিগুণ ঘাটতি (কারেন্ট অ্যাকাউন্ট এবং বাণিজ্য), বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহের অভাব এবং বৈদেশিক ঋণ পরিষেবার বাধ্যবাধকতা বৃদ্ধির ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দ্রুত হ্রাস পেয়েছে।
পতনশীল রিজার্ভ মুদ্রার উপর চাপ সৃষ্টি করেছে কারণ এটি আন্তঃব্যাংক বাজারে ডলার প্রতি ১৯১.৭৭ রুপি এটা সর্বকালের সর্বনি¤েœ নেমে এসেছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বেলআউটের পুনরুজ্জীবনে বিলম্ব এবং বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলি থেকে তহবিলের প্রতিশ্রুতির অভাব বৈদেশিক রিজার্ভ এবং স্থানীয় ইউনিটের উপর চাপ বাড়াচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ, যিনি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর গত মাসে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন, আইএমএফ বেলআউটের পুনরুজ্জীবনের জন্য মোটামুটি একটি যুদ্ধের মুখোমুখি হচ্ছেন কারণ এটি অন্যান্য দ্বিপাক্ষিক এবং বহুপাক্ষিক ঋণদাতাদের কাছ থেকে আরও আর্থিক সহায়তার পূর্বশর্ত।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাসের মধ্যে আমদানি ও ঋণ পরিশোধ মেটাতে দেশের দ্রুত বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ প্রয়োজন। তবে, বর্তমান সরকারকে ব্যয়বহুল জ্বালানি ভর্তুকি কমাতে হবে, যা তৎকালীন ইমরান খানের সরকার চালু করেছিল।
পরবর্তী ঋণের কিস্তি মুক্তির জন্য আইএমেফ থেকে অনুমোদন পেতে পেট্রোলিয়াম এবং বিদ্যুতের দাম বাড়াতে হবে।
সব মিলিয়ে পাকিস্তান এক জটিল অর্থনৈতিক চাপের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, নিঃসন্দেহে নতুন সরকারের জন্য এ থেকে মুক্তি পাওয়া ‘ডু ওর ডাই’ পরিস্থিতি। দক্ষিণ এশিয়ার পারমাণবিক শক্তিধারী এই দেশ সংকট নরস নে কোন বন্ধু প্রতিষ্ঠান ও রাস্ট্রকে কাছে পায় সেটাই দেখবার বিষয়।
লেখক : সদস্য অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক উপকমিটি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ