আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের সঙ্গে হাইড্রোকার্বন ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজসম্পদ খাতে সহযোগিতার সম্ভাবনা যাচাইয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসকে সামনে রেখে বুধবার (১৩ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এ কথা বলেন। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
রুবিও বলেছেন, (পাকিস্তানের সঙ্গে) হাইড্রোকার্বন ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজসহ অর্থনৈতিক সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র আমরা অন্বেষণ করতে চাই। এভাবে আমরা একটি প্রগতিশীল ব্যবসায়িক অংশীদারত্ব গড়ে তুলতে আগ্রহী।
তিনি আরো বলেন, বাণিজ্য ও সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমে পাকিস্তানের অংশগ্রহণকে যুক্তরাষ্ট্র আন্তরিকভাবে মূল্যায়ন করে।
গতমাসে ওয়াশিংটন ও ইসলামাবাদের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তি হয়েছে। এর ফলে শুল্কের হার কমবে এবং একই সঙ্গে বিনিয়োগের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে বলে মত প্রকাশ করেছে পাকিস্তান।
দেশটির বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল বলেছেন, মার্কিন ব্যবসায়ীদের বেলুচিস্তান প্রদেশে খনন প্রকল্পে স্থানীয় কোম্পানির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হবে, যেখানে লিজ মঞ্জুরি ছাড়াও অন্যান্য ছাড় পাওয়া যাবে। এ প্রদেশে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ স্বর্ণ ও তামার খনি ‘রেকো ডিক’ অবস্থিত, যা খনন প্রতিষ্ঠান ব্যারিক গোল্ড পরিচালনা করে।
বর্তমান ট্রাম্প প্রশাসনের আগে ইসলামাবাদ-ওয়াশিংটনের সম্পর্কে শীতলতা বিরাজ করছিল। চীনের উত্থান ঠেকাতে পাকিস্তানের প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করেছিল হোয়াইট হাউজ। আফগানিস্তান ইস্যুতেও ইসলামাবাদের ওপর অসন্তুষ্ট ছিল ওয়াশিংটন, বিশেষত বাইডেন প্রশাসনের সময়ে বিশৃঙ্খল মার্কিন সেনা প্রত্যাহার ও এরপরই কাবুলে তালেবানের দখল নিয়ে। ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে তালেবানকে সমর্থন দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিল ওয়াশিংটন, যা বরাবরই প্রত্যাখ্যান করে এসেছে পাকিস্তান।
তবে চলতি বছর দুই দেশের সম্পর্ক আবারো উষ্ণ হয়ে উঠছে। মে মাসে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সীমান্তে সংঘাতের পর যুদ্ধবিরতিতে নিজের কৃতিত্ব দাবি করে আসছেন ট্রাম্প, যা ভারতের বিরক্তি উদ্রেক করলেও পাকিস্তান মেনে নিয়েছে। কেবল মেনে নিয়েই ক্ষান্ত থাকেনি, ট্রাম্পের বহুল আকাঙ্ক্ষিত নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্টের নাম সুপারিশ করার ঘোষণা দিয়েছে ইসলামাবাদ।
গত মঙ্গলবার ইসলামাবাদে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সর্বশেষ সন্ত্রাসবিরোধী সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। ওয়াশিংটন বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মিকে ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। ওয়াশিংটনভিত্তিক দক্ষিণ এশিয়া বিশ্লেষক ও ফরেন পলিসি পত্রিকার লেখক মাইকেল কুগেলম্যান বলেছেন, সন্ত্রাসবিরোধী সংলাপের যৌথ বিবৃতিটি যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে অন্যতম ইতিবাচক ও প্রশংসামূলক একটি পদক্ষেপ।
এসি/