ঢাকা ১২:৩৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫

পাকিস্তানের আক্রমণের যোগ্য জবাব দেওয়া হয়েছে, তাদের দাবি ভুয়া: ভারত

  • আপডেট সময় : ০৪:৩৬:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫
  • ৭ বার পড়া হয়েছে

শনিবার নয়াদিল্লিতে পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় কর্মকর্তারা -ছবি এএনআই

প্রত্যাশা ডেস্ক: ভারতীয় সেনাঘাঁটি ও বেসামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে পাকিস্তানের চালানো আক্রমণের যোগ্য জবাব দেওয়া হয়েছে বলে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। শনিবার (১০ মে) সকালে পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, পাকিস্তানের হামলার জবাবে ভারত আক্রমণ চালিয়েছে রফিকি, মুরিদ, চাকওয়ালা, নূর খান, সুক্কুর, চুনিয়া, পসরুর ও শিয়ালকোটের বিমান ও সেনাঘাঁটিতে। এ হামলায় পাকিস্তানের প্রভূত ক্ষতি হয়েছে।

ভারতীয় কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, এ আক্রমণ চালানোর সময় সাধারণ নাগরিকদের যাতে ক্ষতি না হয়, সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া হয়েছিল।

শনিবার (১০ মে) বেলা ১১টা নাগাদ এ সংবাদ সম্মেলন করেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি, উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং ও কর্নেল সোফিয়া কুরেশি।

যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সোফিয়া দাবি করেন, আজ শনিবার (১০ মে) ভোরে প্রথম আক্রমণ চালায় পাকিস্তান। শুক্রবার রাত ১টা ৪০ মিনিটের দিকে তারা পশ্চিম সীমান্তের বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও যুদ্ধবিমান থেকে আক্রমণ চালায়। উধমপুর, ভাটিন্ডা, ভূজ, পাঠানকোটের বায়ুসেনাঘাঁটিগুলো ছিল সেই আক্রমণের লক্ষ্য। মোট ২৬টি এলাকায় আক্রমণ চালানো হলেও ভারতীয় সেনাবাহিনী অধিকাংশ হামলা নিষ্ক্রিয় করেছে। তবে সোফিয়া বলেন, পাকিস্তানের হামলায় আদমপুর, ভাটিন্ডা ও উধমপুরে সামান্য কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

ব্রিফিংয়ে দাবি করা হয়, শ্রীনগর, অবন্তিপুরা, উধমপুরসহ কিছু এলাকায় পাকিস্তানি বাহিনী হাসপাতাল ও বেসামরিক মানুষের ঘরবাড়ি লক্ষ্য করে আক্রমণ চালিয়েছে।

পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি বলেন, হামলায় রাজৌরির অতিরিক্ত জেলা কমিশনার রাজ কুমার থাপা এবং আরো দুজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।

ভারত সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, নিয়ন্ত্রণরেখা ও আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর পাকিস্তান তার সেনাবাহিনীর বহর বাড়িয়েছে। পাকিস্তান ইচ্ছা করে ধর্মীয় স্থানের ওপরেও আক্রমণ চালাচ্ছে, যাতে ভারতে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি হয়।

বিক্রম মিশ্রি ব্রিফিংয়ে দাবি করেন, পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে নানা ভুয়া প্রচার চালানো হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতেও চলছে সেই মিথ্যা প্রচার। যেমন তারা নাকি রাজস্থানের সুরতগড় ও হরিয়ানার সিরসায় বিমানবাহিনীর ঘাঁটি গুড়িয়ে দিয়েছে। উত্তর প্রদেশের আজমগড়ের সেনাঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে। আদমপুরে এস-৪০০-এর ঘাঁটি তছনছ করে দিয়েছে। এমনকি এ প্রচারও চালানো হয়েছে, ভারত ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে আফগানিস্তানেও।

বিক্রম মিশ্রি আরো দাবি করেন, পাকিস্তানের পক্ষ থেকে করা প্রতিটি দাবিই ভুয়া, অসত্য। পাকিস্তানের এই মিথ্যা প্রচারের প্রমাণে সংবাদ সম্মেলনে ওই সব সেনা ও বিমানবাহিনীর ঘাঁটি, তার রানওয়ের ছবিও প্রকাশ করা হয়। প্রতিটি ছবিই শনিবার (১০ মে) সকালে তোলা। একই সঙ্গে পাকিস্তানি বিমান ও সেনাঘাঁটির ওপর ভারতীয় আক্রমণের ভিডিও দেখানো হয়।

পাকিস্তানের একটি লঞ্চপ্যাড ধ্বংস করেছে বিএসএফ: পাকিস্তানের পাঞ্জাব রাজ্যের শিয়ালকোট জেলার সীমান্ত অঞ্চলের একটি লঞ্চপ্যাড ধ্বংস করেছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ)। শনিবার (১০ মে) এক বিবৃতিতে বিএসএফ জানিয়েছে, শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত ৯টার দিকে ধ্বংস করা হয়েছে লঞ্চপ্যাডটি।

লঞ্চপ্যাডটির অবস্থান শিয়ালকোটের লুনি অঞ্চলে। এই লুনির সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে ভারতের জম্মু-কাশ্মির রাজ্যের জম্মুর। বিএসএফ জানিয়েছে, বিস্ফোরক রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার জন্য এই লঞ্চপ্যাডটি ব্যবহার করতো কাশ্মিরের বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীরা।

বিবৃতিতে এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ‘গতকাল শুক্রবার রাত ৯ টার দিকে লুনি থেকে বিনা উসকানিতে জম্মুর বিএসএফের পোস্টগুলো লক্ষ্য করে গোলা ও গুলি ছুড়তে থাকে রেঞ্জার্স (পাকিস্তানের সীমান্তরক্ষী বাহিনী)। এই হামলার যথাযথ জবাব দিতে পাল্টা আক্রমণ চালায় বিএসএফও। বিএসএফের এই লঞ্চপ্যাডটি ধ্বংসসহ রেঞ্জার্সের একাধিক সীমান্ত স্থাপনার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’

এর আগে বুধবার জম্মু সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ৭ জন নিহত হয়েছিল। সে সময় ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তানিদের অবৈধ প্রবেশ করাচ্ছিল রেঞ্জার্স। সে সময় গোলাগুলিতে মারা যায় এই ৭ জন। রেঞ্জার্সের পক্ষ থেকে এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করা হয়নি। সূত্র: এএনআই

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

পাকিস্তানের আক্রমণের যোগ্য জবাব দেওয়া হয়েছে, তাদের দাবি ভুয়া: ভারত

আপডেট সময় : ০৪:৩৬:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: ভারতীয় সেনাঘাঁটি ও বেসামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে পাকিস্তানের চালানো আক্রমণের যোগ্য জবাব দেওয়া হয়েছে বলে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। শনিবার (১০ মে) সকালে পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, পাকিস্তানের হামলার জবাবে ভারত আক্রমণ চালিয়েছে রফিকি, মুরিদ, চাকওয়ালা, নূর খান, সুক্কুর, চুনিয়া, পসরুর ও শিয়ালকোটের বিমান ও সেনাঘাঁটিতে। এ হামলায় পাকিস্তানের প্রভূত ক্ষতি হয়েছে।

ভারতীয় কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, এ আক্রমণ চালানোর সময় সাধারণ নাগরিকদের যাতে ক্ষতি না হয়, সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া হয়েছিল।

শনিবার (১০ মে) বেলা ১১টা নাগাদ এ সংবাদ সম্মেলন করেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি, উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং ও কর্নেল সোফিয়া কুরেশি।

যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সোফিয়া দাবি করেন, আজ শনিবার (১০ মে) ভোরে প্রথম আক্রমণ চালায় পাকিস্তান। শুক্রবার রাত ১টা ৪০ মিনিটের দিকে তারা পশ্চিম সীমান্তের বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও যুদ্ধবিমান থেকে আক্রমণ চালায়। উধমপুর, ভাটিন্ডা, ভূজ, পাঠানকোটের বায়ুসেনাঘাঁটিগুলো ছিল সেই আক্রমণের লক্ষ্য। মোট ২৬টি এলাকায় আক্রমণ চালানো হলেও ভারতীয় সেনাবাহিনী অধিকাংশ হামলা নিষ্ক্রিয় করেছে। তবে সোফিয়া বলেন, পাকিস্তানের হামলায় আদমপুর, ভাটিন্ডা ও উধমপুরে সামান্য কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

ব্রিফিংয়ে দাবি করা হয়, শ্রীনগর, অবন্তিপুরা, উধমপুরসহ কিছু এলাকায় পাকিস্তানি বাহিনী হাসপাতাল ও বেসামরিক মানুষের ঘরবাড়ি লক্ষ্য করে আক্রমণ চালিয়েছে।

পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি বলেন, হামলায় রাজৌরির অতিরিক্ত জেলা কমিশনার রাজ কুমার থাপা এবং আরো দুজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।

ভারত সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, নিয়ন্ত্রণরেখা ও আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর পাকিস্তান তার সেনাবাহিনীর বহর বাড়িয়েছে। পাকিস্তান ইচ্ছা করে ধর্মীয় স্থানের ওপরেও আক্রমণ চালাচ্ছে, যাতে ভারতে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি হয়।

বিক্রম মিশ্রি ব্রিফিংয়ে দাবি করেন, পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে নানা ভুয়া প্রচার চালানো হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতেও চলছে সেই মিথ্যা প্রচার। যেমন তারা নাকি রাজস্থানের সুরতগড় ও হরিয়ানার সিরসায় বিমানবাহিনীর ঘাঁটি গুড়িয়ে দিয়েছে। উত্তর প্রদেশের আজমগড়ের সেনাঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে। আদমপুরে এস-৪০০-এর ঘাঁটি তছনছ করে দিয়েছে। এমনকি এ প্রচারও চালানো হয়েছে, ভারত ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে আফগানিস্তানেও।

বিক্রম মিশ্রি আরো দাবি করেন, পাকিস্তানের পক্ষ থেকে করা প্রতিটি দাবিই ভুয়া, অসত্য। পাকিস্তানের এই মিথ্যা প্রচারের প্রমাণে সংবাদ সম্মেলনে ওই সব সেনা ও বিমানবাহিনীর ঘাঁটি, তার রানওয়ের ছবিও প্রকাশ করা হয়। প্রতিটি ছবিই শনিবার (১০ মে) সকালে তোলা। একই সঙ্গে পাকিস্তানি বিমান ও সেনাঘাঁটির ওপর ভারতীয় আক্রমণের ভিডিও দেখানো হয়।

পাকিস্তানের একটি লঞ্চপ্যাড ধ্বংস করেছে বিএসএফ: পাকিস্তানের পাঞ্জাব রাজ্যের শিয়ালকোট জেলার সীমান্ত অঞ্চলের একটি লঞ্চপ্যাড ধ্বংস করেছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ)। শনিবার (১০ মে) এক বিবৃতিতে বিএসএফ জানিয়েছে, শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত ৯টার দিকে ধ্বংস করা হয়েছে লঞ্চপ্যাডটি।

লঞ্চপ্যাডটির অবস্থান শিয়ালকোটের লুনি অঞ্চলে। এই লুনির সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে ভারতের জম্মু-কাশ্মির রাজ্যের জম্মুর। বিএসএফ জানিয়েছে, বিস্ফোরক রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার জন্য এই লঞ্চপ্যাডটি ব্যবহার করতো কাশ্মিরের বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীরা।

বিবৃতিতে এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ‘গতকাল শুক্রবার রাত ৯ টার দিকে লুনি থেকে বিনা উসকানিতে জম্মুর বিএসএফের পোস্টগুলো লক্ষ্য করে গোলা ও গুলি ছুড়তে থাকে রেঞ্জার্স (পাকিস্তানের সীমান্তরক্ষী বাহিনী)। এই হামলার যথাযথ জবাব দিতে পাল্টা আক্রমণ চালায় বিএসএফও। বিএসএফের এই লঞ্চপ্যাডটি ধ্বংসসহ রেঞ্জার্সের একাধিক সীমান্ত স্থাপনার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’

এর আগে বুধবার জম্মু সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ৭ জন নিহত হয়েছিল। সে সময় ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তানিদের অবৈধ প্রবেশ করাচ্ছিল রেঞ্জার্স। সে সময় গোলাগুলিতে মারা যায় এই ৭ জন। রেঞ্জার্সের পক্ষ থেকে এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করা হয়নি। সূত্র: এএনআই