ঢাকা ০৫:৩৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

পাকিস্তানকে উড়িয়ে সিরিজ ইংল্যান্ডের

  • আপডেট সময় : ১১:১১:০৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ অক্টোবর ২০২২
  • ৯০ বার পড়া হয়েছে

ক্রীড়া ডেস্ক : একের পর এক সহজ ক্যাচ হাতছাড়া করলেন পাকিস্তানের ফিল্ডাররা। জীবন পেয়ে বিস্ফোরক জুটিতে দলকে বড় পুঁজি এনে দিলেন দাভিদ মালান ও হ্যারি ব্রুক। রেকর্ড রান তাড়ার চ্যালেঞ্জে লড়াইও করতে পারল না বাবর আজমের দল। আরেকটি অনায়াস জয়ে সিরিজ নিজেদের করে নিল ইংল্যান্ড। লাহোরে রোববার অলিখিত ‘ফাইনালে’ পরিণত হওয়া সপ্তম টি-টোয়েন্টিতে ইংল্যান্ড জিতল ৬৭ রানে। ১৭ বছর পর পাকিস্তান সফরে এসে সাত ম্যাচের সিরিজ তারা জিতে নিল ৪-৩ ব্যবধানে। এই সংস্করণে রানের দিক থেকে পাকিস্তানের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় জয় এটি। এই সিরিজেই করাচিতে তৃতীয় ম্যাচে ৬৩ রানের জয় ছিল আগের রেকর্ড। ইংল্যান্ড এ দিন ৩ উইকেট হারিয়ে করে ২০৯ রান। যেখানে বড় অবদান মালানের। ৪৭ বলে অপরাজিত ৭৮ রানের ইনিংস খেলেন তিনি ৮ চার ও ৩ ছক্কায়। ২৯ বলে ৪ ছক্কা ও একটি চারে ৪৬ রান করেন ব্রুক। তাদের অবিচ্ছিন্ন চতুর্থ উইকেট জুটিতে ১০৮ রান আসে স্রেফ ৬১ বলে।
জবাবে পাকিস্তান প্রথম আট বলের মধ্যেই হারায় বাবর ও মোহাম্মদ রিজওয়ানকে। দুই ভরসাকে হারিয়ে তারা জয়ের আশা জাগাতে পারেনি কখনোই। শান মাসুদের ফিফটিতে ৮ উইকেটে করতে পারে ১৪২ রান। প্রথম পাঁচ ম্যাচের তিনটি জিতে সিরিজ জয়ের দুয়ারে পৌঁছে গিয়েছিল পাকিস্তান। সেই তারা পরের দুই ম্যাচে স্রেফ উড়ে গেল। ষষ্ঠ ম্যাচে তাদের ১৬৯ রান ৮ উইকেট ও ৩৩ বল হাতে রেখে পেরিয়ে গিয়েছিল সফরকারীরা। গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে অ্যালেক্স হেলস ও ফিল সল্টের ব্যাটে ভালো সূচনা পায় ইংল্যান্ড। প্রথম ৪ ওভারে তারা তোলে ৩৯ রান। পরের ওভারে জোড়া ধাক্কা খায় ইংলিশরা। মোহাম্মদ হাসনাইনের বলে এলবিডব্লিউ হন হেলস (১৩ বলে ১৮)। আগের ম্যাচের নায়ক সল্ট এবার ১২ বলে ২০ রান করে রান আউটে কাটা পড়েন। দলকে এগিয়ে নেন এরপর মালান ও বেন ডাকেট। দুই জনে তৃতীয় উইকেটে ৬২ রানের জুটি গড়েন ৩১ বলে। ডাকেটও বিদায় নেন রান আউটে। ১৯ বলে ৩ চার ও এক ছক্কায় তিনি করেন ৩০ রান। এরপরই মালান ও ব্রুকের ওই বিধ্বংসী জুটি। ২৯ রানে কাভারে মালানের ও ২৪ রানে মিড-অনে ব্রুকের সহজ ক্যাচ ফেলেন পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর। দুই ব্যাটসম্যানই সুযোগ কাজে লাগান দারুণভাবে।
মালান সিরিজে তার প্রথম ও ক্যারিয়ারের ত্রয়োদশ ফিফটি পূর্ণ করেন ৩৪ বলে। ৬২ রানে তিনি জীবন পান আরেক দফা, এবার ফিল্ডার ছিলেন মোহাম্মদ ওয়াসিম। সেই ওয়াসিমের করা শেষ ওভারে বয়ে যায় ঝড়। প্রথম দুই বলে টানা ছক্কা-চার মারেন মালান। তৃতীয় বল ছক্কায় ওড়ান ব্রুক। ওভারে আসে ২০ রান। তরুণ পেসার ৪ ওভারে দেন ৬১ রান। জিততে হলে এই মাঠে সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড গড়তে হতো পাকিস্তানকে। সেই চ্যালেঞ্জে নেমে শুরুতেই বাবর ও রিজওয়ানকে হারিয়ে বড় ধাক্কা খায় তারা। ক্রিস ওকসের বলে কাভারে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বাবর। বিশ্রাম কাটিয়ে ফেরা রিজওয়ান বোল্ড হন রিস টপলির দারুণ ডেলিভারিতে। ৮ রানে জীবন পেয়েও টিকতে পারেননি ইফতিখার আহমেদ (১৯)। ষষ্ঠ ওভারে তখন ৩৩ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পাকিস্তান। চতুর্থ উইকেট জুটিতে লড়াইয়ের চেষ্টা করেন মাসুদ ও খুশদিল শাহ। ৫৩ রানের এই জুটি ভাঙেন লেগ স্পিনার আদিল রশিদ। ২৫ বলে ২৭ রান করেন খুশদিল। আসিফ আলি ও মোহাম্মদ নাওয়াজ বিদায় নেন দ্রুতই। মাসুদের ব্যাটে পরাজয়ের ব্যবধানই কেবল কমে তাদের। শেষের আগের ওভারে তিনি আউট হন ৪৩ বলে ৫৬ রান করে। ২৬ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডের সফলতম বোলার ক্রিস ওকস। আরেক পেসার ডেভিড উইলি ২২ রানে নেন ২টি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড: ২০ ওভারে ২০৯/৩ (সল্ট ২০, হেলস ১৮, মালান ৭৮, ডাকেট ৩০, ব্রুক ৪৬; নাওয়াজ ১-০-১২-০, হাসনাইন ৪-০-৩২-১, ওয়াসিম ৪-০-৬১-০, রউফ ৪-০-২৪-০, শাদাব ৩-০-৩৯-০, ইফতিখার ৪-০-৩৪-০)
পাকিস্তান: ২০ ওভারে ১৪২/৮ (রিজওয়ান ১, বাবর ৪, মাসুদ ৫৬, ইফতিখার ১৯, খুশদিল ২৭, আসিফ ৭, নাওয়াজ ৯, ওয়াসিম ৫, রউফ ১, হাসনাইন ৫; ওকস ৪-০-২৬-৩, টপলি ৪-০-৩৪-১, উইলি ৪-০-২২-২, রশিদ ৪-০-২৫-১, মইন ১-০-৫-০, কারান ৩-০-২৭-১)
ফল: ইংল্যান্ড ৬৭ রানে জয়ী
সিরিজ: ৭ ম্যাচের সিরিজ ইংল্যান্ড ৪-৩-এ জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: দাভিদ মালান
ম্যান অব দা সিরিজ: হ্যারি ব্রুক

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

পাকিস্তানকে উড়িয়ে সিরিজ ইংল্যান্ডের

আপডেট সময় : ১১:১১:০৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ অক্টোবর ২০২২

ক্রীড়া ডেস্ক : একের পর এক সহজ ক্যাচ হাতছাড়া করলেন পাকিস্তানের ফিল্ডাররা। জীবন পেয়ে বিস্ফোরক জুটিতে দলকে বড় পুঁজি এনে দিলেন দাভিদ মালান ও হ্যারি ব্রুক। রেকর্ড রান তাড়ার চ্যালেঞ্জে লড়াইও করতে পারল না বাবর আজমের দল। আরেকটি অনায়াস জয়ে সিরিজ নিজেদের করে নিল ইংল্যান্ড। লাহোরে রোববার অলিখিত ‘ফাইনালে’ পরিণত হওয়া সপ্তম টি-টোয়েন্টিতে ইংল্যান্ড জিতল ৬৭ রানে। ১৭ বছর পর পাকিস্তান সফরে এসে সাত ম্যাচের সিরিজ তারা জিতে নিল ৪-৩ ব্যবধানে। এই সংস্করণে রানের দিক থেকে পাকিস্তানের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় জয় এটি। এই সিরিজেই করাচিতে তৃতীয় ম্যাচে ৬৩ রানের জয় ছিল আগের রেকর্ড। ইংল্যান্ড এ দিন ৩ উইকেট হারিয়ে করে ২০৯ রান। যেখানে বড় অবদান মালানের। ৪৭ বলে অপরাজিত ৭৮ রানের ইনিংস খেলেন তিনি ৮ চার ও ৩ ছক্কায়। ২৯ বলে ৪ ছক্কা ও একটি চারে ৪৬ রান করেন ব্রুক। তাদের অবিচ্ছিন্ন চতুর্থ উইকেট জুটিতে ১০৮ রান আসে স্রেফ ৬১ বলে।
জবাবে পাকিস্তান প্রথম আট বলের মধ্যেই হারায় বাবর ও মোহাম্মদ রিজওয়ানকে। দুই ভরসাকে হারিয়ে তারা জয়ের আশা জাগাতে পারেনি কখনোই। শান মাসুদের ফিফটিতে ৮ উইকেটে করতে পারে ১৪২ রান। প্রথম পাঁচ ম্যাচের তিনটি জিতে সিরিজ জয়ের দুয়ারে পৌঁছে গিয়েছিল পাকিস্তান। সেই তারা পরের দুই ম্যাচে স্রেফ উড়ে গেল। ষষ্ঠ ম্যাচে তাদের ১৬৯ রান ৮ উইকেট ও ৩৩ বল হাতে রেখে পেরিয়ে গিয়েছিল সফরকারীরা। গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে অ্যালেক্স হেলস ও ফিল সল্টের ব্যাটে ভালো সূচনা পায় ইংল্যান্ড। প্রথম ৪ ওভারে তারা তোলে ৩৯ রান। পরের ওভারে জোড়া ধাক্কা খায় ইংলিশরা। মোহাম্মদ হাসনাইনের বলে এলবিডব্লিউ হন হেলস (১৩ বলে ১৮)। আগের ম্যাচের নায়ক সল্ট এবার ১২ বলে ২০ রান করে রান আউটে কাটা পড়েন। দলকে এগিয়ে নেন এরপর মালান ও বেন ডাকেট। দুই জনে তৃতীয় উইকেটে ৬২ রানের জুটি গড়েন ৩১ বলে। ডাকেটও বিদায় নেন রান আউটে। ১৯ বলে ৩ চার ও এক ছক্কায় তিনি করেন ৩০ রান। এরপরই মালান ও ব্রুকের ওই বিধ্বংসী জুটি। ২৯ রানে কাভারে মালানের ও ২৪ রানে মিড-অনে ব্রুকের সহজ ক্যাচ ফেলেন পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর। দুই ব্যাটসম্যানই সুযোগ কাজে লাগান দারুণভাবে।
মালান সিরিজে তার প্রথম ও ক্যারিয়ারের ত্রয়োদশ ফিফটি পূর্ণ করেন ৩৪ বলে। ৬২ রানে তিনি জীবন পান আরেক দফা, এবার ফিল্ডার ছিলেন মোহাম্মদ ওয়াসিম। সেই ওয়াসিমের করা শেষ ওভারে বয়ে যায় ঝড়। প্রথম দুই বলে টানা ছক্কা-চার মারেন মালান। তৃতীয় বল ছক্কায় ওড়ান ব্রুক। ওভারে আসে ২০ রান। তরুণ পেসার ৪ ওভারে দেন ৬১ রান। জিততে হলে এই মাঠে সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড গড়তে হতো পাকিস্তানকে। সেই চ্যালেঞ্জে নেমে শুরুতেই বাবর ও রিজওয়ানকে হারিয়ে বড় ধাক্কা খায় তারা। ক্রিস ওকসের বলে কাভারে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বাবর। বিশ্রাম কাটিয়ে ফেরা রিজওয়ান বোল্ড হন রিস টপলির দারুণ ডেলিভারিতে। ৮ রানে জীবন পেয়েও টিকতে পারেননি ইফতিখার আহমেদ (১৯)। ষষ্ঠ ওভারে তখন ৩৩ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পাকিস্তান। চতুর্থ উইকেট জুটিতে লড়াইয়ের চেষ্টা করেন মাসুদ ও খুশদিল শাহ। ৫৩ রানের এই জুটি ভাঙেন লেগ স্পিনার আদিল রশিদ। ২৫ বলে ২৭ রান করেন খুশদিল। আসিফ আলি ও মোহাম্মদ নাওয়াজ বিদায় নেন দ্রুতই। মাসুদের ব্যাটে পরাজয়ের ব্যবধানই কেবল কমে তাদের। শেষের আগের ওভারে তিনি আউট হন ৪৩ বলে ৫৬ রান করে। ২৬ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডের সফলতম বোলার ক্রিস ওকস। আরেক পেসার ডেভিড উইলি ২২ রানে নেন ২টি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড: ২০ ওভারে ২০৯/৩ (সল্ট ২০, হেলস ১৮, মালান ৭৮, ডাকেট ৩০, ব্রুক ৪৬; নাওয়াজ ১-০-১২-০, হাসনাইন ৪-০-৩২-১, ওয়াসিম ৪-০-৬১-০, রউফ ৪-০-২৪-০, শাদাব ৩-০-৩৯-০, ইফতিখার ৪-০-৩৪-০)
পাকিস্তান: ২০ ওভারে ১৪২/৮ (রিজওয়ান ১, বাবর ৪, মাসুদ ৫৬, ইফতিখার ১৯, খুশদিল ২৭, আসিফ ৭, নাওয়াজ ৯, ওয়াসিম ৫, রউফ ১, হাসনাইন ৫; ওকস ৪-০-২৬-৩, টপলি ৪-০-৩৪-১, উইলি ৪-০-২২-২, রশিদ ৪-০-২৫-১, মইন ১-০-৫-০, কারান ৩-০-২৭-১)
ফল: ইংল্যান্ড ৬৭ রানে জয়ী
সিরিজ: ৭ ম্যাচের সিরিজ ইংল্যান্ড ৪-৩-এ জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: দাভিদ মালান
ম্যান অব দা সিরিজ: হ্যারি ব্রুক