ঢাকা ১২:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

পাকিস্তানকে আবার হারিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজের ট্রফি নিউ জিল্যান্ডের

  • আপডেট সময় : ০৭:৫১:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ২১ বার পড়া হয়েছে

ক্রীড়া ডেস্ক: কী অদ্ভুত বৈপরীত্য পাকিস্তানের পরপর দুই ম্যাচের ব্যাটিংয়ে। আগের ম্যাচে সাড়ে তিনশ ছাড়ানো রেকর্ড রান তাড়ায় জেতা দল এবার আড়াইশও করতে পারল না। তাতে জমল না লড়াইও। উইল ও’রোক, মিচেল স্যান্টনারের দারুণ বোলিংয়ের পর ড্যারিল মিচেল ও টম ল্যাথামের ফিফটিতে অনায়াস জয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজে চ্যাম্পিয়ন হলো নিউ জিল্যান্ড। করাচিতে শুক্রবার ফাইনালে নিউ জিল্যান্ডের জয় ৫ উইকেটে। সিরিজে তিন ম্যাচের সবকটি জিতল তারা।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে কিউইদের প্রস্তুতিটাও দারুণ হলো। একই মাঠে আগামী বুধবার এই দুই দলের ম্যাচ দিয়েই শুরু হবে প্রতিযোগিতাটি। আগে ব্যাটিং করে পাকিস্তান শেষ ওভারে অল আউট হয় ২৪২ রানে। পঞ্চাশ ছুঁতে পারেননি তাদের কেউই। প্রথম সাত জনের মধ্যে একশর বেশি স্ট্রাইক রেটে রান করতে পারেন কেবল একজন। নতুন বলে ও ডেথ ওভারে দারুণ বোলিংয়ে ৪৩ রানে ৪ উইকেট নিয়ে নিউ জিল্যান্ডের সফলতম বোলার ও’রোক। ফাইনালের সেরাও ২৩ বছর বয়সী এই পেসার। বাঁহাতি স্পিনার স্যান্টনার ১০ ওভারে স্রেফ ২০ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। কিউই অধিনায়ক ‘ডট’ বল খেলান ৪০টি, হজম করেননি কোনো বাউন্ডারি। অফ স্পিনার মাইকেল ব্রেসওয়েলও নেন ২ উইকেট, ৩৮ রানে। নিউ জিল্যান্ড লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে ২৮ বল বাকি থাকতেই। ৫৮ বলে ৬ চারে ৫৭ রান করেন মিচেল। এই সিরিজের আগের দুই ম্যাচসহ সবশেষ তিন ইনিংসে শূন্য রানে ফেরার পর এবার ৬৪ বলে ৫৬ রান করেন ল্যাথাম। চোটের কারণে লকি ফার্গুসনকে পুরো সিরিজে, বেন সিয়ার্স, ম্যাট হেনরি ও রাচিন রাভিন্দ্রাকে ফাইনালে পায়নি নিউ জিল্যান্ড। তারপরও দাপট দেখিয়েই ট্রফি জিতল তারা।

এই পথচলায় দক্ষিণ আফ্রিকাকে একবার ও পাকিস্তানকে হারাল তারা দুইবার। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পাকিস্তানের ৩৫৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জেতা ম্যাচের মতো অতটা ব্যাটিং সহায়ক ছিল না ফাইনালের উইকেট। বল ব্যাটে আসছিল থেমে থেমে। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে চতুর্থ ওভারে ফাখার জামানকে হারায় পাকিস্তান। নিউ জিল্যান্ডকে প্রথম সাফল্য এনে দেন ও’রোক। তিনে নেমে টিকতে পারেননি সাউদ শাকিল। নিজের প্রথম ওভারে তাকে বোল্ড করে দেন ব্রেসওয়েল। এ দিন ১০ রানে পৌঁছে ওয়ানডেতে যৌথভাবে দ্রুততম ৬ হাজার রানের রেকর্ডে হাশিম আমলার পাশে বসেন বাবর আজম। তবে ইনিংস টেনে নিতে পারেননি তিনিও। ২৯ রান করে তিনি ফিরতি ক্যাচ দেন বোলার ন্যাথান স্মিথকে।

দ্বাদশ ওভারে ৫৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় পাকিস্তান। চতুর্থ উইকেটে প্রতিরোধ গড়েন আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি ও ২৬০ রানের জুটিতে দলকে জেতানো মোহাম্মদ রিজওয়ান ও সালমান আলি আগা। কিন্তু অধিনায়ক ও সহ-অধিনায়কের ৮৮ রানের জুটি ভাঙার পর আবার পথ হারিয়ে ফেলে স্বাগতিকরা। রিজওয়ানকে (৭৬ বলে ৪৬) ফিরিয়ে বড় জুটি ভাঙেন ও’রোক। ব্রেসওয়েলের দ্বিতীয় শিকার সালমান (৬৫ বলে ৪৫)। দারুণ খেলতে থাকা তাইয়াব তাহিরকে (৩৩ বলে ৩৮) থামান জ্যাকব ডাফি। খুশদিল শাহ ফেরেন ১৮ বলে ৭ রান করে। শাহিন শাহ আফ্রিদির দ্রুত বিদায়ে ২০২ রানেই ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলে পাকিস্তান। এক বছরের বেশি সময় পর আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামা ফাহিম আশরাফের ২১ বলে ২২ ও নাসিম শাহর ১৭ বলে ১৯ রানের সুবাদে কোনোমতে ২৪২ পর্যন্ত যেতে পারে তারা। রান তাড়ায় নিউ জিল্যান্ডের শুরুটা যদিও ভালো ছিল না। দ্বিতীয় ওভারে বিদায় নেন উইল ইয়াং। তবে দ্বিতীয় উইকেটে ৭১ রানের জুটিতে দলকে কক্ষপথে রাখেন ডেভন কনওয়ে ও কেন উইলিয়ামসন। ৪৯ বলে ৩৪ রান করে ফেরেন উইলিয়ামসন। ২ রানের জন্য ফিফটি পাননি কনওয়ে। ৭৪ বলে ৫ চারে সাজানো তার ৪৮ রানের ইনিংস। চতুর্থ উইকেটে ইনিংস সেরা ৮৭ রানের জুটিতে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নেন মিচেল ও ল্যাথাম। ৫৬ বলে ফিফটি করার পর লেগ স্পিনার আবরার আহমেদকে ফিরতি ক্যাচ দেন মিচেল। ১৫ ও ২৭ রানে জীবন পেয়ে ল্যাথাম পঞ্চাশে পা রাখেন ৬০ বলে। জয় থেকে ১১ রান দূরে থাকতে তার বিদায়ের পর বাকিটা সারেন গ্লেন ফিলিপস ও ব্রেসওয়েল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান: ৪৯.৩ ওভারে ২৪২ (ফাখার ১০, বাবর ২৯, শাকিল ৮, রিজওয়ান ৪৬, সালমান ৪৫, তাহির ৩৮, খুশদিল ৭, ফাহিম ২২, আফ্রিদি ১, নাসিম ১৯, আবরার ১*; ডাফি ৭-০-৪৮-১, ও’রোক ৯.৩-০-৪৩-৪, ব্রেসওয়েল ১০-১-৩৮-২, স্মিথ ৭-০-৪৬-১, স্যান্টনার ১০-১-২০-২, ফিলিপস ৬-০-৪১-০)
নিউ জিল্যান্ড: ৪৫.২ ওভারে ২৪৩/৫ (ইয়াং ৪, কনওয়ে ৪৮, উইলিয়ামসন ৩৪, মিচেল ৫৭, ল্যাথাম ৫৬, ফিলিপস ২০*, ব্রেসওয়েল ২*; আফ্রিদি ৯-০-৪৫-১, নাসিম ৮-০-৪৩-২, ফাহিম ২.২-০-১৬-০, আবরার ১০-০-৬৭-১, সালমান ১০-০-৪৫-১, খুশদিল ৬-০-২২-০)
ফল: নিউ জিল্যান্ড ৫ উইকেটে জিতে চ্যাম্পিয়ন
ম্যান অব দা ম্যাচ: উইল ও’রোক
ম্যান অব দা সিরিজ: সালমান আলি আগা

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

আইন-বিবেক অনুযায়ী ডিসিদের কাজ করার নির্দেশনা আইন উপদেষ্টার

পাকিস্তানকে আবার হারিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজের ট্রফি নিউ জিল্যান্ডের

আপডেট সময় : ০৭:৫১:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ক্রীড়া ডেস্ক: কী অদ্ভুত বৈপরীত্য পাকিস্তানের পরপর দুই ম্যাচের ব্যাটিংয়ে। আগের ম্যাচে সাড়ে তিনশ ছাড়ানো রেকর্ড রান তাড়ায় জেতা দল এবার আড়াইশও করতে পারল না। তাতে জমল না লড়াইও। উইল ও’রোক, মিচেল স্যান্টনারের দারুণ বোলিংয়ের পর ড্যারিল মিচেল ও টম ল্যাথামের ফিফটিতে অনায়াস জয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজে চ্যাম্পিয়ন হলো নিউ জিল্যান্ড। করাচিতে শুক্রবার ফাইনালে নিউ জিল্যান্ডের জয় ৫ উইকেটে। সিরিজে তিন ম্যাচের সবকটি জিতল তারা।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে কিউইদের প্রস্তুতিটাও দারুণ হলো। একই মাঠে আগামী বুধবার এই দুই দলের ম্যাচ দিয়েই শুরু হবে প্রতিযোগিতাটি। আগে ব্যাটিং করে পাকিস্তান শেষ ওভারে অল আউট হয় ২৪২ রানে। পঞ্চাশ ছুঁতে পারেননি তাদের কেউই। প্রথম সাত জনের মধ্যে একশর বেশি স্ট্রাইক রেটে রান করতে পারেন কেবল একজন। নতুন বলে ও ডেথ ওভারে দারুণ বোলিংয়ে ৪৩ রানে ৪ উইকেট নিয়ে নিউ জিল্যান্ডের সফলতম বোলার ও’রোক। ফাইনালের সেরাও ২৩ বছর বয়সী এই পেসার। বাঁহাতি স্পিনার স্যান্টনার ১০ ওভারে স্রেফ ২০ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। কিউই অধিনায়ক ‘ডট’ বল খেলান ৪০টি, হজম করেননি কোনো বাউন্ডারি। অফ স্পিনার মাইকেল ব্রেসওয়েলও নেন ২ উইকেট, ৩৮ রানে। নিউ জিল্যান্ড লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে ২৮ বল বাকি থাকতেই। ৫৮ বলে ৬ চারে ৫৭ রান করেন মিচেল। এই সিরিজের আগের দুই ম্যাচসহ সবশেষ তিন ইনিংসে শূন্য রানে ফেরার পর এবার ৬৪ বলে ৫৬ রান করেন ল্যাথাম। চোটের কারণে লকি ফার্গুসনকে পুরো সিরিজে, বেন সিয়ার্স, ম্যাট হেনরি ও রাচিন রাভিন্দ্রাকে ফাইনালে পায়নি নিউ জিল্যান্ড। তারপরও দাপট দেখিয়েই ট্রফি জিতল তারা।

এই পথচলায় দক্ষিণ আফ্রিকাকে একবার ও পাকিস্তানকে হারাল তারা দুইবার। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পাকিস্তানের ৩৫৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জেতা ম্যাচের মতো অতটা ব্যাটিং সহায়ক ছিল না ফাইনালের উইকেট। বল ব্যাটে আসছিল থেমে থেমে। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে চতুর্থ ওভারে ফাখার জামানকে হারায় পাকিস্তান। নিউ জিল্যান্ডকে প্রথম সাফল্য এনে দেন ও’রোক। তিনে নেমে টিকতে পারেননি সাউদ শাকিল। নিজের প্রথম ওভারে তাকে বোল্ড করে দেন ব্রেসওয়েল। এ দিন ১০ রানে পৌঁছে ওয়ানডেতে যৌথভাবে দ্রুততম ৬ হাজার রানের রেকর্ডে হাশিম আমলার পাশে বসেন বাবর আজম। তবে ইনিংস টেনে নিতে পারেননি তিনিও। ২৯ রান করে তিনি ফিরতি ক্যাচ দেন বোলার ন্যাথান স্মিথকে।

দ্বাদশ ওভারে ৫৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় পাকিস্তান। চতুর্থ উইকেটে প্রতিরোধ গড়েন আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি ও ২৬০ রানের জুটিতে দলকে জেতানো মোহাম্মদ রিজওয়ান ও সালমান আলি আগা। কিন্তু অধিনায়ক ও সহ-অধিনায়কের ৮৮ রানের জুটি ভাঙার পর আবার পথ হারিয়ে ফেলে স্বাগতিকরা। রিজওয়ানকে (৭৬ বলে ৪৬) ফিরিয়ে বড় জুটি ভাঙেন ও’রোক। ব্রেসওয়েলের দ্বিতীয় শিকার সালমান (৬৫ বলে ৪৫)। দারুণ খেলতে থাকা তাইয়াব তাহিরকে (৩৩ বলে ৩৮) থামান জ্যাকব ডাফি। খুশদিল শাহ ফেরেন ১৮ বলে ৭ রান করে। শাহিন শাহ আফ্রিদির দ্রুত বিদায়ে ২০২ রানেই ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলে পাকিস্তান। এক বছরের বেশি সময় পর আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামা ফাহিম আশরাফের ২১ বলে ২২ ও নাসিম শাহর ১৭ বলে ১৯ রানের সুবাদে কোনোমতে ২৪২ পর্যন্ত যেতে পারে তারা। রান তাড়ায় নিউ জিল্যান্ডের শুরুটা যদিও ভালো ছিল না। দ্বিতীয় ওভারে বিদায় নেন উইল ইয়াং। তবে দ্বিতীয় উইকেটে ৭১ রানের জুটিতে দলকে কক্ষপথে রাখেন ডেভন কনওয়ে ও কেন উইলিয়ামসন। ৪৯ বলে ৩৪ রান করে ফেরেন উইলিয়ামসন। ২ রানের জন্য ফিফটি পাননি কনওয়ে। ৭৪ বলে ৫ চারে সাজানো তার ৪৮ রানের ইনিংস। চতুর্থ উইকেটে ইনিংস সেরা ৮৭ রানের জুটিতে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নেন মিচেল ও ল্যাথাম। ৫৬ বলে ফিফটি করার পর লেগ স্পিনার আবরার আহমেদকে ফিরতি ক্যাচ দেন মিচেল। ১৫ ও ২৭ রানে জীবন পেয়ে ল্যাথাম পঞ্চাশে পা রাখেন ৬০ বলে। জয় থেকে ১১ রান দূরে থাকতে তার বিদায়ের পর বাকিটা সারেন গ্লেন ফিলিপস ও ব্রেসওয়েল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান: ৪৯.৩ ওভারে ২৪২ (ফাখার ১০, বাবর ২৯, শাকিল ৮, রিজওয়ান ৪৬, সালমান ৪৫, তাহির ৩৮, খুশদিল ৭, ফাহিম ২২, আফ্রিদি ১, নাসিম ১৯, আবরার ১*; ডাফি ৭-০-৪৮-১, ও’রোক ৯.৩-০-৪৩-৪, ব্রেসওয়েল ১০-১-৩৮-২, স্মিথ ৭-০-৪৬-১, স্যান্টনার ১০-১-২০-২, ফিলিপস ৬-০-৪১-০)
নিউ জিল্যান্ড: ৪৫.২ ওভারে ২৪৩/৫ (ইয়াং ৪, কনওয়ে ৪৮, উইলিয়ামসন ৩৪, মিচেল ৫৭, ল্যাথাম ৫৬, ফিলিপস ২০*, ব্রেসওয়েল ২*; আফ্রিদি ৯-০-৪৫-১, নাসিম ৮-০-৪৩-২, ফাহিম ২.২-০-১৬-০, আবরার ১০-০-৬৭-১, সালমান ১০-০-৪৫-১, খুশদিল ৬-০-২২-০)
ফল: নিউ জিল্যান্ড ৫ উইকেটে জিতে চ্যাম্পিয়ন
ম্যান অব দা ম্যাচ: উইল ও’রোক
ম্যান অব দা সিরিজ: সালমান আলি আগা