ঢাকা ০২:৪১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫

পাঁচ বছরেও চূড়ান্ত হয়নি ডোপ টেস্ট বিধিমালা

  • আপডেট সময় : ০২:১২:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • ৮০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির পেছনে অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে ধরা হয় মাদক সেবন ও মাদক পাচারকে। যে কারণে মাদকের ব্যবহার কমিয়ে আনতে ও ব্যবহার বন্ধে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ নানা পদক্ষেপ নিয়ে থাকে। যার একটি ডোপ টেস্ট বা ড্রাগ টেস্ট। সব ক্ষেত্রে এ কার্যক্রম দ্রæত বাস্তবায়ন দরকার বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন অব্যাহত রাখতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরকে বলেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ। এ নিয়ে ২০১৮ সালে আইন হলেও এখনও বিধিমালা চূড়ান্ত হয়নি।
সূত্র জানায়, মাদকাসক্ত ব্যক্তি শনাক্তে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর থেকে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে। ‘আটটি বিভাগীয় শহরে এবং ১২টি জেলায় মাদকাসক্ত শনাক্তকরণ পরীক্ষা (ডোপ টেস্ট) প্রবর্তন’ নামের প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গত সপ্তাহে বৈঠকে বসেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। এ নিয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে গত বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় দফায় প্রকল্প মুল্যায়ণ কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ওই সভায় মাদকাসক্ত শনাক্তকরণ তথা ডোপ টেস্টের বিষয়ে একটি চূড়ান্ত ও কার্যকর নীতিমালা প্রণয়ন করতে বলা হয়। এছাড়া প্রণীত নীতিমালার ভিত্তিতে আলোচ্য প্রকল্পের আওতায় প্রস্তাবিত কার্যক্রমগুলো অর্থ বিভাগের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সুরক্ষা সেবা বিভাগের পরিচালন বাজেটের আওতায় পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়নের বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
যা বলেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দেওয়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের চিকিৎসা ও পুনর্বাবসন শাখার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ এর ২৪ (৪) ধারায় মাদকাসক্ত ব্যক্তি শনাক্ত করার জন্য ডোপ টেস্ট করার কথা বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সময় এবং বিআরটিএ থেকে গাড়ি চালকদের নতুন লাইসেন্স প্রদান ও লাইসেন্স নবায়নের ক্ষেত্রে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সময় ডোপ টেস্ট করা হচ্ছে। তাই এ কার্যক্রম দ্রæত বাস্তবায়ন প্রয়োজন।
যা বলছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা: এ প্রসঙ্গে অর্থ বিভাগের উপসচিব মো. মশিউর রহমান বলেন, পিইসির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ডোপ টেস্টের কার্যক্রম পরিচালন বাজেটের আওতায় পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা যেতে পারে। একই বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব পি কে এম এনামুল করিম বলেন, রাজস্ব বাজেট থেকে ডোপ টেস্ট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ডোপ টেস্টের জন্য প্রয়োজনীয় টেকনিক্যাল জনবল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সাংগঠনিক কাঠামোতে অন্তর্ভুক্তকরণের বিষয়ে প্রস্তাব পেলে সেটা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেওয়া হবে। স্বাস্থ্য বিভাগের উপসচিব মুহাম্মদ আবদুর রউপ মিয়াও বলেছেন, মাদক নিয়ন্ত্রণে মাদকাসক্ত শনাক্তকরণের জন্য ডোপ টেস্ট কার্যক্রম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যা দ্রæত বাস্তবায়ন করা উচিত।
মাদকের যত মামলা ও উদ্ধার: দেশের বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে উদ্ধার হওয়া মাদকদ্রব্য ও মামলা দায়েরের বিষয়টি একটি প্রতিবেদনে তুলে ধরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। ওই প্রতিবেদনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী সারাদেশে ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ছয় মাসে ৪৯ হাজার ৪৯১টি মামলা দায়ের হয়েছে। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে ৬১ হাজার ৩৬৪ জনকে। এসব ঘটনায় উদ্ধার করা মাদকের মধ্যে রয়েছে অফিয়াম, হেরোইন, কোকেইন, ফেন্সিডিল বা কোডিন, গাঁজা, ইনজেকটিং ড্রাগ বা অ্যাম্পুল, এটিএস বা ইয়াবা।
ডোপ টেস্ট কেন দরকার: প্রায় প্রতিদিন দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যাচ্ছে। এর কারণ বের করতে গিয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চালকের বেপরোয়া আচরণ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। সবক্ষেত্রেই সবার মধ্যেই একটা ধারণা হয়েছে চালকদের বেশিরভাগই মাদকাসক্ত থাকার কারণে বেসামাল হয়ে গাড়ি চালান। যে কারণে সরকারের পক্ষ থেকেও প্রথমে চালকদের লাইসেন্স দেওয়ার আগে মাদকাসক্ত কিনা সেটা পরীক্ষা করার জন্য বলা হয়। ড্রাগ স্টেস্ট বা ডোপ টেস্টের আওতায় নিয়ে আসা হলে তারা মাদক কম নেবেন। এতে সড়ক দুর্ঘটনাও কমে আসবে। সে ধারণা থেকেই ডোপ টেস্টের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এছাড়া ২০২০ সালে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবসের একটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গাড়িচালকদের জন্য মাদক পরীক্ষা (ডোপ টেস্ট) বাধ্যতামূলক করার নির্দেশনা দেন। বিষয়টি আরও গুরুত্ব দেওয়ার জন্য সরকারি চাকরিজীবিদের বছরে একবার ডোপ টেস্ট করানোর সিদ্ধান্ত হয়। যাদের টেস্ট পজিটিভ বা মাদকাসক্ত বলে চিহ্নিত হবে, তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা বা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদেরও ডোপটেস্টের আওতায় নিয়ে আসার প্রস্তাব দেয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকেও এ বিষয়ে একটি নির্দেশনা দেওয়া হয়। যাতে শিক্ষার্থীরা মাদকাসক্ত হয়ে অপরাধে জড়িয়ে না পড়ে। ২০১৮ সালে সরকারের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ব্যাংক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিসিএস ক্যাডার, নন-ক্যাডার, সরকারি যেকোনও চাকরিতে যোগদানের আগে অবশ্যই ডোপ টেস্ট করতে হবে। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পর্যাপ্ত ডোপ টেস্ট করার সক্ষমতা সব হাসপাতালেরও নেই।
বিধিমালা চূড়ান্ত হয়নি এখনও: মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর সূত্র জানায়, তারা ডোপ টেস্ট বিধিমালা প্রণয়নের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে একটি খসড়া পাঠিয়েছেন। সুরক্ষা বিভাগ সেটা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয় থেকে সেই খসড়া বিধিমালাটি সংশোধনের জন্য ফেরত পাঠানো হয়। ২০২২ সালের ২১ ডিসেম্বর সংশোধিত বিধিমালাটি আবার সুরক্ষা সেবা বিভাগে পাঠানো হয়েছে। খুব শিগগিরই সেটা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাদক অনুবিভাগ) মো. সাইফুল ইসলাম।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

পাঁচ বছরেও চূড়ান্ত হয়নি ডোপ টেস্ট বিধিমালা

আপডেট সময় : ০২:১২:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির পেছনে অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে ধরা হয় মাদক সেবন ও মাদক পাচারকে। যে কারণে মাদকের ব্যবহার কমিয়ে আনতে ও ব্যবহার বন্ধে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ নানা পদক্ষেপ নিয়ে থাকে। যার একটি ডোপ টেস্ট বা ড্রাগ টেস্ট। সব ক্ষেত্রে এ কার্যক্রম দ্রæত বাস্তবায়ন দরকার বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন অব্যাহত রাখতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরকে বলেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ। এ নিয়ে ২০১৮ সালে আইন হলেও এখনও বিধিমালা চূড়ান্ত হয়নি।
সূত্র জানায়, মাদকাসক্ত ব্যক্তি শনাক্তে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর থেকে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে। ‘আটটি বিভাগীয় শহরে এবং ১২টি জেলায় মাদকাসক্ত শনাক্তকরণ পরীক্ষা (ডোপ টেস্ট) প্রবর্তন’ নামের প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গত সপ্তাহে বৈঠকে বসেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। এ নিয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে গত বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় দফায় প্রকল্প মুল্যায়ণ কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ওই সভায় মাদকাসক্ত শনাক্তকরণ তথা ডোপ টেস্টের বিষয়ে একটি চূড়ান্ত ও কার্যকর নীতিমালা প্রণয়ন করতে বলা হয়। এছাড়া প্রণীত নীতিমালার ভিত্তিতে আলোচ্য প্রকল্পের আওতায় প্রস্তাবিত কার্যক্রমগুলো অর্থ বিভাগের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সুরক্ষা সেবা বিভাগের পরিচালন বাজেটের আওতায় পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়নের বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
যা বলেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দেওয়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের চিকিৎসা ও পুনর্বাবসন শাখার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ এর ২৪ (৪) ধারায় মাদকাসক্ত ব্যক্তি শনাক্ত করার জন্য ডোপ টেস্ট করার কথা বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সময় এবং বিআরটিএ থেকে গাড়ি চালকদের নতুন লাইসেন্স প্রদান ও লাইসেন্স নবায়নের ক্ষেত্রে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সময় ডোপ টেস্ট করা হচ্ছে। তাই এ কার্যক্রম দ্রæত বাস্তবায়ন প্রয়োজন।
যা বলছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা: এ প্রসঙ্গে অর্থ বিভাগের উপসচিব মো. মশিউর রহমান বলেন, পিইসির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ডোপ টেস্টের কার্যক্রম পরিচালন বাজেটের আওতায় পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা যেতে পারে। একই বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব পি কে এম এনামুল করিম বলেন, রাজস্ব বাজেট থেকে ডোপ টেস্ট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ডোপ টেস্টের জন্য প্রয়োজনীয় টেকনিক্যাল জনবল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সাংগঠনিক কাঠামোতে অন্তর্ভুক্তকরণের বিষয়ে প্রস্তাব পেলে সেটা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেওয়া হবে। স্বাস্থ্য বিভাগের উপসচিব মুহাম্মদ আবদুর রউপ মিয়াও বলেছেন, মাদক নিয়ন্ত্রণে মাদকাসক্ত শনাক্তকরণের জন্য ডোপ টেস্ট কার্যক্রম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যা দ্রæত বাস্তবায়ন করা উচিত।
মাদকের যত মামলা ও উদ্ধার: দেশের বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে উদ্ধার হওয়া মাদকদ্রব্য ও মামলা দায়েরের বিষয়টি একটি প্রতিবেদনে তুলে ধরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। ওই প্রতিবেদনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী সারাদেশে ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ছয় মাসে ৪৯ হাজার ৪৯১টি মামলা দায়ের হয়েছে। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে ৬১ হাজার ৩৬৪ জনকে। এসব ঘটনায় উদ্ধার করা মাদকের মধ্যে রয়েছে অফিয়াম, হেরোইন, কোকেইন, ফেন্সিডিল বা কোডিন, গাঁজা, ইনজেকটিং ড্রাগ বা অ্যাম্পুল, এটিএস বা ইয়াবা।
ডোপ টেস্ট কেন দরকার: প্রায় প্রতিদিন দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যাচ্ছে। এর কারণ বের করতে গিয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চালকের বেপরোয়া আচরণ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। সবক্ষেত্রেই সবার মধ্যেই একটা ধারণা হয়েছে চালকদের বেশিরভাগই মাদকাসক্ত থাকার কারণে বেসামাল হয়ে গাড়ি চালান। যে কারণে সরকারের পক্ষ থেকেও প্রথমে চালকদের লাইসেন্স দেওয়ার আগে মাদকাসক্ত কিনা সেটা পরীক্ষা করার জন্য বলা হয়। ড্রাগ স্টেস্ট বা ডোপ টেস্টের আওতায় নিয়ে আসা হলে তারা মাদক কম নেবেন। এতে সড়ক দুর্ঘটনাও কমে আসবে। সে ধারণা থেকেই ডোপ টেস্টের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এছাড়া ২০২০ সালে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবসের একটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গাড়িচালকদের জন্য মাদক পরীক্ষা (ডোপ টেস্ট) বাধ্যতামূলক করার নির্দেশনা দেন। বিষয়টি আরও গুরুত্ব দেওয়ার জন্য সরকারি চাকরিজীবিদের বছরে একবার ডোপ টেস্ট করানোর সিদ্ধান্ত হয়। যাদের টেস্ট পজিটিভ বা মাদকাসক্ত বলে চিহ্নিত হবে, তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা বা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদেরও ডোপটেস্টের আওতায় নিয়ে আসার প্রস্তাব দেয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকেও এ বিষয়ে একটি নির্দেশনা দেওয়া হয়। যাতে শিক্ষার্থীরা মাদকাসক্ত হয়ে অপরাধে জড়িয়ে না পড়ে। ২০১৮ সালে সরকারের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ব্যাংক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিসিএস ক্যাডার, নন-ক্যাডার, সরকারি যেকোনও চাকরিতে যোগদানের আগে অবশ্যই ডোপ টেস্ট করতে হবে। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পর্যাপ্ত ডোপ টেস্ট করার সক্ষমতা সব হাসপাতালেরও নেই।
বিধিমালা চূড়ান্ত হয়নি এখনও: মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর সূত্র জানায়, তারা ডোপ টেস্ট বিধিমালা প্রণয়নের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে একটি খসড়া পাঠিয়েছেন। সুরক্ষা বিভাগ সেটা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয় থেকে সেই খসড়া বিধিমালাটি সংশোধনের জন্য ফেরত পাঠানো হয়। ২০২২ সালের ২১ ডিসেম্বর সংশোধিত বিধিমালাটি আবার সুরক্ষা সেবা বিভাগে পাঠানো হয়েছে। খুব শিগগিরই সেটা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাদক অনুবিভাগ) মো. সাইফুল ইসলাম।