ঢাকা ০২:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

পাঁচ অভ্যাসে বাতের ব্যথা নিয়ন্ত্রণ

  • আপডেট সময় : ০৫:৩৪:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫
  • ১৫ বার পড়া হয়েছে

স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক: শীতকাল আসন্ন। এই আবহাওয়া অনেকের কাছে উপভোগ্য হলেও বাতের রোগীদের জন্য সামনে আসছে কঠিন সময়। গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজের গবেষণা থেকে জানা যায়, বিশ্বে প্রতি পাঁচজনে একজন মানুষ শারীরিক ব্যথাজনিত সমস্যায় ভুগছেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো বাতের ব্যথা। বাতের ব্যথার অন্যতম কারণ ইউরিক অ্যাসিড, যা শরীরের জয়েন্টে জমে বাত রোগের সৃষ্টি করে। চিকিৎসাশাস্ত্রে একে আর্থ্রাইটিস বলা হয়। দীর্ঘদিন ধরে সঠিক পদ্ধতিতে চিকিৎসা গ্রহণ না করলে এটি শরীরের বিভিন্ন অংশে, হাড়ে কিংবা মাংসপেশিতে যন্ত্রণার সৃষ্টি করে। তবে অনেকে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই ব্যথা কমানোর জন্য ওষুধ খেয়ে নেন, যা পরে কিডনি ও লিভার ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শের পাশাপাশি কিছু ঘরোয়া উপায় অনুসরণ করে দেখা যেতে পারে। ব্যথার ওষুধে যাওয়ার আগে প্রাকৃতিক উপায়ে যদি ব্যথা নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তাহলে সেটা দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। গত ১২ অক্টোবর ছিল বিশ্ব আর্থ্রাইটিস দিবস। এই উপলক্ষ্যে জেনে নিই ঘরোয়া উপায়ে বাত ব্যথা থেকে মুক্তির কিছু কার্যকরী টিপস-

১. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা: অতিরিক্ত ওজন বাতের ব্যথা বাড়িয়ে দেয়। শরীরে অতিরিক্ত ওজন থাকলে তা হাঁটু, নিতম্ব ও পায়ের জয়েন্টে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে, ফলে ব্যথা ও অস্বস্তি আরো বেড়ে যায়। আমেরিকান কলেজ অব রিউমাটোলজি ও আর্থ্রাইটিস ফাউন্ডেশন- এর নির্দেশিকা অনুযায়ী, যদি বাতের সমস্যা থাকে এবং অতিরিক্ত ওজন থাকে। তাহলে তার অবশ্যই ওজন কমাতে হবে। গবেষণায় দেখা গেছে, যদি কারও ওজন বেশি হয় তাহলে ওজনের মাত্র ৫ শতাংশ কমাতে পারলেও শরীরে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসে। এতে শুধু উপসর্গের উন্নতি হয় না, বরং আরো অনেক উপকার পাওয়া যায়। যেমন- চলাফেরায় স্বাচ্ছন্দ্য বৃদ্ধি পায়, ব্যথা কমে যায়, এমনকি ভবিষ্যতে জয়েন্টে নতুন ক্ষতি হওয়ার ঝুঁকিও কমে।

২. নিয়মিত ব্যায়াম করা: যাদের বাতের সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য ব্যায়াম মহৌষধের মতো কাজ করে। নিয়মিত শারীরিক অনুশীলন শুধু শরীরকে সক্রিয় রাখে না, বরং বাতের নানান উপসর্গও কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত ব্যায়াম ওজন কমায়, শরীরের জয়েন্টগুলো নমনীয় রাখে এবং জয়েন্টের চারপাশের পেশিগুলো শক্তিশালী করে।
সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের পরামর্শ অনুযায়ী, সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট মাঝারি মাত্রার শরীরচর্চা করা উচিত। অর্থাৎ প্রতিদিন প্রায় ২০-৩০ মিনিট ব্যায়াম করলেই উপকার পাওয়া যাবে। বাতের সমস্যায় ভোগা রোগীদের লো-ইমপ্যাক্ট এক্সারসাইজ সবচেয়ে ভালো। এগুলো জয়েন্টে চাপ না দিয়ে শরীরকে সচল রাখে, যেমন- হাঁটা, সাইক্লিং, তাই চি, সাঁতার কাটা। যদি বুঝতে না পারেন কোথা থেকে শুরু করবেন, তাহলে একজন চিকিৎসক বা ফিটনেস ট্রেনারের সাহায্য নিতে পারেন। একজন চিকিৎসক বা ফিটনেস ট্রেনার শারীরিক অবস্থা, বয়স ও আর্থ্রাইটিসের মাত্রা অনুযায়ী একটি উপযুক্ত ব্যায়াম পরিকল্পনা তৈরি করে দিতে পারবে।

৩. গরম ও ঠান্ডা পানির সেঁক দেওয়া: আর্থ্রাইটিসজনিত ব্যথা ও প্রদাহ উপশমে গরম এবং ঠান্ডা পানির সেঁক অত্যন্ত কার্যকর একটি ঘরোয়া পদ্ধতি। সঠিকভাবে প্রয়োগ করলে এটি ব্যথা কমাতে, জয়েন্টকে শিথিল করতে এবং প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। গরম পানির সেঁকের প্রভাবে রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধি পায়, ফলে জয়েন্টের শক্তভাব বা কাঠিন্য কমে যায়। এ ছাড়া সকালে ঘুম থেকে উঠে গরম পানিতে গোসল করলে শরীর অনেকটা হালকা লাগে এবং জয়েন্টের জড়তা কমে যায়। ঠান্ডা পানির সেঁক বাতে ব্যথার প্রদাহ, ফোলা ও তীব্র ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। একটি আইস ব্যাগে একটি বরফ দিয়ে ব্যথাযুক্ত স্থানে ১০-১৫ মিনিট ধরে রাখুন। এটি দ্রুত আরাম দেবে। তবে কখনোই বরফ সরাসরি ত্বকে লাগানো উচিত নয়, কারণ এতে ত্বকের স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সবচেয়ে ভালো ফল পেতে গরম ও ঠান্ডা থেরাপি পালাক্রমে ব্যবহার করতে পারেন। এতে শরীর শিথিল হবে, ব্যথা কমবে এবং চলাফেরায় স্বস্তি ফিরে আসবে।

৪. সুস্থ খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করা: আর্থ্রাইটিস নিয়ন্ত্রণে ও শরীরকে শক্তিশালী রাখতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খাদ্যতালিকায় তাজা ফল, সবজি ও প্রাকৃতিক খাবার রাখা আবশ্যক, কারণ এগুলো শুধু জয়েন্টের প্রদাহ কমানোর পাশাপাশি শরীরের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধক্ষমতাও বাড়ায়। গবেষণায় দেখা গেছে, খাদ্যাভাসের সঙ্গে আর্থ্রাইটিস গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত। বিশেষ করে ভেগান ও মেডিটারেনিয়ান খাদ্যাভ্যাস প্রদাহ ও ব্যথা উভয়ই কমাতে সহায়ক বলে প্রমাণিত হয়েছে। এই খাদ্যগুলোতে থাকে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভালো ফ্যাট, এবং প্রাকৃতিক পুষ্টি উপাদান থাকে, যা জয়েন্টের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এ ছাড়া, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড-যা মূলত মাছ, ফ্ল্যাক্সসিড বা আখরোটে পাওয়া যায়। এই খাবারগুলো জয়েন্টের শক্তাভাব ও ব্যথা কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।

৫. খাবারে হলুদের ব্যবহার: হলুদ রান্নার একটি অপরিহার্য মসলা। হলুদ শুধু রং ও স্বাদের জন্য নয়, এটি স্বাস্থ্যের জন্যও এক অনন্য ভেষজ উপাদান। এতে রয়েছে কারকিউমিন নামের একটি প্রাকৃতিক রাসায়নিক উপাদান, যাতে আছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি। এই গুণগুলো শরীরের প্রদাহ কমিয়ে আর্থ্রাইটিসের ব্যথা ও ফোলা কমাতে সাহায্য করতে পারে। বিজ্ঞানীরা এখনো গবেষণা করছেন ঠিক কীভাবে হলুদ শরীরে কাজ করে, তবে বহু গবেষণায় ইঙ্গিত পাওয়া গেছে যে এটি জয়েন্টের প্রদাহ কমাতে এবং ব্যথা হ্রাসে ভূমিকা রাখতে পারে। তাই আর্থ্রাইটিসের ব্যথা ও ফোলা উপশমে প্রতিদিন রান্নায় কাঁচা হলুদ ব্যবহার করতে পারেন। তবে অতিরিক্ত হলুদ গ্রহণ করা উচিত নয়। অল্প পরিমাণে নিয়মিত ব্যবহারই যথেষ্ট উপকার পাওয়া যাবে।

মেহেদী/সানা/আপ্র/১৫/১০/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

পাঁচ অভ্যাসে বাতের ব্যথা নিয়ন্ত্রণ

আপডেট সময় : ০৫:৩৪:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫

স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক: শীতকাল আসন্ন। এই আবহাওয়া অনেকের কাছে উপভোগ্য হলেও বাতের রোগীদের জন্য সামনে আসছে কঠিন সময়। গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজের গবেষণা থেকে জানা যায়, বিশ্বে প্রতি পাঁচজনে একজন মানুষ শারীরিক ব্যথাজনিত সমস্যায় ভুগছেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো বাতের ব্যথা। বাতের ব্যথার অন্যতম কারণ ইউরিক অ্যাসিড, যা শরীরের জয়েন্টে জমে বাত রোগের সৃষ্টি করে। চিকিৎসাশাস্ত্রে একে আর্থ্রাইটিস বলা হয়। দীর্ঘদিন ধরে সঠিক পদ্ধতিতে চিকিৎসা গ্রহণ না করলে এটি শরীরের বিভিন্ন অংশে, হাড়ে কিংবা মাংসপেশিতে যন্ত্রণার সৃষ্টি করে। তবে অনেকে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই ব্যথা কমানোর জন্য ওষুধ খেয়ে নেন, যা পরে কিডনি ও লিভার ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শের পাশাপাশি কিছু ঘরোয়া উপায় অনুসরণ করে দেখা যেতে পারে। ব্যথার ওষুধে যাওয়ার আগে প্রাকৃতিক উপায়ে যদি ব্যথা নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তাহলে সেটা দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। গত ১২ অক্টোবর ছিল বিশ্ব আর্থ্রাইটিস দিবস। এই উপলক্ষ্যে জেনে নিই ঘরোয়া উপায়ে বাত ব্যথা থেকে মুক্তির কিছু কার্যকরী টিপস-

১. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা: অতিরিক্ত ওজন বাতের ব্যথা বাড়িয়ে দেয়। শরীরে অতিরিক্ত ওজন থাকলে তা হাঁটু, নিতম্ব ও পায়ের জয়েন্টে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে, ফলে ব্যথা ও অস্বস্তি আরো বেড়ে যায়। আমেরিকান কলেজ অব রিউমাটোলজি ও আর্থ্রাইটিস ফাউন্ডেশন- এর নির্দেশিকা অনুযায়ী, যদি বাতের সমস্যা থাকে এবং অতিরিক্ত ওজন থাকে। তাহলে তার অবশ্যই ওজন কমাতে হবে। গবেষণায় দেখা গেছে, যদি কারও ওজন বেশি হয় তাহলে ওজনের মাত্র ৫ শতাংশ কমাতে পারলেও শরীরে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসে। এতে শুধু উপসর্গের উন্নতি হয় না, বরং আরো অনেক উপকার পাওয়া যায়। যেমন- চলাফেরায় স্বাচ্ছন্দ্য বৃদ্ধি পায়, ব্যথা কমে যায়, এমনকি ভবিষ্যতে জয়েন্টে নতুন ক্ষতি হওয়ার ঝুঁকিও কমে।

২. নিয়মিত ব্যায়াম করা: যাদের বাতের সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য ব্যায়াম মহৌষধের মতো কাজ করে। নিয়মিত শারীরিক অনুশীলন শুধু শরীরকে সক্রিয় রাখে না, বরং বাতের নানান উপসর্গও কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত ব্যায়াম ওজন কমায়, শরীরের জয়েন্টগুলো নমনীয় রাখে এবং জয়েন্টের চারপাশের পেশিগুলো শক্তিশালী করে।
সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের পরামর্শ অনুযায়ী, সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট মাঝারি মাত্রার শরীরচর্চা করা উচিত। অর্থাৎ প্রতিদিন প্রায় ২০-৩০ মিনিট ব্যায়াম করলেই উপকার পাওয়া যাবে। বাতের সমস্যায় ভোগা রোগীদের লো-ইমপ্যাক্ট এক্সারসাইজ সবচেয়ে ভালো। এগুলো জয়েন্টে চাপ না দিয়ে শরীরকে সচল রাখে, যেমন- হাঁটা, সাইক্লিং, তাই চি, সাঁতার কাটা। যদি বুঝতে না পারেন কোথা থেকে শুরু করবেন, তাহলে একজন চিকিৎসক বা ফিটনেস ট্রেনারের সাহায্য নিতে পারেন। একজন চিকিৎসক বা ফিটনেস ট্রেনার শারীরিক অবস্থা, বয়স ও আর্থ্রাইটিসের মাত্রা অনুযায়ী একটি উপযুক্ত ব্যায়াম পরিকল্পনা তৈরি করে দিতে পারবে।

৩. গরম ও ঠান্ডা পানির সেঁক দেওয়া: আর্থ্রাইটিসজনিত ব্যথা ও প্রদাহ উপশমে গরম এবং ঠান্ডা পানির সেঁক অত্যন্ত কার্যকর একটি ঘরোয়া পদ্ধতি। সঠিকভাবে প্রয়োগ করলে এটি ব্যথা কমাতে, জয়েন্টকে শিথিল করতে এবং প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। গরম পানির সেঁকের প্রভাবে রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধি পায়, ফলে জয়েন্টের শক্তভাব বা কাঠিন্য কমে যায়। এ ছাড়া সকালে ঘুম থেকে উঠে গরম পানিতে গোসল করলে শরীর অনেকটা হালকা লাগে এবং জয়েন্টের জড়তা কমে যায়। ঠান্ডা পানির সেঁক বাতে ব্যথার প্রদাহ, ফোলা ও তীব্র ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। একটি আইস ব্যাগে একটি বরফ দিয়ে ব্যথাযুক্ত স্থানে ১০-১৫ মিনিট ধরে রাখুন। এটি দ্রুত আরাম দেবে। তবে কখনোই বরফ সরাসরি ত্বকে লাগানো উচিত নয়, কারণ এতে ত্বকের স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সবচেয়ে ভালো ফল পেতে গরম ও ঠান্ডা থেরাপি পালাক্রমে ব্যবহার করতে পারেন। এতে শরীর শিথিল হবে, ব্যথা কমবে এবং চলাফেরায় স্বস্তি ফিরে আসবে।

৪. সুস্থ খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করা: আর্থ্রাইটিস নিয়ন্ত্রণে ও শরীরকে শক্তিশালী রাখতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খাদ্যতালিকায় তাজা ফল, সবজি ও প্রাকৃতিক খাবার রাখা আবশ্যক, কারণ এগুলো শুধু জয়েন্টের প্রদাহ কমানোর পাশাপাশি শরীরের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধক্ষমতাও বাড়ায়। গবেষণায় দেখা গেছে, খাদ্যাভাসের সঙ্গে আর্থ্রাইটিস গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত। বিশেষ করে ভেগান ও মেডিটারেনিয়ান খাদ্যাভ্যাস প্রদাহ ও ব্যথা উভয়ই কমাতে সহায়ক বলে প্রমাণিত হয়েছে। এই খাদ্যগুলোতে থাকে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভালো ফ্যাট, এবং প্রাকৃতিক পুষ্টি উপাদান থাকে, যা জয়েন্টের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এ ছাড়া, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড-যা মূলত মাছ, ফ্ল্যাক্সসিড বা আখরোটে পাওয়া যায়। এই খাবারগুলো জয়েন্টের শক্তাভাব ও ব্যথা কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।

৫. খাবারে হলুদের ব্যবহার: হলুদ রান্নার একটি অপরিহার্য মসলা। হলুদ শুধু রং ও স্বাদের জন্য নয়, এটি স্বাস্থ্যের জন্যও এক অনন্য ভেষজ উপাদান। এতে রয়েছে কারকিউমিন নামের একটি প্রাকৃতিক রাসায়নিক উপাদান, যাতে আছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি। এই গুণগুলো শরীরের প্রদাহ কমিয়ে আর্থ্রাইটিসের ব্যথা ও ফোলা কমাতে সাহায্য করতে পারে। বিজ্ঞানীরা এখনো গবেষণা করছেন ঠিক কীভাবে হলুদ শরীরে কাজ করে, তবে বহু গবেষণায় ইঙ্গিত পাওয়া গেছে যে এটি জয়েন্টের প্রদাহ কমাতে এবং ব্যথা হ্রাসে ভূমিকা রাখতে পারে। তাই আর্থ্রাইটিসের ব্যথা ও ফোলা উপশমে প্রতিদিন রান্নায় কাঁচা হলুদ ব্যবহার করতে পারেন। তবে অতিরিক্ত হলুদ গ্রহণ করা উচিত নয়। অল্প পরিমাণে নিয়মিত ব্যবহারই যথেষ্ট উপকার পাওয়া যাবে।

মেহেদী/সানা/আপ্র/১৫/১০/২০২৫