ঢাকা ০৫:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫

পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত

  • আপডেট সময় : ০১:১৮:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ জুলাই ২০২১
  • ৬৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না রাজধানী ঢাকার কোরবানির পশুর হাটগুলোতে। সিটি করপোরেশন নির্ধারিত ৪৬টি শর্তের কোনটিই মানছেন না কেউ। কোথাও কোথাও কিছুটা তদারকি দেখা গেলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। এ অবস্থায় সচেতন ব্যক্তিরা হাটে প্রবেশের সাহস করতে পারছেন না। নগরীর হাটগুলো ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে।
দুই সিটির শর্ত অনুযায়ী হাটে মাস্ক, সাবান, জীবাণুমুক্তকরণ সামগ্রীর ব্যবস্থা করবেন ইজারাদার। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। সবার ব্যক্তিগত সুরক্ষা জোরদার করা ও মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। হাঁচি, কাশির শিষ্টাচার, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, হাত ধোয়ার কথা সার্বক্ষণিক মাইকে প্রচার করতে হবে। হাটে প্রবেশের সময় গ্রাহক চাইলে তাকে বিনামূল্যে মাস্ক দিতে হবে। মাস্ক ছাড়া কাউকে ঢুকতে দেওয়া যাবে না। পর্যাপ্ত পানি ও ব্লিচিং পাউডার দিয়ে পশুর বর্জ্য দ্রুত পরিষ্কার করতে হবে। একটি পশু থেকে আরেকটি পশু এমনভাবে রাখতে হবে যেন ক্রেতাদের মধ্যে তিন ফুট দূরত্ব থাকে। ভিড় এড়াতে মূল্য পরিশোধ ও হাসিল আদায় কাউন্টারের সংখ্যা বাড়াতে হবে। মূল্য পরিশোধের সময় সারিবদ্ধভাবে লাইনে দাঁড়াতে হবে। প্রয়োজনে রেখা টেনে বা গোল চিহ্ন দিয়ে দিতে হবে। হাটের ধারণক্ষমতা অনুযায়ী পশু ঢোকাতে হবে।
শর্তে আরও বলা হয়েছে, প্রতিটি হাটে সিটি করপোরেশনের এক বা একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত, স্বেচ্ছাসেবী মেডিক্যাল টিম গঠন করে সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। টিমের কাছে শরীরের তাপমাত্রা মাপার ডিজিটাল থার্মোমিটার থাকতে হবে। তাৎক্ষণিকভাবে রোগীকে আলাদা করার জন্য হাটে একটি আইসোলেশন ইউনিট রাখতে হবে। হাটের ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী নির্দিষ্ট সংখ্যক ক্রেতাকে প্রবেশ করতে দিতে হবে। বাকিরা বাইরে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে অপেক্ষা করবেন।
তাছাড়া একটি পশু কিনতে একসঙ্গে দুজনের বেশি হাটে ঢুকতে পারবে না। হাটে প্রবেশ ও বের হওয়ার গেটের দুই পাশে এবং পশুর হাটের মাঝে পর্যাপ্ত সংখ্যক পানির আধার, বেসিন ও সাবান এবং আলাদা স্থানে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। হাটে ঢোকার আগে ও বের হয়ে ক্রেতাকে হাত ধুতে হবে। হাটে সব কর্মীকে স্বাস্থ্যবিধির প্রশিক্ষণ দিতে হবে। শিশু ও বৃদ্ধদেরও ঢুকতে দেওয়া যাবে না। এসব শর্তগুলোর মধ্যে মাঝে মধ্যে শুধু ইজারাদার মাইকে সচেতনতা মূলক কিছু বার্তা ঘোষণা করছেন। আর হাটের বিভিন্ন স্থানে স্বাস্থ্যবিধির সচেতনতামূলক কিছু নিয়ম সংবলিত বার্তা ঝুঁলিয়ে রাখা হয়েছে।
গতকাল রোববার রাজধানীর শাহজাহানপুর মৈত্রী সংঘের মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, হাটের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি বলতে কোনও কিছুই দেখা যাচ্ছে না। অধিকাংশ মানুষকে মাস্ক ছাড়াই হাটে দলবেঁধে প্রবেশ করতে দেখা গেছে। কিছু স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হলেও তারা পশুর হাসিল আদায়ে ব্যস্ত। স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে তাদেরও কোনও সচেতনতা নেই। অধিকাংশ স্বেচ্ছাসেবককে মুখের নিচে মাস্ক ঝুলিয়ে রাখতে দেখা গেছে।
একই চিত্র আফতাব নগর হাটের। হাটে বিপুল সংখ্যক কোরবানির পশু দেখা গেলেও বেচা-বিক্রি এখনো শুরু হয়নি। তবে হাটে শিশু-বৃদ্ধ থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষ দেখা গেছে। হাটের প্রবেশপথগুলোতে হাত ধোয়ার কোনও ব্যবস্থা দেখা যায়নি। ভেতরেও নেই কোনও স্বাস্থ্য বিধি তবে হাটটি পরিদর্শনে এসে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম কঠোর বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, স্বাস্থ্যবিধি না মানলে প্রয়োজনে হাট বাতিল করা হবে।
মেরাদিয়া হাটে গিয়ে দেখা গেছে, এলাকার প্রধান সড়কটিতে গরুর হাট বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। হাটের স্বেচ্ছাসেবকরা ট্রাক থেকে গরু নামানোর কাজে ব্যস্ত। স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে নেই কোনও সচেতনতা। হাটটিতে সিটি করপোরেশনের ঘোষণা অনুযায়ী কোনও ভ্রাম্যমাণ আদালতও দেখা যায়নি।
বনশ্রীর বাসিন্দা হাজী আশরাফুল ইসলাম বলেন, যে পরিমাণ মানুষ তাতে খুবই আতঙ্ক লাগবে। করোনাকালেও কোনও স্বাস্থ্যবিধি নেই। যে যার মতো করে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বিনা কারণেও হাটে বিপুল পরিমাণ মানুষের সমাগম ঘটছে। কেউ বাধাও দিচ্ছে না। আমি একজন স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ। হাটে ঢুকতে এখন আমার আতঙ্ক লাগছে। খিলগাঁও এলাকার বাসিন্দা নাজমুল হাসান বলেন, কীসের স্বাস্থ্যবিধি আর নিয়ম-কানুন। হাট বসানোর আগে সিটি করপোরেশন অনেক কথা বলে। কিন্তু কোনও জরিমানা বা কোনও সতর্কতা কিছুই করা হয় না। অনেক শর্তের কথা শুনেছি। কিন্তু সব তো দেখি কাগজে আর করলে। হাটে নেই। বষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৯ নম্বর ওয়ার্ড ও হাট মনিটরিং টিমের আহ্বায়ক মো. মফিজুর রহমান বলেন, গতকাল আমরা মেয়রের সভাপতিত্বে একটি বড় মিটিং করেছি। রোববার থেকে আমাদের সকল টিম মাঠে রয়েছে। আমরা কাজ করছি। এরই মধ্যে মেয়র আতিকুল ইসলাম সাঈদ নগর ও আফতাব নগর হাট পরিদর্শন করেছেন। অপরদিকে হাটগুলোতে ঢাকা দক্ষিণ সিটির তেমন কোনও মনিটরিং দেখা যায়নি। বিষয়টি সম্পর্কে কথাও বলতে রাজি হননি সংস্থাটির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন।
ট্রেনে চড়ে ঢাকায় এলো ৮০০ গরু : কোরবানির ঈদ সামনে রেখে ‘ক্যাটল স্পেশাল ট্রেনে’ করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ৮০০ গরু ঢাকায় পৌঁছে দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। রেলপথ মন্ত্রণালয় গতকাল রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ক্যাটল স্পেশাল ট্রেনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং রাজশাহী থেকে নয়টি ওয়াগনে ৯৭টি গরু সকালে কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছায়। তাতে ভাড়া বাবদ রেলওয়ের আয় হয়েছে ৬৮ হাজার ৩৮০ টাকা।
এছাড়া জামালপুরের ইসলামপুর বাজার স্টেশন থেকে ২৫টি ওয়াগনে ৪০০ গরু এবং দেওয়ানগঞ্জ বাজার থেকে ২১টি ওয়াগনে ৩০৬টি গরুসহ মোট ৭০৬টি গরু এবং ২০টি ছাগল নিয়ে দুটি ক্যাটল স্পেশাল ট্রেন সকালে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছেছে। এ দুটি স্পেশাল ট্রেনের ভাড়া বাবদ ৩ লাখ ৬৭ হাজার টাকা পেয়েছে রেলওয়ে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ৮০টি গরু নিয়ে আরো একটি স্পেশাল ট্রেন রোববার ঢাকায় আসার কথা রয়েছে।
ঢাকায় কোরবানির পশু সরবরাহের জন্য গত বছরের মত এবারও ঈদের আগের ৩ দিন ‘ক্যাটল স্পেশাল’ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ১৭, ১৮ ও ১৯ জুলাই কোরবানির পশু পরিবহনের জন্য এই বিশেষ ট্রেন পরিচালনা করা হচ্ছে।
একটি ট্রেনে ৪০০টি পর্যন্ত পশু পরিবহন করা যায়। গত বছরের মতে এবারও গরু প্রতি ভাড়া ৫০০ টাকা। গত বছর জুলাইয়ের প্রথম দিকে কোরবানি উপলক্ষে দেশের উত্তরাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চল থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রামে ট্রেনে করে কোরবানির পশু পরিবহনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তেমন সাড়া পায়নি রেলওয়ে। এর আগে ২০০৮ সালে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ ঘাট থেকে সাতটি কোরবানির পশুবাহী ট্রেন পরিচালনা করে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, কোরবানির জন্য দেশে এবার ১ কোটি ১৯ লাখ পশু প্রস্তুত রয়েছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত

আপডেট সময় : ০১:১৮:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ জুলাই ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না রাজধানী ঢাকার কোরবানির পশুর হাটগুলোতে। সিটি করপোরেশন নির্ধারিত ৪৬টি শর্তের কোনটিই মানছেন না কেউ। কোথাও কোথাও কিছুটা তদারকি দেখা গেলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। এ অবস্থায় সচেতন ব্যক্তিরা হাটে প্রবেশের সাহস করতে পারছেন না। নগরীর হাটগুলো ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে।
দুই সিটির শর্ত অনুযায়ী হাটে মাস্ক, সাবান, জীবাণুমুক্তকরণ সামগ্রীর ব্যবস্থা করবেন ইজারাদার। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। সবার ব্যক্তিগত সুরক্ষা জোরদার করা ও মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। হাঁচি, কাশির শিষ্টাচার, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, হাত ধোয়ার কথা সার্বক্ষণিক মাইকে প্রচার করতে হবে। হাটে প্রবেশের সময় গ্রাহক চাইলে তাকে বিনামূল্যে মাস্ক দিতে হবে। মাস্ক ছাড়া কাউকে ঢুকতে দেওয়া যাবে না। পর্যাপ্ত পানি ও ব্লিচিং পাউডার দিয়ে পশুর বর্জ্য দ্রুত পরিষ্কার করতে হবে। একটি পশু থেকে আরেকটি পশু এমনভাবে রাখতে হবে যেন ক্রেতাদের মধ্যে তিন ফুট দূরত্ব থাকে। ভিড় এড়াতে মূল্য পরিশোধ ও হাসিল আদায় কাউন্টারের সংখ্যা বাড়াতে হবে। মূল্য পরিশোধের সময় সারিবদ্ধভাবে লাইনে দাঁড়াতে হবে। প্রয়োজনে রেখা টেনে বা গোল চিহ্ন দিয়ে দিতে হবে। হাটের ধারণক্ষমতা অনুযায়ী পশু ঢোকাতে হবে।
শর্তে আরও বলা হয়েছে, প্রতিটি হাটে সিটি করপোরেশনের এক বা একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত, স্বেচ্ছাসেবী মেডিক্যাল টিম গঠন করে সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। টিমের কাছে শরীরের তাপমাত্রা মাপার ডিজিটাল থার্মোমিটার থাকতে হবে। তাৎক্ষণিকভাবে রোগীকে আলাদা করার জন্য হাটে একটি আইসোলেশন ইউনিট রাখতে হবে। হাটের ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী নির্দিষ্ট সংখ্যক ক্রেতাকে প্রবেশ করতে দিতে হবে। বাকিরা বাইরে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে অপেক্ষা করবেন।
তাছাড়া একটি পশু কিনতে একসঙ্গে দুজনের বেশি হাটে ঢুকতে পারবে না। হাটে প্রবেশ ও বের হওয়ার গেটের দুই পাশে এবং পশুর হাটের মাঝে পর্যাপ্ত সংখ্যক পানির আধার, বেসিন ও সাবান এবং আলাদা স্থানে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। হাটে ঢোকার আগে ও বের হয়ে ক্রেতাকে হাত ধুতে হবে। হাটে সব কর্মীকে স্বাস্থ্যবিধির প্রশিক্ষণ দিতে হবে। শিশু ও বৃদ্ধদেরও ঢুকতে দেওয়া যাবে না। এসব শর্তগুলোর মধ্যে মাঝে মধ্যে শুধু ইজারাদার মাইকে সচেতনতা মূলক কিছু বার্তা ঘোষণা করছেন। আর হাটের বিভিন্ন স্থানে স্বাস্থ্যবিধির সচেতনতামূলক কিছু নিয়ম সংবলিত বার্তা ঝুঁলিয়ে রাখা হয়েছে।
গতকাল রোববার রাজধানীর শাহজাহানপুর মৈত্রী সংঘের মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, হাটের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি বলতে কোনও কিছুই দেখা যাচ্ছে না। অধিকাংশ মানুষকে মাস্ক ছাড়াই হাটে দলবেঁধে প্রবেশ করতে দেখা গেছে। কিছু স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হলেও তারা পশুর হাসিল আদায়ে ব্যস্ত। স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে তাদেরও কোনও সচেতনতা নেই। অধিকাংশ স্বেচ্ছাসেবককে মুখের নিচে মাস্ক ঝুলিয়ে রাখতে দেখা গেছে।
একই চিত্র আফতাব নগর হাটের। হাটে বিপুল সংখ্যক কোরবানির পশু দেখা গেলেও বেচা-বিক্রি এখনো শুরু হয়নি। তবে হাটে শিশু-বৃদ্ধ থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষ দেখা গেছে। হাটের প্রবেশপথগুলোতে হাত ধোয়ার কোনও ব্যবস্থা দেখা যায়নি। ভেতরেও নেই কোনও স্বাস্থ্য বিধি তবে হাটটি পরিদর্শনে এসে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম কঠোর বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, স্বাস্থ্যবিধি না মানলে প্রয়োজনে হাট বাতিল করা হবে।
মেরাদিয়া হাটে গিয়ে দেখা গেছে, এলাকার প্রধান সড়কটিতে গরুর হাট বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। হাটের স্বেচ্ছাসেবকরা ট্রাক থেকে গরু নামানোর কাজে ব্যস্ত। স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে নেই কোনও সচেতনতা। হাটটিতে সিটি করপোরেশনের ঘোষণা অনুযায়ী কোনও ভ্রাম্যমাণ আদালতও দেখা যায়নি।
বনশ্রীর বাসিন্দা হাজী আশরাফুল ইসলাম বলেন, যে পরিমাণ মানুষ তাতে খুবই আতঙ্ক লাগবে। করোনাকালেও কোনও স্বাস্থ্যবিধি নেই। যে যার মতো করে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বিনা কারণেও হাটে বিপুল পরিমাণ মানুষের সমাগম ঘটছে। কেউ বাধাও দিচ্ছে না। আমি একজন স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ। হাটে ঢুকতে এখন আমার আতঙ্ক লাগছে। খিলগাঁও এলাকার বাসিন্দা নাজমুল হাসান বলেন, কীসের স্বাস্থ্যবিধি আর নিয়ম-কানুন। হাট বসানোর আগে সিটি করপোরেশন অনেক কথা বলে। কিন্তু কোনও জরিমানা বা কোনও সতর্কতা কিছুই করা হয় না। অনেক শর্তের কথা শুনেছি। কিন্তু সব তো দেখি কাগজে আর করলে। হাটে নেই। বষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৯ নম্বর ওয়ার্ড ও হাট মনিটরিং টিমের আহ্বায়ক মো. মফিজুর রহমান বলেন, গতকাল আমরা মেয়রের সভাপতিত্বে একটি বড় মিটিং করেছি। রোববার থেকে আমাদের সকল টিম মাঠে রয়েছে। আমরা কাজ করছি। এরই মধ্যে মেয়র আতিকুল ইসলাম সাঈদ নগর ও আফতাব নগর হাট পরিদর্শন করেছেন। অপরদিকে হাটগুলোতে ঢাকা দক্ষিণ সিটির তেমন কোনও মনিটরিং দেখা যায়নি। বিষয়টি সম্পর্কে কথাও বলতে রাজি হননি সংস্থাটির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন।
ট্রেনে চড়ে ঢাকায় এলো ৮০০ গরু : কোরবানির ঈদ সামনে রেখে ‘ক্যাটল স্পেশাল ট্রেনে’ করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ৮০০ গরু ঢাকায় পৌঁছে দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। রেলপথ মন্ত্রণালয় গতকাল রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ক্যাটল স্পেশাল ট্রেনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং রাজশাহী থেকে নয়টি ওয়াগনে ৯৭টি গরু সকালে কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছায়। তাতে ভাড়া বাবদ রেলওয়ের আয় হয়েছে ৬৮ হাজার ৩৮০ টাকা।
এছাড়া জামালপুরের ইসলামপুর বাজার স্টেশন থেকে ২৫টি ওয়াগনে ৪০০ গরু এবং দেওয়ানগঞ্জ বাজার থেকে ২১টি ওয়াগনে ৩০৬টি গরুসহ মোট ৭০৬টি গরু এবং ২০টি ছাগল নিয়ে দুটি ক্যাটল স্পেশাল ট্রেন সকালে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছেছে। এ দুটি স্পেশাল ট্রেনের ভাড়া বাবদ ৩ লাখ ৬৭ হাজার টাকা পেয়েছে রেলওয়ে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ৮০টি গরু নিয়ে আরো একটি স্পেশাল ট্রেন রোববার ঢাকায় আসার কথা রয়েছে।
ঢাকায় কোরবানির পশু সরবরাহের জন্য গত বছরের মত এবারও ঈদের আগের ৩ দিন ‘ক্যাটল স্পেশাল’ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ১৭, ১৮ ও ১৯ জুলাই কোরবানির পশু পরিবহনের জন্য এই বিশেষ ট্রেন পরিচালনা করা হচ্ছে।
একটি ট্রেনে ৪০০টি পর্যন্ত পশু পরিবহন করা যায়। গত বছরের মতে এবারও গরু প্রতি ভাড়া ৫০০ টাকা। গত বছর জুলাইয়ের প্রথম দিকে কোরবানি উপলক্ষে দেশের উত্তরাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চল থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রামে ট্রেনে করে কোরবানির পশু পরিবহনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তেমন সাড়া পায়নি রেলওয়ে। এর আগে ২০০৮ সালে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ ঘাট থেকে সাতটি কোরবানির পশুবাহী ট্রেন পরিচালনা করে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, কোরবানির জন্য দেশে এবার ১ কোটি ১৯ লাখ পশু প্রস্তুত রয়েছে।