ঢাকা ০৪:৩৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

পর্যটক জান্নাতি হোসেন এখন পেশাদার ডাইভ মাস্টার

  • আপডেট সময় : ০৬:২০:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪
  • ৫৬ বার পড়া হয়েছে

নারী ও শিশু ডেস্ক: একজন ডুব দিচ্ছেন সমুদ্রের তলদেশে, আরেকজন চলে যাচ্ছেন পাহাড়ে। দৌড়াচ্ছেন, সাঁতার কাটছেন, সাইকেল চালাচ্ছেন মাইলের পর মাইল। আরেকজন গাড়ি হাঁকাচ্ছেন উচ্চগতিতে, অংশ নিচ্ছেন দেশ–বিদেশের রেসে। নতুন প্রজন্মের এই তিন নারীই বাংলাদেশি। একজন স্কুবা ডাইভিং করছেন, একজন জিতেছেন অর্ধদূরত্বের আয়রনম্যান, আরেকজন কার রেসিংয়ে অংশ নিচ্ছেন ভিনদেশের বড় বড় আসরে।
মালয়েশিয়া গিয়ে পর্যটক ও উদ্যোক্তা জান্নাতি হোসেন প্রশিক্ষণ নিয়েছেন আধুনিক ডুবুরি হওয়ার। এর পাশাপাশি কাজ করেছেন গাইড ও প্রশিক্ষক হিসেবে। ঝুলিতে ভরেছেন দারুণ সব অভিজ্ঞতা। তিনি এখন পেশাদার ডাইভ মাস্টার।
জান্নাতি হোসেন বলেন, হাতখানেক দূরত্বেই সামুদ্রিক অ্যানিমোন, ক্লাউন ফিশ, সিন্ধুঘোটকসহ হরেক প্রজাতির মাছ। ক্লাউন ফিশগুলো প্রবালে লুকায়, একটু মাথা বের করে তাকিয়ে আবার ঘুরতে বের হয়। মানুষকে ওরা তেমন ভয় পায় না। মালয়েশিয়ায় গিয়ে প্রথম সমুদ্রে ডুব দেওয়ার অভিজ্ঞতা ছিল ঠিক এ রকম, ছবির মতো। মনে হচ্ছিল, মহাকাশে ভেসে ভেসে পানির নিচের জীবন দেখছি। তিনি বলেন, পানির নিচে অভিযানের শুরুটা অবশ্য বাংলাদেশেই। ২০১৫ সালের কথা। আমি তখন পুরোদমে উদ্যোক্তা। ছুটিতে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ঘুরতে গিয়েছি। শুনলাম, সেখানে প্রবালপ্রাচীর সংরক্ষণে সচেতনতা তৈরি বিষয়ক একটা কর্মসূচি হবে। আয়োজকদের প্রধান আমার বন্ধু। তার সঙ্গে দেখা হলো। জানতে চাইল, আমি দলের নেতৃত্ব দিতে পারব কি না। সানন্দে রাজি হলাম।
জান্নাতি হোসেন বলেন, আমার দায়িত্ব ছিল দুটি। দ্বীপের সীমান্তে পানির নিচের ময়লা পরিষ্কার করা এবং কচ্ছপ সংরক্ষণে কাজ করা। ভয়ের কথা হলো, সে সময় সাঁতারে আমার দক্ষতা ছিল ‘ঠেকা সারা’ পর্যায়ের। কিন্তু নেতা হয়ে পানিতে না নামলে চলে! তিনি বলেন, নির্দেশনা অনুযায়ী শ্বাস নেওয়ার একটা যন্ত্র নিয়েই ঝাঁপ দিলাম পানিতে। ১-২ মিটারের মধ্যে কাজ থাকায় সফলভাবেই সব করতে পেরেছি। তবে প্রথম পেশাদার কোর্স করার সময় বুঝেছি, সেটি কতা বিপজ্জনক ছিল! একটু এদিক-ওদিক হলে প্রাণনাশও হতে পারত!
জান্নাতি হোসেন বলেন, পর্যটক হিসেবেই সেবার মালয়েশিয়ায় পা রাখি। দেশটির চোখজুড়ানো নীল জলরাশি ও বিশুদ্ধ বাতাস প্রাণভরে উপভোগ করার মতো। ঘুরতে ঘুরতেই স্কুবা ডাইভিং নিয়ে খোঁজ নিলাম। খুব বেশি না ভেবেই ঠিক করলাম, ডাইভিং শিখলে মন্দ হয় না। দেশে পানিতে নামার ছোটখাটো অভিজ্ঞতা তো ছিলই। মোটামুটি আগ্রহের বশেই করে ফেললাম প্রথম কোর্স। সমুদ্রের জীবন মনে ধরল। একই সঙ্গে দ্বিতীয় কোর্স সেরে দেশে ফিরেছিলাম। তাই ২০১৮ সালটা আমার কাছে বিশেষ স্মরণীয়। তিনি বলেন, দ্বিতীয় কোর্সে রাতেও সাগরে ডুব দিতে হয়। এটা প্রশিক্ষণের অংশ। ভয়ে ভয়ে পানির নিচে ডুব দিতেই চমকে গেলাম। চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। হাতে লাইট আছে বটে; কিন্তু সেটা ব্যবহার করার মানসিক শক্তি নেই। ডাইভিংয়ের শিক্ষক যেদিকে লাইট তাক করেছেন, একদৃষ্টে সেদিকেই তাকিয়ে ছিলাম। পেছনে যদি ভয়ংকর কিছুও ঘটত তবু ঘুরে দেখার সাহস ছিল না। পরের দুই রাতে আবার ডুব দিলাম। ধীরে ধীরে ভয় কেটেছে। ডাইভিংয়ে এখন আমার প্রিয় কাজ রাতের সমুদ্রে ডুব দেওয়া।
জান্নাতি হোসেন বলেন, আমি এখন সনদধারী ডাইভিং শিক্ষক। ‘ডাইভ মাস্টার’ একটা কোর্সের নাম। এর আগে আরও তিনটি কোর্স করেছি। এসবের নাম যথাক্রমে মুক্তপানির ডুবুরি, অগ্রগামী মুক্তপানির ডুবুরি এবং উদ্ধারকারী ডুবুরি। তিনি বলেন, উদ্ধারকারী ডুবুরি হওয়ার আগে অবশ্য আরেকটা সনদ নিতে হয়। নাম ইএফআর (ইমার্জেন্সি ফার্স্ট রেসপন্স)। আপৎকালীন তৎক্ষণাৎ সাড়া দেওয়া ও প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করতে এটি শেখানো হয়। এছাড়া ‘প্রফেশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব ডাইভিং ইনস্ট্রাকটরস (পিএডিআই)’ নামক ডুবুরি প্রশিক্ষকদের বৈশ্বিক পেশাজীবী সংগঠনেরও সদস্যপদ পেয়েছি।
জান্নাতি হোসেন বলেন, প্রথম তিনটি কোর্সে গড়ে চার-পাঁচ দিন করে সময় লাগে। ‘ডাইভ মাস্টার’ কোর্সটি সম্পন্ন করতে আমার লেগেছে প্রায় দুই মাস। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়াও জরুরি। তিনি বলেন, স্কুবা ডাইভার হওয়া একটা রোমাঞ্চকর ব্যাপার। ঘুরতে গিয়ে আমরা যেমন আনন্দ করি, দুর্গম কোথাও গিয়ে দুঃসাহস দেখাই, সেভাবেও ভাবতে পারেন। খরচ, প্রশিক্ষক ও পরিবেশের বিচারে ডাইভিং শেখার জন্য মালয়েশিয়া আমার কাছে অন্যতম সেরা দেশ। এ ছাড়া অনেক দেশেই ব্যবস্থা আছে। একক ও দলগত দুভাবেই শেখা যায়। প্রশিক্ষকের কাছে একা শেখায় আমি মনোযোগ বেশি দিতে পেরেছি। এককভাবে শিখলে প্রথম দুই কোর্সে খরচ পড়বে প্রায় পাঁচ হাজার মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত (প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা), চার-আটজনের দলে শিখলে খরচ পড়বে প্রায় অর্ধেক। সঙ্গে মিলবে থাকা-খাওয়ার সুবিধা। খরচ কিছতা ওঠানামা করতে পারে।
জান্নাতি হোসেন বলেন, ডুব শিক্ষকই শেষ নয়; ২০২৫ সালের মধ্যে প্রশিক্ষক ও কোর্স পরিচালকের সনদ অর্জন করাই আমার লক্ষ্য। এরপর দেশেই একটা ডাইভ শপ খুলতে চাই। সনদধারী ডুবুরি হতে চাইলে, এসব ডাইভ শপেই নাম লেখাতে হয়। হাতে সনদ থাকার সুবিধা হলো, এটি দেখিয়ে বিশ্বের নানান প্রান্তে গিয়ে সহজেই হাঙর, ডলফিন, সিন্ধুঘোটকের রাজ্যে হারিয়ে যাওয়া যাবে। এছাড়া ডুবুরিদের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ভাড়া দেওয়া এবং পর্যটকদের ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কাজও তারাই করেন। তিনি বলেন, শপের প্রশিক্ষিত ডুবুরিরা নানা দেশ থেকে আসা পর্যটকদের সমুদ্রের তলদেশে নিয়ে যান। ঘুরিয়ে দেখান সাগরতলের জীবন। তাই সাগরের তলদেশের ভ্রমণ গাইডও পেশা হতে পারে। যারা ছবি তুলতে ভালোবাসেন, তারা জীবনে একবার হলেও এ সুযোগ নিতে চাইবেন। তবে বিদেশে প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করতে চাইলে পারদর্শী হতে হবে কয়েকটি ভাষায়।
সেন্ট মার্টিন দ্বীপে বিদেশি পর্যটক বৃদ্ধিতে স্কুবা ডাইভিং বড় ভূমিকা রাখতে পারে। কারণ দুনিয়া চষে বেড়ানো ভ্রমণপিপাসুদের কাছে সাগরের তলদেশ দেখা স্বপ্নের মতো। বাংলাদেশে এ ব্যবস্থা থাকলে নিশ্চয়ই লাভজনক হবে।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

পর্যটক জান্নাতি হোসেন এখন পেশাদার ডাইভ মাস্টার

আপডেট সময় : ০৬:২০:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪

নারী ও শিশু ডেস্ক: একজন ডুব দিচ্ছেন সমুদ্রের তলদেশে, আরেকজন চলে যাচ্ছেন পাহাড়ে। দৌড়াচ্ছেন, সাঁতার কাটছেন, সাইকেল চালাচ্ছেন মাইলের পর মাইল। আরেকজন গাড়ি হাঁকাচ্ছেন উচ্চগতিতে, অংশ নিচ্ছেন দেশ–বিদেশের রেসে। নতুন প্রজন্মের এই তিন নারীই বাংলাদেশি। একজন স্কুবা ডাইভিং করছেন, একজন জিতেছেন অর্ধদূরত্বের আয়রনম্যান, আরেকজন কার রেসিংয়ে অংশ নিচ্ছেন ভিনদেশের বড় বড় আসরে।
মালয়েশিয়া গিয়ে পর্যটক ও উদ্যোক্তা জান্নাতি হোসেন প্রশিক্ষণ নিয়েছেন আধুনিক ডুবুরি হওয়ার। এর পাশাপাশি কাজ করেছেন গাইড ও প্রশিক্ষক হিসেবে। ঝুলিতে ভরেছেন দারুণ সব অভিজ্ঞতা। তিনি এখন পেশাদার ডাইভ মাস্টার।
জান্নাতি হোসেন বলেন, হাতখানেক দূরত্বেই সামুদ্রিক অ্যানিমোন, ক্লাউন ফিশ, সিন্ধুঘোটকসহ হরেক প্রজাতির মাছ। ক্লাউন ফিশগুলো প্রবালে লুকায়, একটু মাথা বের করে তাকিয়ে আবার ঘুরতে বের হয়। মানুষকে ওরা তেমন ভয় পায় না। মালয়েশিয়ায় গিয়ে প্রথম সমুদ্রে ডুব দেওয়ার অভিজ্ঞতা ছিল ঠিক এ রকম, ছবির মতো। মনে হচ্ছিল, মহাকাশে ভেসে ভেসে পানির নিচের জীবন দেখছি। তিনি বলেন, পানির নিচে অভিযানের শুরুটা অবশ্য বাংলাদেশেই। ২০১৫ সালের কথা। আমি তখন পুরোদমে উদ্যোক্তা। ছুটিতে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ঘুরতে গিয়েছি। শুনলাম, সেখানে প্রবালপ্রাচীর সংরক্ষণে সচেতনতা তৈরি বিষয়ক একটা কর্মসূচি হবে। আয়োজকদের প্রধান আমার বন্ধু। তার সঙ্গে দেখা হলো। জানতে চাইল, আমি দলের নেতৃত্ব দিতে পারব কি না। সানন্দে রাজি হলাম।
জান্নাতি হোসেন বলেন, আমার দায়িত্ব ছিল দুটি। দ্বীপের সীমান্তে পানির নিচের ময়লা পরিষ্কার করা এবং কচ্ছপ সংরক্ষণে কাজ করা। ভয়ের কথা হলো, সে সময় সাঁতারে আমার দক্ষতা ছিল ‘ঠেকা সারা’ পর্যায়ের। কিন্তু নেতা হয়ে পানিতে না নামলে চলে! তিনি বলেন, নির্দেশনা অনুযায়ী শ্বাস নেওয়ার একটা যন্ত্র নিয়েই ঝাঁপ দিলাম পানিতে। ১-২ মিটারের মধ্যে কাজ থাকায় সফলভাবেই সব করতে পেরেছি। তবে প্রথম পেশাদার কোর্স করার সময় বুঝেছি, সেটি কতা বিপজ্জনক ছিল! একটু এদিক-ওদিক হলে প্রাণনাশও হতে পারত!
জান্নাতি হোসেন বলেন, পর্যটক হিসেবেই সেবার মালয়েশিয়ায় পা রাখি। দেশটির চোখজুড়ানো নীল জলরাশি ও বিশুদ্ধ বাতাস প্রাণভরে উপভোগ করার মতো। ঘুরতে ঘুরতেই স্কুবা ডাইভিং নিয়ে খোঁজ নিলাম। খুব বেশি না ভেবেই ঠিক করলাম, ডাইভিং শিখলে মন্দ হয় না। দেশে পানিতে নামার ছোটখাটো অভিজ্ঞতা তো ছিলই। মোটামুটি আগ্রহের বশেই করে ফেললাম প্রথম কোর্স। সমুদ্রের জীবন মনে ধরল। একই সঙ্গে দ্বিতীয় কোর্স সেরে দেশে ফিরেছিলাম। তাই ২০১৮ সালটা আমার কাছে বিশেষ স্মরণীয়। তিনি বলেন, দ্বিতীয় কোর্সে রাতেও সাগরে ডুব দিতে হয়। এটা প্রশিক্ষণের অংশ। ভয়ে ভয়ে পানির নিচে ডুব দিতেই চমকে গেলাম। চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। হাতে লাইট আছে বটে; কিন্তু সেটা ব্যবহার করার মানসিক শক্তি নেই। ডাইভিংয়ের শিক্ষক যেদিকে লাইট তাক করেছেন, একদৃষ্টে সেদিকেই তাকিয়ে ছিলাম। পেছনে যদি ভয়ংকর কিছুও ঘটত তবু ঘুরে দেখার সাহস ছিল না। পরের দুই রাতে আবার ডুব দিলাম। ধীরে ধীরে ভয় কেটেছে। ডাইভিংয়ে এখন আমার প্রিয় কাজ রাতের সমুদ্রে ডুব দেওয়া।
জান্নাতি হোসেন বলেন, আমি এখন সনদধারী ডাইভিং শিক্ষক। ‘ডাইভ মাস্টার’ একটা কোর্সের নাম। এর আগে আরও তিনটি কোর্স করেছি। এসবের নাম যথাক্রমে মুক্তপানির ডুবুরি, অগ্রগামী মুক্তপানির ডুবুরি এবং উদ্ধারকারী ডুবুরি। তিনি বলেন, উদ্ধারকারী ডুবুরি হওয়ার আগে অবশ্য আরেকটা সনদ নিতে হয়। নাম ইএফআর (ইমার্জেন্সি ফার্স্ট রেসপন্স)। আপৎকালীন তৎক্ষণাৎ সাড়া দেওয়া ও প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করতে এটি শেখানো হয়। এছাড়া ‘প্রফেশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব ডাইভিং ইনস্ট্রাকটরস (পিএডিআই)’ নামক ডুবুরি প্রশিক্ষকদের বৈশ্বিক পেশাজীবী সংগঠনেরও সদস্যপদ পেয়েছি।
জান্নাতি হোসেন বলেন, প্রথম তিনটি কোর্সে গড়ে চার-পাঁচ দিন করে সময় লাগে। ‘ডাইভ মাস্টার’ কোর্সটি সম্পন্ন করতে আমার লেগেছে প্রায় দুই মাস। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়াও জরুরি। তিনি বলেন, স্কুবা ডাইভার হওয়া একটা রোমাঞ্চকর ব্যাপার। ঘুরতে গিয়ে আমরা যেমন আনন্দ করি, দুর্গম কোথাও গিয়ে দুঃসাহস দেখাই, সেভাবেও ভাবতে পারেন। খরচ, প্রশিক্ষক ও পরিবেশের বিচারে ডাইভিং শেখার জন্য মালয়েশিয়া আমার কাছে অন্যতম সেরা দেশ। এ ছাড়া অনেক দেশেই ব্যবস্থা আছে। একক ও দলগত দুভাবেই শেখা যায়। প্রশিক্ষকের কাছে একা শেখায় আমি মনোযোগ বেশি দিতে পেরেছি। এককভাবে শিখলে প্রথম দুই কোর্সে খরচ পড়বে প্রায় পাঁচ হাজার মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত (প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা), চার-আটজনের দলে শিখলে খরচ পড়বে প্রায় অর্ধেক। সঙ্গে মিলবে থাকা-খাওয়ার সুবিধা। খরচ কিছতা ওঠানামা করতে পারে।
জান্নাতি হোসেন বলেন, ডুব শিক্ষকই শেষ নয়; ২০২৫ সালের মধ্যে প্রশিক্ষক ও কোর্স পরিচালকের সনদ অর্জন করাই আমার লক্ষ্য। এরপর দেশেই একটা ডাইভ শপ খুলতে চাই। সনদধারী ডুবুরি হতে চাইলে, এসব ডাইভ শপেই নাম লেখাতে হয়। হাতে সনদ থাকার সুবিধা হলো, এটি দেখিয়ে বিশ্বের নানান প্রান্তে গিয়ে সহজেই হাঙর, ডলফিন, সিন্ধুঘোটকের রাজ্যে হারিয়ে যাওয়া যাবে। এছাড়া ডুবুরিদের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ভাড়া দেওয়া এবং পর্যটকদের ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কাজও তারাই করেন। তিনি বলেন, শপের প্রশিক্ষিত ডুবুরিরা নানা দেশ থেকে আসা পর্যটকদের সমুদ্রের তলদেশে নিয়ে যান। ঘুরিয়ে দেখান সাগরতলের জীবন। তাই সাগরের তলদেশের ভ্রমণ গাইডও পেশা হতে পারে। যারা ছবি তুলতে ভালোবাসেন, তারা জীবনে একবার হলেও এ সুযোগ নিতে চাইবেন। তবে বিদেশে প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করতে চাইলে পারদর্শী হতে হবে কয়েকটি ভাষায়।
সেন্ট মার্টিন দ্বীপে বিদেশি পর্যটক বৃদ্ধিতে স্কুবা ডাইভিং বড় ভূমিকা রাখতে পারে। কারণ দুনিয়া চষে বেড়ানো ভ্রমণপিপাসুদের কাছে সাগরের তলদেশ দেখা স্বপ্নের মতো। বাংলাদেশে এ ব্যবস্থা থাকলে নিশ্চয়ই লাভজনক হবে।