ঢাকা ১১:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে মহাবিপদ

  • আপডেট সময় : ০১:৫২:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ জুলাই ২০২১
  • ৫২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে না এলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতি করুণ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। আর তাতে করে বড় ধরনের বিপদে পড়তে হবে বলেও জানিয়েছেন অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন।
গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত ভার্চুয়াল বুলেটিনে এ শঙ্কার কথা জানান তিনি। অধ্যাপক রোবেদ আমিন বলেন, ‘বর্তমান ভ্যারিয়েন্টের মাধ্যমে মৃত্যু শুধু বয়স্ক মানুষের হচ্ছে না, তরুণদেরও হচ্ছে।’
বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে সব জেলাতেই করোনা ছড়িয়ে পড়েছে এবং সংক্রমণ ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়ে যাচ্ছে, সঙ্গে মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুর সংখ্যা ৭০ জন, চট্টগ্রামে ২০ জন ও রাজশাহীতে ১৩ জন, খুলনায় ৫১ জন মারা গেছেন। শনাক্তের হার ঢাকায় ৪৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ, চট্টগ্রামে ১৮ দশমিক ২৯ শতাংশ, খুলনায় ১১ দশমিক ৪ শতাংশ। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনায় রোগীর চাপ বাড়ছে।’
অধ্যাপক রোবেদ আমিন আরও বলেন, ‘গত মাসে সারা দেশে সংক্রমণের হার অনেক বেশি ছিল। জুন মাসে এক লাখ ১২ হাজার ৭১৮ জন রোগী সংক্রমিত হয়েছেন। শুধু জুলাইয়ের প্রথম ১০ দিনে প্রায় এক লাখ রোগীকে সংক্রমিত হতে দেখতে পেয়েছি। আমরা যেভাবে সংক্রমিত হচ্ছি, হাসপাতালে রোগীর চাপ যদি বাড়তেই থাকে, আগামী সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে হাসপাতালের শয্যা আর খালি থাকবে না। সারাদেশে গত মাসেও অসংখ্য বেড খালি ছিল, আইসিইউ বেড খালি ছিল। সেই খালি বেডের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। বর্তমানে সারাদেশে মাত্র ৩০০ এর মতো কোভিড-১৯ আইসিইউ বেড খালি আছে।’ তিনি বলেন, ‘সারাদেশে লকডাউন চলছে। লকডাউন সফল করতে পুলিশ এবং বিজিবির পাশাপাশি সেনাবাহিনীও মাঠে রয়েছে। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করেছি— জরুরি প্রয়োজন ছাড়াও অনেকে বাইরে বের হচ্ছেন।’
আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে যদি আমরা করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারি, পরিস্থিতি অত্যন্ত করুণ হয়ে যাবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘সংক্রমণের হার এভাবে চলতে থাকলে এক দিনে ১৫ হাজার শনাক্ত হতে বেশি সময় লাগবে না। আর তাতে করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে সবাইকে বিপদে পড়তে হবে।’
বিধিনিষেধ অমান্যকারীদের কঠোর আইনের আওতায় আনার আহ্বান : দেশে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি চলছে, দিনকে দিন বেড়েই চলেছে মৃত্যুর সংখ্যা। আর সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধ যারা অমান্য করছেন, তাদেরকে আরও কঠোর আইনের আওতায় আনার অনুরোধ করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত ভার্চুয়াল বুলেটিনে এ অনুরোধ করেছেন অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন।
তিনি বলেন, ‘দেশে জুন মাসে এক লাখ ১২ হাজার ৭১৮ জন রোগী সংক্রমিত হয়েছেন। কিন্তু শুধু জুলাইয়ের প্রথম ১০ দিনে প্রায় এক লাখ রোগীকে সংক্রমিত হতে দেখতে পেয়েছি। সংক্রমণের এই ঊর্ধ্বগতি রুখতে সরকার বিধিনিষেধ দিয়েছে। কিন্তু সারাদেশে চলমান লকডাউনের সময়েও অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া যারা বাইরে যাচ্ছেন, যারা আইন অমান্য করছেন।’
এই লকডাউনের মধ্যেও অসংখ্য মানুষ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের হচ্ছেন জানিয়ে অধ্যাপক রোবেদ আমিন বলেন, ‘এসময় জরুরি কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া এবং জরুরি কারণ ছাড়া ঘরের বাইরে কেউ বের হলে, তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু যদি কেউ এ আইন অমান্য করেন অথবা সরকারের আদেশ যদি কেউ অমান্য করেন, তাহলে তার জন্য কঠোরতা যেন বৃদ্ধি পায়।’
‘জরুরি প্রয়োজন ছাড়া যারা বাইরে যাচ্ছেন, তাদের প্রতি আমাদের বিনীত অনুরোধ থাকবে’ মন্তব্য করে অধ্যাপক রোবেদ আমিন বলেন, ‘আমাদের দেশে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে, অসংখ্য মানুষ মারা যাচ্ছেন। আমাদের হাসপাতালগুলোর সব খালি বেড খালি হয়ে যাচ্ছে।’ আর এভাবে যদি চলতে থাকে, ‘তাহলে পরিস্থিতি অত্যন্ত করুণ হয়ে যাবে’ বলে আশঙ্কা করেন অধ্যাপক রোবেদ আমিন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

মহান বিজয়ের মাস শুরু

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে মহাবিপদ

আপডেট সময় : ০১:৫২:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ জুলাই ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে না এলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতি করুণ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। আর তাতে করে বড় ধরনের বিপদে পড়তে হবে বলেও জানিয়েছেন অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন।
গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত ভার্চুয়াল বুলেটিনে এ শঙ্কার কথা জানান তিনি। অধ্যাপক রোবেদ আমিন বলেন, ‘বর্তমান ভ্যারিয়েন্টের মাধ্যমে মৃত্যু শুধু বয়স্ক মানুষের হচ্ছে না, তরুণদেরও হচ্ছে।’
বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে সব জেলাতেই করোনা ছড়িয়ে পড়েছে এবং সংক্রমণ ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়ে যাচ্ছে, সঙ্গে মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুর সংখ্যা ৭০ জন, চট্টগ্রামে ২০ জন ও রাজশাহীতে ১৩ জন, খুলনায় ৫১ জন মারা গেছেন। শনাক্তের হার ঢাকায় ৪৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ, চট্টগ্রামে ১৮ দশমিক ২৯ শতাংশ, খুলনায় ১১ দশমিক ৪ শতাংশ। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনায় রোগীর চাপ বাড়ছে।’
অধ্যাপক রোবেদ আমিন আরও বলেন, ‘গত মাসে সারা দেশে সংক্রমণের হার অনেক বেশি ছিল। জুন মাসে এক লাখ ১২ হাজার ৭১৮ জন রোগী সংক্রমিত হয়েছেন। শুধু জুলাইয়ের প্রথম ১০ দিনে প্রায় এক লাখ রোগীকে সংক্রমিত হতে দেখতে পেয়েছি। আমরা যেভাবে সংক্রমিত হচ্ছি, হাসপাতালে রোগীর চাপ যদি বাড়তেই থাকে, আগামী সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে হাসপাতালের শয্যা আর খালি থাকবে না। সারাদেশে গত মাসেও অসংখ্য বেড খালি ছিল, আইসিইউ বেড খালি ছিল। সেই খালি বেডের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। বর্তমানে সারাদেশে মাত্র ৩০০ এর মতো কোভিড-১৯ আইসিইউ বেড খালি আছে।’ তিনি বলেন, ‘সারাদেশে লকডাউন চলছে। লকডাউন সফল করতে পুলিশ এবং বিজিবির পাশাপাশি সেনাবাহিনীও মাঠে রয়েছে। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করেছি— জরুরি প্রয়োজন ছাড়াও অনেকে বাইরে বের হচ্ছেন।’
আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে যদি আমরা করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারি, পরিস্থিতি অত্যন্ত করুণ হয়ে যাবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘সংক্রমণের হার এভাবে চলতে থাকলে এক দিনে ১৫ হাজার শনাক্ত হতে বেশি সময় লাগবে না। আর তাতে করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে সবাইকে বিপদে পড়তে হবে।’
বিধিনিষেধ অমান্যকারীদের কঠোর আইনের আওতায় আনার আহ্বান : দেশে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি চলছে, দিনকে দিন বেড়েই চলেছে মৃত্যুর সংখ্যা। আর সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধ যারা অমান্য করছেন, তাদেরকে আরও কঠোর আইনের আওতায় আনার অনুরোধ করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত ভার্চুয়াল বুলেটিনে এ অনুরোধ করেছেন অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন।
তিনি বলেন, ‘দেশে জুন মাসে এক লাখ ১২ হাজার ৭১৮ জন রোগী সংক্রমিত হয়েছেন। কিন্তু শুধু জুলাইয়ের প্রথম ১০ দিনে প্রায় এক লাখ রোগীকে সংক্রমিত হতে দেখতে পেয়েছি। সংক্রমণের এই ঊর্ধ্বগতি রুখতে সরকার বিধিনিষেধ দিয়েছে। কিন্তু সারাদেশে চলমান লকডাউনের সময়েও অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া যারা বাইরে যাচ্ছেন, যারা আইন অমান্য করছেন।’
এই লকডাউনের মধ্যেও অসংখ্য মানুষ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের হচ্ছেন জানিয়ে অধ্যাপক রোবেদ আমিন বলেন, ‘এসময় জরুরি কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া এবং জরুরি কারণ ছাড়া ঘরের বাইরে কেউ বের হলে, তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু যদি কেউ এ আইন অমান্য করেন অথবা সরকারের আদেশ যদি কেউ অমান্য করেন, তাহলে তার জন্য কঠোরতা যেন বৃদ্ধি পায়।’
‘জরুরি প্রয়োজন ছাড়া যারা বাইরে যাচ্ছেন, তাদের প্রতি আমাদের বিনীত অনুরোধ থাকবে’ মন্তব্য করে অধ্যাপক রোবেদ আমিন বলেন, ‘আমাদের দেশে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে, অসংখ্য মানুষ মারা যাচ্ছেন। আমাদের হাসপাতালগুলোর সব খালি বেড খালি হয়ে যাচ্ছে।’ আর এভাবে যদি চলতে থাকে, ‘তাহলে পরিস্থিতি অত্যন্ত করুণ হয়ে যাবে’ বলে আশঙ্কা করেন অধ্যাপক রোবেদ আমিন।