বিদেশের খবর ডেস্ক : উত্তর কোরিয়ার ক্ষ্যাপাটে প্রেসিডেন্ট কিম জং উন দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেছেন, পিয়ংইয়ং ‘অনির্দিষ্টকালের’ জন্য পরমাণু কর্মসূচি অব্যাহত রাখবে। গতকাল বুধবার রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম ‘কেসিএনএ’ এ খবর জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের কথা বলার কয়েকদিন পর উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট এমন মন্তব্য করেছেন। গতকাল বুধবার সিউল থেকে এএফপি এই খবর জানিয়েছে।
পিয়ংইয়ংয়ের সরকারি বার্তা সংস্থা ‘কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি’ জানিয়েছে, সম্প্রতি পরমাণু সরঞ্জাম উৎপাদন কেন্দ্র পরিদর্শনকালে কিম সতর্ক করে বলেছেন, শত্রু দেশগুলোর সঙ্গে সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে পড়েছে এবং ২০২৫ সাল হবে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু শক্তি জোরদারের ‘গুরুত্বপূর্ণ বছর।
’ কেসিএনএ জানিয়েছে, কিম বলেছেন, ‘দেশের পরমাণু শক্তি জোরদার করা হচ্ছে আমাদের দৃঢ় রাজনৈতিক এবং সামরিক অবস্থান।’ রিপোর্টে বলা হয়েছে, কিম শনিবার সমুদ্র থেকে উপকূলে কৌশলগত ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানোর পর পরমাণু অস্ত্রের কারখানা পরিদর্শনকালে এমন মন্তব্য করেছেন। গত ২০ জানুয়ারি ট্রাম্প হোয়াইট হাউসের দায়িত্ব নেওয়ার পর উত্তর কোরিয়ার এটাই প্রথম পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা।
কেসিএনএ জানিয়েছে, কর্মরত বিজ্ঞানী ও অন্যান্য কর্মীদের উল্লেখযোগ্য সাফল্য এবং অবিশ্বাস্য উৎপাদন ফলাফল অর্জনের প্রশংসা করেছেন কিম। এই পরিদর্শনের পর অস্ত্র-উপযোগী পারমাণবিক উপাদান তৈরির প্রক্রিয়া সম্পর্কে তাকে ব্রিফ করার পাশাপাশি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা হয়। কিমের এই সফর উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা প্রকাশ করছে। সম্প্রতি পিয়ংইয়ং নিজেদের সামরিক শক্তি প্রদর্শনের মাত্রা বাড়িয়েছে।
বিশেষত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতায় আসাকে কেন্দ্র করে তারা ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা আবারও শুরু করেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার মতে, এসব পরীক্ষা আংশিকভাবে ট্রাম্পের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য পরিচালিত হচ্ছে। চলতি বছর আরও বেশি অস্ত্র-উপযোগী পারমাণবিক উপাদান উৎপাদনের পাশাপাশি পারমাণবিক সক্ষমতা বৃদ্ধির নির্দেশ দেন কিম। তিনি বলেছেন, এই বছরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এটি আমাদের পারমাণবিক শক্তি বৃদ্ধির কৌশলের গুরুত্বপূর্ণ একটি সন্ধিক্ষণ। তিনি আরও বলেন, উত্তর কোরিয়া বিশ্বের সবচেয়ে অস্থিতিশীল নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখোমুখি রয়েছে। সবচেয়ে শত্রুভাবাপন্ন দেশগুলোর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে চলমান দ্বন্দ্বের ফলে আজ তারা এ পরিস্থিতিতে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে পারমাণবিক সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করা ছাড়া অন্য পথ খোলা নেই। পিয়ংইয়ং দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে, তাদের পারমাণবিক অস্ত্র মূলত ওয়াশিংটন ও তার মিত্রদের হুমকি মোকাবিলার উদ্দেশ্যেই তৈরি করা হচ্ছে। ১৯৫০-৫৩ সালের কোরীয় যুদ্ধের সময় উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করা দেশগুলোকে এখনও তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচনা করে তারা।
বিশ্লেষকদের ধারণা, উত্তর কোরিয়া এ পর্যন্ত যত পারমাণবিক উপাদান তৈরি করেছে তা থেকে ৯০টির মতো নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড তৈরি করা সম্ভব।

























