ফারজানা ওয়াহাব : পবিত্র রমজানে দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার কারণে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে এবং শক্তি কমে যেতে পারে। তাই সঠিক খাবার নির্বাচন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পুরো মাস সুস্থ থাকতে পুষ্টিকর সেহরি ও ইফতার খুবই প্রয়োজনীয়। এখানে কিছু আদর্শ খাবারের তালিকা দেওয়া হলো-
সেহরি: অনেকের অভ্যাস সেহরিতে না খেয়ে রোজা রাখা। এতে পরবর্তী সময়ে দুর্বলতা, অ্যাসিডিটি, পানিশূন্যতাসহ নানাবিধ সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই সেহরিতে ভালো খাবার খাওয়া জরুরি। যেসব খাবার খেতে পারেন, তা হলো জটিল কার্বোহাইড্রেট (লাল চালের ভাত/ওটস/চিড়া); আটার রুটি/লাল আটার ব্রেড; মিষ্টি আলু/সিদ্ধ আলু; আমিষজাতীয় খাবার (পেশি ও শক্তি ধরে রাখে)- ডিম (সিদ্ধ/ভাজি), টক দই বা দুধ, মুরগি/মাছ/গরুর মাংস (কম তেলযুক্ত), ডাল বা ছোলার তরকারি; আঁশ ও হাইড্রেশন বৃদ্ধির জন্য শাকসবজি, ফল (আপেল, কলা, কমলা, নাশপাতি), পানি (২ থেকে ৩ গ্লাস)।
সেহরিতে যে খাবার এড়িয়ে চলবেন, তা হলো অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার; বেশি ঝাল ও মসলাযুক্ত খাবার; চা/কফি (পানিশূন্যতা বাড়ায়)।
ইফতার: দিনের প্রথম খাবার হওয়ায় ইফতার হতে হবে সুষম ও স্বাস্থ্যকর। ইফতারের জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে প্রথম ধাপে (পানি ও শক্তি পুনরুদ্ধার) খাবেন ২-৩টি খেজুর (প্রাকৃতিক চিনি দ্রুত শক্তি দেয়); একগ্লাস ডাবের পানি/লেবুর শরবত/ফলের স্মুদি (দুধ ও কলা মিশিয়ে); সুপেয় পানি। দ্বিতীয় ধাপে (পুষ্টিকর ও হালকা খাবার) খাবেন ছোলা, মুড়ি ও শসার মিশ্রণ। তৃতীয় ধাপে (প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার) খাবেন গ্রিলড/সিদ্ধ মুরগি বা মাছ; হালকা তেলে ভাজা সবজি; অল্প পরিমাণ শর্করা (রুটি বা লাল চালের খিচুড়ি:।
ইফতারে যে খাবার এড়িয়ে চলবেন, তা হলো কোমল পানীয় ও অতিরিক্ত চিনিযুক্ত শরবত; বেশি ভাজাপোড়া (সমুচা, পেঁয়াজু, বেগুনি); বেশি তৈলাক্ত খাবার (হজমে সমস্যা করে)।
রাতের খাবার: লাল চালের ভাত বা আটার রুটি; মুরগি/মাছ/ডিম; সবজি ও সালাদ; এক গ্লাস দুধ/টক দই/দই ও ফলের সালাদ।
উল্লেখ্য, খাবারের পরিমাণ একেকজনের ওজন ও উচ্চতা অনুযায়ী একেক রকম। তাই প্রয়োজনে পুষ্টিবিদের শরণাপন্ন হয়ে নিজের রোজার খাবারের তালিকা ও পরিমাণ ঠিক করে নিতে পারেন।
লেখক: পুষ্টিবিদ, আলোক হাসপাতাল লিমিটেড, মিরপুর, ঢাকা