ঢাকা ১২:২৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

পদ্মা সেতু নির্মাণের সব কৃতিত্ব জনগণের: প্রধানমন্ত্রী

  • আপডেট সময় : ০২:১৮:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ জুলাই ২০২২
  • ৬৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণে তাঁর পাশে থাকার জন্য দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেছেন, এর সব কৃতিত্ব বাংলাদেশের জনগণের। তিনি বলেন, ‘এভাবে আমার পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমি বাংলাদেশের জনগণের কাছে সত্যিই কৃতজ্ঞ। তাঁদের শক্তি (আমার জন্য) সবচেয়ে বড় শক্তি।’
গতকাল রোববার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী সবার উদ্দেশে এ শুভেচ্ছা জানান। তিনি গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি সভায় সভাপতিত্ব করেন। শেখ হাসিনা তাঁর মন্ত্রিপরিষদের সহকর্মী ও কর্মকর্তাদের অভিনন্দন ও শুভেচ্ছার উত্তরে বলেন, ‘এ শুভেচ্ছা আমার দেশের জনগণের জন্য। আমার জন্য নয়, বাংলাদেশের মানুষের জন্য।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ প্রমত্ত পদ্মার বুকে সেতু তৈরি করাটাই একটি ইতিহাস। সে ক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রী ও সচিব যাঁরা ছিলেন, অর্থ বরাদ্দে এতটুকু কার্পণ্য করেননি; বরং কীভাবে আমরা নিজেদের টাকায় করতে পারি, সে জিনিসটি আরও সহজ করে দিয়েছেন। তিনি এ জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘২০১২ সাল থেকেই তো এই যুদ্ধ শুরু। কত অপবাদ, ষড়যন্ত্র এর জন্য মোকাবিলা করতে হয়েছে। আর সব থেকে দুঃখজনক যে আরও আগে সেতুর কাজ শুরু করা গেলে আরও আগেই শেষ করা সম্ভব হতো।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আরেকটি বিষয় আমার কাছে অবাক লাগে, আমাদের কিছু অর্থনীতিবিদ এবং জ্ঞানী-গুণীরা যে বলেছিল—এটা ভায়াবল হবে না, কে এখান থেকে চলবে, কোনো টাকা উঠবে না। কিন্তু এখন কী দেখা যাচ্ছে?’
পদ্মা সেতুর ফলে মানুষের জীবন-জীবিকার আমূল পরিবর্তন ঘটবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু সেতু তৈরির আগে প্রতিবছরই উত্তরবঙ্গে মঙ্গা দেখা দিত। অথচ এই একটি সেতু নির্মাণের পর সেখানে মঙ্গা আর নেই। সেখানে পদ্মা সেতু দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সরাসরি সাপ্লাই চেইন স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ইলিশের মৌসুম এসে যাওয়ায় রাজধানীতে বসেই তাজা ইলিশপ্রাপ্তিও সম্ভব হবে, অন্যদিকে জেলেরাও লাভবান হবে। তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু আমাদের দেশের জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের একটা বিরাট মাইলফলক।’ সেতু নির্মাণের শুরুতে বিশ্বব্যাংকের মিথ্যা দুর্নীতির অভিযোগের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা কখনোই গ্রহণযোগ্য ছিল না এবং এর পরেই ঘোষণা দিলাম নিজের টাকাতেই পদ্মা সেতু করব, অন্যের টাকা নেব না।’
রাজধানীকে যানজটমুক্ত রাখতে সার্কুলার রোড নির্মাণের নির্দেশ : রাজধানীকে যানজটমুক্ত রাখতে দ্রুত সার্কুলার রোড করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে রাজধানীর ভেতরের কাঁচা বাজারগুলো সরিয়ে ঢাকার প্রান্ত এলাকা কাঁচপুর, আমিন বাজার, কেরানীগঞ্জসহ অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশ দেন। সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সর্বক্ষেত্রে সুশাসন নিশ্চিত করার কথা বলেছেন। সুশাসন থাকায় পদ্মা সেতুর মতো একটি বিশাল ও জটিল প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে।’ খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘পদ্মা সেতু হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই রাজধানীতে গাড়ি চলাচল বেড়েছে। এ চাপ কমিয়ে রাজধানীর বাইরে দিয়ে বিকল্প সার্কুলার রোড করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। যাতে দূরপাল্লার যানবাহনগুলোকে শহরের ভেতরে ঢুকতে না হয়।’ তিনি বলেন, ‘সুশাসন এবং প্রশাসনিকভাবে কঠোর নজরদারির জন্য পদ্মা সেতু সফলভাবে বাস্তবায়ন হয়েছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।’
পারিবারিক আদালত আইনের খসড়া অনুমোদন : জেলা পর্যায়ের সকল বিচারকের পারিবারিক কলহের মামলা বিচারের সুযোগ রেখেন পারিবারিক আদালত আইন-২০২২ এর খসড়ায় অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ আইনের খসড়ায় অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, এ আইনের ফলে বিবাহ বিচ্ছেদসহ পারিবারিক কলহ এবং সন্তানদের নিয়ে ঝামেলা হলে জেলা পর্যায়ের সব বিচারকই এর বিচার করতে পারবেন। আগে শুধু জেলা জজ এ ধরনের মামলায় বিচার করতেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

পদ্মা সেতু নির্মাণের সব কৃতিত্ব জনগণের: প্রধানমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০২:১৮:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ জুলাই ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণে তাঁর পাশে থাকার জন্য দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেছেন, এর সব কৃতিত্ব বাংলাদেশের জনগণের। তিনি বলেন, ‘এভাবে আমার পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমি বাংলাদেশের জনগণের কাছে সত্যিই কৃতজ্ঞ। তাঁদের শক্তি (আমার জন্য) সবচেয়ে বড় শক্তি।’
গতকাল রোববার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী সবার উদ্দেশে এ শুভেচ্ছা জানান। তিনি গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি সভায় সভাপতিত্ব করেন। শেখ হাসিনা তাঁর মন্ত্রিপরিষদের সহকর্মী ও কর্মকর্তাদের অভিনন্দন ও শুভেচ্ছার উত্তরে বলেন, ‘এ শুভেচ্ছা আমার দেশের জনগণের জন্য। আমার জন্য নয়, বাংলাদেশের মানুষের জন্য।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ প্রমত্ত পদ্মার বুকে সেতু তৈরি করাটাই একটি ইতিহাস। সে ক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রী ও সচিব যাঁরা ছিলেন, অর্থ বরাদ্দে এতটুকু কার্পণ্য করেননি; বরং কীভাবে আমরা নিজেদের টাকায় করতে পারি, সে জিনিসটি আরও সহজ করে দিয়েছেন। তিনি এ জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘২০১২ সাল থেকেই তো এই যুদ্ধ শুরু। কত অপবাদ, ষড়যন্ত্র এর জন্য মোকাবিলা করতে হয়েছে। আর সব থেকে দুঃখজনক যে আরও আগে সেতুর কাজ শুরু করা গেলে আরও আগেই শেষ করা সম্ভব হতো।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আরেকটি বিষয় আমার কাছে অবাক লাগে, আমাদের কিছু অর্থনীতিবিদ এবং জ্ঞানী-গুণীরা যে বলেছিল—এটা ভায়াবল হবে না, কে এখান থেকে চলবে, কোনো টাকা উঠবে না। কিন্তু এখন কী দেখা যাচ্ছে?’
পদ্মা সেতুর ফলে মানুষের জীবন-জীবিকার আমূল পরিবর্তন ঘটবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু সেতু তৈরির আগে প্রতিবছরই উত্তরবঙ্গে মঙ্গা দেখা দিত। অথচ এই একটি সেতু নির্মাণের পর সেখানে মঙ্গা আর নেই। সেখানে পদ্মা সেতু দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সরাসরি সাপ্লাই চেইন স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ইলিশের মৌসুম এসে যাওয়ায় রাজধানীতে বসেই তাজা ইলিশপ্রাপ্তিও সম্ভব হবে, অন্যদিকে জেলেরাও লাভবান হবে। তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু আমাদের দেশের জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের একটা বিরাট মাইলফলক।’ সেতু নির্মাণের শুরুতে বিশ্বব্যাংকের মিথ্যা দুর্নীতির অভিযোগের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা কখনোই গ্রহণযোগ্য ছিল না এবং এর পরেই ঘোষণা দিলাম নিজের টাকাতেই পদ্মা সেতু করব, অন্যের টাকা নেব না।’
রাজধানীকে যানজটমুক্ত রাখতে সার্কুলার রোড নির্মাণের নির্দেশ : রাজধানীকে যানজটমুক্ত রাখতে দ্রুত সার্কুলার রোড করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে রাজধানীর ভেতরের কাঁচা বাজারগুলো সরিয়ে ঢাকার প্রান্ত এলাকা কাঁচপুর, আমিন বাজার, কেরানীগঞ্জসহ অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশ দেন। সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সর্বক্ষেত্রে সুশাসন নিশ্চিত করার কথা বলেছেন। সুশাসন থাকায় পদ্মা সেতুর মতো একটি বিশাল ও জটিল প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে।’ খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘পদ্মা সেতু হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই রাজধানীতে গাড়ি চলাচল বেড়েছে। এ চাপ কমিয়ে রাজধানীর বাইরে দিয়ে বিকল্প সার্কুলার রোড করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। যাতে দূরপাল্লার যানবাহনগুলোকে শহরের ভেতরে ঢুকতে না হয়।’ তিনি বলেন, ‘সুশাসন এবং প্রশাসনিকভাবে কঠোর নজরদারির জন্য পদ্মা সেতু সফলভাবে বাস্তবায়ন হয়েছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।’
পারিবারিক আদালত আইনের খসড়া অনুমোদন : জেলা পর্যায়ের সকল বিচারকের পারিবারিক কলহের মামলা বিচারের সুযোগ রেখেন পারিবারিক আদালত আইন-২০২২ এর খসড়ায় অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ আইনের খসড়ায় অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, এ আইনের ফলে বিবাহ বিচ্ছেদসহ পারিবারিক কলহ এবং সন্তানদের নিয়ে ঝামেলা হলে জেলা পর্যায়ের সব বিচারকই এর বিচার করতে পারবেন। আগে শুধু জেলা জজ এ ধরনের মামলায় বিচার করতেন।