নিজস্ব প্রতিবেদক : নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও দ্রুত এগিয়ে চলছে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ। কর্মযজ্ঞের ধারাবাহিকায় স্বপ্নের সেতুটিতে আর মাত্র একটি স্প্যানে ৭০টি রোডওয়ে স্ল্যাব বসানো বাকি রয়েছে। সেতুর ১২ নম্বর স্প্যানে স্ল্যাব বসানো গেলেই শেষ হবে বড় একটা কাজ। এই কাজটি শেষ হলে হেঁটেই পার হওয়া যাবে পদ্মা সেতু। ইতোমধ্যে সেতুর সব স্প্যান বসানোর ছয় মাসের মাথায় শেষ হয়েছে রেলওয়ের স্ল্যাব বসানোর কাজ। আগস্ট মাসের মধ্যেই সেতুতে রোডওয়ে স্ল্যাব বসানোর কাজ শেষ হবে বলে আশা করছেন পদ্মা সেতুর প্রকৌশলীরা।
গত মাসে সেতুতে রোডওয়ে স্ল্যাব বসানোয় রেকর্ড করেছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। এই মাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক স্ল্যাব বসানো হয়েছে। জুলাই মাসে সেতুর স্প্যানে ১১০টি রোডওয়ে স্ল্যাব বসানো হয়েছে। এর আগে এক মাসে সর্বোচ্চ ১০৩টি স্ল্যাব বসানো হয়েছিল।
৬.১৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৮.১০ মিটার প্রস্থের পদ্মা সেতুতে ৪১টি স্প্যান রয়েছে। ইতিমধ্যে ৪০টি স্প্যানে স্ল্যাব বসানোর কাজ শেষ হয়েছে।
সেতুর মোট ২ হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে বসানো হয়েছে ২ হাজার ৮৪৭টি। আর মাত্র ১৫০ মিটার জায়গায় ৭০টি স্ল্যাব বসিয়ে দিলেই শেষ হবে সেতুর মূল কাজের বড় একটি অংশ। এই কাজও এগিয়ে চলছে দ্রুতগতিতে।
১৩ জুলাই সেতুতে পরীক্ষামূলকভাবে পিচ ঢালাইয়ের কাজ করা হয়। সেতুর জাজিরা প্রান্তের ৪১ নম্বর স্প্যান থেকে ৩৭ নম্বর স্প্যান পর্যন্ত রোডওয়ে স্ল্যাব, প্যারাপেট ওয়াল এবং রোড ডিভাইডার বসানো হয়েছে। এই সড়কটুকুতে বাতি ছাড়া প্রায় সব কাজই শেষ।
এদিন সেতুর ৪০ নম্বর স্প্যানের উপরের সড়কে পিচ ঢালাইয়ের কাজ হয়। এর আগে এই স্প্যানের উপরের সড়কে ১০ মিটার প্রস্থ এবং ৬০ মিটার দৈর্ঘ্যরে ওয়াটার প্রুফ মেমব্রেন বিছানো হয়েছিল। যেটি পানি নিরোধক একটি প্রলেপ। তার উপরের পিচ ঢালাই করা হয়। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে ৪২টি পিলারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ছয় দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু পুরোপুরি দৃশ্যমান হয়েছে ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর। একইসঙ্গে চলতে থাকে রোডওয়ে, রেলওয়ে স্ল্যাব বসানোসহ অন্যান্য কাজ। সেতুর মূল আকৃতি দোতলা। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোনেম লিমিটেড। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। ২০২২ সালের জুন মাসের মধ্যেই এই সেতু যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার কথা রয়েছে।
পদ্মা সেতুতে ৭০টি রোডওয়ে স্ল্যাব বসানো বাকি
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ