ঢাকা ০৪:৪৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

পদ্মায় ১৯টি গাড়ি নিয়ে হেলে পড়লো ফেরি

  • আপডেট সময় : ০২:০৫:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ অক্টোবর ২০২১
  • ৮২ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ায় ৫ নম্বর ফেরিঘাটে ১৯টি গাড়ি নিয়ে হেলে গেছে রো রো আমানত শাহ নামে একটি ফেরি।
গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে পদ্মা নদীতে ফেরিটি হেলে পড়ে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন আরিচা শাখার উপমহাব্যবস্থাপক মো. জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ঘাট থেকে যানবাহন লোড করে পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ফেরিঘাটে নোঙর করে বড় আকারের রো রো ফেরি আমানত শাহ। ফেরি থেকে কয়েকটি গাড়ি নামার পরপরই এক পাশ কাত হয়ে যায় ফেরিটি। এরপর ১৯টি গাড়ি পদ্মায় পড়ে যায় বলে তথ্য পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে। পদ্মায় পড়ে যাওয়া গাড়িগুলোর মধ্যে বেশিরভাগ ট্রাক ছিল। ছিল কয়েকটি ছোট গাড়িও। তবে কোনো বাস ছিল না। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। কেউ নিখোঁজ আছেন কি না তাৎক্ষণিকভাবে তাও জানা যায়নি। ফেরিটি ডোবার সময় অধিকাংশ যানের যাত্রী লাফিয়ে পড়েন।
৪০ বছরের বেশি সময় ধরে চলছিল ফেরিটি : মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে বুধবার সকালে কাত হয়ে আংশিক ডুবে যাওয়া রো রো ফেরি আমানত শাহ ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে চলাচল করছিল। অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল অধ্যাদেশ অনুযায়ী, একটি নৌযানের নিবন্ধনের মেয়াদ ৩০ বছর হয়। বিশেষ জরিপের (ফিটনেস) মাধ্যমে এরপর দুবার পাঁচ বছর করে নিবন্ধনের মেয়াদ বাড়ানো যায়। তবে ৪০ বছরের বেশি সময় কোনোভাবেই কোনো নৌযান চলাচল করতে পারে না।
দেশের নৌপথে ৯৫ বছর বয়সী ফেরিও চলে। আইন অনুযায়ী ৪০ বছরের বেশি বয়সী নৌযান চালানোর সুযোগ নেই। মাদারীপুরের বাংলাবাজার থেকে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া রুটে চলাচল করে এই ডাম্ব ফেরি। তীব্র স্রোতে ঝুঁকি এড়াতে এর চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার বাংলাবাজার ঘাটে
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) নৌযানের তালিকা অনুযায়ী, ফেরি আমানত শাহ ১৯৮০ সালে তৈরি। ৩৩৫ জন যাত্রী ও ২৫টি যানবাহন বহন করতে পারে এটি। ৮০৬.৬০ টন ওজনের ফেরিটি সর্বোচ্চ ১০.২৫ নটিক্যাল মাইল গতিতে চলতে পারে।
বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (মেরিন) আবদুস সাত্তার বলেন, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ১৭টি পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ে ফেরিটি ছেড়ে আসে। সকাল পৌনে ১০টার দিকে পাটুরিয়া ঘাটে ভিড়ে এটি কাত হয়ে আংশিক ডুবে যায়। আমানত শাহ ফেরিটি প্রথম দিকের আনা। এর বয়স ৪০ বছর পার হয়ে গেছে। পাটুরিয়া ঘাটে থাকা পরিবহনশ্রমিক মাইনুল হোসেনের ভাষ্য, ‘ফেরির তলা ফেটে ধীরে ধীরে এটি ডুবতে থাকে। ওই অবস্থায় আমাদের চোখের সামনে ফেরি থেকে দ্রুতগতিতে দুটি পণ্যবাহী ট্রাক নামতে পারলেও বাকি কোনো গাড়ি নামতে পারেনি। কয়েক মিনিটের মধ্যে ফেরিটি কাত হয়ে ডুবে যায়।’ ুরাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া ফেরিটি মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ঘাটে কাত হয়ে আংশিক ডুবে যায়।
৬০ টনের হামজা দিয়ে হাজার টনের ফেরি তোলার চেষ্টা : পদ্মায় কাত হয়ে উল্টে যাওয়া ফেরি উদ্ধারে পাটুরিয়া ঘাটে কাজ শুরু করেছে উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা। রো রো ফেরি শাহ আমানতকে বাঁধা হয়েছে হয়েছে হামজার সঙ্গে। তবে কাত হয়ে ফেরিটির মাঝে পানি ঢুকে ওজন বেড়ে যাওয়ায় উদ্ধার কাজে জটিলতার আভাস মিলছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা ইতিমধ্যে ডুবে যাওয়া দুটি ট্রাক টেনে তুলেছে বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএ এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোঃ নুরুল আলম।
“ফেরিটির ভেতরে পানি ঢুকে এটির ওজন হাজার টনের বেশি দাঁড়িয়েছে বলে ধারণা করা যায়। কিন্তু হামজার সক্ষমতা মাত্র ৬০ টন। হামজাকে দিয়ে কিভাবে ফেরিটিকে উদ্ধার করা যাবে সে বিষয়ে কর্মকর্তারা আলোচনা করছেন,” যোগ করেন তিনি।
গতকাল বুধবার সকালের দুর্ঘটনার পর মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে উদ্ধার কার্যক্রম চালাতে যথারীতি ডাক পড়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) জাহাজ হামজার।
ফেরি দুর্ঘটনার পর আশেপাশের সংস্থাগুলোর উদ্ধার সরঞ্জাম দিয়ে এবারও কাজ হয়নি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিবার নৌ দুর্ঘটনার পর যে চিত্র দেখা যায়, এবারও এর ব্যতিক্রম দেখা যায়নি। সরকারি সংস্থাগুলোর কাছে থাকা উদ্ধারকারী সরঞ্জামগুলো কাজ করেনি।
নৌ দুর্ঘটনার পর ঘটনার শিকার জাহাজ উদ্ধারে বেশির ভাগ সময় দায়িত্ব পড়ে বিআইডব্লিউটিএ এর ওপর। কিন্তু সংস্থাটির উদ্ধারকারী জাহাজ রুস্তম ও হামজার ধারণক্ষমতা খুবই কম। এবারও দ্রুতই ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ শুরু করেছে হামজা।
ঘটনাস্থলে এসে বিআইডব্লিউটিএ এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোঃ নুরুল আলম বলেন, দুর্ঘটনার পরপরই আরিচা ঘাট থেকে উদ্ধারকারী জাহাজ হামজাকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। বিকাল ৪টা পর্যন্ত হামজা দুটি ট্রাক টেনে তুলতে সক্ষম হয়। কিন্তু মূল সমস্যাটা হচ্ছে ফেরিটিকে উদ্ধার করা। ডুবে থাকা ট্রাকগুলোকে শনাক্ত করা গেছে উল্লেখ করে তিনি জানান, ট্রাকগুলোতে দড়ি বাঁধার কাজ চলছে। এর মধ্যে দুটি ট্রাক টেনে তোলা হয়েছে হামজাকে দিয়ে। উদ্ধার অভিযান দীর্ঘতর হতে পারে বলে আভাস দেন তিনি। তবে এখন পর্যন্ত হতাহত বা নিখোঁজের কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি জানিয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, এখন পর্যন্ত কেউ নিখোঁজ আছেন বলে জানা যায়নি। ফেরির ভেতরে থাকা যানবাহনগুলোতে তল্লাশি এখনও চলছে।
রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাট থেকে যানবাহন নিয়ে বুধবার সকাল ৯টার কিছুক্ষণ পর পাটুরিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয় রো রো ফেরি শাহ আমানত। পদ্মা পার হয়ে পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ফেরিঘাটে পৌঁছানোর পরপরই সেটি কাত হয়ে নদীতে উল্টে যায়।
পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তারা বলেছেন ওই ফেরিতে ১৭টি পণ্যবাহী ট্রাক ছাড়াও কয়েকটি মোটর সাইকেল ও প্রাইভেট কার ছিল। ঘাটে ভেড়ার পর কয়েকটি গাড়ি নামতে পারলেও বাকিগুলো ফেরির সঙ্গেই ডুবে যায়। পরে কয়েকটি ট্রাক ও ভ্যানকে নদীতে ভাসতে দেখা গেছে। ফেরির লোকজন ও ট্রাকচালকদের মতে, ফেরিতে ১৭টি ট্রাক, একটি কার ও কয়েকটি মোটরসাইকেল ছিল। শুধু তিনটি ট্রাক নামতে পেরেছে। ঘটনার পর, ঘাটের ট্রলার চালক ও বিআইডব্লিউটিসির ভাসমান কারখানার লোকজন ডুবন্ত ট্রাকচালক ও লোকজনকে উদ্ধার করেন। এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। কেউ নিখোঁজ আছেন এমন তথ্যও পাওয়া যায়নি।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

পদ্মায় ১৯টি গাড়ি নিয়ে হেলে পড়লো ফেরি

আপডেট সময় : ০২:০৫:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ অক্টোবর ২০২১

প্রত্যাশা ডেস্ক : মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ায় ৫ নম্বর ফেরিঘাটে ১৯টি গাড়ি নিয়ে হেলে গেছে রো রো আমানত শাহ নামে একটি ফেরি।
গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে পদ্মা নদীতে ফেরিটি হেলে পড়ে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন আরিচা শাখার উপমহাব্যবস্থাপক মো. জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ঘাট থেকে যানবাহন লোড করে পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ফেরিঘাটে নোঙর করে বড় আকারের রো রো ফেরি আমানত শাহ। ফেরি থেকে কয়েকটি গাড়ি নামার পরপরই এক পাশ কাত হয়ে যায় ফেরিটি। এরপর ১৯টি গাড়ি পদ্মায় পড়ে যায় বলে তথ্য পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে। পদ্মায় পড়ে যাওয়া গাড়িগুলোর মধ্যে বেশিরভাগ ট্রাক ছিল। ছিল কয়েকটি ছোট গাড়িও। তবে কোনো বাস ছিল না। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। কেউ নিখোঁজ আছেন কি না তাৎক্ষণিকভাবে তাও জানা যায়নি। ফেরিটি ডোবার সময় অধিকাংশ যানের যাত্রী লাফিয়ে পড়েন।
৪০ বছরের বেশি সময় ধরে চলছিল ফেরিটি : মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে বুধবার সকালে কাত হয়ে আংশিক ডুবে যাওয়া রো রো ফেরি আমানত শাহ ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে চলাচল করছিল। অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল অধ্যাদেশ অনুযায়ী, একটি নৌযানের নিবন্ধনের মেয়াদ ৩০ বছর হয়। বিশেষ জরিপের (ফিটনেস) মাধ্যমে এরপর দুবার পাঁচ বছর করে নিবন্ধনের মেয়াদ বাড়ানো যায়। তবে ৪০ বছরের বেশি সময় কোনোভাবেই কোনো নৌযান চলাচল করতে পারে না।
দেশের নৌপথে ৯৫ বছর বয়সী ফেরিও চলে। আইন অনুযায়ী ৪০ বছরের বেশি বয়সী নৌযান চালানোর সুযোগ নেই। মাদারীপুরের বাংলাবাজার থেকে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া রুটে চলাচল করে এই ডাম্ব ফেরি। তীব্র স্রোতে ঝুঁকি এড়াতে এর চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার বাংলাবাজার ঘাটে
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) নৌযানের তালিকা অনুযায়ী, ফেরি আমানত শাহ ১৯৮০ সালে তৈরি। ৩৩৫ জন যাত্রী ও ২৫টি যানবাহন বহন করতে পারে এটি। ৮০৬.৬০ টন ওজনের ফেরিটি সর্বোচ্চ ১০.২৫ নটিক্যাল মাইল গতিতে চলতে পারে।
বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (মেরিন) আবদুস সাত্তার বলেন, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ১৭টি পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ে ফেরিটি ছেড়ে আসে। সকাল পৌনে ১০টার দিকে পাটুরিয়া ঘাটে ভিড়ে এটি কাত হয়ে আংশিক ডুবে যায়। আমানত শাহ ফেরিটি প্রথম দিকের আনা। এর বয়স ৪০ বছর পার হয়ে গেছে। পাটুরিয়া ঘাটে থাকা পরিবহনশ্রমিক মাইনুল হোসেনের ভাষ্য, ‘ফেরির তলা ফেটে ধীরে ধীরে এটি ডুবতে থাকে। ওই অবস্থায় আমাদের চোখের সামনে ফেরি থেকে দ্রুতগতিতে দুটি পণ্যবাহী ট্রাক নামতে পারলেও বাকি কোনো গাড়ি নামতে পারেনি। কয়েক মিনিটের মধ্যে ফেরিটি কাত হয়ে ডুবে যায়।’ ুরাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া ফেরিটি মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ঘাটে কাত হয়ে আংশিক ডুবে যায়।
৬০ টনের হামজা দিয়ে হাজার টনের ফেরি তোলার চেষ্টা : পদ্মায় কাত হয়ে উল্টে যাওয়া ফেরি উদ্ধারে পাটুরিয়া ঘাটে কাজ শুরু করেছে উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা। রো রো ফেরি শাহ আমানতকে বাঁধা হয়েছে হয়েছে হামজার সঙ্গে। তবে কাত হয়ে ফেরিটির মাঝে পানি ঢুকে ওজন বেড়ে যাওয়ায় উদ্ধার কাজে জটিলতার আভাস মিলছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা ইতিমধ্যে ডুবে যাওয়া দুটি ট্রাক টেনে তুলেছে বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএ এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোঃ নুরুল আলম।
“ফেরিটির ভেতরে পানি ঢুকে এটির ওজন হাজার টনের বেশি দাঁড়িয়েছে বলে ধারণা করা যায়। কিন্তু হামজার সক্ষমতা মাত্র ৬০ টন। হামজাকে দিয়ে কিভাবে ফেরিটিকে উদ্ধার করা যাবে সে বিষয়ে কর্মকর্তারা আলোচনা করছেন,” যোগ করেন তিনি।
গতকাল বুধবার সকালের দুর্ঘটনার পর মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে উদ্ধার কার্যক্রম চালাতে যথারীতি ডাক পড়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) জাহাজ হামজার।
ফেরি দুর্ঘটনার পর আশেপাশের সংস্থাগুলোর উদ্ধার সরঞ্জাম দিয়ে এবারও কাজ হয়নি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিবার নৌ দুর্ঘটনার পর যে চিত্র দেখা যায়, এবারও এর ব্যতিক্রম দেখা যায়নি। সরকারি সংস্থাগুলোর কাছে থাকা উদ্ধারকারী সরঞ্জামগুলো কাজ করেনি।
নৌ দুর্ঘটনার পর ঘটনার শিকার জাহাজ উদ্ধারে বেশির ভাগ সময় দায়িত্ব পড়ে বিআইডব্লিউটিএ এর ওপর। কিন্তু সংস্থাটির উদ্ধারকারী জাহাজ রুস্তম ও হামজার ধারণক্ষমতা খুবই কম। এবারও দ্রুতই ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ শুরু করেছে হামজা।
ঘটনাস্থলে এসে বিআইডব্লিউটিএ এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোঃ নুরুল আলম বলেন, দুর্ঘটনার পরপরই আরিচা ঘাট থেকে উদ্ধারকারী জাহাজ হামজাকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। বিকাল ৪টা পর্যন্ত হামজা দুটি ট্রাক টেনে তুলতে সক্ষম হয়। কিন্তু মূল সমস্যাটা হচ্ছে ফেরিটিকে উদ্ধার করা। ডুবে থাকা ট্রাকগুলোকে শনাক্ত করা গেছে উল্লেখ করে তিনি জানান, ট্রাকগুলোতে দড়ি বাঁধার কাজ চলছে। এর মধ্যে দুটি ট্রাক টেনে তোলা হয়েছে হামজাকে দিয়ে। উদ্ধার অভিযান দীর্ঘতর হতে পারে বলে আভাস দেন তিনি। তবে এখন পর্যন্ত হতাহত বা নিখোঁজের কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি জানিয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, এখন পর্যন্ত কেউ নিখোঁজ আছেন বলে জানা যায়নি। ফেরির ভেতরে থাকা যানবাহনগুলোতে তল্লাশি এখনও চলছে।
রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাট থেকে যানবাহন নিয়ে বুধবার সকাল ৯টার কিছুক্ষণ পর পাটুরিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয় রো রো ফেরি শাহ আমানত। পদ্মা পার হয়ে পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ফেরিঘাটে পৌঁছানোর পরপরই সেটি কাত হয়ে নদীতে উল্টে যায়।
পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তারা বলেছেন ওই ফেরিতে ১৭টি পণ্যবাহী ট্রাক ছাড়াও কয়েকটি মোটর সাইকেল ও প্রাইভেট কার ছিল। ঘাটে ভেড়ার পর কয়েকটি গাড়ি নামতে পারলেও বাকিগুলো ফেরির সঙ্গেই ডুবে যায়। পরে কয়েকটি ট্রাক ও ভ্যানকে নদীতে ভাসতে দেখা গেছে। ফেরির লোকজন ও ট্রাকচালকদের মতে, ফেরিতে ১৭টি ট্রাক, একটি কার ও কয়েকটি মোটরসাইকেল ছিল। শুধু তিনটি ট্রাক নামতে পেরেছে। ঘটনার পর, ঘাটের ট্রলার চালক ও বিআইডব্লিউটিসির ভাসমান কারখানার লোকজন ডুবন্ত ট্রাকচালক ও লোকজনকে উদ্ধার করেন। এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। কেউ নিখোঁজ আছেন এমন তথ্যও পাওয়া যায়নি।