প্রত্যশা ডেস্ক: জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা টানা একাধিক নির্বাচনী পরাজয়ের পর পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, শিগগিরই ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) জরুরি নেতৃত্ব নির্বাচন করবে। নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব পালন করবেন।
৬৮ বছর বয়সী ইশিবা মাত্র এক বছরও হয়নি প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। তবে এর মধ্যেই জাপানের উভয় সংসদীয় কক্ষের নির্বাচনে তার জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়। বাড়তি জীবনযাত্রার ব্যয়ে ক্ষুব্ধ ভোটারদের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার কারণে এ পরাজয় ঘটে।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, জুলাইয়ে উচ্চকক্ষের নির্বাচনে হারলেও ইশিবা পদ ছাড়তে অস্বীকৃতি জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন করায় মনোযোগ দেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতির কারণে জাপানের গাড়ি শিল্প বড় ধাক্কা খেয়েছে। চুক্তি সইয়ের পর আবেগাপ্লুত ইশিবা বলেন, ‘আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ অতিক্রম করেছি। এখন দায়িত্ব হস্তান্তরের সময় এসেছে।’
বিশ্লেষকরা বলছেন, টানা পরাজয়ের পর ইশিবার পদত্যাগ অনিবার্য হয়ে পড়েছিল। সম্ভাব্য উত্তরসূরিদের মধ্যে রয়েছেন— সানায়ে তাকাইচি। তিনি ব্যাংক অব জাপানের সুদবৃদ্ধির সমালোচক এবং শিথিল অর্থনৈতিক নীতির পক্ষপাতি। অঞয় আরেকজন শিনজিরো কোইজুমি। তিনি জনপ্রিয় কৃষিমন্ত্রী, যিনি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে ছিলেন।
গত বছর নেতৃত্ব নির্বাচনে অল্প ভোটে তাকাইচিকে হারিয়ে ইশিবা ক্ষমতায় আসেন। তবে এবার তাকাইচির আর্থিক নীতি বাজারে নতুন আলোচনার জন্ম দিতে পারে।
এলডিপির এখন কোনো সংসদীয় কক্ষে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। ফলে পরবর্তী নেতা প্রধানমন্ত্রী হবেন কি না, তা নিশ্চিত নয়। নতুন নেতৃত্ব চাইলে দ্রুত নির্বাচন ডাকার সিদ্ধান্তও নিতে পারেন।
অন্যদিকে, জুলাইয়ের নির্বাচনে দক্ষিণপন্থী, অভিবাসনবিরোধী সানসেইতো পার্টি বড় ধরনের সাফল্য পেয়েছে। এতে জাপানের রাজনীতিতে চরমপন্থি কিছু মতও মূলধারায় ঢুকে পড়ছে।
রোববার প্রকাশিত কিয়োদো নিউজের জরিপে দেখা গেছে, প্রায় ৫৫ শতাংশ মানুষ মনে করেন এখনই আগাম নির্বাচনের প্রয়োজন নেই।
ইশিবার শেষ কাজ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ৫৫০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ চুক্তি চূড়ান্ত করেন, যার বিনিময়ে ওয়াশিংটন শুল্ক কমাতে সম্মত হয়েছে।
ওআ/আপ্র/০৭/০৯/২০২৫