কৃষি ও কৃষক ডেস্ক: উচ্চশিক্ষিত যুবক মো. রেদুয়ান মোল্লা। মাদ্রাসা থেকে ফাজিল পাস করেছেন। পড়াশোনা শেষ করে তিনি কৃষিতে মনোনিবেশ করে সফলতার মুখ দেখেছেন। বাড়ির পাশের পতিত জমিতে শসা চাষ করে সফল হয়েছেন। এবার বাজারে শসার ভালো দাম থাকায় লাভবান হচ্ছেন তিনি।
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর পৌরসভার মোল্লাবাড়ি এলাকার যুবক মো. রেদুয়ান মোল্লা। তিনি এবার ২৬ শতক জমিতে শসা চাষ করেছেন। এদিকে কৃষি জমিতে শাক-সবজি চাষে সফল হওয়ায় এলাকার বেকার যুবকরাও তাকে দেখে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।
জানা গেছে, রেদুয়ান মোল্লা পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে বাবাকে কৃষিকাজে সহযোগিতা করতেন। তা থেকেই কৃষিতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। এবার বাড়ির পাশের ২৬ শতক জমিতে হাইব্রিড জাতের শসা চাষ করেছেন। বর্তমানে বাজারে শসা ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি দরে মণপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৬০০-১৮০০ টাকা। তিনি দেড় থেকে ২ লক্ষাধিক টাকার শসা বিক্রি করতে পারবেন।
রেদুয়ান মোল্লা বলেন, ‘কয়েক বছর আগে কৃষি বিষয়ে দুটি প্রশিক্ষণ নিয়েছি। এরপর থেকে সিডলেস লেবু, বেগুন চাষ করেছি। বর্তমানে শসার প্রজেক্ট নিয়েছি। দুই-তিন দিন পর পর ৭ থেকে ৮ মণ করে শসা সংগ্রহ করা যায়। এ পর্যন্ত প্রায় ১৫০ মণের মতো শসা বিক্রি করা হয়েছে। ভবিষ্যতে বড় পরিসরে কাজ করার ইচ্ছা আছে।’
রেদুয়ানের বাবা জালাল উদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘লেখাপড়া করে ছেলে ভালো একটা চাকরি করবে, এটা সব বাবা-মায়ের ইচ্ছা। ছেলে যখন চাকরির পেছনে না ছুটে কৃষিকাজ শুরু করে; প্রথমে মন খারাপ হলেও এখন ভালো লাগে। আমার ছেলে একজন সফল উদ্যোক্তা। শুধু চাকরি করেই যে টাকা উপার্জন করতে হবে; সেই ধারণা আমার ছেলে বদলে দিয়েছে।’
স্থানীয় কৃষক মরজত আলী বলেন, ‘২ বছর ধরে শসা চাষ করছি। প্রায় সময়ই তার কাছ থেকে পরামর্শ নিতে আসি। তাকে দেখে আমরাও কৃষিতে মনোনিবেশ করেছি। উচ্চশিক্ষিত যুবক তিনি। চাকরি না করে তার কৃষিকাজ আমাদের উৎসাহ দেয়।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা একেএম শাহজাহান কবির বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ে কৃষি অফিস সার্বক্ষণিক কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে আসছে। বর্তমানে সাধারণ কৃষকদের পাশাপাশি রেদুয়ান মোল্লাদের মতো উচ্চশিক্ষিত যুবকরা কৃষিতে মনোনিবেশ করছেন; যা দেশের কৃষিকে এগিয়ে নিতে যথেষ্ট ভূমিকা রাখবে।’