ঢাকা ১২:৩৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫

পণ্য খালাসে সংকট,বহির্নোঙরে মাদার ভেসেলের জট

  • আপডেট সময় : ০৮:১৪:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫
  • ৪৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : পণ্য খালাসে লাইটারেজ জাহাজ সংকটের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে মাদার ভেসেলের জটলা তৈরি হয়েছে। এতে বন্দর ব্যবস্থাপনায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। অভিযোগ রয়েছে, পণ্য আমদানি করলেও অনেক আমদানিকারকের খালাস ও গুদামজাতকরণের সুবিধা নেই। ফলে লাইটারেজগুলো ভাসমান গুদাম বানিয়ে সেখান থেকে ক্রেতাদের পণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। ফলে লাইটারেজ আনলোড করতে দীর্ঘ সময় লাগছে, যা নৌপথে পণ্য পরিবহনে সংকট তৈরি করছে। দীর্ঘদিন ধরে দেশের অভ্যন্তরে আমদানি করা পণ্য পরিবহনে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল (ডব্লিউটিসি) নামের একটি সংগঠন সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করতো।

এতে সিন্ডিকেট তৈরি হলে লাইটারেজ ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনৈক্য তৈরি হয়। পরে এক বছর ধরে নৌপথে আমদানি করা পণ্য পরিবহনে ব্যবহৃত লাইটারেজ ব্যবস্থাপনায় যুক্ত হয়েছে নৌপরিবহন অধিদপ্তর। এর মধ্যে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলকে (ডব্লিউটিসি) ঢেলে সাজিয়ে করা হয়েছে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন সেল (ডব্লিউটিসিসি)। জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দরে বাল্কপণ্যবাহী মাদার ভেসেল থেকে পণ্য খালাসে দুই হাজারের মতো লাইটার জাহাজ রয়েছে।

এরমধ্যে দেড় হাজারের মতো নিয়ন্ত্রণ করে ডব্লিউটিসিসি। সংস্থাটি প্রতিদিন বার্থিং সভা করে প্রতিটি মাদার ভেসেলের বিপরীতে চাহিদা অনুযায়ী লাইটারেজ বরাদ্দ দেয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে মাদার ভেসেল থেকে পণ্য খালাসে লাইটারেজ বরাদ্দ দিতে হিমশিম খাচ্ছে তারা। অন্য জাহাজগুলো বিভিন্ন শিল্পগ্রুপের মালিকানাধীন। এরমধ্যে বসুন্ধরা, মেঘনা, সিটি, আবুল খায়ের, আকিজ, টিকে, এস আলম ও দেশবন্ধু সুগার গ্রুপের মালিকানাধীন লাইটার জাহাজ রয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, ১২ মার্চ পর্যন্ত বন্দরের জেটি ও বহির্নোঙরে ১২৪টি মাদার ভেসেল রয়েছে। এরমধ্যে ১০৭টি কনটেইনার ও বাল্কপণ্যবাহী জাহাজ। ১০৭টির মধ্যে ২১টি কনটেইনারবাহী, ১৪টি ন্যাচারাল গ্যাস ও পেট্রোলিয়াম জ্বালানিবাহী ট্যাংকার। অবশিষ্ট ৭২টি বাল্ক জাহাজে বোঝাই রয়েছে চাল, গম, ডাল, সরিষা, অপরিশোধিত চিনি, অপরিশোধিত সয়াবিন, সার, লোহার স্ক্র্যাপ, সিমেন্ট ক্লিংকার, কয়লা, পাথর ও প্লাস্টিক দানা। যার মধ্যে ৬১টি জাহাজ এসব পণ্য নিয়ে বহির্নোঙরে খালাসরত রয়েছে। জানা গেছে, লাইটারেজ সংকটের কারণে মাদার ভেসেলগুলো থেকে নির্ধারিত সময়ে পণ্য খালাস করা যাচ্ছে না। ফলে মাদার ভেসেলগুলোর গড় অবস্থানকাল বেড়ে যাচ্ছে।

এতে প্রতিটি জাহাজের অবস্থানের বিপরীতে দৈনিক ১০ থেকে ২০ হাজার মার্কিন ডলার অতিরিক্ত গুনতে হচ্ছে আমদানিকারকদের। লাইটারেজ সংকট ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. মনজুরুল কবীর বলেন, আমরা বেশ কিছুদিন ধরে অভিযোগ পাচ্ছিলাম, আমদানিকারকরা মাদার ভেসেল থেকে পণ্য খালাস নিয়ে লাইটারেজগুলো ভাসমান গুদাম হিসেবে ব্যবহার করছেন। এ নিয়ে আমদানিকারক ও লাইটারেজ মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। ‘একটি বিষয় পরিষ্কার হয়েছে, অনেক আমদানিকারক বাল্ক পণ্য আমদানি করলেও তাদের কোনো স্টোরেজ ফ্যাসিলিটিজ নেই। যাদের স্টোরেজ ফ্যাসিলিটিজ নেই, তারা লাইটারেজে পণ্য রেখেই ক্রেতাদের কাছে বিক্রি ও সরবরাহ করছেন। আবার লাইটারেজ থেকে পণ্য খালাসে কোনো অটোমেশন প্রক্রিয়াও নেই। ফলে লাইটারেজ আনলোডে দীর্ঘ সময়ক্ষেপণ হচ্ছে।’ নৌপরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী আরও বলেন, ‘আমরা আমদানিকারকদের বলেছি দ্রুত লাইটারেজ খালাস করার জন্য। এরই মধ্যে বিআইডব্লিউটিসি, কোস্টগার্ড এবং নৌ পুলিশের মাধ্যমে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছি। অনেক লাইটার জাহাজকে জরিমানাও করা হয়েছে।

তাছাড়া রমজান ঘিরে অনেকে ভোগ্যপণ্য আমদানি করেছেন। এসব পণ্য বাজারে চলে গেছে। আশা করছি দ্রুততম সময়ে এ সংকট থেকে উত্তরণ পাওয়া যাবে।’
ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন সেলের (ডব্লিউটিসিসি) যুগ্ম সচিব আতাউল কবীর রঞ্জু বলেন, ‘আমাদের এক হাজার ৪০০-এর কিছু বেশি লাইটারেজ রয়েছে। বর্তমানে বহির্নোঙর থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যাওয়া ৯১৫টি লাইটার জাহাজ পাঁচ থেকে ৪০ দিন পর্যন্ত খালাসের জন্য অপেক্ষমাণ। এরমধ্যে ২৯টি ঘাটে ১৬৩টি লাইটারেজ ৩০ দিনের বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করছে।
ডব্লিউটিসিসি সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (১২ মার্চ) পর্যন্ত দেশের ৭৪টি ঘাটে ৯১৫টি লাইটারেজ পণ্য খালাসে অপেক্ষমাণ। এরমধ্যে ১৬৩টি রয়েছে ৩০ দিনের বেশি সময় ধরে। সবচেয়ে বেশি অবস্থান করছে নারায়গঞ্জের কাঁচপুর ঘাটে। ওই ঘাটে ৩২টি লাইটারেজ জাহাজ ৩০ দিনের বেশি সময় ধরে পণ্য খালাসের জন্য অপেক্ষমাণ। নারায়ণগঞ্জের হাসনাবাদ ঘাটে রয়েছে ২৩টি, যশোরের নোয়াপাড়া ঘাটে ১৯টি আর ঝালকাঠিতে ১৮টি লাইটারেজ। এছাড়া নগরবাড়ী ঘাটে ৯টি, মিরপুরে ৭টি, রূপসী ঘাটে ৫টি, সারুলিয়ায় ৪টি, ভৈরবে ৫টি, হাটাবো ও পটুয়াখালীতে ৬টি করে, মুক্তারপুর, আলীগঞ্জ ও রামপাল ঘাটে ৩টি করে, আশুগঞ্জ, কর্ণফুলী নদীর সদরঘাট, সিঅ্যান্ডবি, মেঘনা, ব্রিজঘাটে দুটি করে এবং শিকারপুর, স্ক্যান সিমেন্ট, এমআই সিমেন্ট, পলাশ, পাগলা, বানারীপাড়া, মোংলা, আকিজ সিমেন্ট, নিতাইগঞ্জ ও শিরমনি ঘাটে একটি করে লাইটার জাহাজ খালাসের জন্য ৩০ দিনের বেশি সময় ধরে অপেক্ষমাণ।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, পণ্য লোড করে লাইটারেজগুলো বন্দরের বহির্নোঙর এবং বন্দর সীমানায় যেন অবস্থান করতে না পারে সেজন্য পণ্য লোড করার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বন্দর ছাড়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মূলত দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়া লাইটারেজ থেকে পণ্য আনলোডে সময় বেশি ক্ষেপণ হচ্ছে। তাই লাইটারেজের সংকট হয়েছে। ফলে মাদার ভেসেল থেকে পণ্য খালাস কিছুটা বিঘ্নিত হচ্ছে। বিশেষত, রমজানের শুরুতে একসঙ্গে আমদানি করা অনেক ভোগ্যপণ্য বন্দরে চলে আসায় এমনটি হয়েছে। এখন রমজানের বেশিরভাগ ভোগ্যপণ্য খালাস হয়েছে। সামনের সপ্তাহ থেকে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

 

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

পণ্য খালাসে সংকট,বহির্নোঙরে মাদার ভেসেলের জট

আপডেট সময় : ০৮:১৪:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : পণ্য খালাসে লাইটারেজ জাহাজ সংকটের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে মাদার ভেসেলের জটলা তৈরি হয়েছে। এতে বন্দর ব্যবস্থাপনায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। অভিযোগ রয়েছে, পণ্য আমদানি করলেও অনেক আমদানিকারকের খালাস ও গুদামজাতকরণের সুবিধা নেই। ফলে লাইটারেজগুলো ভাসমান গুদাম বানিয়ে সেখান থেকে ক্রেতাদের পণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। ফলে লাইটারেজ আনলোড করতে দীর্ঘ সময় লাগছে, যা নৌপথে পণ্য পরিবহনে সংকট তৈরি করছে। দীর্ঘদিন ধরে দেশের অভ্যন্তরে আমদানি করা পণ্য পরিবহনে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল (ডব্লিউটিসি) নামের একটি সংগঠন সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করতো।

এতে সিন্ডিকেট তৈরি হলে লাইটারেজ ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনৈক্য তৈরি হয়। পরে এক বছর ধরে নৌপথে আমদানি করা পণ্য পরিবহনে ব্যবহৃত লাইটারেজ ব্যবস্থাপনায় যুক্ত হয়েছে নৌপরিবহন অধিদপ্তর। এর মধ্যে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলকে (ডব্লিউটিসি) ঢেলে সাজিয়ে করা হয়েছে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন সেল (ডব্লিউটিসিসি)। জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দরে বাল্কপণ্যবাহী মাদার ভেসেল থেকে পণ্য খালাসে দুই হাজারের মতো লাইটার জাহাজ রয়েছে।

এরমধ্যে দেড় হাজারের মতো নিয়ন্ত্রণ করে ডব্লিউটিসিসি। সংস্থাটি প্রতিদিন বার্থিং সভা করে প্রতিটি মাদার ভেসেলের বিপরীতে চাহিদা অনুযায়ী লাইটারেজ বরাদ্দ দেয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে মাদার ভেসেল থেকে পণ্য খালাসে লাইটারেজ বরাদ্দ দিতে হিমশিম খাচ্ছে তারা। অন্য জাহাজগুলো বিভিন্ন শিল্পগ্রুপের মালিকানাধীন। এরমধ্যে বসুন্ধরা, মেঘনা, সিটি, আবুল খায়ের, আকিজ, টিকে, এস আলম ও দেশবন্ধু সুগার গ্রুপের মালিকানাধীন লাইটার জাহাজ রয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, ১২ মার্চ পর্যন্ত বন্দরের জেটি ও বহির্নোঙরে ১২৪টি মাদার ভেসেল রয়েছে। এরমধ্যে ১০৭টি কনটেইনার ও বাল্কপণ্যবাহী জাহাজ। ১০৭টির মধ্যে ২১টি কনটেইনারবাহী, ১৪টি ন্যাচারাল গ্যাস ও পেট্রোলিয়াম জ্বালানিবাহী ট্যাংকার। অবশিষ্ট ৭২টি বাল্ক জাহাজে বোঝাই রয়েছে চাল, গম, ডাল, সরিষা, অপরিশোধিত চিনি, অপরিশোধিত সয়াবিন, সার, লোহার স্ক্র্যাপ, সিমেন্ট ক্লিংকার, কয়লা, পাথর ও প্লাস্টিক দানা। যার মধ্যে ৬১টি জাহাজ এসব পণ্য নিয়ে বহির্নোঙরে খালাসরত রয়েছে। জানা গেছে, লাইটারেজ সংকটের কারণে মাদার ভেসেলগুলো থেকে নির্ধারিত সময়ে পণ্য খালাস করা যাচ্ছে না। ফলে মাদার ভেসেলগুলোর গড় অবস্থানকাল বেড়ে যাচ্ছে।

এতে প্রতিটি জাহাজের অবস্থানের বিপরীতে দৈনিক ১০ থেকে ২০ হাজার মার্কিন ডলার অতিরিক্ত গুনতে হচ্ছে আমদানিকারকদের। লাইটারেজ সংকট ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. মনজুরুল কবীর বলেন, আমরা বেশ কিছুদিন ধরে অভিযোগ পাচ্ছিলাম, আমদানিকারকরা মাদার ভেসেল থেকে পণ্য খালাস নিয়ে লাইটারেজগুলো ভাসমান গুদাম হিসেবে ব্যবহার করছেন। এ নিয়ে আমদানিকারক ও লাইটারেজ মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। ‘একটি বিষয় পরিষ্কার হয়েছে, অনেক আমদানিকারক বাল্ক পণ্য আমদানি করলেও তাদের কোনো স্টোরেজ ফ্যাসিলিটিজ নেই। যাদের স্টোরেজ ফ্যাসিলিটিজ নেই, তারা লাইটারেজে পণ্য রেখেই ক্রেতাদের কাছে বিক্রি ও সরবরাহ করছেন। আবার লাইটারেজ থেকে পণ্য খালাসে কোনো অটোমেশন প্রক্রিয়াও নেই। ফলে লাইটারেজ আনলোডে দীর্ঘ সময়ক্ষেপণ হচ্ছে।’ নৌপরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী আরও বলেন, ‘আমরা আমদানিকারকদের বলেছি দ্রুত লাইটারেজ খালাস করার জন্য। এরই মধ্যে বিআইডব্লিউটিসি, কোস্টগার্ড এবং নৌ পুলিশের মাধ্যমে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছি। অনেক লাইটার জাহাজকে জরিমানাও করা হয়েছে।

তাছাড়া রমজান ঘিরে অনেকে ভোগ্যপণ্য আমদানি করেছেন। এসব পণ্য বাজারে চলে গেছে। আশা করছি দ্রুততম সময়ে এ সংকট থেকে উত্তরণ পাওয়া যাবে।’
ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন সেলের (ডব্লিউটিসিসি) যুগ্ম সচিব আতাউল কবীর রঞ্জু বলেন, ‘আমাদের এক হাজার ৪০০-এর কিছু বেশি লাইটারেজ রয়েছে। বর্তমানে বহির্নোঙর থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যাওয়া ৯১৫টি লাইটার জাহাজ পাঁচ থেকে ৪০ দিন পর্যন্ত খালাসের জন্য অপেক্ষমাণ। এরমধ্যে ২৯টি ঘাটে ১৬৩টি লাইটারেজ ৩০ দিনের বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করছে।
ডব্লিউটিসিসি সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (১২ মার্চ) পর্যন্ত দেশের ৭৪টি ঘাটে ৯১৫টি লাইটারেজ পণ্য খালাসে অপেক্ষমাণ। এরমধ্যে ১৬৩টি রয়েছে ৩০ দিনের বেশি সময় ধরে। সবচেয়ে বেশি অবস্থান করছে নারায়গঞ্জের কাঁচপুর ঘাটে। ওই ঘাটে ৩২টি লাইটারেজ জাহাজ ৩০ দিনের বেশি সময় ধরে পণ্য খালাসের জন্য অপেক্ষমাণ। নারায়ণগঞ্জের হাসনাবাদ ঘাটে রয়েছে ২৩টি, যশোরের নোয়াপাড়া ঘাটে ১৯টি আর ঝালকাঠিতে ১৮টি লাইটারেজ। এছাড়া নগরবাড়ী ঘাটে ৯টি, মিরপুরে ৭টি, রূপসী ঘাটে ৫টি, সারুলিয়ায় ৪টি, ভৈরবে ৫টি, হাটাবো ও পটুয়াখালীতে ৬টি করে, মুক্তারপুর, আলীগঞ্জ ও রামপাল ঘাটে ৩টি করে, আশুগঞ্জ, কর্ণফুলী নদীর সদরঘাট, সিঅ্যান্ডবি, মেঘনা, ব্রিজঘাটে দুটি করে এবং শিকারপুর, স্ক্যান সিমেন্ট, এমআই সিমেন্ট, পলাশ, পাগলা, বানারীপাড়া, মোংলা, আকিজ সিমেন্ট, নিতাইগঞ্জ ও শিরমনি ঘাটে একটি করে লাইটার জাহাজ খালাসের জন্য ৩০ দিনের বেশি সময় ধরে অপেক্ষমাণ।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, পণ্য লোড করে লাইটারেজগুলো বন্দরের বহির্নোঙর এবং বন্দর সীমানায় যেন অবস্থান করতে না পারে সেজন্য পণ্য লোড করার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বন্দর ছাড়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মূলত দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়া লাইটারেজ থেকে পণ্য আনলোডে সময় বেশি ক্ষেপণ হচ্ছে। তাই লাইটারেজের সংকট হয়েছে। ফলে মাদার ভেসেল থেকে পণ্য খালাস কিছুটা বিঘ্নিত হচ্ছে। বিশেষত, রমজানের শুরুতে একসঙ্গে আমদানি করা অনেক ভোগ্যপণ্য বন্দরে চলে আসায় এমনটি হয়েছে। এখন রমজানের বেশিরভাগ ভোগ্যপণ্য খালাস হয়েছে। সামনের সপ্তাহ থেকে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।