ঢাকা ০১:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

পণ্য কেনার পর অভিযোগের পাহাড়

  • আপডেট সময় : ১২:২৭:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ অগাস্ট ২০২১
  • ৪৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইভ্যালি, ইঅরেঞ্জসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হুজুগে অফারে পণ্য কেনার পর কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় তৈরী হচ্ছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে। জানা যায়, আবু বকর সিদ্দিকী ছয় মাস আগে ৭ লাখ ২০ হাজার টাকায় চারটি মোটর সাইকেল অর্ডার করেছিলেন ই অরেঞ্জে। নানা টালবাহানায়ও সেই মোটর সাইকেল তিনি পাননি। তাই অভিযোগ জমা দিয়েছেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে। তবে এই ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটির মালিক গ্রেপ্তার হওয়ার পর এখন তিনি শঙ্কিত, তার মোটর সাইকেলটি পাবেন তো? করোনাভাইরাস মহামারীকালে দেশে একের পর এক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান গজিয়ে ওঠে, তাদের লোভনীয় নানা অফার দেখে পণ্য কিনতে মানুষের হিড়িকও পড়ে। কিন্তু চাহিদার পণ্য না পেয়ে অনেকেই এখন দ্বারস্ত হয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা সম্প্রতি জানান, ২০১৮ সালের জুলাই থেকে গত জুন পর্যন্ত ১৯টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ১৩ হাজার ৩১৭টা অভিযোগ তারা পেয়েছেন। এর মধ্যে অনেকগুলোর মীমাংসাও করেছেন। সবচেয়ে বেশি অভিযোগ আলোচিত ইভ্যালির বিরুদ্ধে। প্রতিষ্ঠার ৩ বছর না যেতেই তাদের বিরুদ্ধে ৪ হাজার ৯৩২টি অভিযোগ জমা পড়েছে। সম্প্রতি আলোচনায় আসার আগেই ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে ৩৮টি অভিযোগ জমা পড়েছিল। এরপর কয়েক সপ্তাহে তাদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার অভিযোগ জমা পড়ে। বাবুল বলেন, ‘এখন আমরা হিসাব করার সময় পাচ্ছি না। পুরোনো অভিযোগ সমাধানের পর এগুলো দেখব।’ নতুন প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আলেশা মার্টের বিরুদ্ধে ১০টি, ফাল্গুনিশপের বিরুদ্ধে ৫৯৯টি (৪৩৫টি মীমাংসিত), প্রিয়শপের বিরুদ্ধে ৫৬২টি (৪১৩টি মীমাংসিত) অভিযোগ এসেছে। পুরনো প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দারাজের বিরুদ্ধে ১০১৯টি (৯৪৫টি মীমাংসিত), সহজ ডটকমের বিরুদ্ধে ৯৩টি (৮৫টি মীমাংসিত), আজকের ডিলের বিরুদ্ধে ১৭৭টি (১৬৫টি মীমাংসিত), ফুডপান্ডার বিরুদ্ধে ২৬১টি (২২৫টি মীমাংসিত), চালডালের বিরুদ্ধে ১৮৩টি (১৬২টি মীমাংসিত) জমা পড়ে অধিদপ্তরে। অভিযোগগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই নির্ধারিত সময়ের ২/৩ মাস পরও পণ্য বুঝে না পাওয়া নিয়ে। এর বাইরে ‘চেক ডিজঅনার’ হওয়া, ‘রিফান্ডের’ টাকা ফেরত না পাওয়ার অভিযোগও রয়েছে। ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাবলু বলেন, ‘কোনো কোনো ক্রেতা ৬৫ লাখ টাকার অর্ডার করেছে বলে আমরা জানতে পারলাম। এক ব্যক্তি সরকারি চাকরি করে পাওয়া পেনশনের সব টাকা ই-অরেঞ্জের পণ্য কেনার জন্য দিয়েছেন। ‘কোনো বাইক বা পণ্য কেনার ক্ষেত্রে প্রতারিত ক্রেতারা ‘বাইক ধরা’ শব্দটি ব্যবহার করছে। এসব দেখে আমাদের মনে হয়েছে, এটা স্বাভাবিক ব্যবসা বা কেনাকাটা নয়। এটা সম্পূর্ণ অস্বাভাবিক এবং অনৈতিক।’ দীর্ঘদিন ধরে ১৫ দিনের মধ্যে টাকা দ্বিগুণ হওয়া এবং সেই টাকা দিয়ে ওয়েবসাইট থেকে কম দামে পণ্য কেনার প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহকের কাছ থেকে হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে। এক পর্যায়ে মালিকানা হস্তান্তর করে বিদেশে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন এই অনলাইন দোকানের প্রতিষ্ঠাতা সোনিয়া মেহজাবিন ও তার স্বামী মাসুকুর রহমান। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে ১১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গুলশান থানায় মামলা করেন তাহেরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। আদালতে আত্মসমর্পণের পর মেহেজাবিন ও মাসুকুরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

তলবের পাল্টা তলব দিল্লির, উল্টো দুষল ইউনূস সরকারকে

পণ্য কেনার পর অভিযোগের পাহাড়

আপডেট সময় : ১২:২৭:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ অগাস্ট ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইভ্যালি, ইঅরেঞ্জসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হুজুগে অফারে পণ্য কেনার পর কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় তৈরী হচ্ছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে। জানা যায়, আবু বকর সিদ্দিকী ছয় মাস আগে ৭ লাখ ২০ হাজার টাকায় চারটি মোটর সাইকেল অর্ডার করেছিলেন ই অরেঞ্জে। নানা টালবাহানায়ও সেই মোটর সাইকেল তিনি পাননি। তাই অভিযোগ জমা দিয়েছেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে। তবে এই ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটির মালিক গ্রেপ্তার হওয়ার পর এখন তিনি শঙ্কিত, তার মোটর সাইকেলটি পাবেন তো? করোনাভাইরাস মহামারীকালে দেশে একের পর এক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান গজিয়ে ওঠে, তাদের লোভনীয় নানা অফার দেখে পণ্য কিনতে মানুষের হিড়িকও পড়ে। কিন্তু চাহিদার পণ্য না পেয়ে অনেকেই এখন দ্বারস্ত হয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা সম্প্রতি জানান, ২০১৮ সালের জুলাই থেকে গত জুন পর্যন্ত ১৯টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ১৩ হাজার ৩১৭টা অভিযোগ তারা পেয়েছেন। এর মধ্যে অনেকগুলোর মীমাংসাও করেছেন। সবচেয়ে বেশি অভিযোগ আলোচিত ইভ্যালির বিরুদ্ধে। প্রতিষ্ঠার ৩ বছর না যেতেই তাদের বিরুদ্ধে ৪ হাজার ৯৩২টি অভিযোগ জমা পড়েছে। সম্প্রতি আলোচনায় আসার আগেই ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে ৩৮টি অভিযোগ জমা পড়েছিল। এরপর কয়েক সপ্তাহে তাদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার অভিযোগ জমা পড়ে। বাবুল বলেন, ‘এখন আমরা হিসাব করার সময় পাচ্ছি না। পুরোনো অভিযোগ সমাধানের পর এগুলো দেখব।’ নতুন প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আলেশা মার্টের বিরুদ্ধে ১০টি, ফাল্গুনিশপের বিরুদ্ধে ৫৯৯টি (৪৩৫টি মীমাংসিত), প্রিয়শপের বিরুদ্ধে ৫৬২টি (৪১৩টি মীমাংসিত) অভিযোগ এসেছে। পুরনো প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দারাজের বিরুদ্ধে ১০১৯টি (৯৪৫টি মীমাংসিত), সহজ ডটকমের বিরুদ্ধে ৯৩টি (৮৫টি মীমাংসিত), আজকের ডিলের বিরুদ্ধে ১৭৭টি (১৬৫টি মীমাংসিত), ফুডপান্ডার বিরুদ্ধে ২৬১টি (২২৫টি মীমাংসিত), চালডালের বিরুদ্ধে ১৮৩টি (১৬২টি মীমাংসিত) জমা পড়ে অধিদপ্তরে। অভিযোগগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই নির্ধারিত সময়ের ২/৩ মাস পরও পণ্য বুঝে না পাওয়া নিয়ে। এর বাইরে ‘চেক ডিজঅনার’ হওয়া, ‘রিফান্ডের’ টাকা ফেরত না পাওয়ার অভিযোগও রয়েছে। ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাবলু বলেন, ‘কোনো কোনো ক্রেতা ৬৫ লাখ টাকার অর্ডার করেছে বলে আমরা জানতে পারলাম। এক ব্যক্তি সরকারি চাকরি করে পাওয়া পেনশনের সব টাকা ই-অরেঞ্জের পণ্য কেনার জন্য দিয়েছেন। ‘কোনো বাইক বা পণ্য কেনার ক্ষেত্রে প্রতারিত ক্রেতারা ‘বাইক ধরা’ শব্দটি ব্যবহার করছে। এসব দেখে আমাদের মনে হয়েছে, এটা স্বাভাবিক ব্যবসা বা কেনাকাটা নয়। এটা সম্পূর্ণ অস্বাভাবিক এবং অনৈতিক।’ দীর্ঘদিন ধরে ১৫ দিনের মধ্যে টাকা দ্বিগুণ হওয়া এবং সেই টাকা দিয়ে ওয়েবসাইট থেকে কম দামে পণ্য কেনার প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহকের কাছ থেকে হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে। এক পর্যায়ে মালিকানা হস্তান্তর করে বিদেশে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন এই অনলাইন দোকানের প্রতিষ্ঠাতা সোনিয়া মেহজাবিন ও তার স্বামী মাসুকুর রহমান। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে ১১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গুলশান থানায় মামলা করেন তাহেরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। আদালতে আত্মসমর্পণের পর মেহেজাবিন ও মাসুকুরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।