বেনাপোল সংবাদদাতা : যশোরের বেনাপোল বন্দরের ওপারে পেট্রাপোল বন্দরে ভারতীয় শ্রমিকদের সন্ধ্যার পর কাজ না করার সিদ্ধান্তের কারণে পণ্যবাহী ট্রাক জটের সৃষ্টি হয়েছে। এসব ট্রাক বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। সূত্র মতে, পশ্চিমবঙ্গের সিডব্লিউসি পার্কিংয়ে ৭শ’ এবং বনগাঁ কালীতলা পার্কিংয়ে ১৩শ’ ট্রাক আটকা পড়েছে। জানা যায়, বেনাপোল ও পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সপ্তাহের সাতদিনই ২৪ ঘণ্টা পণ্য আমদানি-রফতানির অনুমোদন রয়েছে দুই দেশের সরকারের। কিন্তু গত ১০ দিন ধরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পর থেকে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে ভারতীয় বন্দর ব্যবহারকারীরা। ফলে পণ্যবোঝাই ট্রাকের এ জট তৈরি হয়েছে। এতে ১০ চাকার ট্রাকে দেড় হাজার ও ছয় চাকার ট্রাকে এক হাজার রুপি করে মাশুল গুণতে হচ্ছে প্রতিদিন। এতে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন আমদানিকারকরা। বেনাপোল বন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সহ সভাপতি আমিনুল ইসলাম আনু বলেন, প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৩৫০ ট্রাক পণ্য আমদানি এবং ৫০ থেকে ১০০ ট্রাক পণ্য রফতানি হচ্ছে। এর আগে প্রতিদিন ৪০০ ট্রাক আমদানি ও ২০০ থেকে ২৫০ ট্রাক পণ্য রফতানি হতো। তিনি আরও জানান, আটকে থাকা পণ্যের মধ্যে বেশির ভাগই হচ্ছে শিল্পের কাঁচামাল ও মেশিনারিজ। এর পাশাপাশি পচনশীল পণ্যও রয়েছে বলে জানান তিনি।
ব্যবসায়ীরা জানান, পেট্রাপোল বন্দরের শ্রমিকরা কলকাতাসহ দূর দূরান্তের বিভিন্ন এলাকা থেকে কাজ করতে আসেন। তাদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে ভারতীয় শ্রমিক সংগঠনগুলো সন্ধ্যার পর বন্দরে কাজ করতে চাইছে না। এ বিষয়ে সে দেশের সরকারও কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
বেনাপোলের কাস্টমস এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শামসুর রহমান বলেন, কারফিউ চলাকালে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলে না। তাই ওপারে পণ্যবোঝাই ট্রাকের দীর্ঘ লাইন পড়েছে। দুটি পার্কিংয়ে প্রায় দুই হাজার ট্রাক পণ্য নিয়ে আটকা পড়েছে। যে কারণে প্রতি ট্রাকের জন্য প্রতিদিন এক হাজার থেকে দেড় হাজার ভারতীয় রুপি মাশুল দিতে হচ্ছে। বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, কারফিউ ঘোষণার এক সপ্তাহ আগে থেকে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের বিভিন্ন সংগঠন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পর থেকে পণ্যবোঝাই ট্রাক ছাড়ছেও না, নিচ্ছেও না। এটা সরকারি কোনো সিদ্ধান্ত নয়। সে দেশের বিভিন্ন সংগঠন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ভারতের পেট্রাপোল পোর্টের ম্যানেজারের সঙ্গে আলোচনা করেছি। পণ্য আমদানি-রফতানি কার্যক্রম ২৪ ঘণ্টা চালু রাখার বিষয়ে দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।