ঢাকা ০৪:১৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫

‘পঁচাত্তরের পর এবারই সবচেয়ে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে’ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

  • আপডেট সময় : ০২:৩৫:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • ১২৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৯৭৫ সালের পর গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে। তিনি বলেন, “আমি মনে করি, বাংলাদেশে সেই ’৭৫ সালের পর থেকে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে সেখানে সব থেকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে এবার।”
গতকাল বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) গণভবনে গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে দেওয়া ভাষণে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে অনেক চক্রান্ত ছিল, ষড়যন্ত্র ছিল। তিনি এ সময় স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমানের হাতে তৈরি দল বিএনপি’র জ্বালাও-পোড়াও, নৈরাজ্য এবং সন্ত্রাসের কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, তারা মানুষ পুড়িয়ে মারা, রেলের ফিস প্লেট খুলে রেলের বগি ফেলে দেওয়া, রেলে আগুন দেওয়াসহ নানা অপকর্ম করে নির্বাচন ঠেকাতে চেয়েছিল। কিন্তু, এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে বড় কথা হল জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটকেন্দ্রে গিয়েছে এবং ভোট দিয়েছে। জনগণ তাদের ভোটের অধিকার যে ফিরে পেয়েছে সেটা এবার তারা যথাযথভাবে প্রয়োগ করতে পেরেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭ জানুয়ারি আমাদের জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়ে গেছে। নির্বাচনের সময় সভা করেছি। নির্বাচনের পরেও টুঙ্গিপাড়ায় গিয়েছিলাম, আপনাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে। এরপর আমি মনে করলাম আপনারা ভোট দিয়ে আমাকে কোথায় পাঠালেন সেই জায়গাটা তো আপনাদের একটু দেখতে হবে। সেজন্যই আজকে আমার এখানে আপনাদের দাওয়াত, সেজন্যই আপনারা এখানে এসেছেন। তিনি গণভবন সবাইকে ঘুরে দেখারও আমন্ত্রণ জানান। কারণ, এটা তাদেরই ঘর। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে কিন্তু আপনাদের এখানে কোনও রাজনীতি করতে ডাকিনি। আমি মনে করি আজকে টুঙ্গিপাড়া থেকে এখানে উপস্থিত হয়েছেন, এই গণভবনের মাটি আজকে ধন্য হয়েছে। নির্বাচনে জয়ী হয়ে আমরা সরকার গঠন করেছি। সেটাও আমি মনে করি, আপনাদেরই অবদান। কারণ, আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া সেটা কখনও সম্ভব ছিল না। সেজন্য আমি আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই। তিনি বলেন, টুঙ্গিপাড়া এবং কোটালিপাড়ায় আমি বারবার প্রার্থী হয়েছি, আপনারা আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন, আপনারা দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। আমি জানি, ’৭৫ এর পর এই সমস্ত অঞ্চলের মানুষ অত্যন্ত কষ্ট ভোগ করেছেন। যা হোক আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকে আমরা ব্যাপকভাবে উন্নয়ন করেছি, মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পেরেছি। তার সরকারের ভূমিহীন-গৃহহীনকে ঘর করে দেওয়াসহ জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করে দেওয়ার পদক্ষেপের উল্লেখ করে নিজেদের এলাকায় ভূমিহীন-গৃহহীন থাকলে খুঁজে বের করার আহ্বান জানান। কেননা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বাংলায় একটি মানুষও আর ঠিকানাবিহীন থাকবে না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে সংসদের অধিবেশন রয়েছে। যেখানে তার প্রশ্নোত্তর পর্ব রয়েছে, যেটা তিনিই চালু করেছিলেন। কারণ, তিনি মনে করেন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার নিজেরও একটা জবাবদিহি থাকা দরকার। তিনি পর্যায়ক্রমিকভাবে তার এলাকার জনগণকে ভাগ ভাগ করে সংসদ অধিবেশন প্রত্যক্ষ করার সুযোগ করে দেবেন বলেও উল্লেখ করেন। তিনি এ সময় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধু ভবনের স্মৃতি বিজড়িত বাড়িটির উল্লেখ করে বলেন, তিনি এবং ছোট বোন শেখ রেহানা বাড়িটি দান করে দিয়েছেন। যেটি একটি একটি জাদুঘরে রূপান্তরিত করা হয়েছে। যেখানে দেশ-বিদেশের মানুষ আসেন সেটা দেখার জন্য। তিনি বলেন, আমি মনে করি, আমাদের এলাকার লোকজনেরও এটা দেখার দরকার। কারণ, আপনারা এমন একটা জায়গা থেকে এসেছেন যেখানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মগ্রহণ করেছেন এবং সেখানেই ঘুমিয়ে আছেন। কাজেই তার জীবনযাপন, ’৭৫-এর মর্মান্তিক হত্যাকা-, যেখান থেকেই তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন-এসব অনেক কিছুই জানতে পারবেন আপনারা সেই বাড়িতে গেলে। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছিলেনÑ কাজেই আমার একটাই দায়িত্ব এই দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো আর মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা। আর সেই কাজটা আমি যে নিশ্চিন্তে করতে পারছি, সেটা করতে পারছি কেবল আপনাদের জন্য। কারণ, আপনারা আমাকে সেই সুযোগটা করে দিয়েছেন। আমার সব দায়িত্ব তো আপনারাই নিয়েছেন। আমার কোনও কষ্ট নেই। আমার মনে হয়, এই দায়িত্বটা যদি আপনারা না নিতেন- বাবা-মা-ভাই হারিয়েছি, আমার জন্য আমার হয়ে বলার কে আছে? কিন্তু আজকে আপনারা আমাকে সেই সাহস দিয়েছেন, শক্তি দিয়েছেন। যার জন্য আমি নিশ্চিন্ত মনে দেশের কাজ করতে পারছি। দেশের মানুষের কাজ করতে পারছি। তিনি বলেন, আমার এলাকায় নির্বাচন পরিচালনার জন্য কমিটি করা থেকে শুরু করে যেভাবে আপনারা কাজ করেছেন এটা সারা বাংলাদেশের সমস্ত প্রার্থীর জন্য একটা দৃষ্টান্ত হয়ে গেছে এবং আমাদের অনেক প্রার্থী ও তা অনুসরণ করেছেন। শেখ হাসিনা বলেন, এটা বাস্তব যে এই ১৫ বছরে বাংলাদেশকে আমরা বদলে দিতে পেরেছি। সব থেকে বড় কথা, আজকে পদ্মা সেতু হয়ে গিয়েছে বলেই আপনারা সকলে খুব সহজেই (গোপালগঞ্জসহ দক্ষিণবঙ্গ থেকে) চলে আসতে পারছেন।
জাতির পিতার কন্যা বলেন, বিশ্ব ব্যাংক ভুয়া দুর্নীতির অভিযোগ দিয়েছিল। সেটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে প্রমাণ করেছি যে এখানে কোনও দুর্নীতি হয়নি এবং নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু করে বিশ্বকে দেখিয়েছি যে আমরাও পারি। তিনি বলেন, সামনে আমাদের যাত্রা পথ এত সহজ নয়। আমাদেরকে অনেক বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করতে হয়। অনেক চক্রান্তই বাংলাদেশটাকে ঘিরে আছে। প্রধানমন্ত্রী এ সময়, কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা জনগণের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসা, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেওয়া এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সার তৈরি করায় সরকারের সাফল্য তুলে ধরেন। যাতে ঘরে বসেই দেশ-বিদেশে কাজ করে অর্থ উপার্জন করা যায় এবং উদ্যোক্তা তৈরিতে তার সরকারের পদক্ষেপ ও বিনা জমানতে ঋণ সুবিধা প্রদানসহ সরকার প্রদেয় বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার উল্লেখ করেন। কোনরকম পরীক্ষায় একটা পাশ করে চাকরির পেছনে না ছুটে যুব সমাজকে নিজের বস নিজে হবার মাধ্যমে আরও ১০ জনের কর্মসংস্থানে এগিয়ে আসার জন্য আত্মবিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে যাবারও আহ্বান জানান তিনি। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধসহ বিশ্বব্যাপী যুদ্ধাবস্থার জন্য খাদ্য ক্রয়মূল্য এবং পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় মূল্যস্ফীতির কারণে নির্দিষ্ট আয়ের মানুষদের অসুবিধা হওয়ার কথা উল্লেখ করে সারাদেশের প্রতি ইঞ্চি জমিকে চাষাবাদের আওতায় আনার মাধ্যমে সার্বিক উৎপাদন বাড়ানোয় তার আহ্বানও পুনর্ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়ার জনগণও পিছিয়ে থাকবে না মর্মে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এক্ষেত্রে সরকারের সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাসের পাশাপাশি বিদ্যুৎ ও পানির ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বানও জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচিত চেয়ারম্যান-মেম্বার যারা আছেন তাদের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে, আমরা অনেক প্রকল্প নেই এবং কাজ করি, সেই কাজগুলো যাতে যথাযথভাবে হয়। মানুষ যেন এই কাজের সুফল পেতে পারে এবং এর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখেই স্থানীয় সরকারের যে কাজগুলো সেগুলো আপনারা করবেন। কাজের মানটা যেন ঠিক থাকে এবং কাজগুলো যেন যথাযথভাবে হয়। যেভাবে কাজ করলে পরে দেশের মানুষের কল্যাণ হবে, দেশের মানুষের উন্নতি হবে। শেখ হাসিনা বলেন, তার একটাই আকাঙ্খা শেষ জীবনে তিনি টুঙ্গিপাড়ায় থাকবেন। যেখানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ঘুমিয়ে আছেন। খবর : বাসস
দেশীয় খেলা যেন হারিয়ে না যায়: দেশীয় খেলাগুলো যেন হারিয়ে না যায়, সেজন্য সবাই মিলে উদ্যোগী হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, “আমাদের কিছু দেশীয় খেলা, সেই ডাংগুলি থেকে শুরু করে, বিভিন্ন খেলাধুলা আগে প্রচলিত ছিল। সেগুলো আমাদের চালু করা উচিত। আমাদের নিজস্ব দেশীয় খেলাগুলো, হাডুডু থেকে শুরু করে সবগুলো খেলা সক্রিয় রাখতে উদ্যোগ নিতে হবে। আমাদের ছেলে মেয়েরা সকলে মিলে উদ্যোগ নেবেন, যেন দেশীয় খেলাগুলো হারিয়ে না যায়।”
গতকাল বুধবার রাজশাহীতে ৫২তম শীতকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করছিলেন প্রধানমন্ত্রী। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি তিনি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের ছেলেমেয়েরা ভালো এবং মেধাবী। সুযোগ করে দিলে আরো ভালো করতে পারবে। সব ধরনের খেলাকে আমাদের হাতে আনতে হবে।”
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান খেলাধুলার প্রতি কতটা আগ্রহী ছিলেন, সে বিষয়টি তুলে ধরে তার মেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “আমি মনে করি, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে বলে আমাদের ছেলেমেয়েরা খেলাধুলায় ব্যাপক সুযোগ পাচ্ছে। আন্তর্জাতিক পর্যায় পর্যন্ত তাদের দক্ষতা প্রমাণ রাখতে পারছে। জাতির পিতার উদ্যোগে স্বাধীনতার পর এই শীতকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল।
“আমাদের পরিবারটা সবসময় খেলাধুলার সঙ্গে জড়িত ছিল। আমার দাদা নিজেই ফুটবল প্লেয়ার ছিলেন, আমার বাবাও ফুটবল প্লেয়ার ছিলেন এবং আমার ভাই জামাল, কামাল, রাসেল সবাই স্পোর্টসের সাথে জড়িত ছিল। এমনকি কামালের স্ত্রী সুলতানা কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্লু উপাধি পেয়েছিল। জামালের স্ত্রী পারভীন জামালও খেলাধুলার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল।”
সরকারপ্রধান বলেন, “আমাদের ছেলেমেয়ের নাতি পুতিটাও ফুটবল খেলে। ফুটবল হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা, তার সাথে অন্যান্য খেলাধুলাৃ এখন আমাদের দেশীয় খেলাগুলোর দিকে আমাদেরকে বেশি আকর্ষণ করে গড়ে তোলা উচিত। দেশীয় খেলাকেও গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। খেলাধুলার মধ্য দিয়ে শারীরিক চর্চা হয়, খেলাধুলার মধ্য দিয়ে বাচ্চাদের ছোটবেলা থেকে ঐক্যের বন্ধন সৃষ্টি হয়। প্রতিযোগিতার পাশাপাশি বন্ধুত্বের একটা সম্পর্ক সৃষ্টি হয়। “সেখানে মনে করি খেলার প্রতি আরো দৃষ্টি দেওয়া উচিত। আমরা সরকার গঠনের পর থেকে খেলাধুলার প্রতি আরো মনোযোগী হয়েছি। যেখানে প্রাইমারি স্কুলে মেয়েদের বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্ট, ছেলেদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু করি। পাশাপাশি আন্তঃস্কুল প্রতিযোগিতা যেমন শুরু হয়েছে, শুধু ফুটবল ক্রিকেট না, সব ধরনের খেলাধুলার দরকার।”
আন্তঃস্কুল, আন্তঃকলেজ, আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতা আয়োজনে জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের ছেলেমেয়েদের আরও উন্নত প্রশিক্ষণ দরকার। প্রশিক্ষক তৈরি করা একান্তভাবে দরকার। আমরা প্রত্যেকটা বিভাগে একটা করে ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলব, বিকেএফপি আটটা বিভাগে আটটা হবে। সেখানে আমাদের ছেলেমেয়েরা ছোটবেলা থেকে খেলাধুলা আরো পারদর্শী হবে।
“আজকে আমাদের ভালো খবর হলো যে ভুটানকে আমরা চার গোলে হারিয়েছি। ফুটবলে আমাদের মেয়েরা খুব ভালো করছে। খেলাধুলার দিক দিয়ে মেয়েরা একটু বেশি এগিয়ে যাচ্ছে মনে হচ্ছে। ছেলেরা পিছিয়ে নেই, তবে আরও এগিয়ে যাবে। ছোটবেলা থেকে যদি ভালো ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করতে পারি, তাহলে তারা তাদের দক্ষতার পরিচয় দিতে পারবে।” দেশীয় খেলায় আরো গুরুত্ব দেওয়ার তাগিদ দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, “আমার প্রত্যেকটা উপজেলা পর্যন্ত খেলার মাঠ, মিনি স্টেডিয়াম তৈরি করছি। বেশ কয়েকটা হয়ে গেছে, আরো বাকি আছে। এটা তৈরি করার উদ্দেশ্য হল, আমাদের ছেলেমেয়েরা যেন সারা বছর খেলাধুলার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে।” শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন রাজশাহী সিটি করপোরেশন মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। রাজশাহীর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠানটি হয়।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

গণভোটে পিআর পদ্ধতির প্রস্তাব অন্তুর্ভুক্ত করার দাবি জামায়াতের

‘পঁচাত্তরের পর এবারই সবচেয়ে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে’ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

আপডেট সময় : ০২:৩৫:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৯৭৫ সালের পর গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে। তিনি বলেন, “আমি মনে করি, বাংলাদেশে সেই ’৭৫ সালের পর থেকে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে সেখানে সব থেকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে এবার।”
গতকাল বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) গণভবনে গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে দেওয়া ভাষণে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে অনেক চক্রান্ত ছিল, ষড়যন্ত্র ছিল। তিনি এ সময় স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমানের হাতে তৈরি দল বিএনপি’র জ্বালাও-পোড়াও, নৈরাজ্য এবং সন্ত্রাসের কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, তারা মানুষ পুড়িয়ে মারা, রেলের ফিস প্লেট খুলে রেলের বগি ফেলে দেওয়া, রেলে আগুন দেওয়াসহ নানা অপকর্ম করে নির্বাচন ঠেকাতে চেয়েছিল। কিন্তু, এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে বড় কথা হল জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটকেন্দ্রে গিয়েছে এবং ভোট দিয়েছে। জনগণ তাদের ভোটের অধিকার যে ফিরে পেয়েছে সেটা এবার তারা যথাযথভাবে প্রয়োগ করতে পেরেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭ জানুয়ারি আমাদের জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়ে গেছে। নির্বাচনের সময় সভা করেছি। নির্বাচনের পরেও টুঙ্গিপাড়ায় গিয়েছিলাম, আপনাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে। এরপর আমি মনে করলাম আপনারা ভোট দিয়ে আমাকে কোথায় পাঠালেন সেই জায়গাটা তো আপনাদের একটু দেখতে হবে। সেজন্যই আজকে আমার এখানে আপনাদের দাওয়াত, সেজন্যই আপনারা এখানে এসেছেন। তিনি গণভবন সবাইকে ঘুরে দেখারও আমন্ত্রণ জানান। কারণ, এটা তাদেরই ঘর। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে কিন্তু আপনাদের এখানে কোনও রাজনীতি করতে ডাকিনি। আমি মনে করি আজকে টুঙ্গিপাড়া থেকে এখানে উপস্থিত হয়েছেন, এই গণভবনের মাটি আজকে ধন্য হয়েছে। নির্বাচনে জয়ী হয়ে আমরা সরকার গঠন করেছি। সেটাও আমি মনে করি, আপনাদেরই অবদান। কারণ, আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া সেটা কখনও সম্ভব ছিল না। সেজন্য আমি আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই। তিনি বলেন, টুঙ্গিপাড়া এবং কোটালিপাড়ায় আমি বারবার প্রার্থী হয়েছি, আপনারা আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন, আপনারা দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। আমি জানি, ’৭৫ এর পর এই সমস্ত অঞ্চলের মানুষ অত্যন্ত কষ্ট ভোগ করেছেন। যা হোক আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকে আমরা ব্যাপকভাবে উন্নয়ন করেছি, মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পেরেছি। তার সরকারের ভূমিহীন-গৃহহীনকে ঘর করে দেওয়াসহ জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করে দেওয়ার পদক্ষেপের উল্লেখ করে নিজেদের এলাকায় ভূমিহীন-গৃহহীন থাকলে খুঁজে বের করার আহ্বান জানান। কেননা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বাংলায় একটি মানুষও আর ঠিকানাবিহীন থাকবে না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে সংসদের অধিবেশন রয়েছে। যেখানে তার প্রশ্নোত্তর পর্ব রয়েছে, যেটা তিনিই চালু করেছিলেন। কারণ, তিনি মনে করেন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার নিজেরও একটা জবাবদিহি থাকা দরকার। তিনি পর্যায়ক্রমিকভাবে তার এলাকার জনগণকে ভাগ ভাগ করে সংসদ অধিবেশন প্রত্যক্ষ করার সুযোগ করে দেবেন বলেও উল্লেখ করেন। তিনি এ সময় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধু ভবনের স্মৃতি বিজড়িত বাড়িটির উল্লেখ করে বলেন, তিনি এবং ছোট বোন শেখ রেহানা বাড়িটি দান করে দিয়েছেন। যেটি একটি একটি জাদুঘরে রূপান্তরিত করা হয়েছে। যেখানে দেশ-বিদেশের মানুষ আসেন সেটা দেখার জন্য। তিনি বলেন, আমি মনে করি, আমাদের এলাকার লোকজনেরও এটা দেখার দরকার। কারণ, আপনারা এমন একটা জায়গা থেকে এসেছেন যেখানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মগ্রহণ করেছেন এবং সেখানেই ঘুমিয়ে আছেন। কাজেই তার জীবনযাপন, ’৭৫-এর মর্মান্তিক হত্যাকা-, যেখান থেকেই তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন-এসব অনেক কিছুই জানতে পারবেন আপনারা সেই বাড়িতে গেলে। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছিলেনÑ কাজেই আমার একটাই দায়িত্ব এই দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো আর মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা। আর সেই কাজটা আমি যে নিশ্চিন্তে করতে পারছি, সেটা করতে পারছি কেবল আপনাদের জন্য। কারণ, আপনারা আমাকে সেই সুযোগটা করে দিয়েছেন। আমার সব দায়িত্ব তো আপনারাই নিয়েছেন। আমার কোনও কষ্ট নেই। আমার মনে হয়, এই দায়িত্বটা যদি আপনারা না নিতেন- বাবা-মা-ভাই হারিয়েছি, আমার জন্য আমার হয়ে বলার কে আছে? কিন্তু আজকে আপনারা আমাকে সেই সাহস দিয়েছেন, শক্তি দিয়েছেন। যার জন্য আমি নিশ্চিন্ত মনে দেশের কাজ করতে পারছি। দেশের মানুষের কাজ করতে পারছি। তিনি বলেন, আমার এলাকায় নির্বাচন পরিচালনার জন্য কমিটি করা থেকে শুরু করে যেভাবে আপনারা কাজ করেছেন এটা সারা বাংলাদেশের সমস্ত প্রার্থীর জন্য একটা দৃষ্টান্ত হয়ে গেছে এবং আমাদের অনেক প্রার্থী ও তা অনুসরণ করেছেন। শেখ হাসিনা বলেন, এটা বাস্তব যে এই ১৫ বছরে বাংলাদেশকে আমরা বদলে দিতে পেরেছি। সব থেকে বড় কথা, আজকে পদ্মা সেতু হয়ে গিয়েছে বলেই আপনারা সকলে খুব সহজেই (গোপালগঞ্জসহ দক্ষিণবঙ্গ থেকে) চলে আসতে পারছেন।
জাতির পিতার কন্যা বলেন, বিশ্ব ব্যাংক ভুয়া দুর্নীতির অভিযোগ দিয়েছিল। সেটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে প্রমাণ করেছি যে এখানে কোনও দুর্নীতি হয়নি এবং নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু করে বিশ্বকে দেখিয়েছি যে আমরাও পারি। তিনি বলেন, সামনে আমাদের যাত্রা পথ এত সহজ নয়। আমাদেরকে অনেক বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করতে হয়। অনেক চক্রান্তই বাংলাদেশটাকে ঘিরে আছে। প্রধানমন্ত্রী এ সময়, কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা জনগণের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসা, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেওয়া এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সার তৈরি করায় সরকারের সাফল্য তুলে ধরেন। যাতে ঘরে বসেই দেশ-বিদেশে কাজ করে অর্থ উপার্জন করা যায় এবং উদ্যোক্তা তৈরিতে তার সরকারের পদক্ষেপ ও বিনা জমানতে ঋণ সুবিধা প্রদানসহ সরকার প্রদেয় বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার উল্লেখ করেন। কোনরকম পরীক্ষায় একটা পাশ করে চাকরির পেছনে না ছুটে যুব সমাজকে নিজের বস নিজে হবার মাধ্যমে আরও ১০ জনের কর্মসংস্থানে এগিয়ে আসার জন্য আত্মবিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে যাবারও আহ্বান জানান তিনি। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধসহ বিশ্বব্যাপী যুদ্ধাবস্থার জন্য খাদ্য ক্রয়মূল্য এবং পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় মূল্যস্ফীতির কারণে নির্দিষ্ট আয়ের মানুষদের অসুবিধা হওয়ার কথা উল্লেখ করে সারাদেশের প্রতি ইঞ্চি জমিকে চাষাবাদের আওতায় আনার মাধ্যমে সার্বিক উৎপাদন বাড়ানোয় তার আহ্বানও পুনর্ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়ার জনগণও পিছিয়ে থাকবে না মর্মে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এক্ষেত্রে সরকারের সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাসের পাশাপাশি বিদ্যুৎ ও পানির ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বানও জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচিত চেয়ারম্যান-মেম্বার যারা আছেন তাদের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে, আমরা অনেক প্রকল্প নেই এবং কাজ করি, সেই কাজগুলো যাতে যথাযথভাবে হয়। মানুষ যেন এই কাজের সুফল পেতে পারে এবং এর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখেই স্থানীয় সরকারের যে কাজগুলো সেগুলো আপনারা করবেন। কাজের মানটা যেন ঠিক থাকে এবং কাজগুলো যেন যথাযথভাবে হয়। যেভাবে কাজ করলে পরে দেশের মানুষের কল্যাণ হবে, দেশের মানুষের উন্নতি হবে। শেখ হাসিনা বলেন, তার একটাই আকাঙ্খা শেষ জীবনে তিনি টুঙ্গিপাড়ায় থাকবেন। যেখানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ঘুমিয়ে আছেন। খবর : বাসস
দেশীয় খেলা যেন হারিয়ে না যায়: দেশীয় খেলাগুলো যেন হারিয়ে না যায়, সেজন্য সবাই মিলে উদ্যোগী হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, “আমাদের কিছু দেশীয় খেলা, সেই ডাংগুলি থেকে শুরু করে, বিভিন্ন খেলাধুলা আগে প্রচলিত ছিল। সেগুলো আমাদের চালু করা উচিত। আমাদের নিজস্ব দেশীয় খেলাগুলো, হাডুডু থেকে শুরু করে সবগুলো খেলা সক্রিয় রাখতে উদ্যোগ নিতে হবে। আমাদের ছেলে মেয়েরা সকলে মিলে উদ্যোগ নেবেন, যেন দেশীয় খেলাগুলো হারিয়ে না যায়।”
গতকাল বুধবার রাজশাহীতে ৫২তম শীতকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করছিলেন প্রধানমন্ত্রী। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি তিনি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের ছেলেমেয়েরা ভালো এবং মেধাবী। সুযোগ করে দিলে আরো ভালো করতে পারবে। সব ধরনের খেলাকে আমাদের হাতে আনতে হবে।”
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান খেলাধুলার প্রতি কতটা আগ্রহী ছিলেন, সে বিষয়টি তুলে ধরে তার মেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “আমি মনে করি, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে বলে আমাদের ছেলেমেয়েরা খেলাধুলায় ব্যাপক সুযোগ পাচ্ছে। আন্তর্জাতিক পর্যায় পর্যন্ত তাদের দক্ষতা প্রমাণ রাখতে পারছে। জাতির পিতার উদ্যোগে স্বাধীনতার পর এই শীতকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল।
“আমাদের পরিবারটা সবসময় খেলাধুলার সঙ্গে জড়িত ছিল। আমার দাদা নিজেই ফুটবল প্লেয়ার ছিলেন, আমার বাবাও ফুটবল প্লেয়ার ছিলেন এবং আমার ভাই জামাল, কামাল, রাসেল সবাই স্পোর্টসের সাথে জড়িত ছিল। এমনকি কামালের স্ত্রী সুলতানা কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্লু উপাধি পেয়েছিল। জামালের স্ত্রী পারভীন জামালও খেলাধুলার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল।”
সরকারপ্রধান বলেন, “আমাদের ছেলেমেয়ের নাতি পুতিটাও ফুটবল খেলে। ফুটবল হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা, তার সাথে অন্যান্য খেলাধুলাৃ এখন আমাদের দেশীয় খেলাগুলোর দিকে আমাদেরকে বেশি আকর্ষণ করে গড়ে তোলা উচিত। দেশীয় খেলাকেও গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। খেলাধুলার মধ্য দিয়ে শারীরিক চর্চা হয়, খেলাধুলার মধ্য দিয়ে বাচ্চাদের ছোটবেলা থেকে ঐক্যের বন্ধন সৃষ্টি হয়। প্রতিযোগিতার পাশাপাশি বন্ধুত্বের একটা সম্পর্ক সৃষ্টি হয়। “সেখানে মনে করি খেলার প্রতি আরো দৃষ্টি দেওয়া উচিত। আমরা সরকার গঠনের পর থেকে খেলাধুলার প্রতি আরো মনোযোগী হয়েছি। যেখানে প্রাইমারি স্কুলে মেয়েদের বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্ট, ছেলেদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু করি। পাশাপাশি আন্তঃস্কুল প্রতিযোগিতা যেমন শুরু হয়েছে, শুধু ফুটবল ক্রিকেট না, সব ধরনের খেলাধুলার দরকার।”
আন্তঃস্কুল, আন্তঃকলেজ, আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতা আয়োজনে জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের ছেলেমেয়েদের আরও উন্নত প্রশিক্ষণ দরকার। প্রশিক্ষক তৈরি করা একান্তভাবে দরকার। আমরা প্রত্যেকটা বিভাগে একটা করে ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলব, বিকেএফপি আটটা বিভাগে আটটা হবে। সেখানে আমাদের ছেলেমেয়েরা ছোটবেলা থেকে খেলাধুলা আরো পারদর্শী হবে।
“আজকে আমাদের ভালো খবর হলো যে ভুটানকে আমরা চার গোলে হারিয়েছি। ফুটবলে আমাদের মেয়েরা খুব ভালো করছে। খেলাধুলার দিক দিয়ে মেয়েরা একটু বেশি এগিয়ে যাচ্ছে মনে হচ্ছে। ছেলেরা পিছিয়ে নেই, তবে আরও এগিয়ে যাবে। ছোটবেলা থেকে যদি ভালো ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করতে পারি, তাহলে তারা তাদের দক্ষতার পরিচয় দিতে পারবে।” দেশীয় খেলায় আরো গুরুত্ব দেওয়ার তাগিদ দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, “আমার প্রত্যেকটা উপজেলা পর্যন্ত খেলার মাঠ, মিনি স্টেডিয়াম তৈরি করছি। বেশ কয়েকটা হয়ে গেছে, আরো বাকি আছে। এটা তৈরি করার উদ্দেশ্য হল, আমাদের ছেলেমেয়েরা যেন সারা বছর খেলাধুলার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে।” শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন রাজশাহী সিটি করপোরেশন মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। রাজশাহীর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠানটি হয়।