ঢাকা ০৩:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫

ন্যায়বিচার নিয়ে শঙ্কায় শহীদ পরিবার

  • আপডেট সময় : ০৮:৩৬:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪
  • ৭৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : জুলাই গণহত্যার দুই মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বিচারকাজ শুরু হয়নি। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল চলছে মন্থরগতিতে। এতে ন্যায়বিচার নিয়ে সন্দিহান শহীদ পরিবারের সদস্যরা। গতকাল শনিবার (৫ অক্টোবর) সকাল ১১টায় রাজধানীর শাহবাগে আয়োজিত জাতীয় নাগরিক কমিটির এক সমাবেশে এ শঙ্কা প্রকাশ করেন একাধিক শহীদ পরিবারের সদস্য। জুলাই গণহত্যার বিচার, শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের দাবিতে সমাবেশটি আয়োজিত হয়। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, সদস্য আরিফুল ইসলাম আদিব, সানজিদা ইসলাম তুলি, প্রীতম দাস প্রমুখ। শহীদ পরিবারের সদস্যরা জানান, ন্যায়বিচারের আশা নিয়ে তারা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে মামলা করেছিলেন। কিন্তু এখনো তারা কোনো তৎপরতা দেখতে পাচ্ছেন না। শহীদ ফারহান ফাইয়াজের বাবা বলেন, আমার ছেলে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গিয়েছিল। তাকে গুলি করে শহীদ করা হয়। আমরা খুনিদের কাছে বিচার চাইনি। এখন নতুন সরকারের সময় আমরা মামলা করেছি। কিন্তু আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের নাজুক অবস্থা। অনুসন্ধান ঢিমেতালে চলছে। ন্যায়বিচার পাব কি না, আমরা সন্দিহান। শহীদ শাহরিয়া ইসলাম আলভীর বাবা বলেন, এখনো ফ্যাসিবাদের দোসররা ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই সরকার আমাদের ছেলেদের রক্তের বিনিময়ে মসনদে বসেছে। অথচ আজ পর্যন্ত তারা আমাদের পরিবারের কাছে সান্ত্বনা দিতেও যেতে পারেনি। আমাদের আশা ছিল ন্যায়বিচার পাব, কিন্তু আপনারা এখনো শহীদদের তালিকাই করতে পারেননি। শহীদ নাহিদুল ইসলামের ভাই বলেন, ৫ তারিখ বিকেলে মোহাম্মদপুরে আমার ভাইসহ ৩ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তারা চেষ্টা করেছিল আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিতে। তার শরীর অর্ধেক জ্বালিয়ে দিয়েছিল। আমরা ন্যায়বিচার চাই। বাংলাদেশে গুমের শিকার পরিবারগুলোর গড়ে তোলা সংগঠন ‘মায়ের ডাক’-এর সমন্বয়ক ও নাগরিক কমিটির সদস্য সানজিদা ইসলাম তুলি বলেন, এখনো কোনো গণতদন্ত কমিশন গঠন করা হয়নি। আমরা আশা করেছিলাম, কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বিচারের রায় পাব। কিন্তু সেখানে সবকিছু এখনো মন্থর। গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান দাবি করেন তিনি। সমাবেশে নাগরিক কমিটির বক্তারা দেশে চলমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, পাহাড়ে অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণ, শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিতকরণ, আশুলিয়ায় শ্রমিকদের আন্দোলন সমাধানসহ একাধিক দাবি জানান।
নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, ফেনীতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন কার্যক্রম এখনো হয়নি। ইতোমধ্যেই উত্তবঙ্গে বন্যা নেমে এলো। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করছে না। পুলিশ এখনো মাঠে নামেনি। এখনো চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হচ্ছে না। বেকারদের পেটে লাথি মারা হচ্ছে। তিনি বলেন, শহীদদের নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে। টাকার বিনিময়ে রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার নিন্দা জানাই। আমরা রাজনৈতিক দলগুলোকে অনুরোধ করব, তারা যেন ছাত্র-তরুণদের পালস বোঝার চেষ্টা করেন।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ন্যায়বিচার নিয়ে শঙ্কায় শহীদ পরিবার

আপডেট সময় : ০৮:৩৬:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : জুলাই গণহত্যার দুই মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বিচারকাজ শুরু হয়নি। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল চলছে মন্থরগতিতে। এতে ন্যায়বিচার নিয়ে সন্দিহান শহীদ পরিবারের সদস্যরা। গতকাল শনিবার (৫ অক্টোবর) সকাল ১১টায় রাজধানীর শাহবাগে আয়োজিত জাতীয় নাগরিক কমিটির এক সমাবেশে এ শঙ্কা প্রকাশ করেন একাধিক শহীদ পরিবারের সদস্য। জুলাই গণহত্যার বিচার, শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের দাবিতে সমাবেশটি আয়োজিত হয়। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, সদস্য আরিফুল ইসলাম আদিব, সানজিদা ইসলাম তুলি, প্রীতম দাস প্রমুখ। শহীদ পরিবারের সদস্যরা জানান, ন্যায়বিচারের আশা নিয়ে তারা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে মামলা করেছিলেন। কিন্তু এখনো তারা কোনো তৎপরতা দেখতে পাচ্ছেন না। শহীদ ফারহান ফাইয়াজের বাবা বলেন, আমার ছেলে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গিয়েছিল। তাকে গুলি করে শহীদ করা হয়। আমরা খুনিদের কাছে বিচার চাইনি। এখন নতুন সরকারের সময় আমরা মামলা করেছি। কিন্তু আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের নাজুক অবস্থা। অনুসন্ধান ঢিমেতালে চলছে। ন্যায়বিচার পাব কি না, আমরা সন্দিহান। শহীদ শাহরিয়া ইসলাম আলভীর বাবা বলেন, এখনো ফ্যাসিবাদের দোসররা ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই সরকার আমাদের ছেলেদের রক্তের বিনিময়ে মসনদে বসেছে। অথচ আজ পর্যন্ত তারা আমাদের পরিবারের কাছে সান্ত্বনা দিতেও যেতে পারেনি। আমাদের আশা ছিল ন্যায়বিচার পাব, কিন্তু আপনারা এখনো শহীদদের তালিকাই করতে পারেননি। শহীদ নাহিদুল ইসলামের ভাই বলেন, ৫ তারিখ বিকেলে মোহাম্মদপুরে আমার ভাইসহ ৩ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তারা চেষ্টা করেছিল আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিতে। তার শরীর অর্ধেক জ্বালিয়ে দিয়েছিল। আমরা ন্যায়বিচার চাই। বাংলাদেশে গুমের শিকার পরিবারগুলোর গড়ে তোলা সংগঠন ‘মায়ের ডাক’-এর সমন্বয়ক ও নাগরিক কমিটির সদস্য সানজিদা ইসলাম তুলি বলেন, এখনো কোনো গণতদন্ত কমিশন গঠন করা হয়নি। আমরা আশা করেছিলাম, কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বিচারের রায় পাব। কিন্তু সেখানে সবকিছু এখনো মন্থর। গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান দাবি করেন তিনি। সমাবেশে নাগরিক কমিটির বক্তারা দেশে চলমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, পাহাড়ে অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণ, শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিতকরণ, আশুলিয়ায় শ্রমিকদের আন্দোলন সমাধানসহ একাধিক দাবি জানান।
নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, ফেনীতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন কার্যক্রম এখনো হয়নি। ইতোমধ্যেই উত্তবঙ্গে বন্যা নেমে এলো। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করছে না। পুলিশ এখনো মাঠে নামেনি। এখনো চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হচ্ছে না। বেকারদের পেটে লাথি মারা হচ্ছে। তিনি বলেন, শহীদদের নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে। টাকার বিনিময়ে রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার নিন্দা জানাই। আমরা রাজনৈতিক দলগুলোকে অনুরোধ করব, তারা যেন ছাত্র-তরুণদের পালস বোঝার চেষ্টা করেন।