ঢাকা ০৬:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

নৌকার সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মল্লযুদ্ধ করতে দেওয়া হবে না

  • আপডেট সময় : ০২:১৫:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩
  • ১৪০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমাদের নেত্রী নির্বাচনে স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিযোগিতা করার একটা সুযোগ দিয়েছেন। এই সুযোগের অপব্যবহারটা যেন কেউ না করেন। এখানে জোর-জবরদস্তি করবেন, নৌকার সঙ্গে মল্লযুদ্ধ করবেন, সেটা হবে না।
গতকাল সোমবার (১১ ডিসেম্বর) বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক যৌথসভায় এসব কথা বলেন তিনি। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা, সহযোগী এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে এই সভা করে আওয়ামী লীগ।
‘২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশ সরকারি দল প- করেছে’ বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত কলামের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এসব বুদ্ধিজীবী বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে এতবড় ঢাহা মিথ্যা কথা লিখতে পারে! পুলিশের ওপর হামলা, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা, পুলিশ হাসপাতালে হামলার কথা দেখলাম না। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এসব আঁতেলরা বিদেশিদের ভুল পথে পরিচালিত করে। কীসের বিনিময়ে বাস্তব অবস্থা আড়াল করে জানি না। তারা আজকে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও সন্ত্রাসকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের নিবন্ধ কীভাবে ছাপা হয়, জানি না।’
নেতাকর্মীদের নির্বাচনি আচরণবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘নির্বাচনটা যাতে শান্তিপূর্ণ হয়, সেই ব্যাপারে আমাদের দলের নেতাকর্মীদের অবদান রাখতে হবে। আপনাদেরকেও ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে। ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত চ্যালেঞ্জিং সময়। এই সময় আমাদের অতিক্রম করতে হবে। স্বাধীনতার আদর্শকে বাঁচিয়ে রাখতে আমাদেরকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ ও সংগ্রামের বিকল্প নেই।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে সবাই মনোনয়ন পাননি। এটার তো একটা সংখ্যা আছে, তার বাইরে দেওয়া যায় না। এতে অনেকের মনে দুঃখ আছে। তারপরও আমাদের নেত্রী স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিযোগিতা করার একটা সুযোগ দিয়েছেন। এই সুযোগের অপব্যবহারটা যেন কেউ না করেন। এখানে জোর-জবরদস্তি করবেন, নৌকার সঙ্গে মল্লযুদ্ধ করবেন, সেটা হবে না। শৃঙ্খলার সঙ্গে থাকতে হবে। প্রতিযোগী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। সন্ত্রাসীরা প্রশ্রয় পায়— এমন কোনও কাজ করবেন না, করতে পারবেন না। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে, কেউ গায়ের জোর খাটাবেন না। আমরা এটা সহ্য করবো না। জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে হবে, জনগণ যা চায় তাই হবে।’
নির্বাচন নিয়ে বদনামের ভাগিদার হতে চান না জানিয়ে কাদের বলেন, ‘এমন একটা নির্বাচন করবো— সারা বিশ্ব যার প্রশংসা করবে। সেরকম নির্বাচন করতে চাই। অতীতে অনেক কথা, অনেকেই বলেছেন। নির্বাচন গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা, কোথাও ত্রুটিমুক্ত নয়। আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। এবার আরও ভালো একটা নির্বাচন করবো, উপহার দেবো। এটাই আমাদের শপথ, অঙ্গীকার।’
আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী পরাজয় মানে না। ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ অবশ্যই বিজয়ী হবে। যারা নির্বাচনে মনোনয়ন পাননি। দুঃখ-কষ্ট থাকতে পারে। কিন্তু আওয়ামী লীগে মূল্যায়ন আছে। কোনও না কোনোভাবে আমরা নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করি। অন্তত শেখ হাসিনা যতদিন আছেন, তিনি খুঁজে খুঁজে কর্মীদের খবর নেন, বঞ্চিতদের সময়মতো মূল্যায়ন করেন। হা-হুতাশ করার কোনও দরকার নেই। দলের সঙ্গে লেগে থাকুন, মূল্যায়ন হবে।’ তিনি বলেন, ‘হামলা করলে মামলা হবে। মামলা হলে গ্রেফতার হবে, সাজা হবে। ছাড়াছাড়ি নেই। পুলিশ মারবেন, আর এটা কি বিনা বিচারে যাবে? এই ঘটনা যারা ঘটায়, তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে না? হামলা আমরা করি না, হামলা করে তারা (বিএনপি)। আর হামলা হলে মামলা হবেই। ছাড়াছাড়ি নেই।’ ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কোনও রাজনৈতিক দল যদি নির্বাচনে না আসে, তাহলে তো জোর করে আর নির্বাচনে আনা যায় না। পৃথিবীর কোথায় আছে যে, ক্ষমতাসীন সরকার হঠাৎ পদত্যাগ করে নির্বাচন দেয়? আমাদের দেশে কেন হবে? তারা শেখ হাসিনার পদত্যাগ চায়। তারা মৃত তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়। সারা বিশ্বে যে পদ্ধতিতে নির্বাচন হয়, এখানেও সেই একই পদ্ধতিতে নির্বাচন হচ্ছে। ২০০৯ সালের পরে শেখ হাসিনা নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করেছেন। এখন যদি তারা নির্বাচনে না আসে, তাহলে আমরা কী করতে পারি?’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচন উপলক্ষে দলে দলে বৈঠক করবো। এখন কি জনসভা ডাক দিয়ে আমরা এগুলো করবো? আলোচনার জন্য একটি পরিবেশ লাগে। এসব আলোচনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা। এটা তো জনসভা ডেকে হবে না, গণমাধ্যম ডেকে হবে না। আলোচনা এভাবেই হয়, অতীতেও হয়েছে। আলোচনা হয়েছে, ১৪ দল হয়েছে, মহাজোট হয়েছে এবং আসন সমঝোতাও হয়েছে। প্রক্রিয়াটা এমনই। আগামী ১৭ তারিখের মধ্যে সব সমাধান হয়ে যাবে। এটাতো আর ঢাকঢোল পিটিয়ে হবে না।’
বিএনপি বলে ‘লোক দেখানো ও সংবিধান রক্ষার নির্বাচন’, উল্লেখ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যারা এদেশের সংবিধান মানে না, আইনের শাসন মানে না, তারা এ ধরনের কথা বলবেই। এ নিয়ে আমাদের মাথা ব্যথা নেই। আন্দোলনের নামে বিএনপির নেতৃত্বে সারা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছিল, উদ্দেশ্য নির্বাচন করতে না দেওয়া। তাদের একদফা না মানলে নির্বাচন করতে দেবে না। চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে। সেখান থেকে আমাদের নেতাকর্মীরা প্রত্যেকে যার যার জায়গা থেকে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাদেরকে যে স্পন্টেনিয়াস ও স্পিরিটে দেখেছি, সেটা আমাদের খুব ভালো লেগেছে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের নেতারা অনেকেই ইলেকশনে প্রতিদ্বন্দিতা করবেন, ব্যস্ত হয়ে যাবেন। তারপরও যারা এই সিটিতে আছেন— শৃঙ্খলা মেনে, আচরণবিধি মেনে দায়িত্ব পালন করবেন। একই সঙ্গে সতর্ক পাহারায় থাকতে হবে।’ ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচনবিরোধী শক্তি বিএনপির নেতৃত্বে যে সন্ত্রাসী কর্মকা- চালাচ্ছে, জনগণকে নিয়ে তাদেরকে প্রতিহত করতে হবে। আমরা সতর্ক থাকবো। কারণ এ নির্বাচনটা আমাদের সংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার নির্বাচন। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে নব নব বিজয় মুকুটিত করতে এই নির্বাচন আমাদের অবশ্যই প্রয়োজন। যথা সময়ে পাঁচ বছর পরে নির্বাচন হচ্ছে এবং এটাই গণতন্ত্রের বিউটি। নির্বাচিত সরকার নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি অবশ্যই চোখে পড়ার মতো হবে। দৃশ্যমানভাবে ভোটার উপস্থিতি দুনিয়ার অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের তুলনায় আমরা বিশ্বাস করি, এবারকার টার্ন-আউট অবশ্যই ভালো হবে। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা আছে এবং অন্যান্য ২৮টি দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। আমরা আশা করি, সারা বাংলাদেশে নির্বাচনের যে সুবাতাস শুরু করেছে, এটা সত্যিই এতটা হবে আমরা ভাবতে পারিনি।’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আজকে হরতাল ডাকে, অবরোধ ডাকে, রাস্তায় যানজট, হাইওয়েতে যানজট। এরকম হরতাল আর অবরোধ তারা ডাকছে। সন্ত্রাসী করতে তো বেশি লোক লাগে না, গুপ্ত হামলা করতেও তো বেশি লোক লাগে না। সে অপকর্ম তারা করে যাচ্ছে। আমার সতর্ক আছি। অনেকেই ভেবেছিল বিরোধী দল হয়তো বড় আয়োজন করে সব বন্ধ করে দিচ্ছে। আমরাই সবচেয়ে বড় সমাবেশ করেছি। সরকারি দল এত বড় সমাবেশ করতে পারবে, এটা কেউ ভাবতেও পারতো না।’

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

নৌকার সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মল্লযুদ্ধ করতে দেওয়া হবে না

আপডেট সময় : ০২:১৫:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমাদের নেত্রী নির্বাচনে স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিযোগিতা করার একটা সুযোগ দিয়েছেন। এই সুযোগের অপব্যবহারটা যেন কেউ না করেন। এখানে জোর-জবরদস্তি করবেন, নৌকার সঙ্গে মল্লযুদ্ধ করবেন, সেটা হবে না।
গতকাল সোমবার (১১ ডিসেম্বর) বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক যৌথসভায় এসব কথা বলেন তিনি। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা, সহযোগী এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে এই সভা করে আওয়ামী লীগ।
‘২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশ সরকারি দল প- করেছে’ বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত কলামের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এসব বুদ্ধিজীবী বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে এতবড় ঢাহা মিথ্যা কথা লিখতে পারে! পুলিশের ওপর হামলা, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা, পুলিশ হাসপাতালে হামলার কথা দেখলাম না। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এসব আঁতেলরা বিদেশিদের ভুল পথে পরিচালিত করে। কীসের বিনিময়ে বাস্তব অবস্থা আড়াল করে জানি না। তারা আজকে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও সন্ত্রাসকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের নিবন্ধ কীভাবে ছাপা হয়, জানি না।’
নেতাকর্মীদের নির্বাচনি আচরণবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘নির্বাচনটা যাতে শান্তিপূর্ণ হয়, সেই ব্যাপারে আমাদের দলের নেতাকর্মীদের অবদান রাখতে হবে। আপনাদেরকেও ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে। ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত চ্যালেঞ্জিং সময়। এই সময় আমাদের অতিক্রম করতে হবে। স্বাধীনতার আদর্শকে বাঁচিয়ে রাখতে আমাদেরকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ ও সংগ্রামের বিকল্প নেই।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে সবাই মনোনয়ন পাননি। এটার তো একটা সংখ্যা আছে, তার বাইরে দেওয়া যায় না। এতে অনেকের মনে দুঃখ আছে। তারপরও আমাদের নেত্রী স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিযোগিতা করার একটা সুযোগ দিয়েছেন। এই সুযোগের অপব্যবহারটা যেন কেউ না করেন। এখানে জোর-জবরদস্তি করবেন, নৌকার সঙ্গে মল্লযুদ্ধ করবেন, সেটা হবে না। শৃঙ্খলার সঙ্গে থাকতে হবে। প্রতিযোগী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। সন্ত্রাসীরা প্রশ্রয় পায়— এমন কোনও কাজ করবেন না, করতে পারবেন না। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে, কেউ গায়ের জোর খাটাবেন না। আমরা এটা সহ্য করবো না। জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে হবে, জনগণ যা চায় তাই হবে।’
নির্বাচন নিয়ে বদনামের ভাগিদার হতে চান না জানিয়ে কাদের বলেন, ‘এমন একটা নির্বাচন করবো— সারা বিশ্ব যার প্রশংসা করবে। সেরকম নির্বাচন করতে চাই। অতীতে অনেক কথা, অনেকেই বলেছেন। নির্বাচন গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা, কোথাও ত্রুটিমুক্ত নয়। আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। এবার আরও ভালো একটা নির্বাচন করবো, উপহার দেবো। এটাই আমাদের শপথ, অঙ্গীকার।’
আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী পরাজয় মানে না। ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ অবশ্যই বিজয়ী হবে। যারা নির্বাচনে মনোনয়ন পাননি। দুঃখ-কষ্ট থাকতে পারে। কিন্তু আওয়ামী লীগে মূল্যায়ন আছে। কোনও না কোনোভাবে আমরা নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করি। অন্তত শেখ হাসিনা যতদিন আছেন, তিনি খুঁজে খুঁজে কর্মীদের খবর নেন, বঞ্চিতদের সময়মতো মূল্যায়ন করেন। হা-হুতাশ করার কোনও দরকার নেই। দলের সঙ্গে লেগে থাকুন, মূল্যায়ন হবে।’ তিনি বলেন, ‘হামলা করলে মামলা হবে। মামলা হলে গ্রেফতার হবে, সাজা হবে। ছাড়াছাড়ি নেই। পুলিশ মারবেন, আর এটা কি বিনা বিচারে যাবে? এই ঘটনা যারা ঘটায়, তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে না? হামলা আমরা করি না, হামলা করে তারা (বিএনপি)। আর হামলা হলে মামলা হবেই। ছাড়াছাড়ি নেই।’ ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কোনও রাজনৈতিক দল যদি নির্বাচনে না আসে, তাহলে তো জোর করে আর নির্বাচনে আনা যায় না। পৃথিবীর কোথায় আছে যে, ক্ষমতাসীন সরকার হঠাৎ পদত্যাগ করে নির্বাচন দেয়? আমাদের দেশে কেন হবে? তারা শেখ হাসিনার পদত্যাগ চায়। তারা মৃত তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়। সারা বিশ্বে যে পদ্ধতিতে নির্বাচন হয়, এখানেও সেই একই পদ্ধতিতে নির্বাচন হচ্ছে। ২০০৯ সালের পরে শেখ হাসিনা নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করেছেন। এখন যদি তারা নির্বাচনে না আসে, তাহলে আমরা কী করতে পারি?’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচন উপলক্ষে দলে দলে বৈঠক করবো। এখন কি জনসভা ডাক দিয়ে আমরা এগুলো করবো? আলোচনার জন্য একটি পরিবেশ লাগে। এসব আলোচনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা। এটা তো জনসভা ডেকে হবে না, গণমাধ্যম ডেকে হবে না। আলোচনা এভাবেই হয়, অতীতেও হয়েছে। আলোচনা হয়েছে, ১৪ দল হয়েছে, মহাজোট হয়েছে এবং আসন সমঝোতাও হয়েছে। প্রক্রিয়াটা এমনই। আগামী ১৭ তারিখের মধ্যে সব সমাধান হয়ে যাবে। এটাতো আর ঢাকঢোল পিটিয়ে হবে না।’
বিএনপি বলে ‘লোক দেখানো ও সংবিধান রক্ষার নির্বাচন’, উল্লেখ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যারা এদেশের সংবিধান মানে না, আইনের শাসন মানে না, তারা এ ধরনের কথা বলবেই। এ নিয়ে আমাদের মাথা ব্যথা নেই। আন্দোলনের নামে বিএনপির নেতৃত্বে সারা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছিল, উদ্দেশ্য নির্বাচন করতে না দেওয়া। তাদের একদফা না মানলে নির্বাচন করতে দেবে না। চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে। সেখান থেকে আমাদের নেতাকর্মীরা প্রত্যেকে যার যার জায়গা থেকে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাদেরকে যে স্পন্টেনিয়াস ও স্পিরিটে দেখেছি, সেটা আমাদের খুব ভালো লেগেছে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের নেতারা অনেকেই ইলেকশনে প্রতিদ্বন্দিতা করবেন, ব্যস্ত হয়ে যাবেন। তারপরও যারা এই সিটিতে আছেন— শৃঙ্খলা মেনে, আচরণবিধি মেনে দায়িত্ব পালন করবেন। একই সঙ্গে সতর্ক পাহারায় থাকতে হবে।’ ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচনবিরোধী শক্তি বিএনপির নেতৃত্বে যে সন্ত্রাসী কর্মকা- চালাচ্ছে, জনগণকে নিয়ে তাদেরকে প্রতিহত করতে হবে। আমরা সতর্ক থাকবো। কারণ এ নির্বাচনটা আমাদের সংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার নির্বাচন। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে নব নব বিজয় মুকুটিত করতে এই নির্বাচন আমাদের অবশ্যই প্রয়োজন। যথা সময়ে পাঁচ বছর পরে নির্বাচন হচ্ছে এবং এটাই গণতন্ত্রের বিউটি। নির্বাচিত সরকার নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি অবশ্যই চোখে পড়ার মতো হবে। দৃশ্যমানভাবে ভোটার উপস্থিতি দুনিয়ার অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের তুলনায় আমরা বিশ্বাস করি, এবারকার টার্ন-আউট অবশ্যই ভালো হবে। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা আছে এবং অন্যান্য ২৮টি দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। আমরা আশা করি, সারা বাংলাদেশে নির্বাচনের যে সুবাতাস শুরু করেছে, এটা সত্যিই এতটা হবে আমরা ভাবতে পারিনি।’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আজকে হরতাল ডাকে, অবরোধ ডাকে, রাস্তায় যানজট, হাইওয়েতে যানজট। এরকম হরতাল আর অবরোধ তারা ডাকছে। সন্ত্রাসী করতে তো বেশি লোক লাগে না, গুপ্ত হামলা করতেও তো বেশি লোক লাগে না। সে অপকর্ম তারা করে যাচ্ছে। আমার সতর্ক আছি। অনেকেই ভেবেছিল বিরোধী দল হয়তো বড় আয়োজন করে সব বন্ধ করে দিচ্ছে। আমরাই সবচেয়ে বড় সমাবেশ করেছি। সরকারি দল এত বড় সমাবেশ করতে পারবে, এটা কেউ ভাবতেও পারতো না।’