চাঁদপুর সংবাদদাতা : ঈদুল ফিতর উপলক্ষে চাঁদপুরে তৈরি হচ্ছে নি¤œমানের সেমাই। কারখানাগুলোতে মানা হচ্ছে না কোনো নিয়মনীতি। নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দিন-রাত সেমাই তৈরিতে ব্যস্ত শ্রমিকরা। কারখানা মালিক ও শ্রমিকরা বলছেন কারখানা ময়লা হলে তা পরিষ্কার করে রাখছেন। তবে গ্লাভস ছাড়া খালি হাতেই সেমাই তৈরিতে কাজ করছেন তারা। এছাড়া শ্রমিকদের শরীরের ঘাম সেমাইয়ের সঙ্গে মিশে একাকার হয়ে যাচ্ছে। আর সেমাই তৈরির স্থানগুলোও স্যাঁতস্যাঁতে নোংরা ও ময়লা আবর্জনায় ভরা। চিকিৎসক বলছেন, এই ধরনের সেমাই খেলে ক্যান্সারসহ নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বলছে অনিয়ম পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জানা যায়, সারা দেশের মতো চাঁদপুরে ঈদুল ফিতর আসলে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে সেমাই বেচাকেনা ও চাহিদা বেড়ে যায়। এসব সেমাই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে ছড়িয়ে পড়ে। যদিও এসব কারখানার মালিকদের সেমাই তৈরিতে গুণগত মান রক্ষার জন্য বিএসটিআই এর অনুমোদন নেই। অল্প সময়ে অধিক মুনাফার জন্য তারা অনেক বছর ধরে সেমাই তৈরি করে আসছেন। চাঁদপুর শহরের পুরান বাজার বিভিন্ন বেকারি ও অস্থায়ীভাবে গড়ে ওঠা সেমাই কারখানাগুলোতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকরা। যেসব উপাদান দিয়ে সেমাই তৈরি হচ্ছে সেগুলোও কোনোভাবে গুণগত মান যাচাই হচ্ছে না। রমজানের শুরু থেকে এই সেমাই তৈরির কাজ শুরু হলেও এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের অভিযানে নামেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন কারখানায় কর্মরত শ্রমিক আফজাল, আফতাব, জহির শেখসহ কয়েকজন জানান, দিন ও রাতে কষ্ট করে কাজ করি। কাজ করলে কারখানায় ময়লা হবে। তবে আমরা কাজ শেষে ময়লা পরিষ্কার করে রাখি। স্লাবস পরে কাজ করা যায় না। আর মালিকরাও দেন না। কারখানা ময়লা ও অপরিষ্কার থাকবে সেটা আমরাও চাই না। যে কারণে যতটুকু সম্ভব পরিষ্কার করে রাখি। চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক সৈয়দ আহমেদ কাজল বলেন, সেমাই কারখানাগুলোতে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ থাকায় সেমাই খেয়ে নানা শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে। এসব সেমাই খাওয়ার কারণে বিশেষ করে পেটের পীড়াসহ ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। চাঁদপুর ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নূর হোসেন রুবেল বলেন, ঈদ উপলক্ষে চাঁদপুরে কিছু কারখানায় সেমাই তৈরি হচ্ছে। এসব কারখানায় অনিয়ম করলে আমরা অবশ্যই তাদেরকে আইনের আওতায় আনব। চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, আমাদের ভেজাল বিরোধী অভিযান চলছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে জেলা পুলিশ। যদি কোনো কারখানায় ভেজাল খাদ্য তৈরি হয়, আমরা তথ্য পেলে সেখানে অভিযান অব্যাহত রাখব।
জনপ্রিয় সংবাদ