ঢাকা ০২:৪১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৬ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নৈতিক মূল্যবোধ: প্রেক্ষিত বর্তমান সমাজ

  • আপডেট সময় : ০৪:২৮:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৫
  • ৪ বার পড়া হয়েছে

খন্দকার মোকাররম হোসেন : জীবনের পাঠশালা থেকে বুঝতে পেরেছি যে, আদর্শিক দৃষ্টিভঙ্গি সম্পন্ন উন্নত মন-মানসিকতা এবং নৈতিক মূল্যবোধ সমৃদ্ধ আলোকিত জীবনই হচ্ছে সফল জীবন। আশির দশক থেকে মূল্যবোধের অবক্ষয় দারুণভাবে অনুভূত হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে এটি প্রকট আকার ধারণ করেছে। আমি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যয়ন করেছি। ১৯৮৭ সালে আমাদের সমাপনী উৎসবের সেøাগান তথা প্রতিপাদ্য বিষয় ছিলÑ ‘কর্মজীবনের দুর্নীতি রুখব’। অথচ দুর্নীতি না করাটা স্বাভাবিক গুণাবলির মধ্যে পড়ে। এখন মনে হয় জীবনের ৬০ বছর পার করেও নৈতিক মূল্যবোধটাকে যেন আরও বেশি করে খুঁজছি।
বর্তমানে আমরা যেন এক অদ্ভুত সময়ে বাস করছি। আমাদের পরিবেশ খুব দ্রুত বদলে যাচ্ছে। ফেলে আসা অনেক কিছু কিংবা চেনা মানুষগুলো মুহূর্তেইই হয়ে উঠছে অজানা।

ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, মূল্যবোধ সবই কেমন যেন অবক্ষয়ের চোরাবালিতে হারিয়ে যাচ্ছে। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষাঙ্গন; যা কি না হওয়ার কথা ছিল নীতি-নৈতিকতা তৈরির কারখানা তা নিজেই এখন প্রশ্নবিদ্ধ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ থেকে শুরু করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদায়নে কখনো কখনো মেধার চেয়ে তদবির ও তেলবাজি বেশি শক্তিশালী হয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় শিক্ষা-গবেষণা চর্চার চেয়ে রাজনৈতিক চর্চাই বেশি হচ্ছে।
অনেক ক্ষেত্রেই স্কুল-কলেজের শিক্ষক নিয়োগ অর্থ কিংবা তদবির ঠিক করে দিচ্ছে কারা আমাদের শিশুদের অর্থাৎ ভবিষ্যৎ নাগরিকদের ন্যায়-নীতির পাঠ শেখাবেন।

বর্তমান সমাজের দিকে তাকালে দেখা যায় যে, যাদের হওয়ার কথা ছিল সততার ধ্রুবতারা, যারা কি না সবাইকে পথ নির্দেশনা দেবেন তারাই আজ পথভ্রষ্ট।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে রাজনীতির গৌরব উজ্জ্বল ভূমিকা সমগ্র জাতি তথা সমগ্র বিশ্ব প্রত্যক্ষ করেছে। আর বর্তমান রাজনীতি? রাজনীতির নামে চলছে অর্থ সংগ্রহ/আত্মসাতের মহোৎসব।

নীতি-নৈতিকতা বিবর্জিত রাজনীতি সমাজকে ঠেলে দিয়েছে এক অসহনীয় অবস্থায় মধ্যে। আগে মেধাবীরা রাজনীতিতে আসত। এখন ভালো ছাত্ররা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হন অথবা বিসিএস দিয়ে ক্যাডার সার্ভিসে যোগ দেন। বাকিরা করেন রাজনীতি।

কারণ এখন রাজনীতি করে অঢেল অর্থ উপার্জন করা যায়। ক্ষমতালিপ্সু এক ধরনের মানুষ কায়েমি স্বার্থ হাসিলের জন্যই রাজনীতি করে। সমসাময়িক সময়ে রাজনীতির মধ্যেকার নীতি শব্দটি বড়ই উপেক্ষিত, বড়ই অবহেলিত।
নীতি নৈতিকতা বিবর্জিত সমাজে দুর্নীতি মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো একটি জগদ্দল পাথর।

ন্যায্য অধিকারের বঞ্চনা দুর্নীতিগ্রস্ত সমাজের একটি বীভৎস চিত্র। সেই সমাজে যোগ্যদের যেন ঠাঁই নেই। কারণ স্বজনপ্রীতি ও অনৈতিক আর্থিক বিনিময় অর্থাৎ ঘুষের বিনিময়ে সরকারি, বেসরকারি স্বায়ত্তশাসিত যে কোনো সংস্থায় চাকরিতে যদি কখনও অযোগ্যরা নিয়োগ পায় এবং পদোন্নতি পায় কিংবা ভালো পোস্টিং পায় তাহলে সমাজের যোগ্যরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়।

দুর্নীতি মানুষের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি করে, ফলে যোগ্যদের প্রতিভা বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। দুর্নীতিতে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান খুব একটা সম্মানজনক নয়, কথাটি সবারই জানা। বর্তমানে দেশের জনগণ তাকিয়ে আছে একটি শোষণমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত, সুষ্ঠু ও ন্যায়বিচার-সমৃদ্ধ একটি মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন রাষ্ট্র ব্যবস্থার দিকে।

মূল্যবোধ ঘাটতি সম্বলিত বর্তমান সমাজ এক দুর্বিষহ পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে অতিক্রম করছে। হিংসা বিদ্বেষ, অপসংস্কৃতি চর্চা, মাদক প্রবণতা, মস্তানি, ছিনতাই, হত্যা, ধর্ষণ, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, পরকীয়া, আত্মহত্যা, নারী নির্যাতন, ঘুষ-দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতি, ভোগবাদী জীবন প্রভৃতি অনৈতিক/অন্যায় কার্যক্রম তথা সামাজিক অপরাধ বেড়েই চলেছে।

সমাজে বেড়েছে সাইবার ক্রাইম, মোবাইল অশ্লীলতা, ইন্টারনেটের অপব্যবহার। এক সমীক্ষায় দেখা যে, প্রতি ১২ সেকেন্ড অন্তর একটি করে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খোলা হচ্ছে; যা বাংলাদেশের মতো জনবহুল দেশের জন্মহারের চেয়েও বেশি। ফলে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, পরমত সহিষ্ণুতা হ্রাস পাচ্ছে। মানুষ হয়ে যাচ্ছে যান্ত্রিক।

এক শ্রেণির কিশোর/যুবক তাদের হাতে থাকা মোবাইলে বুঁদ হয়ে আছে। এখন চলছে টিকটক জমানা।
টিকটক সেলিব্রেটি হওয়ার লোভে অনেক কিশোরী/তরুণী ধর্ষিত হচ্ছে, বিদেশে পাচার হচ্ছে।

এক শ্রেণির দুর্বৃত্ত এসব কিশোরী/তরুণীদের আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ ব্লাকমেইল করছে। হত্যা, ধর্ষণ, মারামারি, খুনোখুনি, ছিনতাই, রাহাজানি প্রভৃতি অপরাধ সংক্রান্ত সংবাদ প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো পত্রিকায় ছাপা হচ্ছে।
অবস্থাদৃষ্টে প্রতীয়মান হয় যে, পত্রিকায় মূল্যবোধের অবক্ষয়ের খবরের ছড়াছড়ি। নারীর ক্ষমতায়ন, নারী স্বাধীনতা কিংবা লিঙ্গ বৈষম্য নিয়ে বিস্তর আলোচনা এবং কার্যক্রম চলছে।

কিন্তু মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণে নারী নির্যাতন কাক্সিক্ষত মাত্রায় কমছে না। প্রসঙ্গত, মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণে দুর্নীতির ক্রম বিকাশ ঘটছে; যা সংশ্লিষ্ট সবারই জানা আছে। ভূমি-নদী-জলাশয়-বন দখল, সরকারি ক্রয় খাতে দুর্নীতির প্রসার সর্বজনবিদিত।

শেয়ার কেলেঙ্কারি, হলমাকর্স কেলেঙ্কারি, বালিশ/পর্দা কাণ্ডের কথা আজও মানুষ ভোলেনি। সম্প্রতি ৫ আগস্টের আন্দোলনের পর লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার, ব্যাংক লুট ইত্যাদি কাহিনি জনসম্মুখে পরিষ্কারভাবে ধরা পড়েছে।
মূল্যবোধের অবক্ষয়ের জন্য কোনো একটি নির্দিষ্ট কারণ চিহ্নিত করা যায় না।

তথ্যাবিজ্ঞ মহলের মতে প্রতীয়মান হয় যে, ভোগবাদী/বিলাসী জীবনের উগ্র বাসনা, মেকি আভিজাত্য, সামাজিক/পারিবারিক সমস্যা, বেকারত্ব, দারিদ্র, জনসংখ্যার আধিক্য, মাদকাসক্তি, ইন্টারনেটে আসক্তি, অসম বণ্টন ব্যবস্থা, সুশাসনের ঘাটতি প্রভৃতি বিষয় মূল্যবোধের অবক্ষয়ের উল্লেখযোগ্য কারণ। মানুষের সীমাহীন লোভ-লালসা থেকে দুর্নীতির উৎপত্তি।
জবাবদিহিতার ঘাটতি থাকায় দুর্নীতির বিস্তার লাগামহীন হয়ে পড়েছে। দুর্নীতিবাজদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া পরোক্ষভাবে দুর্নীতিকে উৎসাহিত করে।

অতিমাত্রায় ভোগবাদী প্রবণতাও দুর্নীতির অন্যতম একটি কারণ। প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে যারা ক্ষমতাবান তাদের প্রত্যক্ষ/পরোক্ষ ভূমিকায় দুর্নীতির বিস্তার লাভ করে। লাগামগীন এই দুর্নীতি মূল্যবোধের অবক্ষয়েরই ফসল।
আমাদের দেশে সামাজিক অবক্ষয়ে বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ অনেকাংশেই দায়ী।

বিনোদনের নামে কোনো কোনো স্যাটেলাইট চ্যানেলে এমন সব কুরুচিপূর্ণ ও হিংসা-বিদ্বেষে ভরপুর নাটক-সিনেমা দেখানো হয়Ñ যা যুবক শ্রেণিসহ সব বয়সের দর্শকের ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়ে।

মূল্যবোধকে ভেঙে দিচ্ছে পাশ্চাত্য সংস্কৃতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার ও হতাশা। মূল্যবোধের অবক্ষয়ের অন্যতম কারণ ইন্টারনেটের অপব্যবহার ও ইন্টারনেটে আসক্তি।

তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে অপসংস্কৃতি সহজলভ্য হয়ে হাতের মুঠোয় ধরা দিচ্ছে; যা মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটাতে সহায়তা করছে।
আমাদের সমাজে যতগুলো সমস্যা রয়েছে তার মধ্যে মূল্যবোধের অবক্ষয় অন্যতম। আমাদের জাতীয় জীবনে মূল্যবোধের অবক্ষয় ক্রমে প্রকট আকার ধারণ করছে। এ অবক্ষয় রোধ করা এখন সময়ের দাবি।

সময় খুব দ্রুত পাল্টাচ্ছে। ইন্টারনেটের যুগে পাঠ্যাভ্যাস কমে যাচ্ছে। রবীন্দ্রনাথের শেষের কবিতা এখন আর অনেকেই পড়েন না। নজরুলের বিদ্রোহী কবিতায় তরুণ সমাজ আগের মতো উচ্ছ্বসিত হয় না।

সমরেশের কাল বেলা, কালপুরুষ কিংবা উত্তরাধিকার নিয়ে কোনো আড্ডা জমে না।
মোশারফ হোসেনের বিষাদ সিন্ধু কিংবা শরৎ রচনাবলি পড়ে কেউ চোখের পানি ফেলে না। সুনীলের নীরার সন্ধানে কেউ বের হয় না এখন। সুতরাং পাঠ্যাভ্যাস ফিরিয়ে আনতে হবে।

আগের সেই গান, সেই সুর, সেই ছবি আর নেই, নজরুলের সাম্যের গান কেউ শোনে না। মান্নাদের কফি হাউজের সেই আড্ডা আজ আর নেই। সেই সোনালি দিনগুলি কোথায় যেন হারিয়ে গেছে।

তাই সুস্থ বিনোদনকে আবার ফিরিয়ে আনতে হবে এবং সমাজের স্বার্থেই তা করতে হবে। আর এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন পাঠাগার।
আমরা জানি, পাঠাগারের মূল উপাদান হচ্ছে বই।

বই এমন একটি শব্দ যার ভেতরে লুকিয়ে আছে হাজারো জ্ঞানের ভাণ্ডার। হাজারো স্বপ্ন পূরণের কারিগর হচ্ছে এই বই।
মানুষের মননশীল, চিন্তাশীল এবং সৃষ্টিশীল যাবতীয় সূচনার বিস্ফোরণ একমাত্র বইয়ের মাধ্যমেই হতে পারে।

পাঠাগারের গুরুত্ব/প্রয়োজনীয়তা সর্বজনবিদিত। পরিপূর্ণ আলোকিত মানুষ হতে পাঠ্যাভ্যাস একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পাঠ্যাভ্যাস মানুষকে পরিশীলিত করে, পরিমার্জিত করে, সত্য-সুন্দর ও কল্যাণের পথে মানুষকে ধাবিত করে।

সৎ চরিত্র, নীতি-নৈতিকায় আদর্শিক দৃষ্টিভঙ্গি, মানবিক মূল্যবোধ ও ধর্মীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ একজন মানুষই প্রকৃতপক্ষেক্ষ আলোকিত মানুষ। একজন আলোকিত মানুষই পারে সমাজ, রাষ্ট্র তথা দেশকে আলোকিত করতে।
একটি শিশু জন্মের পর প্রথমত তার পরিবার থেকেই মূল্যবোধ অর্জন করতে থাকে।

পরিবার যেহেতু ব্যক্তির সামাজিকীকরণের প্রথম প্রতিষ্ঠান। তাই মূল্যবোধ গড়ে তুলতে মা-বাবার কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। সন্তানকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার প্রয়াস নিতে হবে।

সামাজিক অস্থিরতা ও অবক্ষয় থেকে মুক্তি পেতে পারিবারিক বন্ধন জোরদারের কোনো বিকল্প নেই।
প্রতিটি পরিবার যদি নৈতিকতা বিকাশে সোচ্চার হয়, তাহলে নির্দ্বিধায় আমরা পাব একটি আদর্শ সমাজ।

পরিবারের পর যেটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ তা হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষাব্যবস্থার প্রাথমিক স্তর থেকেই যেন নৈতিকতা ও সামাজিক অনুশাসন মেনে চলার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়, সংশ্লিষ্ট সবাইকে সে দিকে কার্যকর দৃষ্টি প্রদান করতে হবে।
অসম প্রতিযোগিতা নিয়ন্ত্রণ, লোভ-লালসা পরিহার, বেকারত্ব হ্রাস, দেশ প্রেম জাগ্রত করা, দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতির অবসান ঘটানো, চাওয়া- পাওয়ার ব্যবধান কমানো, ধর্মীয় চেতনার ও মানবিক মূল্যবোধ গড়ে তোলা, দুর্নীতি ও অপসংস্কৃতি প্রতিহত করার মাধ্যমে নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ করা সম্ভব।

আর এর মাধ্যমে ৩০ লাখ শহিদের আত্মত্যাগ ও অসংখ্য মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশকে একটি নৈতিক মূল্যবোধ সম্বলিত সুখী-সমৃদ্ধ উন্নত দেশ হিসেবে বিশ্বে দাঁড় করানো সম্ভব মর্মে তথ্যাভিজ্ঞ মহল মনে করেন।

সূত্র: পিআইডি নিবন্ধ

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ডলার সংকট-লোডশেডিং,গাজীপুরে বন্ধ হয়ে গেল ৪০ বছরের পুরোনো কারখানা

নৈতিক মূল্যবোধ: প্রেক্ষিত বর্তমান সমাজ

আপডেট সময় : ০৪:২৮:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৫

খন্দকার মোকাররম হোসেন : জীবনের পাঠশালা থেকে বুঝতে পেরেছি যে, আদর্শিক দৃষ্টিভঙ্গি সম্পন্ন উন্নত মন-মানসিকতা এবং নৈতিক মূল্যবোধ সমৃদ্ধ আলোকিত জীবনই হচ্ছে সফল জীবন। আশির দশক থেকে মূল্যবোধের অবক্ষয় দারুণভাবে অনুভূত হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে এটি প্রকট আকার ধারণ করেছে। আমি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যয়ন করেছি। ১৯৮৭ সালে আমাদের সমাপনী উৎসবের সেøাগান তথা প্রতিপাদ্য বিষয় ছিলÑ ‘কর্মজীবনের দুর্নীতি রুখব’। অথচ দুর্নীতি না করাটা স্বাভাবিক গুণাবলির মধ্যে পড়ে। এখন মনে হয় জীবনের ৬০ বছর পার করেও নৈতিক মূল্যবোধটাকে যেন আরও বেশি করে খুঁজছি।
বর্তমানে আমরা যেন এক অদ্ভুত সময়ে বাস করছি। আমাদের পরিবেশ খুব দ্রুত বদলে যাচ্ছে। ফেলে আসা অনেক কিছু কিংবা চেনা মানুষগুলো মুহূর্তেইই হয়ে উঠছে অজানা।

ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, মূল্যবোধ সবই কেমন যেন অবক্ষয়ের চোরাবালিতে হারিয়ে যাচ্ছে। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষাঙ্গন; যা কি না হওয়ার কথা ছিল নীতি-নৈতিকতা তৈরির কারখানা তা নিজেই এখন প্রশ্নবিদ্ধ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ থেকে শুরু করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদায়নে কখনো কখনো মেধার চেয়ে তদবির ও তেলবাজি বেশি শক্তিশালী হয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় শিক্ষা-গবেষণা চর্চার চেয়ে রাজনৈতিক চর্চাই বেশি হচ্ছে।
অনেক ক্ষেত্রেই স্কুল-কলেজের শিক্ষক নিয়োগ অর্থ কিংবা তদবির ঠিক করে দিচ্ছে কারা আমাদের শিশুদের অর্থাৎ ভবিষ্যৎ নাগরিকদের ন্যায়-নীতির পাঠ শেখাবেন।

বর্তমান সমাজের দিকে তাকালে দেখা যায় যে, যাদের হওয়ার কথা ছিল সততার ধ্রুবতারা, যারা কি না সবাইকে পথ নির্দেশনা দেবেন তারাই আজ পথভ্রষ্ট।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে রাজনীতির গৌরব উজ্জ্বল ভূমিকা সমগ্র জাতি তথা সমগ্র বিশ্ব প্রত্যক্ষ করেছে। আর বর্তমান রাজনীতি? রাজনীতির নামে চলছে অর্থ সংগ্রহ/আত্মসাতের মহোৎসব।

নীতি-নৈতিকতা বিবর্জিত রাজনীতি সমাজকে ঠেলে দিয়েছে এক অসহনীয় অবস্থায় মধ্যে। আগে মেধাবীরা রাজনীতিতে আসত। এখন ভালো ছাত্ররা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হন অথবা বিসিএস দিয়ে ক্যাডার সার্ভিসে যোগ দেন। বাকিরা করেন রাজনীতি।

কারণ এখন রাজনীতি করে অঢেল অর্থ উপার্জন করা যায়। ক্ষমতালিপ্সু এক ধরনের মানুষ কায়েমি স্বার্থ হাসিলের জন্যই রাজনীতি করে। সমসাময়িক সময়ে রাজনীতির মধ্যেকার নীতি শব্দটি বড়ই উপেক্ষিত, বড়ই অবহেলিত।
নীতি নৈতিকতা বিবর্জিত সমাজে দুর্নীতি মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো একটি জগদ্দল পাথর।

ন্যায্য অধিকারের বঞ্চনা দুর্নীতিগ্রস্ত সমাজের একটি বীভৎস চিত্র। সেই সমাজে যোগ্যদের যেন ঠাঁই নেই। কারণ স্বজনপ্রীতি ও অনৈতিক আর্থিক বিনিময় অর্থাৎ ঘুষের বিনিময়ে সরকারি, বেসরকারি স্বায়ত্তশাসিত যে কোনো সংস্থায় চাকরিতে যদি কখনও অযোগ্যরা নিয়োগ পায় এবং পদোন্নতি পায় কিংবা ভালো পোস্টিং পায় তাহলে সমাজের যোগ্যরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়।

দুর্নীতি মানুষের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি করে, ফলে যোগ্যদের প্রতিভা বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। দুর্নীতিতে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান খুব একটা সম্মানজনক নয়, কথাটি সবারই জানা। বর্তমানে দেশের জনগণ তাকিয়ে আছে একটি শোষণমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত, সুষ্ঠু ও ন্যায়বিচার-সমৃদ্ধ একটি মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন রাষ্ট্র ব্যবস্থার দিকে।

মূল্যবোধ ঘাটতি সম্বলিত বর্তমান সমাজ এক দুর্বিষহ পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে অতিক্রম করছে। হিংসা বিদ্বেষ, অপসংস্কৃতি চর্চা, মাদক প্রবণতা, মস্তানি, ছিনতাই, হত্যা, ধর্ষণ, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, পরকীয়া, আত্মহত্যা, নারী নির্যাতন, ঘুষ-দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতি, ভোগবাদী জীবন প্রভৃতি অনৈতিক/অন্যায় কার্যক্রম তথা সামাজিক অপরাধ বেড়েই চলেছে।

সমাজে বেড়েছে সাইবার ক্রাইম, মোবাইল অশ্লীলতা, ইন্টারনেটের অপব্যবহার। এক সমীক্ষায় দেখা যে, প্রতি ১২ সেকেন্ড অন্তর একটি করে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খোলা হচ্ছে; যা বাংলাদেশের মতো জনবহুল দেশের জন্মহারের চেয়েও বেশি। ফলে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, পরমত সহিষ্ণুতা হ্রাস পাচ্ছে। মানুষ হয়ে যাচ্ছে যান্ত্রিক।

এক শ্রেণির কিশোর/যুবক তাদের হাতে থাকা মোবাইলে বুঁদ হয়ে আছে। এখন চলছে টিকটক জমানা।
টিকটক সেলিব্রেটি হওয়ার লোভে অনেক কিশোরী/তরুণী ধর্ষিত হচ্ছে, বিদেশে পাচার হচ্ছে।

এক শ্রেণির দুর্বৃত্ত এসব কিশোরী/তরুণীদের আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ ব্লাকমেইল করছে। হত্যা, ধর্ষণ, মারামারি, খুনোখুনি, ছিনতাই, রাহাজানি প্রভৃতি অপরাধ সংক্রান্ত সংবাদ প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো পত্রিকায় ছাপা হচ্ছে।
অবস্থাদৃষ্টে প্রতীয়মান হয় যে, পত্রিকায় মূল্যবোধের অবক্ষয়ের খবরের ছড়াছড়ি। নারীর ক্ষমতায়ন, নারী স্বাধীনতা কিংবা লিঙ্গ বৈষম্য নিয়ে বিস্তর আলোচনা এবং কার্যক্রম চলছে।

কিন্তু মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণে নারী নির্যাতন কাক্সিক্ষত মাত্রায় কমছে না। প্রসঙ্গত, মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণে দুর্নীতির ক্রম বিকাশ ঘটছে; যা সংশ্লিষ্ট সবারই জানা আছে। ভূমি-নদী-জলাশয়-বন দখল, সরকারি ক্রয় খাতে দুর্নীতির প্রসার সর্বজনবিদিত।

শেয়ার কেলেঙ্কারি, হলমাকর্স কেলেঙ্কারি, বালিশ/পর্দা কাণ্ডের কথা আজও মানুষ ভোলেনি। সম্প্রতি ৫ আগস্টের আন্দোলনের পর লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার, ব্যাংক লুট ইত্যাদি কাহিনি জনসম্মুখে পরিষ্কারভাবে ধরা পড়েছে।
মূল্যবোধের অবক্ষয়ের জন্য কোনো একটি নির্দিষ্ট কারণ চিহ্নিত করা যায় না।

তথ্যাবিজ্ঞ মহলের মতে প্রতীয়মান হয় যে, ভোগবাদী/বিলাসী জীবনের উগ্র বাসনা, মেকি আভিজাত্য, সামাজিক/পারিবারিক সমস্যা, বেকারত্ব, দারিদ্র, জনসংখ্যার আধিক্য, মাদকাসক্তি, ইন্টারনেটে আসক্তি, অসম বণ্টন ব্যবস্থা, সুশাসনের ঘাটতি প্রভৃতি বিষয় মূল্যবোধের অবক্ষয়ের উল্লেখযোগ্য কারণ। মানুষের সীমাহীন লোভ-লালসা থেকে দুর্নীতির উৎপত্তি।
জবাবদিহিতার ঘাটতি থাকায় দুর্নীতির বিস্তার লাগামহীন হয়ে পড়েছে। দুর্নীতিবাজদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া পরোক্ষভাবে দুর্নীতিকে উৎসাহিত করে।

অতিমাত্রায় ভোগবাদী প্রবণতাও দুর্নীতির অন্যতম একটি কারণ। প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে যারা ক্ষমতাবান তাদের প্রত্যক্ষ/পরোক্ষ ভূমিকায় দুর্নীতির বিস্তার লাভ করে। লাগামগীন এই দুর্নীতি মূল্যবোধের অবক্ষয়েরই ফসল।
আমাদের দেশে সামাজিক অবক্ষয়ে বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ অনেকাংশেই দায়ী।

বিনোদনের নামে কোনো কোনো স্যাটেলাইট চ্যানেলে এমন সব কুরুচিপূর্ণ ও হিংসা-বিদ্বেষে ভরপুর নাটক-সিনেমা দেখানো হয়Ñ যা যুবক শ্রেণিসহ সব বয়সের দর্শকের ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়ে।

মূল্যবোধকে ভেঙে দিচ্ছে পাশ্চাত্য সংস্কৃতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার ও হতাশা। মূল্যবোধের অবক্ষয়ের অন্যতম কারণ ইন্টারনেটের অপব্যবহার ও ইন্টারনেটে আসক্তি।

তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে অপসংস্কৃতি সহজলভ্য হয়ে হাতের মুঠোয় ধরা দিচ্ছে; যা মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটাতে সহায়তা করছে।
আমাদের সমাজে যতগুলো সমস্যা রয়েছে তার মধ্যে মূল্যবোধের অবক্ষয় অন্যতম। আমাদের জাতীয় জীবনে মূল্যবোধের অবক্ষয় ক্রমে প্রকট আকার ধারণ করছে। এ অবক্ষয় রোধ করা এখন সময়ের দাবি।

সময় খুব দ্রুত পাল্টাচ্ছে। ইন্টারনেটের যুগে পাঠ্যাভ্যাস কমে যাচ্ছে। রবীন্দ্রনাথের শেষের কবিতা এখন আর অনেকেই পড়েন না। নজরুলের বিদ্রোহী কবিতায় তরুণ সমাজ আগের মতো উচ্ছ্বসিত হয় না।

সমরেশের কাল বেলা, কালপুরুষ কিংবা উত্তরাধিকার নিয়ে কোনো আড্ডা জমে না।
মোশারফ হোসেনের বিষাদ সিন্ধু কিংবা শরৎ রচনাবলি পড়ে কেউ চোখের পানি ফেলে না। সুনীলের নীরার সন্ধানে কেউ বের হয় না এখন। সুতরাং পাঠ্যাভ্যাস ফিরিয়ে আনতে হবে।

আগের সেই গান, সেই সুর, সেই ছবি আর নেই, নজরুলের সাম্যের গান কেউ শোনে না। মান্নাদের কফি হাউজের সেই আড্ডা আজ আর নেই। সেই সোনালি দিনগুলি কোথায় যেন হারিয়ে গেছে।

তাই সুস্থ বিনোদনকে আবার ফিরিয়ে আনতে হবে এবং সমাজের স্বার্থেই তা করতে হবে। আর এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন পাঠাগার।
আমরা জানি, পাঠাগারের মূল উপাদান হচ্ছে বই।

বই এমন একটি শব্দ যার ভেতরে লুকিয়ে আছে হাজারো জ্ঞানের ভাণ্ডার। হাজারো স্বপ্ন পূরণের কারিগর হচ্ছে এই বই।
মানুষের মননশীল, চিন্তাশীল এবং সৃষ্টিশীল যাবতীয় সূচনার বিস্ফোরণ একমাত্র বইয়ের মাধ্যমেই হতে পারে।

পাঠাগারের গুরুত্ব/প্রয়োজনীয়তা সর্বজনবিদিত। পরিপূর্ণ আলোকিত মানুষ হতে পাঠ্যাভ্যাস একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পাঠ্যাভ্যাস মানুষকে পরিশীলিত করে, পরিমার্জিত করে, সত্য-সুন্দর ও কল্যাণের পথে মানুষকে ধাবিত করে।

সৎ চরিত্র, নীতি-নৈতিকায় আদর্শিক দৃষ্টিভঙ্গি, মানবিক মূল্যবোধ ও ধর্মীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ একজন মানুষই প্রকৃতপক্ষেক্ষ আলোকিত মানুষ। একজন আলোকিত মানুষই পারে সমাজ, রাষ্ট্র তথা দেশকে আলোকিত করতে।
একটি শিশু জন্মের পর প্রথমত তার পরিবার থেকেই মূল্যবোধ অর্জন করতে থাকে।

পরিবার যেহেতু ব্যক্তির সামাজিকীকরণের প্রথম প্রতিষ্ঠান। তাই মূল্যবোধ গড়ে তুলতে মা-বাবার কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। সন্তানকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার প্রয়াস নিতে হবে।

সামাজিক অস্থিরতা ও অবক্ষয় থেকে মুক্তি পেতে পারিবারিক বন্ধন জোরদারের কোনো বিকল্প নেই।
প্রতিটি পরিবার যদি নৈতিকতা বিকাশে সোচ্চার হয়, তাহলে নির্দ্বিধায় আমরা পাব একটি আদর্শ সমাজ।

পরিবারের পর যেটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ তা হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষাব্যবস্থার প্রাথমিক স্তর থেকেই যেন নৈতিকতা ও সামাজিক অনুশাসন মেনে চলার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়, সংশ্লিষ্ট সবাইকে সে দিকে কার্যকর দৃষ্টি প্রদান করতে হবে।
অসম প্রতিযোগিতা নিয়ন্ত্রণ, লোভ-লালসা পরিহার, বেকারত্ব হ্রাস, দেশ প্রেম জাগ্রত করা, দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতির অবসান ঘটানো, চাওয়া- পাওয়ার ব্যবধান কমানো, ধর্মীয় চেতনার ও মানবিক মূল্যবোধ গড়ে তোলা, দুর্নীতি ও অপসংস্কৃতি প্রতিহত করার মাধ্যমে নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ করা সম্ভব।

আর এর মাধ্যমে ৩০ লাখ শহিদের আত্মত্যাগ ও অসংখ্য মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশকে একটি নৈতিক মূল্যবোধ সম্বলিত সুখী-সমৃদ্ধ উন্নত দেশ হিসেবে বিশ্বে দাঁড় করানো সম্ভব মর্মে তথ্যাভিজ্ঞ মহল মনে করেন।

সূত্র: পিআইডি নিবন্ধ