ঢাকা ০৪:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫
রাজপথে সেনাবাহিনী, বলছে জেন-জিরা আন্দোলন ‘বেহাত’

নেপালে ১৭ বছরে ১৪তম সরকারের পতন

  • আপডেট সময় : ০৯:৩৪:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৪৪ বার পড়া হয়েছে

২০০৮ সাল থেকে রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয়েছে নেপালে। যার শেষটা দেখা গেল গত ৮ সেপ্টেম্বর থেকে -ছবি ইন্টারনেট

প্রত্যাশা ডেস্ক: শিক্ষার্থী জনতার ভয়াবহ বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি। তার পদত্যাগের মধ্যে দিয়ে দেশটিতে গত ১৭ বছরে ১৪ তমবার সরকারের পতন ঘটল।
বস্তুত, ২০০৮ সাল থেকে রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয়েছে নেপালে। ওই বছর থেকে এ পর্যন্ত ১৭ বছরে যে ১৪টি সরকার ক্ষমতায় এসেছে- কোনোটিই ৫ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেনি।
১৯৫১ সালের আগ পর্যন্ত নেপালে সম্পূর্ণ রাজতন্ত্র প্রচলিত ছিল। নেপারের তৎকালীন রাজাদের বলা হতো রানা। তার সহায়ক হিসেবে অবশ্য প্রধানমন্ত্রীও থাকতেন, তবে কে প্রধানমন্ত্রী হবে, তা উত্তরাধিকারের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হতো।
তারপর ১৯৫১ সালে এক গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনে পতন ঘটে রানাদের। ক্ষমতায় আসেন রাজা মহেন্দ্র বীর বিক্রম শাহ দেব এবং নেপাল পার্লামেন্টারি রাজনীতিতে প্রবেশ করে।
কিন্তু ১৯৬১ সালে নেপালে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিষেধাজ্ঞা দেন রাজা মহেন্দ্র। তার এ পদক্ষেপের উদ্দেশ্য ছিল ক্ষমতাকে এককভাবে রাজতন্ত্রের হাতে কুক্ষিগত করা। তবে পার্লামেন্ট ব্যবস্থা চালু ছিল এবং নির্বাচনের ভিত্তিতেই সেখানে এমপিরা আসন পেতেন। তবে তারা নিজেদের কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি হিসেবে পরিচয় দিতে পারতেন না। প্রায় ৩ দশক এই অবস্থা চলার পর ১৯৯০ সালে জনগণ বিক্ষোভ শুরু করে এবং তা শান্ত করতে তৎকালীন রাজা বীরেন্দ্র বীর বিক্রম শাহ দেব রাজনৈতিক দলগুলোর পর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন। সেই বিক্ষোভের মাধ্যমে বহুদলীয় গণতন্ত্রে প্রবেশ করে নেপাল। ১৯৯৬ সালে নেপালের মাওবাদী কমিউনিস্ট পার্টি রাজতন্ত্র ও রাজতন্ত্রের সবচেয়ে বড় সমর্থক রাজকীয় পার্লামেন্ট ব্যবস্থা বিলোপের দাবিতে আন্দোলন-সংগ্রাম শুরু করে এবং দশকব্যাপী সেই আন্দোলন-সংগ্রামে নিহত হয়েছেন ১৭ হাজারেরও বেশি মানুষ।
গত মার্চ মাসে নেপালে রাজতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল কাঠমান্ডুতে। পরিস্থিতি সামলাতে সেনা মোতায়েন করতে হয়। সেই বিক্ষোভের ছ’মাস কাটতে না-কাটতেই পতন ঘটল কে পি শর্মা অলির নেতৃত্বাধীন সরকারের।
২০০৬ সালে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করেন নেপালের মাওবাদীরা। রাজতন্ত্র বিলোপ হয়, নেপাল একটি গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র হিসেবে স্বীকৃতি পায়। ২০১৫ সালে নতুন সংবিধান গ্রহণ করে দেশটি।

কিন্তু রাজতন্ত্রের বিলোপ হওয়ার পর থেকে নতুন সংকটের আবর্তে প্রবেশ করে নেপাল। কারণ ২০০৮ সাল থেকে যতগুলো সরকার ক্ষমতায় এসেছে, সেগুলোর কোনোটিই সর্বোচ্চ আড়াই বছরের বেশি টিকতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন হয়েছে মাত্র এক বছরের মাথায়। সূত্র: এনডিটিভি

আন্দোলন ‘বেহাত’ বলছে জেন-জিরা: টানা দুদিনের সহিংসতায় নেপালে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাস্তায় টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত রাজধানী কাঠমান্ডুতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছে। এছাড়া, দেশজুড়ে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত কারফিউ জারি থাকবে বলে জানিয়েছে সেনা কর্তৃপক্ষ। এদিকে, নেপালের আন্দোলনে সুযোগসন্ধানীদের অনুপ্রবেশের অভিযোগ করেছেন বিক্ষোভে নেতৃত্বদানকারীরা। চলমান সহিংসতা ও লুটপাটের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সম্পৃক্ততা নেই বলেও দাবি করেছেন তারা।
স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বিবিসি নেপাল জানিয়েছে, বিশৃঙ্খলার সুযোগে কাঠমান্ডুর আশপাশের কারাগার থেকে হাজারো বন্দি পালিয়ে গেছে। দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় বাংকেতে একটি কিশোর সংশোধনাগার থেকে পালাতে গিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে পাঁচজন মারা যায়। পুরো আন্দোলনে নিহতের মোট সংখ্যা ২০ জন ছাড়িয়েছে। বুধবার কাঠমান্ডুর রাস্তাঘাট শান্ত দেখা গেলেও পুড়ে যাওয়া কিছু ভবন থেকে ধোঁয়া উড়ছিল। সড়কে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল পোড়া যানবাহন। সহিংসতা ও ভাঙচুরের চিত্র এখন ক্ষোভের প্রতীক হয়ে উঠেছে। সহিংসতা ও ভাঙচুরে জড়িতদের শাস্তির হুঁশিয়ারি দিয়েছে সেনাবাহিনী। এ পর্যন্ত সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২৭ জনকে গ্রেফতার এবং ৩১টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
দেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার আমন্ত্রণ জানিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। শিক্ষার্থী নেতারা নতুন দাবির খসড়া তালিকা তৈরি করছেন বলে জানিয়েছেন তাদের এক প্রতিনিধি। তবে অনেক বিক্ষোভকারী মনে করছেন, আন্দোলন অনুপ্রবেশকারীদের হাতে চলে যাচ্ছে। বিক্ষোভকারীদের এক বিবৃতিতে বলা হয়, নেপালে তরুণদের নেতৃত্বে বিক্ষোভের লক্ষ্য ছিল জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা ও দুর্নীতির অবসান নিশ্চিত করা। আন্দোলন হয়েছিল শান্তিপূর্ণ নাগরিক অংশগ্রহণের নীতির ওপর ভিত্তি করে এবং সেভাবেই থাকবে। প্রায় একই অভিযোগ তুলে সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বিভিন্ন ব্যক্তি ও অরাজক গোষ্ঠী আন্দোলনে অনুপ্রবেশ করে সরকারি-বেসরকারি সম্পদ ধ্বংস করছে। যারা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ এবং বিভিন্ন ধ্বংসাত্মক কাজ করছে, আমাদের মূল কাজ এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে আনা। তথ্যসূত্র: বিবিসি

খোঁজ নেই নেপালের প্রধানমন্ত্রীর: ব্যাপক বিক্ষোভ ও সহিংসতার পর ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। বর্তমানে দেশটির নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়েছে সেনাবাহিনী। তবে ক্ষমতা ছাড়ার পর ওলি কোথায় গেছেন সে সম্পর্কে কোনো তথ্য এখনো প্রকাশ হয়নি। তিনি দেশে আছেন নাকি বিদেশে গেছেন তাও স্পষ্ট নয়।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সংবাদমাধম এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিক্ষোভকারীরা চারবারের প্রধানমন্ত্রী ও কমিউনিস্ট পার্টির নেতা ৭৩ বছর বয়সী কেপি শর্মা ওলির বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে। পরে ওলি পদত্যাগ করেন, যাতে রাজনৈতিক সমাধানের পথ সুগম হয়। তবে তার বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।

 

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

রাজপথে সেনাবাহিনী, বলছে জেন-জিরা আন্দোলন ‘বেহাত’

নেপালে ১৭ বছরে ১৪তম সরকারের পতন

আপডেট সময় : ০৯:৩৪:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: শিক্ষার্থী জনতার ভয়াবহ বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি। তার পদত্যাগের মধ্যে দিয়ে দেশটিতে গত ১৭ বছরে ১৪ তমবার সরকারের পতন ঘটল।
বস্তুত, ২০০৮ সাল থেকে রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয়েছে নেপালে। ওই বছর থেকে এ পর্যন্ত ১৭ বছরে যে ১৪টি সরকার ক্ষমতায় এসেছে- কোনোটিই ৫ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেনি।
১৯৫১ সালের আগ পর্যন্ত নেপালে সম্পূর্ণ রাজতন্ত্র প্রচলিত ছিল। নেপারের তৎকালীন রাজাদের বলা হতো রানা। তার সহায়ক হিসেবে অবশ্য প্রধানমন্ত্রীও থাকতেন, তবে কে প্রধানমন্ত্রী হবে, তা উত্তরাধিকারের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হতো।
তারপর ১৯৫১ সালে এক গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনে পতন ঘটে রানাদের। ক্ষমতায় আসেন রাজা মহেন্দ্র বীর বিক্রম শাহ দেব এবং নেপাল পার্লামেন্টারি রাজনীতিতে প্রবেশ করে।
কিন্তু ১৯৬১ সালে নেপালে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিষেধাজ্ঞা দেন রাজা মহেন্দ্র। তার এ পদক্ষেপের উদ্দেশ্য ছিল ক্ষমতাকে এককভাবে রাজতন্ত্রের হাতে কুক্ষিগত করা। তবে পার্লামেন্ট ব্যবস্থা চালু ছিল এবং নির্বাচনের ভিত্তিতেই সেখানে এমপিরা আসন পেতেন। তবে তারা নিজেদের কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি হিসেবে পরিচয় দিতে পারতেন না। প্রায় ৩ দশক এই অবস্থা চলার পর ১৯৯০ সালে জনগণ বিক্ষোভ শুরু করে এবং তা শান্ত করতে তৎকালীন রাজা বীরেন্দ্র বীর বিক্রম শাহ দেব রাজনৈতিক দলগুলোর পর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন। সেই বিক্ষোভের মাধ্যমে বহুদলীয় গণতন্ত্রে প্রবেশ করে নেপাল। ১৯৯৬ সালে নেপালের মাওবাদী কমিউনিস্ট পার্টি রাজতন্ত্র ও রাজতন্ত্রের সবচেয়ে বড় সমর্থক রাজকীয় পার্লামেন্ট ব্যবস্থা বিলোপের দাবিতে আন্দোলন-সংগ্রাম শুরু করে এবং দশকব্যাপী সেই আন্দোলন-সংগ্রামে নিহত হয়েছেন ১৭ হাজারেরও বেশি মানুষ।
গত মার্চ মাসে নেপালে রাজতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল কাঠমান্ডুতে। পরিস্থিতি সামলাতে সেনা মোতায়েন করতে হয়। সেই বিক্ষোভের ছ’মাস কাটতে না-কাটতেই পতন ঘটল কে পি শর্মা অলির নেতৃত্বাধীন সরকারের।
২০০৬ সালে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করেন নেপালের মাওবাদীরা। রাজতন্ত্র বিলোপ হয়, নেপাল একটি গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র হিসেবে স্বীকৃতি পায়। ২০১৫ সালে নতুন সংবিধান গ্রহণ করে দেশটি।

কিন্তু রাজতন্ত্রের বিলোপ হওয়ার পর থেকে নতুন সংকটের আবর্তে প্রবেশ করে নেপাল। কারণ ২০০৮ সাল থেকে যতগুলো সরকার ক্ষমতায় এসেছে, সেগুলোর কোনোটিই সর্বোচ্চ আড়াই বছরের বেশি টিকতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন হয়েছে মাত্র এক বছরের মাথায়। সূত্র: এনডিটিভি

আন্দোলন ‘বেহাত’ বলছে জেন-জিরা: টানা দুদিনের সহিংসতায় নেপালে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাস্তায় টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত রাজধানী কাঠমান্ডুতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছে। এছাড়া, দেশজুড়ে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত কারফিউ জারি থাকবে বলে জানিয়েছে সেনা কর্তৃপক্ষ। এদিকে, নেপালের আন্দোলনে সুযোগসন্ধানীদের অনুপ্রবেশের অভিযোগ করেছেন বিক্ষোভে নেতৃত্বদানকারীরা। চলমান সহিংসতা ও লুটপাটের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সম্পৃক্ততা নেই বলেও দাবি করেছেন তারা।
স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বিবিসি নেপাল জানিয়েছে, বিশৃঙ্খলার সুযোগে কাঠমান্ডুর আশপাশের কারাগার থেকে হাজারো বন্দি পালিয়ে গেছে। দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় বাংকেতে একটি কিশোর সংশোধনাগার থেকে পালাতে গিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে পাঁচজন মারা যায়। পুরো আন্দোলনে নিহতের মোট সংখ্যা ২০ জন ছাড়িয়েছে। বুধবার কাঠমান্ডুর রাস্তাঘাট শান্ত দেখা গেলেও পুড়ে যাওয়া কিছু ভবন থেকে ধোঁয়া উড়ছিল। সড়কে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল পোড়া যানবাহন। সহিংসতা ও ভাঙচুরের চিত্র এখন ক্ষোভের প্রতীক হয়ে উঠেছে। সহিংসতা ও ভাঙচুরে জড়িতদের শাস্তির হুঁশিয়ারি দিয়েছে সেনাবাহিনী। এ পর্যন্ত সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২৭ জনকে গ্রেফতার এবং ৩১টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
দেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার আমন্ত্রণ জানিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। শিক্ষার্থী নেতারা নতুন দাবির খসড়া তালিকা তৈরি করছেন বলে জানিয়েছেন তাদের এক প্রতিনিধি। তবে অনেক বিক্ষোভকারী মনে করছেন, আন্দোলন অনুপ্রবেশকারীদের হাতে চলে যাচ্ছে। বিক্ষোভকারীদের এক বিবৃতিতে বলা হয়, নেপালে তরুণদের নেতৃত্বে বিক্ষোভের লক্ষ্য ছিল জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা ও দুর্নীতির অবসান নিশ্চিত করা। আন্দোলন হয়েছিল শান্তিপূর্ণ নাগরিক অংশগ্রহণের নীতির ওপর ভিত্তি করে এবং সেভাবেই থাকবে। প্রায় একই অভিযোগ তুলে সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বিভিন্ন ব্যক্তি ও অরাজক গোষ্ঠী আন্দোলনে অনুপ্রবেশ করে সরকারি-বেসরকারি সম্পদ ধ্বংস করছে। যারা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ এবং বিভিন্ন ধ্বংসাত্মক কাজ করছে, আমাদের মূল কাজ এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে আনা। তথ্যসূত্র: বিবিসি

খোঁজ নেই নেপালের প্রধানমন্ত্রীর: ব্যাপক বিক্ষোভ ও সহিংসতার পর ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। বর্তমানে দেশটির নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়েছে সেনাবাহিনী। তবে ক্ষমতা ছাড়ার পর ওলি কোথায় গেছেন সে সম্পর্কে কোনো তথ্য এখনো প্রকাশ হয়নি। তিনি দেশে আছেন নাকি বিদেশে গেছেন তাও স্পষ্ট নয়।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সংবাদমাধম এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিক্ষোভকারীরা চারবারের প্রধানমন্ত্রী ও কমিউনিস্ট পার্টির নেতা ৭৩ বছর বয়সী কেপি শর্মা ওলির বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে। পরে ওলি পদত্যাগ করেন, যাতে রাজনৈতিক সমাধানের পথ সুগম হয়। তবে তার বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।