ঢাকা ০৯:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নেপালে বিক্ষোভে ভয়াবহ সহিংসতা, নিহত বেড়ে ১৬

  • আপডেট সময় : ০৫:২৩:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৩৯ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

প্রত্যশা ডেস্ক: ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের সিদ্ধান্ত এবং সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ভয়াবহ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে নেপালে।

সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালের দিকে দেশটির হাজার হাজার ছাত্র-জনতার এই বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে ১৬ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও শত শত বিক্ষোভকারী।

সম্প্রতি নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি নেতৃত্বাধীন সরকার ফেসবুক, ইউটিউব এবং এক্সসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এর প্রতিবাদে রাজধানী কাঠমান্ডুতে শুরু হওয়া বিক্ষোভ এখন হিমালয় কন্যা খ্যাত দেশটির অন্যান্য এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজধানী কাঠমান্ডুর বিভিন্ন জেলায় কারফিউ জারি ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।

বিক্ষোভ দমনে দেশটির পুলিশ বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস এবং জলকামান নিক্ষেপ করেছে। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া তরুণ এক বিক্ষোভকারী অন্যদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ভেতর থেকে কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী জনতার আন্দোলনে উসকানি দিচ্ছে। তিনি বলেন, ‌‌‘‘আজ আমরা ইতোমধ্যে জয়ী হয়েছি।’’

ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেপালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং দুর্নীতি দমনের দাবিতে আন্দোলনরত বিক্ষোভকারীদের ওপর চড়াও হয়েছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে নিরাপত্তাবাহিনীর ছোড়া টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট ও জলকামানে বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন।

দেশটির সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্ট বলেছে, সোমবার সকাল থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভে রাজধানীর বানেশ্বরে ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। জেন জি প্রজন্মের এই বিক্ষোভে স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা পর্যন্ত পুলিশের গুলিতে অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছেন।

নেপালের ন্যাশনাল ট্রমা সেন্টারের চিকিৎসক ডা. দীপেন্দ্র পাণ্ডে বলেছেন, হাসপাতালটিতে সাতজন বিক্ষোভকারীকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। তিনি বলেন, হাসপাতালে আসা আরও ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের প্রত্যেকের মাথা ও বুকে গুলির আঘাত রয়েছে। সেখানে আরও ২০ জনেরও বেশি চিকিৎসাধীন আছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

এছাড়া বানেশ্বরের এভারেস্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অন্তত পাঁচজন মারা গেছেন বলে সেখানকার কর্মকর্তা অনিল অধিকারী নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বর্তমানে অন্তত ৫০ জন বিক্ষোভকারী আহত অবস্থায় এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর।

কাঠমান্ডুর সিভিল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত দুই বিক্ষোভকারী মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালটির নির্বাহী পরিচালক মোহন চন্দ্র রেগমি। এছাড়া কেএমসি হাসপাতাল এবং ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় টিচিং হাসপাতালে একজন করে বিক্ষোভকারী মারা গেছেন। নিহতদের পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

সূত্র: কাঠমান্ডু পোস্ট, এএফপি।

ওআ/আপ্র/০৮/০৯/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

নেপালে বিক্ষোভে ভয়াবহ সহিংসতা, নিহত বেড়ে ১৬

আপডেট সময় : ০৫:২৩:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

প্রত্যশা ডেস্ক: ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের সিদ্ধান্ত এবং সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ভয়াবহ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে নেপালে।

সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালের দিকে দেশটির হাজার হাজার ছাত্র-জনতার এই বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে ১৬ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও শত শত বিক্ষোভকারী।

সম্প্রতি নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি নেতৃত্বাধীন সরকার ফেসবুক, ইউটিউব এবং এক্সসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এর প্রতিবাদে রাজধানী কাঠমান্ডুতে শুরু হওয়া বিক্ষোভ এখন হিমালয় কন্যা খ্যাত দেশটির অন্যান্য এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজধানী কাঠমান্ডুর বিভিন্ন জেলায় কারফিউ জারি ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।

বিক্ষোভ দমনে দেশটির পুলিশ বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস এবং জলকামান নিক্ষেপ করেছে। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া তরুণ এক বিক্ষোভকারী অন্যদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ভেতর থেকে কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী জনতার আন্দোলনে উসকানি দিচ্ছে। তিনি বলেন, ‌‌‘‘আজ আমরা ইতোমধ্যে জয়ী হয়েছি।’’

ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেপালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং দুর্নীতি দমনের দাবিতে আন্দোলনরত বিক্ষোভকারীদের ওপর চড়াও হয়েছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে নিরাপত্তাবাহিনীর ছোড়া টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট ও জলকামানে বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন।

দেশটির সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্ট বলেছে, সোমবার সকাল থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভে রাজধানীর বানেশ্বরে ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। জেন জি প্রজন্মের এই বিক্ষোভে স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা পর্যন্ত পুলিশের গুলিতে অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছেন।

নেপালের ন্যাশনাল ট্রমা সেন্টারের চিকিৎসক ডা. দীপেন্দ্র পাণ্ডে বলেছেন, হাসপাতালটিতে সাতজন বিক্ষোভকারীকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। তিনি বলেন, হাসপাতালে আসা আরও ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের প্রত্যেকের মাথা ও বুকে গুলির আঘাত রয়েছে। সেখানে আরও ২০ জনেরও বেশি চিকিৎসাধীন আছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

এছাড়া বানেশ্বরের এভারেস্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অন্তত পাঁচজন মারা গেছেন বলে সেখানকার কর্মকর্তা অনিল অধিকারী নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বর্তমানে অন্তত ৫০ জন বিক্ষোভকারী আহত অবস্থায় এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর।

কাঠমান্ডুর সিভিল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত দুই বিক্ষোভকারী মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালটির নির্বাহী পরিচালক মোহন চন্দ্র রেগমি। এছাড়া কেএমসি হাসপাতাল এবং ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় টিচিং হাসপাতালে একজন করে বিক্ষোভকারী মারা গেছেন। নিহতদের পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

সূত্র: কাঠমান্ডু পোস্ট, এএফপি।

ওআ/আপ্র/০৮/০৯/২০২৫