আন্তর্জাতিক ডেস্ক: নেপালে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পাওদেল। আগামী বছর মার্চের ৫ তারিখ বৃহস্পতিবার দেশটিতে জাতীয় নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করা হয়। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
তার কার্যালয় থেকে শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে জানানো হয়, হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভস (পার্লামেন্ট) অবলুপ্ত করার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছেন প্রেসিডেন্ট পাওদেল। এছাড়া, নির্বাচনের জন্য তিনি আগামী মার্চের ৫ তারিখ বৃহস্পতিবারকে নির্ধারিত করেছেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান হিসেবে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কির নিয়োগ চূড়ান্তের কিছুক্ষণ পরই ওই ঘোষণা দেওয়া হয়। দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির প্রতিবাদে চলমান আন্দোলন থেকে শুরু হওয়া সহিংসতায় প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি পদত্যাগ করলে নেতৃত্বে শূন্যতা দেখা দেয়। অন্তর্বর্তী নেতা নিয়োগের আগে পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া প্রশ্নে সংশ্লিষ্ট পক্ষদের মধ্যে মতপার্থক্যও দেখা দেয়।
অবশেষে নেপালের প্রথম নারী হিসেবে সরকারপ্রধান হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন সুশীলা কার্কি। শুক্রবার শপথ গ্রহণের পরই কার্কির পরামর্শে পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন প্রেসিডেন্ট।
ভুয়া খবর ছড়ানোর কারণে ওলি সরকারের সিদ্ধান্তে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলে দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলন সহসা সহিংস হয়ে ওঠে। আন্দোলন থেকে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৫১ জন নিহত এবং এক হাজার ৩০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। অবশেষে চাপের মুখে পদত্যাগে বাধ্য হন কে পি শর্মা ওলি।
দেশটিতে গত কয়েকদিনের সহিংসতার পর শুক্রবার থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। দোকানপাট খুলতে শুরু করেছে এবং সড়কে যানবাহন চলাচল বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এদিকে, নেপালের সংশ্লিষ্ট পক্ষদের ঐকমত্যের ভিত্তিতে সরকার প্রধান নিয়োগ এবং নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর দেশটিতে স্থিতিশীলতা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার আশাবাদ ব্যক্ত করেছে প্রতিবেশি রাষ্ট্র ভারত।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লিখেছেন, নেপালের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য মাননীয় সুশীলা কার্কিকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন। নেপালের ভাই ও বোনদের শান্তি, সমৃদ্ধি এবং উন্নতির জন্য ভারত সবসময় অঙ্গীকারবদ্ধ থাকবে।
২০০৮ সালে নেপালের দীর্ঘদিনের রাজতন্ত্রভিত্তিক শাসনব্যবস্থা বিলুপ্ত করে পশ্চিমা ধাচের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দেশটিতে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে। কর্মসংস্থানের অভাবে লাখ লাখ তরুণ-তরুণী মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ কোরিয়া এবং মালয়েশিয়াতে ভাগ্যের অন্বেষণে পাড়ি জমায়।
এসি/আপ্র/১৩/০৯/২০২৫