ঢাকা ০৫:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫

নেইমারের অস্ত্রোপচার সফল, কবে নাগাদ মাঠে ফিরবেন?

  • আপডেট সময় : ০৫:২০:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ২২ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

ক্রীড় ডেস্ক:  সান্তোসে মৌসুমের শেষ কয়েক সপ্তাহ হাঁটুর সমস্যায় ভুগলেও দলকে অবনমন থেকে বাঁচাতে মাঠে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন নেইমার জুনিয়র। শেষ ম্যাচে অবনমন ঠেকানোর পাশাপাশি সান্তোস জায়গা করে নিয়েছে কোপা সুদামেরিকানায়। মৌসুম শেষ করে নেইমার এবার অস্ত্রোপচারের টেবিলে গেছেন। সান্তোস এরই মধ্যে তার বর্তমান অবস্থা নিয়ে আপডেট জানিয়েছে এবং কবে নাগাদ তিনি ফের মাঠে ফিরছেন সেই সম্পর্কেও ধারণা দিয়েছে।

সৌদি ক্লাব আল হিলালে যোগ দেয়ার পরপরই জাতীয় দলের হয়ে খেলতে গিয়ে এন্টেরিয়র ক্রুশিয়েট লিগামেন্টের (এসিএল) চোটে পড়েছিলেন নেইমার। সেই চোট কাটিয়ে ফেরার কিছুদিন পরেই আল হিলালের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে গত জানুয়ারিতে স্বদেশে ফিরে গেছেন এই ৩৩ বছর বয়সী। শৈশবের ক্লাব সান্তোসে ফেরার পরও চোট নেইমারের পিছু ছাড়েনি। আবারও হাঁটুর সমস্যায় পড়ে অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে তাকে।

ব্রাজিল তারকার আর্থ্রোস্কোপি করা হয়েছে, যা খুব দীর্ঘ সময়ের জন্য তাকে মাঠের বাইরে রাখবে না বলে আশা করা হচ্ছে। ফলে তার বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন এখনও বেঁচে আছে। ব্রাজিলিয়ান সিরি আ’র মৌসুমের শেষ দিকে ব্যথা নিয়েই খেলেছিলেন নেইমার এবং সান্তোসকে অবনমন এড়াতে সাহায্য করেছেন।

দল অবনমন এড়ানোর পর নেইমার বলেছিলেন, ‘এ কারণেই এসেছিলাম—যতটা সম্ভব সাহায্য করতে। গত কয়েক সপ্তাহ আমার জন্য খুব কঠিন ছিল। যারা আমাকে মানসিকভাবে শক্ত রাখার চেষ্টা করেছে, তাদের ধন্যবাদ। তারা না থাকলে এই চোট আর হাঁটুর সমস্যার কারণে আমি এসব ম্যাচ খেলতেই পারতাম না। এখন আমাকে বিশ্রাম নিতে হবে, তারপর হাঁটুর এই অস্ত্রোপচার করাতে হবে।’

সান্তোস নিশ্চিত করেছে যে নেইমারের অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। এক বিবৃতিতে ক্লাবটি জানিয়েছে, ‘আমাদের খেলোয়াড় নেইমার দা সিলভা সান্তোস জুনিয়র সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে (স্থানীয় সময়) মাতার দেই নোভা লিমায় ডা. রদ্রিগো লাসমার ও তার টিমের তত্ত্বাবধানে অস্ত্রোপচার করিয়েছেন। মিডিয়াল মেনিস্কাসের একটি ক্ষত সারাতে আর্থ্রোস্কোপি করা হয়েছে। অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে এবং খেলোয়াড় ভালো আছেন। আজ দুপুরের মধ্যেই নেইমার জুনিয়রকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হবে এবং তিনি তার পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু করবেন, যা তার ফিজিওথেরাপিস্ট রাফায়েল মার্টিনি সমন্বয় করবেন।’

ইএসপিএনের তথ্য অনুযায়ী, নেইমারকে প্রায় এক মাস মাঠের বাইরে থাকতে হতে পারে। ফলে জানুয়ারির শেষ বা ফেব্রুয়ারির শুরুতে তার ফেরার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সময়সূচি অনুযায়ী, ২২ জানুয়ারি ক্যাম্পেওনাতো পাউলিস্তায় করিন্থিয়ান্সের বিপক্ষে ডার্বি ম্যাচ দিয়ে তার ফেরার সম্ভাবনা প্রবল। এর আগে সান্তোসের সামনে রয়েছে নোভোরিজোন্তিনো, পালমেইরাস ও গুয়ারানির বিপক্ষে ম্যাচ।

সান্তোসের সঙ্গে নেইমারের চুক্তির মেয়াদ এ মাসের শেষেই শেষ হওয়ার কথা, তবে আশা করা হচ্ছে তিনি ২০২৬ বিশ্বকাপ পর্যন্ত মেয়াদ বাড়াবেন। সান্তোস সভাপতি মার্সেলো টেইশেইরা ইএসপিএনকে বলেছেন, নেইমার থাকবেন বলেই তার বিশ্বাস।

তিনি বলেন, ‘নেইমারের প্রকল্পটি আসলে আগামী বছরের বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করেই। কথাবার্তা সবসময়ই এমন ছিল। তিনি চাইলে যেকোনো জায়গায় যেতে পারতেন, কিন্তু নিজের ঘর সান্তোসে ফিরতে চেয়েছেন। হয়তো আমরা ভেবেছিলাম বছরের প্রথমার্ধে তাকে আরও বেশি কাজে লাগাতে পারব, কিন্তু তা পারিনি—এটা কারও দোষ নয়। মৌসুমের শেষটা সে ভালোভাবেই করেছে, সে ছিল নির্ণায়ক। মাঠের বাইরে ও মাঠের ভেতরে—দুই জায়গাতেই নেইমারের অবদান গুরুত্বপূর্ণ। আলোচনা চলছে। আমরা আর্থিক দিকগুলো পর্যালোচনা করছি এবং চুক্তি বাড়ানোর বিষয়টি এগিয়ে নিচ্ছি। আমি ইতিবাচক যে আমরা একটি সমঝোতায় পৌঁছাব এবং সে থেকে যাবে।’

নেইমার এখন দ্রুত পূর্ণ সুস্থ হয়ে ফুটবলে ফিরতে চান। তিনি খোলাখুলিই স্বীকার করেছেন, ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা তার স্বপ্ন। তবে ব্রাজিল কোচ কার্লো আনচেলত্তিকে বোঝাতে এখনও তাকে কাজ করতে হবে যে তিনি দলে জায়গা পাওয়ার যোগ্য।

এই মাসের শুরুতে আনচেলত্তি সাংবাদিকদের বলেন, ‘নেইমার নিয়ে কথা বললে আমাদের অন্য খেলোয়াড়দের কথাও ভাবতে হবে। আমাদের ব্রাজিল দল নিয়ে ভাবতে হবে—নেইমার থাকুক বা না থাকুক, অন্য খেলোয়াড় থাকুক বা না থাকুক। চূড়ান্ত তালিকা আমরা মার্চের ফিফা উইন্ডোর পর করব। আমি খুব ভালোভাবেই বুঝি, সবাই নেইমার নিয়ে আগ্রহী। পরিষ্কার করে বলি, এখন ডিসেম্বর, বিশ্বকাপ জুনে। মে মাসে আমি বিশ্বকাপে যাওয়া দল বাছাই করব। যদি নেইমার যোগ্য হয়, ফিট থাকে, অন্য কারও চেয়ে ভালো হয়—তাহলে সে বিশ্বকাপে খেলবে, ব্যস। কারও কাছে আমার কোনো ঋণ নেই।’

ওআ/আপ্র/২৩/১২/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

নেইমারের অস্ত্রোপচার সফল, কবে নাগাদ মাঠে ফিরবেন?

আপডেট সময় : ০৫:২০:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫

ক্রীড় ডেস্ক:  সান্তোসে মৌসুমের শেষ কয়েক সপ্তাহ হাঁটুর সমস্যায় ভুগলেও দলকে অবনমন থেকে বাঁচাতে মাঠে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন নেইমার জুনিয়র। শেষ ম্যাচে অবনমন ঠেকানোর পাশাপাশি সান্তোস জায়গা করে নিয়েছে কোপা সুদামেরিকানায়। মৌসুম শেষ করে নেইমার এবার অস্ত্রোপচারের টেবিলে গেছেন। সান্তোস এরই মধ্যে তার বর্তমান অবস্থা নিয়ে আপডেট জানিয়েছে এবং কবে নাগাদ তিনি ফের মাঠে ফিরছেন সেই সম্পর্কেও ধারণা দিয়েছে।

সৌদি ক্লাব আল হিলালে যোগ দেয়ার পরপরই জাতীয় দলের হয়ে খেলতে গিয়ে এন্টেরিয়র ক্রুশিয়েট লিগামেন্টের (এসিএল) চোটে পড়েছিলেন নেইমার। সেই চোট কাটিয়ে ফেরার কিছুদিন পরেই আল হিলালের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে গত জানুয়ারিতে স্বদেশে ফিরে গেছেন এই ৩৩ বছর বয়সী। শৈশবের ক্লাব সান্তোসে ফেরার পরও চোট নেইমারের পিছু ছাড়েনি। আবারও হাঁটুর সমস্যায় পড়ে অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে তাকে।

ব্রাজিল তারকার আর্থ্রোস্কোপি করা হয়েছে, যা খুব দীর্ঘ সময়ের জন্য তাকে মাঠের বাইরে রাখবে না বলে আশা করা হচ্ছে। ফলে তার বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন এখনও বেঁচে আছে। ব্রাজিলিয়ান সিরি আ’র মৌসুমের শেষ দিকে ব্যথা নিয়েই খেলেছিলেন নেইমার এবং সান্তোসকে অবনমন এড়াতে সাহায্য করেছেন।

দল অবনমন এড়ানোর পর নেইমার বলেছিলেন, ‘এ কারণেই এসেছিলাম—যতটা সম্ভব সাহায্য করতে। গত কয়েক সপ্তাহ আমার জন্য খুব কঠিন ছিল। যারা আমাকে মানসিকভাবে শক্ত রাখার চেষ্টা করেছে, তাদের ধন্যবাদ। তারা না থাকলে এই চোট আর হাঁটুর সমস্যার কারণে আমি এসব ম্যাচ খেলতেই পারতাম না। এখন আমাকে বিশ্রাম নিতে হবে, তারপর হাঁটুর এই অস্ত্রোপচার করাতে হবে।’

সান্তোস নিশ্চিত করেছে যে নেইমারের অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। এক বিবৃতিতে ক্লাবটি জানিয়েছে, ‘আমাদের খেলোয়াড় নেইমার দা সিলভা সান্তোস জুনিয়র সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে (স্থানীয় সময়) মাতার দেই নোভা লিমায় ডা. রদ্রিগো লাসমার ও তার টিমের তত্ত্বাবধানে অস্ত্রোপচার করিয়েছেন। মিডিয়াল মেনিস্কাসের একটি ক্ষত সারাতে আর্থ্রোস্কোপি করা হয়েছে। অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে এবং খেলোয়াড় ভালো আছেন। আজ দুপুরের মধ্যেই নেইমার জুনিয়রকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হবে এবং তিনি তার পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু করবেন, যা তার ফিজিওথেরাপিস্ট রাফায়েল মার্টিনি সমন্বয় করবেন।’

ইএসপিএনের তথ্য অনুযায়ী, নেইমারকে প্রায় এক মাস মাঠের বাইরে থাকতে হতে পারে। ফলে জানুয়ারির শেষ বা ফেব্রুয়ারির শুরুতে তার ফেরার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সময়সূচি অনুযায়ী, ২২ জানুয়ারি ক্যাম্পেওনাতো পাউলিস্তায় করিন্থিয়ান্সের বিপক্ষে ডার্বি ম্যাচ দিয়ে তার ফেরার সম্ভাবনা প্রবল। এর আগে সান্তোসের সামনে রয়েছে নোভোরিজোন্তিনো, পালমেইরাস ও গুয়ারানির বিপক্ষে ম্যাচ।

সান্তোসের সঙ্গে নেইমারের চুক্তির মেয়াদ এ মাসের শেষেই শেষ হওয়ার কথা, তবে আশা করা হচ্ছে তিনি ২০২৬ বিশ্বকাপ পর্যন্ত মেয়াদ বাড়াবেন। সান্তোস সভাপতি মার্সেলো টেইশেইরা ইএসপিএনকে বলেছেন, নেইমার থাকবেন বলেই তার বিশ্বাস।

তিনি বলেন, ‘নেইমারের প্রকল্পটি আসলে আগামী বছরের বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করেই। কথাবার্তা সবসময়ই এমন ছিল। তিনি চাইলে যেকোনো জায়গায় যেতে পারতেন, কিন্তু নিজের ঘর সান্তোসে ফিরতে চেয়েছেন। হয়তো আমরা ভেবেছিলাম বছরের প্রথমার্ধে তাকে আরও বেশি কাজে লাগাতে পারব, কিন্তু তা পারিনি—এটা কারও দোষ নয়। মৌসুমের শেষটা সে ভালোভাবেই করেছে, সে ছিল নির্ণায়ক। মাঠের বাইরে ও মাঠের ভেতরে—দুই জায়গাতেই নেইমারের অবদান গুরুত্বপূর্ণ। আলোচনা চলছে। আমরা আর্থিক দিকগুলো পর্যালোচনা করছি এবং চুক্তি বাড়ানোর বিষয়টি এগিয়ে নিচ্ছি। আমি ইতিবাচক যে আমরা একটি সমঝোতায় পৌঁছাব এবং সে থেকে যাবে।’

নেইমার এখন দ্রুত পূর্ণ সুস্থ হয়ে ফুটবলে ফিরতে চান। তিনি খোলাখুলিই স্বীকার করেছেন, ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা তার স্বপ্ন। তবে ব্রাজিল কোচ কার্লো আনচেলত্তিকে বোঝাতে এখনও তাকে কাজ করতে হবে যে তিনি দলে জায়গা পাওয়ার যোগ্য।

এই মাসের শুরুতে আনচেলত্তি সাংবাদিকদের বলেন, ‘নেইমার নিয়ে কথা বললে আমাদের অন্য খেলোয়াড়দের কথাও ভাবতে হবে। আমাদের ব্রাজিল দল নিয়ে ভাবতে হবে—নেইমার থাকুক বা না থাকুক, অন্য খেলোয়াড় থাকুক বা না থাকুক। চূড়ান্ত তালিকা আমরা মার্চের ফিফা উইন্ডোর পর করব। আমি খুব ভালোভাবেই বুঝি, সবাই নেইমার নিয়ে আগ্রহী। পরিষ্কার করে বলি, এখন ডিসেম্বর, বিশ্বকাপ জুনে। মে মাসে আমি বিশ্বকাপে যাওয়া দল বাছাই করব। যদি নেইমার যোগ্য হয়, ফিট থাকে, অন্য কারও চেয়ে ভালো হয়—তাহলে সে বিশ্বকাপে খেলবে, ব্যস। কারও কাছে আমার কোনো ঋণ নেই।’

ওআ/আপ্র/২৩/১২/২০২৫