ঢাকা ০৬:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

নিহতদের ক্ষতি পূরণে ১০ লাখ টাকা করে দেবে সীমা অক্সিজেন

  • আপডেট সময় : ১০:৪৭:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ মার্চ ২০২৩
  • ৮২ বার পড়া হয়েছে

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : সীতাকু-ের সীমা অক্সিজেন লিমিটেডে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হয়েছে মালিকপক্ষ। জেলা প্রশাসনের সাথে বৃহস্পতিবার এক বৈঠক শেষে নিহত ও আহতদের ক্ষতিপূরণ বাড়াতে রাজি হয়েছে তারা। এদিকে ওই ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে আরও দুদিন সময় চেয়েছে কমিটি। এর আগে বুধবার রাতে সীমা অক্সিজেন লিমিটেড এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নিহতদের পরিবার প্রতি ‘শ্রম আইন অনুসারে’ দুই লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলেছিল। ওই টাকা তারা মঙ্গলবারই শ্রম আদালতে জমা করে দিয়েছিল। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বৈঠক হয়। সেখানে সীমা অক্সিজেন লিমিটেডকে ক্ষতিপূরণ বাড়াতে চাপ দেওয়া হয়।
সীতাকু-ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহাদাৎ হোসেন গতকাল শুক্রবার সকালে বলেন, “তারা নিহতদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে শ্রম আদালতে দুই লাখ টাকা করে জমা দিয়েছিল। কিন্তু ডিসি স্যার বলেছেন, নিহতদের পরিবারকে বিএম ডিপোর মত ১০ লাখ টাকা করে দিতে হবে। “পরে তারা সম্মত হয়েছে। নিহতদের জন্য বাকি ৮ লাখ টাকা করে চেক আমাদের দিয়ে গেছে। গতকালই নিহতদের চারজনের পরিবারকে সেই চেক হস্তান্তর করা হয়েছে।” এছাড়া বিস্ফোরণে আহতদের মধ্যে যে দু’জন পা ও চোখ হারিয়েছেন, তাদের ৫ লাখ টাকা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় সভায়। আহত অন্যরা চিকিৎসার জন্য দুই লাখ টাকা করে পাবেন।
ইউএনও মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, “আহতরা কর্মস্থলে ফেরা পর্যন্ত সবরকম বেতন-ভাতা পাবেন। সুস্থ হওয়ার পর তারা চাইলে কাজে ফিরতে পারবেন। তাদের চাকরির নিশ্চয়তা দিয়েছে সীমা অক্সিজেন লিমিটেড। “এছাড়া নিহতদের পরিবারের কেউ চাকরি করতে চাইলে তাদেরও চাকরি দেওয়া হবে।”
গত ৪ মার্চ সীতাকু-ের সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণে ৭ জনের মৃত্যু হয়, আহত হন আরও ২৫ জন। বিস্ফোরণে ৫০০ গজ দূরে উড়ে যাওয়া লোহার পাতের আঘাতেও একজনের মৃত্যু হয়। বিস্ফোরণের পর সোমবার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের এক সভায় জানা যায়, সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টটি পরিচালিত হচ্ছিল দুজন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার এবং মানবিক থেকে পাস করা একজন সুপারভাইজার দিয়ে। মালিকপক্ষ সব কমপ্লায়েন্স পালনের দাবি করলেও সরকারি সংস্থাগুলো জানায়, তিন মাস আগেই পরিদর্শনে সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিভিন্ন অনিয়ম ধরা পড়েছিল। কারখানাটির পরিবেশ ছাড়পত্র ছিল না। এমনকি ফায়ার সেফটি প্ল্যান ও বয়লার ব্যবহারের সনদও ছিল না। ওই ঘটনায় শনিবারই ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে ওই কমিটিকে ৫ কর্মদিবস সময় দেওয়া হয়েছিল। কমিটির সদস্য সীতাকু-ের ইউএনও মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, “কমিটি তদন্ত কাজ মোটামুটি গুছিয়ে এনেছে। কিছু টেকনিক্যাল বিষয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য কমিটিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্লায়েড ক্যামিস্ট্রির একজন শিক্ষককে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। “আরও দুই কর্মদিবস সময় দেওয়া হয়েছে। আশা করি এর মধ্যেই তদন্ত শেষ হবে।” বিস্ফোরণের পর থেকে সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে বলেও জানান তিনি।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

নিহতদের ক্ষতি পূরণে ১০ লাখ টাকা করে দেবে সীমা অক্সিজেন

আপডেট সময় : ১০:৪৭:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ মার্চ ২০২৩

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : সীতাকু-ের সীমা অক্সিজেন লিমিটেডে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হয়েছে মালিকপক্ষ। জেলা প্রশাসনের সাথে বৃহস্পতিবার এক বৈঠক শেষে নিহত ও আহতদের ক্ষতিপূরণ বাড়াতে রাজি হয়েছে তারা। এদিকে ওই ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে আরও দুদিন সময় চেয়েছে কমিটি। এর আগে বুধবার রাতে সীমা অক্সিজেন লিমিটেড এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নিহতদের পরিবার প্রতি ‘শ্রম আইন অনুসারে’ দুই লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলেছিল। ওই টাকা তারা মঙ্গলবারই শ্রম আদালতে জমা করে দিয়েছিল। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বৈঠক হয়। সেখানে সীমা অক্সিজেন লিমিটেডকে ক্ষতিপূরণ বাড়াতে চাপ দেওয়া হয়।
সীতাকু-ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহাদাৎ হোসেন গতকাল শুক্রবার সকালে বলেন, “তারা নিহতদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে শ্রম আদালতে দুই লাখ টাকা করে জমা দিয়েছিল। কিন্তু ডিসি স্যার বলেছেন, নিহতদের পরিবারকে বিএম ডিপোর মত ১০ লাখ টাকা করে দিতে হবে। “পরে তারা সম্মত হয়েছে। নিহতদের জন্য বাকি ৮ লাখ টাকা করে চেক আমাদের দিয়ে গেছে। গতকালই নিহতদের চারজনের পরিবারকে সেই চেক হস্তান্তর করা হয়েছে।” এছাড়া বিস্ফোরণে আহতদের মধ্যে যে দু’জন পা ও চোখ হারিয়েছেন, তাদের ৫ লাখ টাকা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় সভায়। আহত অন্যরা চিকিৎসার জন্য দুই লাখ টাকা করে পাবেন।
ইউএনও মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, “আহতরা কর্মস্থলে ফেরা পর্যন্ত সবরকম বেতন-ভাতা পাবেন। সুস্থ হওয়ার পর তারা চাইলে কাজে ফিরতে পারবেন। তাদের চাকরির নিশ্চয়তা দিয়েছে সীমা অক্সিজেন লিমিটেড। “এছাড়া নিহতদের পরিবারের কেউ চাকরি করতে চাইলে তাদেরও চাকরি দেওয়া হবে।”
গত ৪ মার্চ সীতাকু-ের সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণে ৭ জনের মৃত্যু হয়, আহত হন আরও ২৫ জন। বিস্ফোরণে ৫০০ গজ দূরে উড়ে যাওয়া লোহার পাতের আঘাতেও একজনের মৃত্যু হয়। বিস্ফোরণের পর সোমবার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের এক সভায় জানা যায়, সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টটি পরিচালিত হচ্ছিল দুজন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার এবং মানবিক থেকে পাস করা একজন সুপারভাইজার দিয়ে। মালিকপক্ষ সব কমপ্লায়েন্স পালনের দাবি করলেও সরকারি সংস্থাগুলো জানায়, তিন মাস আগেই পরিদর্শনে সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিভিন্ন অনিয়ম ধরা পড়েছিল। কারখানাটির পরিবেশ ছাড়পত্র ছিল না। এমনকি ফায়ার সেফটি প্ল্যান ও বয়লার ব্যবহারের সনদও ছিল না। ওই ঘটনায় শনিবারই ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে ওই কমিটিকে ৫ কর্মদিবস সময় দেওয়া হয়েছিল। কমিটির সদস্য সীতাকু-ের ইউএনও মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, “কমিটি তদন্ত কাজ মোটামুটি গুছিয়ে এনেছে। কিছু টেকনিক্যাল বিষয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য কমিটিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্লায়েড ক্যামিস্ট্রির একজন শিক্ষককে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। “আরও দুই কর্মদিবস সময় দেওয়া হয়েছে। আশা করি এর মধ্যেই তদন্ত শেষ হবে।” বিস্ফোরণের পর থেকে সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে বলেও জানান তিনি।