নিজস্ব প্রতিবেদক : নির্বাচন যাতে না হয়, সে চক্রান্ত এখনো আছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি সবাইকে ভোট দিয়ে দেশে গণতন্ত্র আছে, তা প্রমাণ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) বিকেলে নারায়ণগঞ্জে নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা এ আহ্বান জানান। নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে এ কে এম শামসুজ্জোহা ক্রীড়া কমপ্লেক্স মাঠে জনসভাটি অনুষ্ঠিত হয়। জনসভায় শেখ হাসিনা বলেন, ৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘কেউ দাবায় রাখতে পারবা না’। তো বাংলাদেশকে কেউ দাবায় রাখতে পারবে না। নির্বাচন ঘিরে অনেক চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র হয়েছিল। নির্বাচন যাতে না হয়, সেই চক্রান্ত এখনো আছে। যেহেতু নিজেরা নির্বাচন করে জিততে পারবে না, কাজেই দেশের মানুষকে বঞ্চিত করতে চায় ভোটের অধিকার থেকে। তিনি বলেন, মিলিটারি ডিক্টেটররা যখন একে একে ক্ষমতায় এসেছে, জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। এখন আবার তারা একই কাজ করতে চায়। আমরা বলেছি নির্বাচন হবে। আজ ৪ তারিখ। ৭ তারিখের নির্বাচনে আমি আপনাদের অনুরোধ করব সবাই শান্তিপূর্ণ থাকবেন। আমি দেশের সবার কাছে অনুরোধ করব, সবাই শান্তিপূর্ণভাবে থাকবেন। তিনি আরও বলেন, আমরা আওয়ামী লীগই জনগণকে নিয়ে জনগণের অধিকার জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছি। এই টের অধিকার সাংবিধানিক অধিকার, সে অধিকার আমরা সংরক্ষিত করেছি। সবাই ভোটকেন্দ্রে যাবেন, ভোট দিয়ে প্রমাণ করবেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র বিদ্যমান। ২০০৯ থেকে ২০২৩ গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে। আজ আমরা ২০২৪ সালে পা দিয়েছি। গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলে বাংলাদেশের এত উন্নতি হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, এখন মানুষ সেবা পাচ্ছে, বাংলাদেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আর বিএনপি সেখানে কী করে, আপনারা দেখেছেন। ২৮ অক্টোবর তারা কী ভয়ংকরভাবে পুলিশের ওপর আক্রমণ করেছে। পুলিশকে ফেলে পিটিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে, পুলিশ হাসপাতালে ঢুকে অ্যাম্বুলেন্স জ্বালিয়ে দিয়েছে, রোগী নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স যাচ্ছে, সে অ্যাম্বুলেন্সে আক্রমণ করেছে এবং সেখানে অনেক পুলিশ সদস্যকে আহত করেছে। ঠিক ২০১৩ সালে যেভাবে হত্যা করেছিল, ঠিক একইভাবে আবারো করেছে। তিনি বলেন, ঠিক প্যালেস্টাইনে (ফিলিস্তিন) ইসরায়েল যেভাবে হামলা করছে, হাসপাতালের ওপর বম্বিং (বোমাবর্ষণ) করছে, ঠিক বিএনপিও সেই ইসরায়েলকে অনুসরণ করে আজ পুলিশ হাসপাতালে আক্রমণ, অ্যাম্বুলেন্সে আক্রমণ করছে। ওদের মনুষ্যত্ব বলে কিছু নেই। আজকে নির্বাচনে তারা আসেনি, সেটি তাদের ইচ্ছা। কিন্তু মানুষের ভোটের অধিকারে বাধা দেওয়া কখনোই দেশের জনগণ মেনে নেবে না। এ অধিকার মানুষের অধিকার। সুতরাং ৭ জানুয়ারির নির্বাচন ইনশাআল্লাহ হবে। এ সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে দলকে বিজয়ী করার জন্য সবাইকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমাদের মার্কা নৌকা মার্কা, এ নৌকায় ভোট দিয়ে দেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে, এ নৌকা আজ উন্নয়ন দিয়েছে, এই নৌকা-ই আগামী উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। তাই নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাদের প্রার্থীদের আপনারা জয়যুক্ত করবেন। আপনাদের কাছে সে আহ্বান জানাই।
দেশি-বিদেশি শত্রুতার মুখে বাংলাদেশ: ওবায়দুল কাদের
আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের দিন দলে দলে সবাইকে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশ প্রচ- শত্রুতার মুখে। দেশে শত্রু, বিদেশেও শত্রু। এ শত্রুদের হাত থেকে গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের একেএম শামসুজ্জোহা স্টেডিয়ামে আওয়ামী লীগের জনসভায় বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। জনসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওবায়দুল কাদের বলেন, খেলা শুরু হয়ে গেছে। চরম উত্তেজনা, ৭ তারিখে ফাইনাল। বিএনপি পালিয়েছে। খেলার মধ্যে বেশি ফাউল করে লাল কার্ড খেয়ে বিএনপি বিদায় নিয়েছে। ফাইনালে বিএনপি নেই। তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনে ভোট দিয়ে আপনাদের প্রমাণ করতে হবে। বাংলার মাটিতে স্বাধীনতাবিরোধী, দুর্নীতিবাজ, জঙ্গিবাদী, লুটেরা বিএনপির কোনো স্থান নেই। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে হাওয়া ভবন আমরা আর চাই না। তারেক রহমানের মত খুনি-দুর্নীতিবাজকে আমরা আর দেখতে চাই না। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, খেলা হবে লুটপাটের বিরুদ্ধে। খেলা হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে। ৭ তারিখে ফাইনাল খেলা। বিএনপির আন্দোলন ভুয়া, হরতাল-অবরোধ ভুয়া। এক দফা বত্রিশ দল সবই ভুয়া। ভুয়ার সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ নেই। তিনি আরও বলেন, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল, রূপপুর, মাতারবাড়ি। নারায়ণগঞ্জ এখন আলোকিত নারায়ণগঞ্জ। শেখ হাসিনা ১৫ বছরে নারায়ণগঞ্জকে বদলে দিয়েছেন। শীতলক্ষ্যার পাড়ে আজ জনজীবনে শান্তির সুবাতাস বইছে।