ঢাকা ০১:৩১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫
সিলেটে মির্জা ফখরুল

নির্বাচন যত দেরি হবে, দেশ তত পিছিয়ে যাবে

  • আপডেট সময় : ০৭:৫০:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ জুলাই ২০২৫
  • ১২ বার পড়া হয়েছে

সোমবার সিলেটের একটি কমিউনিটি সেন্টারে বক্তব্য রাখেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর -ছবি সংগৃহীত

সিলেট সংবাদদাতা: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আশা প্রকাশ করেছেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতেই অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনের আয়োজন করবে। তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই আশাবাদী যে এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশ-জাতি গণতন্ত্রে ফিরে যাবে। জনগণের যে গণতন্ত্রের অধিকার, সেটা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটাকে আমরা বলি রাইট ট্র্যাক, দেশ সেখানে উঠবে বলে মনে করি।’

সোমবার (৭ জুলাই) সকাল ১০টায় সিলেটের হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজার জিয়ারত শেষে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। এরপর বিএনপির মহাসচিব হজরত শাহপরান (রহ.)-এর মাজারও জিয়ারত করেন। মাজার জিয়ারত শেষে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেলা ১১টার দিকে সিলেট নগরের পাঠানটুলা এলাকার সানরাইজ কমিউনিটি সেন্টারে জেলা ও মহানগর বিএনপি আয়োজিত দোয়া ও আলোচনা সভায় যোগ দেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘নির্বাচিত সরকারের চাইতে শক্তিশালী কোনো সরকার হতে পারে না। সে জন্য দরকার একটি নির্বাচিত সরকার। দীর্ঘ ১৫ বছর ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে আমরা লড়াই-সংগ্রাম করেছি। প্রায় ৬০ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে। আমাদের কয়েক হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের প্রায় ১ হাজার ৭০০-এর ওপরে মানুষকে গুম করা হয়েছে। সিলেটের অত্যন্ত সাহসী নেতা ইলিয়াস আলীও গুম হয়েছেন। তারপর জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘চব্বিশের আগে ১৫ বছর আমাদের সিলেটের বহু নেতাকর্মী ও ভাই গণতন্ত্রের জন্য রাস্তায় রক্ত দিয়েছেন। মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে, হাতে-পায়ে বেড়ি দিয়ে বন্দি করে রাখা হয়েছে। চব্বিশে আমার ভাই, আমার ছেলেকে গুলি করে হত্যা করেছে হাসিনা। আমাদের ভোটের অধিকারের জন্য, গণতন্ত্রের অধিকারের জন্য যারা জীবন দিয়েছেন তাদের শ্রদ্ধা জানাতে সিলেট এসেছি।‘

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘এমনি এমনি হঠাৎ করে হাসিনা পালায়নি, বহুদিনের সংগ্রাম, বহু মানুষের ত্যাগ, বহু মানুষের রক্তের বিনিময়ে আমরা ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়েছি। ফ্যাসিবাদমুক্ত হলাম ঠিক আছে, কিন্তু আমরা বলছি লড়াই তো গণতন্ত্রের লড়াই, আমরা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই। যেখানে মানুষ ভোট দেবে, কথা বলার সুযোগ পাবে, তরুণরা কাজের ও লেখাপড়ার সুযোগ পাবে, নারীরা নিরাপত্তা পাবে, চিকিৎসার সুযোগ পাবে, এরকম একটি রাষ্ট্র। এজন্য আমরা নতুন করে সংগ্রাম শুরু করেছি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সেই দল যে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। যিনি দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। শেখ মুজিব একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সব মিডিয়া বন্ধ করেছিলেন চারটি রেখে। সে অবস্থা থেকে জিয়াউর রহমান মানুষের গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়ে নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ করেছিলেন।’

বিএনপির মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইতিমধ্যে লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের যে বৈঠক হয়েছে, সে বৈঠকে তো ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের একটা মোটামুটি আলোচনা হয়েছে।’

এর আগে সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে ঢাকা থেকে সিলেটগামী একটি ফ্লাইটে মির্জা ফখরুল সিলেট এম এ জি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান। তাঁর সফরসঙ্গীদের মধ্যে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ইকবাল মাহমুদ টুকু, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরী প্রমুখ।

সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মির্জা ফখরুলকে স্বাগত জানান বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির, এনামুল হক চৌধুরী, আরিফুল হক চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউছ, সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী প্রমুখ।

সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, বেলা দুইটায় দলের মহাসচিব নগরের একটি হোটেলে জুলাই-আগস্টে সিলেট জেলায় শহীদ বীর সন্তানদের পরিারের সদস্যদের সম্মাননা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সিলেটে মির্জা ফখরুল

নির্বাচন যত দেরি হবে, দেশ তত পিছিয়ে যাবে

আপডেট সময় : ০৭:৫০:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ জুলাই ২০২৫

সিলেট সংবাদদাতা: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আশা প্রকাশ করেছেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতেই অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনের আয়োজন করবে। তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই আশাবাদী যে এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশ-জাতি গণতন্ত্রে ফিরে যাবে। জনগণের যে গণতন্ত্রের অধিকার, সেটা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটাকে আমরা বলি রাইট ট্র্যাক, দেশ সেখানে উঠবে বলে মনে করি।’

সোমবার (৭ জুলাই) সকাল ১০টায় সিলেটের হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজার জিয়ারত শেষে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। এরপর বিএনপির মহাসচিব হজরত শাহপরান (রহ.)-এর মাজারও জিয়ারত করেন। মাজার জিয়ারত শেষে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেলা ১১টার দিকে সিলেট নগরের পাঠানটুলা এলাকার সানরাইজ কমিউনিটি সেন্টারে জেলা ও মহানগর বিএনপি আয়োজিত দোয়া ও আলোচনা সভায় যোগ দেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘নির্বাচিত সরকারের চাইতে শক্তিশালী কোনো সরকার হতে পারে না। সে জন্য দরকার একটি নির্বাচিত সরকার। দীর্ঘ ১৫ বছর ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে আমরা লড়াই-সংগ্রাম করেছি। প্রায় ৬০ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে। আমাদের কয়েক হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের প্রায় ১ হাজার ৭০০-এর ওপরে মানুষকে গুম করা হয়েছে। সিলেটের অত্যন্ত সাহসী নেতা ইলিয়াস আলীও গুম হয়েছেন। তারপর জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘চব্বিশের আগে ১৫ বছর আমাদের সিলেটের বহু নেতাকর্মী ও ভাই গণতন্ত্রের জন্য রাস্তায় রক্ত দিয়েছেন। মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে, হাতে-পায়ে বেড়ি দিয়ে বন্দি করে রাখা হয়েছে। চব্বিশে আমার ভাই, আমার ছেলেকে গুলি করে হত্যা করেছে হাসিনা। আমাদের ভোটের অধিকারের জন্য, গণতন্ত্রের অধিকারের জন্য যারা জীবন দিয়েছেন তাদের শ্রদ্ধা জানাতে সিলেট এসেছি।‘

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘এমনি এমনি হঠাৎ করে হাসিনা পালায়নি, বহুদিনের সংগ্রাম, বহু মানুষের ত্যাগ, বহু মানুষের রক্তের বিনিময়ে আমরা ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়েছি। ফ্যাসিবাদমুক্ত হলাম ঠিক আছে, কিন্তু আমরা বলছি লড়াই তো গণতন্ত্রের লড়াই, আমরা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই। যেখানে মানুষ ভোট দেবে, কথা বলার সুযোগ পাবে, তরুণরা কাজের ও লেখাপড়ার সুযোগ পাবে, নারীরা নিরাপত্তা পাবে, চিকিৎসার সুযোগ পাবে, এরকম একটি রাষ্ট্র। এজন্য আমরা নতুন করে সংগ্রাম শুরু করেছি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সেই দল যে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। যিনি দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। শেখ মুজিব একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সব মিডিয়া বন্ধ করেছিলেন চারটি রেখে। সে অবস্থা থেকে জিয়াউর রহমান মানুষের গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়ে নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ করেছিলেন।’

বিএনপির মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইতিমধ্যে লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের যে বৈঠক হয়েছে, সে বৈঠকে তো ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের একটা মোটামুটি আলোচনা হয়েছে।’

এর আগে সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে ঢাকা থেকে সিলেটগামী একটি ফ্লাইটে মির্জা ফখরুল সিলেট এম এ জি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান। তাঁর সফরসঙ্গীদের মধ্যে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ইকবাল মাহমুদ টুকু, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরী প্রমুখ।

সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মির্জা ফখরুলকে স্বাগত জানান বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির, এনামুল হক চৌধুরী, আরিফুল হক চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউছ, সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী প্রমুখ।

সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, বেলা দুইটায় দলের মহাসচিব নগরের একটি হোটেলে জুলাই-আগস্টে সিলেট জেলায় শহীদ বীর সন্তানদের পরিারের সদস্যদের সম্মাননা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।