ঢাকা ০৫:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নির্বাচন নিয়ে সরকারের এত গড়িমসি কেন, প্রশ্ন রিজভীর

  • আপডেট সময় : ০৮:৫৩:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫
  • ১৫ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: অন্তর্বর্তী সরকার কোনো ধরনের ‘মাস্টারপ্ল্যানের’ মধ্যে রয়েছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। একই সঙ্গে ‘নির্বাচন নিয়ে সরকারের এত গড়িমসি কেন’, এমন প্রশ্নও তুলেছেন তিনি। বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যখন শুনি আগে সংস্কার পরে নির্বাচন—এ যেন শেখ হাসিনার সেই কথারই প্রতিধ্বনি, আগে উন্নয়ন পরে গণতন্ত্র। এ ধরনের বক্তব্য অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো উপদেষ্টার কাছ থেকে শোভা পায় না।’

সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর দশম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর বনানী কবরস্থান প্রাঙ্গণে এক দোয়া অনুষ্ঠানে রুহুল কবির রিজভী এ কথা বলেন।

সরকারের নিরপেক্ষতার প্রসঙ্গ তুলে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমরা তো এ-ও শুনছি, সরকারের ভেতরে থেকে কেউ কেউ রাজনৈতিক দল গঠনের চেষ্টা করছেন। তাহলে তো সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে জনগণ প্রশ্ন করতেই পারে।’

এই বিএনপি নেতা বলেন, যদি এসব কথা আসে, তাহলে গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করা অন্যান্য রাজনৈতিক দল মনে করবে, অন্তর্বর্তী সরকার কোনো ধরনের একটা মাস্টারপ্ল্যানের মধ্যে রয়েছে।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘একটি মুক্ত পরিবেশে বিশুদ্ধ বাতাস গ্রহণ করতে বিগত ১৬ বছরে এত আত্মদান, এত রক্ত ঝরেছে। তার ফলে ৫ আগস্ট আমরা পৃথিবী কাঁপানো বিজয় দেখেছি। এই আন্দোলনের পর একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল সেই সরকারকে সমর্থন দিয়েছে। জনগণের প্রত্যাশা, এই সরকার নিরপেক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবে, গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে পদক্ষেপ নেবে। কিন্তু যখন শুনি, আগে সংস্কার পরে নির্বাচন—এ যেন মনে হয় শেখ হাসিনার সেই কথারই প্রতিধ্বনি যে আগে উন্নয়ন পরে গণতন্ত্র। এটা তো অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো উপদেষ্টাদের কাছ থেকে শোভা পায় না।’

রিজভী যোগ করেন, যে গণতন্ত্র ও অবাধ নির্বাচনের জন্য ১৬ বছর ধরে এ দেশের মানুষ অপেক্ষা করেছে, লড়াই করেছে, জীবন উৎসর্গ করেছে, সেই নির্বাচন নিয়ে এত দ্বিধা কেন, এত গড়িমসি কেন। এটাই জনগণের জিজ্ঞাসা।

সরকারের উদ্দেশে রিজভী আরও বলেন, ‘গত এক মাসে সব নিত্যপণ্যের দাম কেজিতে ২ থেকে ১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারের এই যে দৃষ্টিহীনতা, এর সমালোচনা করা যাবে না? সরকারের প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে কাজ না করলে তার কী সমালোচনা করা যাবে না? তাহলে কীসের ভয় দেখান যে এক-এগারোর পুনরাবৃত্তি হবে।’

রিজভী বলেন, ‘আমরা সব ঘটনা অতিক্রম করে, বুক চিতিয়ে আমরা বছরের পর বছর রাজপথের লড়াইয়ে থেকেছি। কোনটাকে সমর্থন করতে হবে, আর কোনটাকে নয়, আর কোন বিষয়ে কথা বলতে হবে, এটা আজ উপদেষ্টারা দেশের প্রাজ্ঞ-বিজ্ঞ রাজনীতিবিদদের শেখাবেন? আমাদের সব আস্থা তো আপনাদের ওপর দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমাদের কথা হলো, কেন এত গড়িমসি, ডেডলাইন নেই কেন, কেন হাসিনার কথা পুনরাবৃত্তি হবে যে আগে উন্নয়ন পরে গণতন্ত্র। আমরা এ কথা শুনতে চাই না।’

সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সাম্প্রতিক এক জরিপে এসেছে, দেশের বেশির ভাগ মানুষ জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন চায়।

এ প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘পরিসংখ্যান ব্যুরো সরকারি সংস্থা। তাদের দিয়ে জরিপ করাচ্ছেন। তাতে নাকি জনগণ বলছে, আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন, পরে জাতীয় নির্বাচন। আপনি যদি সরকারি সংস্থা দিয়ে জরিপ করেন, তারা তো সরকারের মুখ চেয়ে কথা বলবে। কিন্তু আপামর জনসাধারণের সঙ্গে কথা বলেন, তারা কী বলে দেখেন। আপনাদের আচরণ নিরপেক্ষ না হলে তো সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে জনগণ প্রশ্ন তুলবেই।’

এর আগে রুহুল কবির রিজভী প্রয়াত আরাফাত রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হকসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত প্রক্রিয়ায় গুরুত্বারোপ

নির্বাচন নিয়ে সরকারের এত গড়িমসি কেন, প্রশ্ন রিজভীর

আপডেট সময় : ০৮:৫৩:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: অন্তর্বর্তী সরকার কোনো ধরনের ‘মাস্টারপ্ল্যানের’ মধ্যে রয়েছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। একই সঙ্গে ‘নির্বাচন নিয়ে সরকারের এত গড়িমসি কেন’, এমন প্রশ্নও তুলেছেন তিনি। বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যখন শুনি আগে সংস্কার পরে নির্বাচন—এ যেন শেখ হাসিনার সেই কথারই প্রতিধ্বনি, আগে উন্নয়ন পরে গণতন্ত্র। এ ধরনের বক্তব্য অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো উপদেষ্টার কাছ থেকে শোভা পায় না।’

সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর দশম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর বনানী কবরস্থান প্রাঙ্গণে এক দোয়া অনুষ্ঠানে রুহুল কবির রিজভী এ কথা বলেন।

সরকারের নিরপেক্ষতার প্রসঙ্গ তুলে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমরা তো এ-ও শুনছি, সরকারের ভেতরে থেকে কেউ কেউ রাজনৈতিক দল গঠনের চেষ্টা করছেন। তাহলে তো সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে জনগণ প্রশ্ন করতেই পারে।’

এই বিএনপি নেতা বলেন, যদি এসব কথা আসে, তাহলে গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করা অন্যান্য রাজনৈতিক দল মনে করবে, অন্তর্বর্তী সরকার কোনো ধরনের একটা মাস্টারপ্ল্যানের মধ্যে রয়েছে।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘একটি মুক্ত পরিবেশে বিশুদ্ধ বাতাস গ্রহণ করতে বিগত ১৬ বছরে এত আত্মদান, এত রক্ত ঝরেছে। তার ফলে ৫ আগস্ট আমরা পৃথিবী কাঁপানো বিজয় দেখেছি। এই আন্দোলনের পর একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল সেই সরকারকে সমর্থন দিয়েছে। জনগণের প্রত্যাশা, এই সরকার নিরপেক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবে, গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে পদক্ষেপ নেবে। কিন্তু যখন শুনি, আগে সংস্কার পরে নির্বাচন—এ যেন মনে হয় শেখ হাসিনার সেই কথারই প্রতিধ্বনি যে আগে উন্নয়ন পরে গণতন্ত্র। এটা তো অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো উপদেষ্টাদের কাছ থেকে শোভা পায় না।’

রিজভী যোগ করেন, যে গণতন্ত্র ও অবাধ নির্বাচনের জন্য ১৬ বছর ধরে এ দেশের মানুষ অপেক্ষা করেছে, লড়াই করেছে, জীবন উৎসর্গ করেছে, সেই নির্বাচন নিয়ে এত দ্বিধা কেন, এত গড়িমসি কেন। এটাই জনগণের জিজ্ঞাসা।

সরকারের উদ্দেশে রিজভী আরও বলেন, ‘গত এক মাসে সব নিত্যপণ্যের দাম কেজিতে ২ থেকে ১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারের এই যে দৃষ্টিহীনতা, এর সমালোচনা করা যাবে না? সরকারের প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে কাজ না করলে তার কী সমালোচনা করা যাবে না? তাহলে কীসের ভয় দেখান যে এক-এগারোর পুনরাবৃত্তি হবে।’

রিজভী বলেন, ‘আমরা সব ঘটনা অতিক্রম করে, বুক চিতিয়ে আমরা বছরের পর বছর রাজপথের লড়াইয়ে থেকেছি। কোনটাকে সমর্থন করতে হবে, আর কোনটাকে নয়, আর কোন বিষয়ে কথা বলতে হবে, এটা আজ উপদেষ্টারা দেশের প্রাজ্ঞ-বিজ্ঞ রাজনীতিবিদদের শেখাবেন? আমাদের সব আস্থা তো আপনাদের ওপর দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমাদের কথা হলো, কেন এত গড়িমসি, ডেডলাইন নেই কেন, কেন হাসিনার কথা পুনরাবৃত্তি হবে যে আগে উন্নয়ন পরে গণতন্ত্র। আমরা এ কথা শুনতে চাই না।’

সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সাম্প্রতিক এক জরিপে এসেছে, দেশের বেশির ভাগ মানুষ জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন চায়।

এ প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘পরিসংখ্যান ব্যুরো সরকারি সংস্থা। তাদের দিয়ে জরিপ করাচ্ছেন। তাতে নাকি জনগণ বলছে, আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন, পরে জাতীয় নির্বাচন। আপনি যদি সরকারি সংস্থা দিয়ে জরিপ করেন, তারা তো সরকারের মুখ চেয়ে কথা বলবে। কিন্তু আপামর জনসাধারণের সঙ্গে কথা বলেন, তারা কী বলে দেখেন। আপনাদের আচরণ নিরপেক্ষ না হলে তো সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে জনগণ প্রশ্ন তুলবেই।’

এর আগে রুহুল কবির রিজভী প্রয়াত আরাফাত রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হকসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।