ঢাকা ১১:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫

নির্বাচনের সময় ৩ মন্ত্রণালয় ইসির অধীন রাখার প্রস্তাব

  • আপডেট সময় : ০১:৩৬:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ জুলাই ২০২২
  • ১০৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন সময় স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নির্বাচকালীন সম্পর্কিত কাজের জন্য নির্বাচন কমিশনের অধীন ন্যস্ত করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে— নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের পূর্বে তিন মাস ও পরের তিন মাস নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বদলি, পদোন্নতি, কর্তব্যে অবহেলার জন্য শাস্তি প্রদানের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ হিসাবে কাজ করবে। এর জন্য সংবিধানের সংশোধনের কোনো প্রয়োজন পড়বে না। গতকাল সোমবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ইসির সংলাপে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এই দাবি জানান। এ সময় দলটির ১১ সদস্যর একটি প্রতিনিধি দল ইসির সংলাপে অংশগ্রহণ করেন। প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন পলিটব্যুরো সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক, মাহমুদুল হাসান মানিক, কামরুল আহসান, আমিনুল ইসলাম গোলাপ প্রমুখ। অন্যদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল এর সভাপতিত্বে এতে ইসি কমিশনার মো. আলমগীর, রাশেদা সুলতান, আনিছুর রহমান ও বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবিব খান ও ইসি সচিব হুমায়ন কবির খোন্দকার উপস্থিত ছিলেন। ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশন তাদের কর্মকা-ে অতীতের ধারাবাহিকতাই অনুসরণ করছে বলে জনগণের কাছে এবং আমাদের কাছে প্রতীয়মান হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘ওয়ার্কার্স পার্টি মনে করে সংসদ নির্বাচন সংবিধানের বিধান অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমানে এর কোনো বিকল্প নাই। তবে অবস্থিত সরকার যেন নির্বাচনের সময় ক্ষমতার প্রভাব খাটাতে না পারে তার জন্য নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর সরকার দৈনন্দিন কার্যাবলী ছাড়া নীতিগত বা উন্নয়নমূলক কোনো কাজ করতে পারবে না। উন্নয়নসহ কোন নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না। সরকারি কর্মকা-ে ক্ষমতাসীন সরকারের মন্ত্রী, অবস্থিত সংসদ সদস্যদের নিরাপত্তা ছাড়া বাকি সব প্রোটকল সুবিধা স্থগিত থাকবে। নির্বাচন কমিশন এ বিষয় নিশ্চিত করবেন। (এ বিষয়ে ভারতের লোকসভা নির্বাচনকালীন সময় সরকারী কর্মকর্তা ও সংসদ সদস্যদের আচরণ নিয়ন্ত্রণের বিষয় দেখা যেতে পারে)। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা সংশোধন ও সংযোজনের যে ব্যবস্থা সময় সময় নিয়ে থাকে তা যথোপযুক্ত হয় না বলে জনমনে ধারণা। এ ক্ষেত্রে এনআইডি ও তার সংশোধন নিয়ে বহু বিভ্রান্তি ও হয়রানি আছে। এসব দুর করতে ভোটার তালিকা কেবল প্রকাশ্যে টাঙ্গিয়ে দেয়াই যথেষ্ট হবে না। এখন প্রযুক্তির উন্নতির পর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে এবং যথাযথ প্রচারের মাধ্যমে ভোটারদের সংশোধন -সংযোজনের সুযোগ দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ কোলাবরেটার্স (স্পেশাল ট্রাইবুন্যাল) এ্যাক্ট ১৯৭৩ অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধের দায়ে দ-িত কেউ ভোটার হতে পারবে না, হয়ে থাকলে তাদের ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। এছাড়া যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত সংগঠনের সদস্য, ব্যক্তি, জঙ্গি তৎপরতায় যুক্ত ব্যক্তি ও মায়ানমার থেকে আগত রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হলে তা বাদ দিতে হবে। রোহিঙ্গাদের এনআইডি প্রদান ও ভোটার তালিকা অন্তর্ভুক্ত করার সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা, কর্মচারী, সুপারিশকারী জনপ্রতিনিধিদের আইনের আত্ততায় এনে বিচারের সম্মুখীন করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে ধর্মের সর্বপ্রকার ব্যবহার, সাম্প্রদায়িক প্রচার-প্রচারণা ও ভোট চাওয়া শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে নিষিদ্ধ করতে হবে। ধর্মীয় উপসনালয়, মন্দির, মসজিদ, গীর্জা, মঠ, ওয়াজ ধর্মসভায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কোনো প্রকার নির্বাচনী প্রচার করা যাবে না। পোস্টার, হ্যান্ডবিল বিলি নিষিদ্ধ করতে হবে।’ রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আরপিও ৯০ (সি) ধারায় ধর্ম ভিত্তিক রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন না দেওয়ার সুনির্দিষ্ট কোনো বিধান নেই। দলে ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্যকরণ এবং রাজনৈতিক দলের নাম, পতাকা, প্রতীকের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি নষ্ট হতে পারে এমন দলের নিবন্ধন না দেওয়ার যে বিধান এ বিধির (ধ), (ন) ও (প) উপবিধিতে রাখা হয়েছে বস্তুত তার কোন কার্যকারিতা নেই। রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা বিরোধী ও ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক দলসমূহ নিবন্ধন না দেয়ার জন্য ওয়ার্কার্স পার্টি সব সময় প্রস্তাব করেছে।’ ইভিএম ব্যবহার প্রসঙ্গে ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ইভিএম-এ ভোটার ভেরিয়েবল পেপার অডিট ট্রেইল (ভিত্তিপ্যাড) যুক্ত করা যেন ভোটার তার ভোটটি সঠিকভাবে দেয়া হয়েছে কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারে। এটি গ্রহণ করা হলে ইভিএম নিয়ে বিতর্ক কমে আসবে।’

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

গভীর সংস্কার না করলে স্বৈরাচার ফিরে আসবে

নির্বাচনের সময় ৩ মন্ত্রণালয় ইসির অধীন রাখার প্রস্তাব

আপডেট সময় : ০১:৩৬:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ জুলাই ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন সময় স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নির্বাচকালীন সম্পর্কিত কাজের জন্য নির্বাচন কমিশনের অধীন ন্যস্ত করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে— নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের পূর্বে তিন মাস ও পরের তিন মাস নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বদলি, পদোন্নতি, কর্তব্যে অবহেলার জন্য শাস্তি প্রদানের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ হিসাবে কাজ করবে। এর জন্য সংবিধানের সংশোধনের কোনো প্রয়োজন পড়বে না। গতকাল সোমবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ইসির সংলাপে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এই দাবি জানান। এ সময় দলটির ১১ সদস্যর একটি প্রতিনিধি দল ইসির সংলাপে অংশগ্রহণ করেন। প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন পলিটব্যুরো সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক, মাহমুদুল হাসান মানিক, কামরুল আহসান, আমিনুল ইসলাম গোলাপ প্রমুখ। অন্যদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল এর সভাপতিত্বে এতে ইসি কমিশনার মো. আলমগীর, রাশেদা সুলতান, আনিছুর রহমান ও বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবিব খান ও ইসি সচিব হুমায়ন কবির খোন্দকার উপস্থিত ছিলেন। ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশন তাদের কর্মকা-ে অতীতের ধারাবাহিকতাই অনুসরণ করছে বলে জনগণের কাছে এবং আমাদের কাছে প্রতীয়মান হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘ওয়ার্কার্স পার্টি মনে করে সংসদ নির্বাচন সংবিধানের বিধান অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমানে এর কোনো বিকল্প নাই। তবে অবস্থিত সরকার যেন নির্বাচনের সময় ক্ষমতার প্রভাব খাটাতে না পারে তার জন্য নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর সরকার দৈনন্দিন কার্যাবলী ছাড়া নীতিগত বা উন্নয়নমূলক কোনো কাজ করতে পারবে না। উন্নয়নসহ কোন নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না। সরকারি কর্মকা-ে ক্ষমতাসীন সরকারের মন্ত্রী, অবস্থিত সংসদ সদস্যদের নিরাপত্তা ছাড়া বাকি সব প্রোটকল সুবিধা স্থগিত থাকবে। নির্বাচন কমিশন এ বিষয় নিশ্চিত করবেন। (এ বিষয়ে ভারতের লোকসভা নির্বাচনকালীন সময় সরকারী কর্মকর্তা ও সংসদ সদস্যদের আচরণ নিয়ন্ত্রণের বিষয় দেখা যেতে পারে)। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা সংশোধন ও সংযোজনের যে ব্যবস্থা সময় সময় নিয়ে থাকে তা যথোপযুক্ত হয় না বলে জনমনে ধারণা। এ ক্ষেত্রে এনআইডি ও তার সংশোধন নিয়ে বহু বিভ্রান্তি ও হয়রানি আছে। এসব দুর করতে ভোটার তালিকা কেবল প্রকাশ্যে টাঙ্গিয়ে দেয়াই যথেষ্ট হবে না। এখন প্রযুক্তির উন্নতির পর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে এবং যথাযথ প্রচারের মাধ্যমে ভোটারদের সংশোধন -সংযোজনের সুযোগ দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ কোলাবরেটার্স (স্পেশাল ট্রাইবুন্যাল) এ্যাক্ট ১৯৭৩ অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধের দায়ে দ-িত কেউ ভোটার হতে পারবে না, হয়ে থাকলে তাদের ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। এছাড়া যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত সংগঠনের সদস্য, ব্যক্তি, জঙ্গি তৎপরতায় যুক্ত ব্যক্তি ও মায়ানমার থেকে আগত রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হলে তা বাদ দিতে হবে। রোহিঙ্গাদের এনআইডি প্রদান ও ভোটার তালিকা অন্তর্ভুক্ত করার সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা, কর্মচারী, সুপারিশকারী জনপ্রতিনিধিদের আইনের আত্ততায় এনে বিচারের সম্মুখীন করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে ধর্মের সর্বপ্রকার ব্যবহার, সাম্প্রদায়িক প্রচার-প্রচারণা ও ভোট চাওয়া শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে নিষিদ্ধ করতে হবে। ধর্মীয় উপসনালয়, মন্দির, মসজিদ, গীর্জা, মঠ, ওয়াজ ধর্মসভায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কোনো প্রকার নির্বাচনী প্রচার করা যাবে না। পোস্টার, হ্যান্ডবিল বিলি নিষিদ্ধ করতে হবে।’ রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আরপিও ৯০ (সি) ধারায় ধর্ম ভিত্তিক রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন না দেওয়ার সুনির্দিষ্ট কোনো বিধান নেই। দলে ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্যকরণ এবং রাজনৈতিক দলের নাম, পতাকা, প্রতীকের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি নষ্ট হতে পারে এমন দলের নিবন্ধন না দেওয়ার যে বিধান এ বিধির (ধ), (ন) ও (প) উপবিধিতে রাখা হয়েছে বস্তুত তার কোন কার্যকারিতা নেই। রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা বিরোধী ও ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক দলসমূহ নিবন্ধন না দেয়ার জন্য ওয়ার্কার্স পার্টি সব সময় প্রস্তাব করেছে।’ ইভিএম ব্যবহার প্রসঙ্গে ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ইভিএম-এ ভোটার ভেরিয়েবল পেপার অডিট ট্রেইল (ভিত্তিপ্যাড) যুক্ত করা যেন ভোটার তার ভোটটি সঠিকভাবে দেয়া হয়েছে কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারে। এটি গ্রহণ করা হলে ইভিএম নিয়ে বিতর্ক কমে আসবে।’