ঢাকা ০৮:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হতে সময় লাগবে: ফখরুল

  • আপডেট সময় : ০২:৪৬:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ অগাস্ট ২০২৪
  • ৬৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : অন্তর্র্বতী সরকারের সব বিষয়ে বিএনপির সমর্থন থাকার কথা তুলে ধরে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচনের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হতে যে সময় লাগবে তা বর্তমান সরকারকে দেওয়া হবে।
গতকাল সোমবার বিকালে অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সামনে তিনি এ কথা বলেন। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ছাত্র-জনতার অর্জনকে নস্যাৎ করতে নির্যাতনের গল্প ফাঁদা হচ্ছে। একই সঙ্গে ছাত্র, শিশু ও রাজনৈতিক নেতাদের ‘হত্যার’ বিচারের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হলে তাতে সরকারকে সমর্থন দেবে বলে তিনি তুলে ধরেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘আজকে নির্বাচন নিয়ে আমরা কথা বলিনি। আমরা আগেও বলেছি আপনারা জানেন যে, একটা নির্দিষ্ট সময় লাগবে নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে। আমরা তাদেরকে সেই সময়টি আমরা অবশ্যই দিয়েছি। আমরা তাদের সব বিষয়গুলোতে সমর্থন দিয়েছি। ‘‘আমরা একটা কথা খুব পরিষ্কার করে বলেছি যে, বর্তমানে দেশে যে অস্থিরতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হচ্ছে, যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হচ্ছে, সাম্প্রদায়িকতার ধোঁয়া তোলা হচ্ছে এগুলোতে জনগণ যাতে বিভ্রান্ত না হয় এবং জনগণ ঠিক পূর্বের মতোই সেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে অক্ষুন্ন রেখে, তাদের নিরাপত্তাকে অক্ষুন্ন রেখে তারা যেন সরকারকে সহায়তা করে এবং আমরাও পুরোপুরিভাবে তাদেরকে সেইভাবে সহায়তা করছি।”
ছাত্র-জনতার প্রবল গণ আন্দোলনের মধ্যে ক্ষমতার পালাবদলের পর নোবেলবিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্র্বতী সরকার কাজ শুরু করেছে। দায়িত্ব নেওয়ার চতুর্থ দিনে প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেন। সোমবার বিকাল ৪টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বাধীন বিএনপির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক হয়। বর্তমান সরকার কী কী করছে তা প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে বিএনপি নেতারা অবহিত হয়েছেন বলে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের জানান ফখরুল। সরকারের করণীয় নিয়ে দলের পক্ষ থেকে পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মুক্ত পরিবেশে এই সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রথম আমাদের সঙ্গে আজকে তারা বসেছেন। আমরা দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে কী কী করা যায় এ বিষয়ে আমাদের মতামত দিয়েছি। তারা আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেছেন কী কী করেছে, কী কী করতে যাচ্ছেন।
”এখন আমরা মনে করি, এই সরকারকে সহায়তা করা প্রতিটি দেশপ্রেমিক মানুষের একমাত্র কর্তব্য।”
বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, ‘‘আজকে দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেই মহলটি যারা বাংলাদেশের অধিকার হরণ করে নিয়েছিল। তারা আবার বাইরে থেকে বিদেশ থেকে, এখান থেকে পালিয়ে গিয়ে ভারতে অবস্থান নিয়ে সেখান থেকে বাংলাদেশের যে বিজয় অর্জন হয়েছে জনগণের সেই বিজয়কে নস্যাৎ করার জন্য চক্রান্ত শুরু করেছে।
”আমরা একটা কথা খুব স্পষ্ট করে বলেছি যে, এখানে তথাকথিত মাইনোরিটির ওপরে নির্যাতনের যে একটা গল্প ফাঁদা হয়েছে সেই গল্পটা পুরোপুরিভাবে উদ্দেশ্যমূলক, বাংলাদেশকে ম্যালাইন করা, সরকারকে ম্যালাইন করা, ছাত্র্র-জনতার বিপ্লবকে নস্যাৎ করে দেওয়ার আরেকটি চক্রান্ত।”
ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছাড়েন। সরকার পতনের তৃতীয় দিনে ৮ আগস্ট নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বতীকালীন সরকার শপথ গ্রহণ করে। এর তিন দিন পর বিভিন্ন দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন প্রধান উপদেষ্টা। বিএনপির সঙ্গে এক ঘণ্টার বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। বিএনপির ৯ সদস্যের দলে ছিলেন-স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও সালাহউদ্দিন আহমেদ। বৈঠকে অপেক্ষামান সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে, এত হত্যা, এত নির্যাতন, এত নিপীড়ন, এতগুলো ছাত্রদের হত্যা করার পরও সেই দলটি (আওয়ামী লীগ) আবারও তারা বিভিন্ন রকমভাবে কথা বলছে, যা বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থের বিরুদ্ধে। আমরা মনে করি সরকারের এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।” সরকার রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ’অবশ্যই’ কথা বলবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “কিন্তু হত্যাকারীর সঙ্গে যারা ছাত্রদের হত্যা করেছে, যারা শিশুদের হত্যা করেছে, যারা রাজনৈতিক নেতাদেরকে হত্যা করেছে তাদের বিরুদ্ধে জনগণ আছে। এবং এই ব্যাপারে তাদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিতে গেলে আমরা সরকারকে অবশ্যই সমর্থন দেব।”
বিএনপির বৈঠকের পর ৫টায় জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। এরপর এবি পার্টি, ইসলামী আন্দোলন ও গণঅধিকার পরিষদের দুই অংশের সঙ্গেও যৌথ বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা।
অন্তর্র্বতী সরকারকে দ্রুত নির্বাচনের ক্ষেত্র তৈরির অনুরোধ বিএনপির: অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে অতি দ্রুত নির্বাচনের ক্ষেত্র তৈরি করার অনুরোধ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, সব বিপদগুলোকে কাটিয়ে সত্যিকার অর্থে একটা মুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন। জনগণের একটা সরকার প্রতিষ্ঠা করবেন।
সোমবার (১২ আগস্ট) বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর ৫৫তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে কবরে জিয়ারত করে এসব কথা বলেন তিনি। মির্জা ফখরুল বলেন, প্রতিবিপ্লবের যে আশঙ্কা তার জন্য অত্যন্ত সজাগ থেকে, রাস্তায় থেকে তাদের চক্রান্ত প্রতিরোধ করার সব ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন, জনগণের কাছে সেই প্রত্যাশা আমার। তিনি বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে, এই আন্দোলনে ছাত্ররা শুধু সহযোগিতা করেননি, নেতৃত্বের ভূমিকা রেখেছেন। রাজনৈতিক দলগুলো গত ১৫ বছরে ত্যাগ স্বীকার করেছে। অসংখ্য নেতাকর্মী প্রাণ দিয়েছে। এই আন্দোলনে আমাদের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গৌরবান্বিত। বিএনপি মহাসচিবের দাবি, আমরা সবাই জানি, আরাফাত রহমান কোকোকে অত্যাচার, নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। নির্যাতনের কারণে তাকে দেশের বাইরে চলে যেতে হয়েছে। কোকো কোনো রাজনৈতিক সম্পৃক্ত ব্যক্তি ছিলেন না উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি ছিলেন ক্রীড়াবিদ। অল্প সময়ে তিনি ক্রিকেটে বিপ্লব এনেছিলেন। তিনি বলেন, আমরা আশা করি নতুন অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের সমর্থন থাকবে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, মুক্তি, বিজয় ও দ্বিতীয় স্বাধীনতার আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের আত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।

 

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হতে সময় লাগবে: ফখরুল

আপডেট সময় : ০২:৪৬:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ অগাস্ট ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : অন্তর্র্বতী সরকারের সব বিষয়ে বিএনপির সমর্থন থাকার কথা তুলে ধরে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচনের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হতে যে সময় লাগবে তা বর্তমান সরকারকে দেওয়া হবে।
গতকাল সোমবার বিকালে অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সামনে তিনি এ কথা বলেন। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ছাত্র-জনতার অর্জনকে নস্যাৎ করতে নির্যাতনের গল্প ফাঁদা হচ্ছে। একই সঙ্গে ছাত্র, শিশু ও রাজনৈতিক নেতাদের ‘হত্যার’ বিচারের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হলে তাতে সরকারকে সমর্থন দেবে বলে তিনি তুলে ধরেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘আজকে নির্বাচন নিয়ে আমরা কথা বলিনি। আমরা আগেও বলেছি আপনারা জানেন যে, একটা নির্দিষ্ট সময় লাগবে নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে। আমরা তাদেরকে সেই সময়টি আমরা অবশ্যই দিয়েছি। আমরা তাদের সব বিষয়গুলোতে সমর্থন দিয়েছি। ‘‘আমরা একটা কথা খুব পরিষ্কার করে বলেছি যে, বর্তমানে দেশে যে অস্থিরতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হচ্ছে, যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হচ্ছে, সাম্প্রদায়িকতার ধোঁয়া তোলা হচ্ছে এগুলোতে জনগণ যাতে বিভ্রান্ত না হয় এবং জনগণ ঠিক পূর্বের মতোই সেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে অক্ষুন্ন রেখে, তাদের নিরাপত্তাকে অক্ষুন্ন রেখে তারা যেন সরকারকে সহায়তা করে এবং আমরাও পুরোপুরিভাবে তাদেরকে সেইভাবে সহায়তা করছি।”
ছাত্র-জনতার প্রবল গণ আন্দোলনের মধ্যে ক্ষমতার পালাবদলের পর নোবেলবিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্র্বতী সরকার কাজ শুরু করেছে। দায়িত্ব নেওয়ার চতুর্থ দিনে প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেন। সোমবার বিকাল ৪টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বাধীন বিএনপির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক হয়। বর্তমান সরকার কী কী করছে তা প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে বিএনপি নেতারা অবহিত হয়েছেন বলে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের জানান ফখরুল। সরকারের করণীয় নিয়ে দলের পক্ষ থেকে পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মুক্ত পরিবেশে এই সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রথম আমাদের সঙ্গে আজকে তারা বসেছেন। আমরা দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে কী কী করা যায় এ বিষয়ে আমাদের মতামত দিয়েছি। তারা আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেছেন কী কী করেছে, কী কী করতে যাচ্ছেন।
”এখন আমরা মনে করি, এই সরকারকে সহায়তা করা প্রতিটি দেশপ্রেমিক মানুষের একমাত্র কর্তব্য।”
বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, ‘‘আজকে দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেই মহলটি যারা বাংলাদেশের অধিকার হরণ করে নিয়েছিল। তারা আবার বাইরে থেকে বিদেশ থেকে, এখান থেকে পালিয়ে গিয়ে ভারতে অবস্থান নিয়ে সেখান থেকে বাংলাদেশের যে বিজয় অর্জন হয়েছে জনগণের সেই বিজয়কে নস্যাৎ করার জন্য চক্রান্ত শুরু করেছে।
”আমরা একটা কথা খুব স্পষ্ট করে বলেছি যে, এখানে তথাকথিত মাইনোরিটির ওপরে নির্যাতনের যে একটা গল্প ফাঁদা হয়েছে সেই গল্পটা পুরোপুরিভাবে উদ্দেশ্যমূলক, বাংলাদেশকে ম্যালাইন করা, সরকারকে ম্যালাইন করা, ছাত্র্র-জনতার বিপ্লবকে নস্যাৎ করে দেওয়ার আরেকটি চক্রান্ত।”
ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছাড়েন। সরকার পতনের তৃতীয় দিনে ৮ আগস্ট নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বতীকালীন সরকার শপথ গ্রহণ করে। এর তিন দিন পর বিভিন্ন দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন প্রধান উপদেষ্টা। বিএনপির সঙ্গে এক ঘণ্টার বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। বিএনপির ৯ সদস্যের দলে ছিলেন-স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও সালাহউদ্দিন আহমেদ। বৈঠকে অপেক্ষামান সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে, এত হত্যা, এত নির্যাতন, এত নিপীড়ন, এতগুলো ছাত্রদের হত্যা করার পরও সেই দলটি (আওয়ামী লীগ) আবারও তারা বিভিন্ন রকমভাবে কথা বলছে, যা বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থের বিরুদ্ধে। আমরা মনে করি সরকারের এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।” সরকার রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ’অবশ্যই’ কথা বলবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “কিন্তু হত্যাকারীর সঙ্গে যারা ছাত্রদের হত্যা করেছে, যারা শিশুদের হত্যা করেছে, যারা রাজনৈতিক নেতাদেরকে হত্যা করেছে তাদের বিরুদ্ধে জনগণ আছে। এবং এই ব্যাপারে তাদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিতে গেলে আমরা সরকারকে অবশ্যই সমর্থন দেব।”
বিএনপির বৈঠকের পর ৫টায় জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। এরপর এবি পার্টি, ইসলামী আন্দোলন ও গণঅধিকার পরিষদের দুই অংশের সঙ্গেও যৌথ বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা।
অন্তর্র্বতী সরকারকে দ্রুত নির্বাচনের ক্ষেত্র তৈরির অনুরোধ বিএনপির: অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে অতি দ্রুত নির্বাচনের ক্ষেত্র তৈরি করার অনুরোধ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, সব বিপদগুলোকে কাটিয়ে সত্যিকার অর্থে একটা মুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন। জনগণের একটা সরকার প্রতিষ্ঠা করবেন।
সোমবার (১২ আগস্ট) বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর ৫৫তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে কবরে জিয়ারত করে এসব কথা বলেন তিনি। মির্জা ফখরুল বলেন, প্রতিবিপ্লবের যে আশঙ্কা তার জন্য অত্যন্ত সজাগ থেকে, রাস্তায় থেকে তাদের চক্রান্ত প্রতিরোধ করার সব ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন, জনগণের কাছে সেই প্রত্যাশা আমার। তিনি বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে, এই আন্দোলনে ছাত্ররা শুধু সহযোগিতা করেননি, নেতৃত্বের ভূমিকা রেখেছেন। রাজনৈতিক দলগুলো গত ১৫ বছরে ত্যাগ স্বীকার করেছে। অসংখ্য নেতাকর্মী প্রাণ দিয়েছে। এই আন্দোলনে আমাদের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গৌরবান্বিত। বিএনপি মহাসচিবের দাবি, আমরা সবাই জানি, আরাফাত রহমান কোকোকে অত্যাচার, নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। নির্যাতনের কারণে তাকে দেশের বাইরে চলে যেতে হয়েছে। কোকো কোনো রাজনৈতিক সম্পৃক্ত ব্যক্তি ছিলেন না উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি ছিলেন ক্রীড়াবিদ। অল্প সময়ে তিনি ক্রিকেটে বিপ্লব এনেছিলেন। তিনি বলেন, আমরা আশা করি নতুন অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের সমর্থন থাকবে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, মুক্তি, বিজয় ও দ্বিতীয় স্বাধীনতার আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের আত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।