ঢাকা ০৫:২৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নির্দিষ্ট গণ্ডিতে থেকে বের হলেই আসে সফলতা

  • আপডেট সময় : ০৫:২৬:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৭ বার পড়া হয়েছে

লাইফস্টাইল ডেস্ক: আরামে থাকতে কে না চায়? চারপাশে নিজের অনুকূল পরিবেশ, ভালো থাকা, শান্তিতে থাকা- এমনটাই সবার কাম্য। এমন অবস্থাকেই ‘কমফোর্ট জোন’ বলা হয়। বইয়ের ভাষায়, কমফোর্ট জোন বলতে এমন একটি আচরণগত অবস্থাকে বোঝানো হয়; যেখানকার পরিবেশ ব্যক্তির পরিচিত। নির্দিষ্ট একটা গণ্ডি; যেখানে কাজ করতে ব্যক্তি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন এবং ফলাফল অনেকটাই নিশ্চিত। কাজ জানা, ফলাফলও জানা।

অল্প সংখ্যক মানুষ ছাড়া প্রায় সবাই কমফোর্ট জোনে থাকতে ভালোবাসেন। কারণ এর বাইরে গেলে পরিস্থিতি কঠিন হয়ে পড়ে, চাপ বাড়ে। ঝুঁকির সম্মুখীন হতে হয়। সামনে এমন একটি অনিশ্চিত পরিস্থিতি চলে আসে যখন আমরা জানি না আদৌ কী ঘটবে বা কী করব। মানসিক ভীতির কারণে হোক আর আলসেমির কারণেই হোক, এমন অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে কেউ যেতে চান না। কিন্তু ভয়কে জয় করে কমফোর্ট জোনের বাইরে বের হলে নতুন করে জীবনকে চেনা যায়, নতুন কিছু শেখা যায়, নিজেকে চ্যালেঞ্জ দেওয়া যায়।

চাপ আর ঝুঁকির কথা ভেবে কমফোর্ট জোন থেকে বেশিরভাগ মানুষ বের হতে চান না। হয়তো একটি নতুন ভাষা রপ্ত করবেন ভাবছেন। কিন্তু পরীক্ষার ফল যদি খারাপ হয় এই ভেবে আর আগাচ্ছেন না। হয়তো রোজ ব্যায়াম করার পরিকল্পনা করতে চাচ্ছেন। কিন্তু সকালে শখের ঘুম ত্যাগ করতে হবে ভেবে তা আর শুরু করছেন না। হয়তো নতুন কোনো কাজ শুরু করার ইচ্ছে। কিন্তু ব্যর্থ হলে লজ্জা পাবেন ভেবে তা এড়িয়েই যাচ্ছেন। নতুন চাকরিতে যাওয়া উচিত কিন্তু পরিবেশ কেমন হবে ভেবে যাচ্ছেন না।
একবার ভাবুন তো, এতে আসলে আপনার লাভ হচ্ছে না ক্ষতি? সামান্য কিছু পদক্ষেপ বদলে দিতে পারে আপনার জীবন। আপনার প্রোডাক্টিভিটি বাড়িয়ে দিতে পারে বহুগুণ। কেবল কমফোর্ট জোনে থাকতে ভালোবাসেন বলে জীবনের অসংখ্য সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে আপনার।
জীবনে সফল হতে চাইলে অবশ্যই কমফোর্ট জোনের বাইরে বের হতে হবে। কমফোর্ট জোন থেকে বের হয়ে আসার কিছু উপায় হলো-

আত্মবিশ্বাস হোক সঙ্গী: নিজেকে পরিবর্তনের প্রথম ধাপ হলো আত্মবিশ্বাস বাড়ানো। নিজের ওপর বিশ্বাস রাখুন যে আপনি পারবেন। নিজের সামর্থ্য আর আকাঙ্ক্ষার প্রতি দৃঢ় বিশ্বাসই কমফোর্ট জোনের দেওয়াল ডিঙ্গানোর হাতিয়ার হবে।

পুরনো কাজ করুন নতুনভাবে: ফ্রেমবন্দি জীবনে সবই নিয়মমাফিক চলতে থাকে রোজ। এই ফ্রেম ভাঙুন। রোজকার জীবনে পরিবর্তন আনুন। ভিন্ন পথে বা যানে চলুন। যে বন্ধু বা সহকর্মীর সঙ্গে আগে খুব একটা কথা বলেননি তার সঙ্গে গল্প করুন। নিজের ঘর নতুন করে গোছান। এতে নতুন পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলতে শিখবেন।

চ্যালেঞ্জ নিতে শিখুন: নিজের জন্য সবসময় সহজ অপশনটিই বেছে নিই আমরা। এতে নতুন পরিস্থিতিতে পড়তে হয় না। এই অভ্যাসটি বাদ দিন। তুলনামূলক কঠিন আর অপরিচিত অপশনটি বাছাই করুন। নিজেকে চ্যালেঞ্জ দিন। সবসময় যে আপনি সফল হবেন এমনটা নয়। তবে ব্যর্থ হলেও নতুন কিছু শিখতে পারেন। নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন।
ব্যর্থতাকে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে চলুন: কোনো কাজ করতে গিয়ে ব্যর্থ হওয়া মানে এই নয় যে আপনার সব সম্ভাবনা শেষ। ব্যর্থতা জীবনেরই অংশ। নতুন করে আবার শুরু করুন। ‘একবার না পারিলে দেখো শতবার’ নীতিতে এগিয়ে চলুন। সফলতা আসবেই।

ভয়কে জয় করুন: প্রবল ইচ্ছা আর আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও কেবল অহেতুক ভয়ের কারণে অনেক কাজ থেকে আমরা পিছিয়ে থাকি। এই অভ্যাস ছাড়ুন। যে কাজ করতে আপনার ভয় লাগে সেই কাজই বেশি করে করুন।

স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ করুন: কমফোর্ট জোন থেকে বের হওয়ার ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ হতে পারে দারুণ একটি সহায়ক মাধ্যম। এ থেকে যেমন আপনি নতুন নতুন দক্ষতা শিখবেন, নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হবেন, তেমনি দেশ ও সমাজের উন্নয়নেরও অংশীদার হতে পারবেন। মানুষের জন্য কাজ করতে পারা আপনাকে কৃতজ্ঞতাবোধ আর আত্মতৃপ্তির উপলব্ধি দেবে।

অতীতের সাফল্য মনে করুন: অতীতের কথা ভাবুন। জীবনে এমন কোনো সময় নিশ্চয়ই এসেছে যখন আপনার মনে হয়েছিল পারবেন না, কিন্তু আপনি পেরেছিলেন। সেই সময়গুলো মনে করুন। এতে মনের জোর বেড়ে যাবে বহুগুণ। বাড়বে আস্থাও। পাশাপাশি ব্যর্থতাও মানতেও শিখুন। ভেঙে না পড়ে নিজেকে সাহস জোগান।

কমফোর্ট জোন ভালো, তবে নিজেকে সমৃদ্ধ করতে চাইলে এই জোন থেকে বের হওয়ার বিকল্প নেই। চেনা জীবনযাপনের বাইরে বেরিয়ে নতুন করে সব সাজান, জীবন খাতায় অনেক সফলতা যোগ হবে।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

মব বন্ধ না করলে ডেভিল হিসেবে ট্রিট করবো: উপদেষ্টা মাহফুজ

নির্দিষ্ট গণ্ডিতে থেকে বের হলেই আসে সফলতা

আপডেট সময় : ০৫:২৬:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

লাইফস্টাইল ডেস্ক: আরামে থাকতে কে না চায়? চারপাশে নিজের অনুকূল পরিবেশ, ভালো থাকা, শান্তিতে থাকা- এমনটাই সবার কাম্য। এমন অবস্থাকেই ‘কমফোর্ট জোন’ বলা হয়। বইয়ের ভাষায়, কমফোর্ট জোন বলতে এমন একটি আচরণগত অবস্থাকে বোঝানো হয়; যেখানকার পরিবেশ ব্যক্তির পরিচিত। নির্দিষ্ট একটা গণ্ডি; যেখানে কাজ করতে ব্যক্তি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন এবং ফলাফল অনেকটাই নিশ্চিত। কাজ জানা, ফলাফলও জানা।

অল্প সংখ্যক মানুষ ছাড়া প্রায় সবাই কমফোর্ট জোনে থাকতে ভালোবাসেন। কারণ এর বাইরে গেলে পরিস্থিতি কঠিন হয়ে পড়ে, চাপ বাড়ে। ঝুঁকির সম্মুখীন হতে হয়। সামনে এমন একটি অনিশ্চিত পরিস্থিতি চলে আসে যখন আমরা জানি না আদৌ কী ঘটবে বা কী করব। মানসিক ভীতির কারণে হোক আর আলসেমির কারণেই হোক, এমন অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে কেউ যেতে চান না। কিন্তু ভয়কে জয় করে কমফোর্ট জোনের বাইরে বের হলে নতুন করে জীবনকে চেনা যায়, নতুন কিছু শেখা যায়, নিজেকে চ্যালেঞ্জ দেওয়া যায়।

চাপ আর ঝুঁকির কথা ভেবে কমফোর্ট জোন থেকে বেশিরভাগ মানুষ বের হতে চান না। হয়তো একটি নতুন ভাষা রপ্ত করবেন ভাবছেন। কিন্তু পরীক্ষার ফল যদি খারাপ হয় এই ভেবে আর আগাচ্ছেন না। হয়তো রোজ ব্যায়াম করার পরিকল্পনা করতে চাচ্ছেন। কিন্তু সকালে শখের ঘুম ত্যাগ করতে হবে ভেবে তা আর শুরু করছেন না। হয়তো নতুন কোনো কাজ শুরু করার ইচ্ছে। কিন্তু ব্যর্থ হলে লজ্জা পাবেন ভেবে তা এড়িয়েই যাচ্ছেন। নতুন চাকরিতে যাওয়া উচিত কিন্তু পরিবেশ কেমন হবে ভেবে যাচ্ছেন না।
একবার ভাবুন তো, এতে আসলে আপনার লাভ হচ্ছে না ক্ষতি? সামান্য কিছু পদক্ষেপ বদলে দিতে পারে আপনার জীবন। আপনার প্রোডাক্টিভিটি বাড়িয়ে দিতে পারে বহুগুণ। কেবল কমফোর্ট জোনে থাকতে ভালোবাসেন বলে জীবনের অসংখ্য সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে আপনার।
জীবনে সফল হতে চাইলে অবশ্যই কমফোর্ট জোনের বাইরে বের হতে হবে। কমফোর্ট জোন থেকে বের হয়ে আসার কিছু উপায় হলো-

আত্মবিশ্বাস হোক সঙ্গী: নিজেকে পরিবর্তনের প্রথম ধাপ হলো আত্মবিশ্বাস বাড়ানো। নিজের ওপর বিশ্বাস রাখুন যে আপনি পারবেন। নিজের সামর্থ্য আর আকাঙ্ক্ষার প্রতি দৃঢ় বিশ্বাসই কমফোর্ট জোনের দেওয়াল ডিঙ্গানোর হাতিয়ার হবে।

পুরনো কাজ করুন নতুনভাবে: ফ্রেমবন্দি জীবনে সবই নিয়মমাফিক চলতে থাকে রোজ। এই ফ্রেম ভাঙুন। রোজকার জীবনে পরিবর্তন আনুন। ভিন্ন পথে বা যানে চলুন। যে বন্ধু বা সহকর্মীর সঙ্গে আগে খুব একটা কথা বলেননি তার সঙ্গে গল্প করুন। নিজের ঘর নতুন করে গোছান। এতে নতুন পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলতে শিখবেন।

চ্যালেঞ্জ নিতে শিখুন: নিজের জন্য সবসময় সহজ অপশনটিই বেছে নিই আমরা। এতে নতুন পরিস্থিতিতে পড়তে হয় না। এই অভ্যাসটি বাদ দিন। তুলনামূলক কঠিন আর অপরিচিত অপশনটি বাছাই করুন। নিজেকে চ্যালেঞ্জ দিন। সবসময় যে আপনি সফল হবেন এমনটা নয়। তবে ব্যর্থ হলেও নতুন কিছু শিখতে পারেন। নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন।
ব্যর্থতাকে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে চলুন: কোনো কাজ করতে গিয়ে ব্যর্থ হওয়া মানে এই নয় যে আপনার সব সম্ভাবনা শেষ। ব্যর্থতা জীবনেরই অংশ। নতুন করে আবার শুরু করুন। ‘একবার না পারিলে দেখো শতবার’ নীতিতে এগিয়ে চলুন। সফলতা আসবেই।

ভয়কে জয় করুন: প্রবল ইচ্ছা আর আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও কেবল অহেতুক ভয়ের কারণে অনেক কাজ থেকে আমরা পিছিয়ে থাকি। এই অভ্যাস ছাড়ুন। যে কাজ করতে আপনার ভয় লাগে সেই কাজই বেশি করে করুন।

স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ করুন: কমফোর্ট জোন থেকে বের হওয়ার ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ হতে পারে দারুণ একটি সহায়ক মাধ্যম। এ থেকে যেমন আপনি নতুন নতুন দক্ষতা শিখবেন, নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হবেন, তেমনি দেশ ও সমাজের উন্নয়নেরও অংশীদার হতে পারবেন। মানুষের জন্য কাজ করতে পারা আপনাকে কৃতজ্ঞতাবোধ আর আত্মতৃপ্তির উপলব্ধি দেবে।

অতীতের সাফল্য মনে করুন: অতীতের কথা ভাবুন। জীবনে এমন কোনো সময় নিশ্চয়ই এসেছে যখন আপনার মনে হয়েছিল পারবেন না, কিন্তু আপনি পেরেছিলেন। সেই সময়গুলো মনে করুন। এতে মনের জোর বেড়ে যাবে বহুগুণ। বাড়বে আস্থাও। পাশাপাশি ব্যর্থতাও মানতেও শিখুন। ভেঙে না পড়ে নিজেকে সাহস জোগান।

কমফোর্ট জোন ভালো, তবে নিজেকে সমৃদ্ধ করতে চাইলে এই জোন থেকে বের হওয়ার বিকল্প নেই। চেনা জীবনযাপনের বাইরে বেরিয়ে নতুন করে সব সাজান, জীবন খাতায় অনেক সফলতা যোগ হবে।