ঢাকা ০১:০৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫

নিরঙ্কুশ জয় আওয়ামী লীগের

  • আপডেট সময় : ০২:৪৩:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৪
  • ৮৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী আওয়ামী লীগ ২২৩টি আসনে জয় পেয়েছে। জাতীয় পার্টি থেকে ১১ জন, স্বতন্ত্র থেকে ৬২ জন এবং অন্যান্য দল থেকে তিনজন প্রার্থী জয় পেয়েছেন।
২২৩ আসনে জয় নিয়ে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতার মধ্য দিয়ে চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় বসতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ২০০৮ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দ্বিতীয় বারের মতো ক্ষমতায় এসেছিল দলটি। এর পর থেকে একটানা ক্ষমতায় রয়েছে আওয়ামী লীগ।
এবারের নির্বাচনে এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে নওগাঁ-২ আসনের ভোট স্থগিত করা হয়েছে। আর ভোটের দিন একটি কেন্দ্রে অনিয়ম হওয়ায় ময়মনসিংহ-৩ আসনের ভোটের ফল স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। বাকি ২৯৮টি আসনের ফল পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী— ৩০০ আসনের জাতীয় সংসদে কোনো দল যদি ১৫১ আসনে বিজয়ী হয় তাহলে তারা সরকার গঠনের যোগ্যতা অর্জন করে। সেই হিসেবে আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যে আগামী সরকার গঠনের যোগ্যতা অর্জন করেছে। এ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতার মধ্যদিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, এবারও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টানা চতুর্থবারের মতো মন্ত্রীসভা গঠন করা হবে।
শপথ ১০-১৪ জানুয়ারির মধ্যে: বিএনপিবিহীন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে। ফলে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ১০ থেকে ১৪ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচনে জয়ী সদস্যদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। জানা যায়, সংসদ সদস্যদের নির্বাচনের বিষয়টি নিশ্চিত করে গেজেট প্রকাশের কাজ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। সংবিধান অনুযায়ী, গেজেট প্রকাশের তিন দিনের মধ্যে শপথ পড়াতে হবে। নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের গেজেট প্রকাশের পরপর স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী তাদের শপথ পড়াবেন। একটি সূত্র জানিয়েছে, নতুন নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ আগামী ১৪ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ১০ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাঙালি বিজয় অর্জনের পর স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে ফেরেন। এ কারণে ১০ জানুয়ারি নতুন নির্বাচিত সংসদ সদসদের শপথ গ্রহণ না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
নতুন নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথের বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, এটি আমি বলতে পারবো না। তবে নতুন সরকারের মন্ত্রিসভা আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে হয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এদিকে শপথ পড়ানোর বিষয়ে সংবিধানে ১৪৮ এর ২ (ক) ১২৩ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘সংসদ সদস্যদের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপিত হইবার তারিখ হইতে পরবর্তী তিনদিনের মধ্যে এই সংবিধানের অধীন এতদুদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা তদুদ্দেশ্যে অনুরূপ ব্যক্তি কর্তৃক নির্ধারিত অন্য কোনো ব্যক্তি যে কোনো কারণে নির্বাচিত সদস্যদের শপথ পাঠ পরিচালনা করিতে ব্যর্থ হইলে বা না করিলে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার উহার পরবর্তী তিনদিনের মধ্যে উক্ত শপথ পাঠ পরিচালনা করিবেন, যেন এই সংবিধানের অধীন তিনিই ইহার জন্য নির্দিষ্ট ব্যক্তি’। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট বিরাট ব্যবধানে জয় পায়। আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও জোটসঙ্গীরা ২৮৮টি আসন পায়। বিপরীতে বিএনপি এবং ঐক্যফ্রন্ট পায় মাত্র সাতটি। বাকি তিনটি আসন পায় অন্যরা। এ নির্বাচনে জয় পাওয়া সংসদ সদস্যদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি। এর আগে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ না করায় আওয়ামী লীগ বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। এ নির্বাচনের পর ১২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও বিপুলসংখ্যক আসন নিয়ে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ।
গত রোববার (৭ জানুয়ারি) দেশের ২৯৯টি আসনে একযোগে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী, এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পেয়েছে ২২২টি আসন। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬২টি আসনে জয় পেয়েছেন। এছাড়া জাতীয় পার্টি ১১টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) একটি, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি একটি এবং বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি একটি আসনে জয় পেয়েছে। এখন এই নির্বাচনের ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে গেজেট আকারে প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশের পর তিনদিনের মধ্যে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ অনুষ্ঠিত হবে। তবে এবার জাতীয় সংসদে বিরোধীদল কারা হবে, সেটি এখন বেশ আলোচনায় রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, অবশ্যই সংবিধান অনুযায়ী যদি দেখা হয় তাহলে তো লাঙ্গল মার্কা হবে। বাকি স্বতন্ত্ররা থাকবেন। তাছাড়া পরিস্থিতি বুঝে বোঝা যাবে সামনের রাজনীতি কোন দিকে যায়। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা কি বিরোধী দল হিসেবে থাকবে? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, সে বিষয়ে তো এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। যতখন পর্যন্ত শপথ না হচ্ছে। বিএনপিবিহীন এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ জয় পেলেও বর্তমান মন্ত্রিপরিষদের তিন সদস্য হেরে গেছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের নিয়ে গঠিত বর্তমান মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও ২৩ জন মন্ত্রী, ১৮ জন প্রতিমন্ত্রী ও তিনজন উপমন্ত্রী রয়েছেন। এই মন্ত্রিপরিষদের তিনজন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি। বাকি সবাই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান। এবারের নির্বাচনে সব থেকে বড় চমক দেখিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পরিচিত মুখ ও যুবলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। তিনি প্রায় এক লাখ ভোটের ব্যবধানে বর্তমান বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলীকে পরাজিত করেছেন। হবিগঞ্জ-৪ (মাধবপুর-চুনারুঘাট) আসনে ব্যারিস্টার সুমন এক লাখ ৬৯ হাজার ৯৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। বিপরীতে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকের মাহবুব আলী পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৫৪৩ ভোট।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য’র ভাগ্যেও পরাজয় জুটেছে। যশোর-৫ আসনে নৌকার প্রার্থী হয়ে তিনি ভোট পেয়েছেন ৭২ হাজার ৩৩২টি। বিপরীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী ইয়াকুব আলী ঈগল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে পেয়েছেন ৭৭ হাজার ৪৬৮ ভোট। অর্থাৎ স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্যকে প্রায় ৫ হাজার ভোটে পরাজয় বরণ করতে হয়েছে। এছাড়া ঢাকা-১৯ আসনে (সাভার ও আমিনবাজারের একাংশ) আওয়ামী লীগের প্রার্থী ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমানও জিনতে পারেননি। নৌকা প্রতীক নিয়ে তিনি তৃতীয় হয়েছেন। আসনটিতে ৮৪ হাজার ৪১২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। তার প্রতীক ছিল ট্রাক। আসনটিতে ঈগল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা আরও এক স্বতন্ত্র প্রার্থী তালুকদার মো. তৌহিদ জং মুরাদ পেয়েছেন ৭৬ হাজার ২০২ ভোট। আর নৌকা প্রতীক নিয়ে এনামুর রহমান পেয়েছেন ৫৬ হাজার ৩৬১ ভোট।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় আসার ইতিহাস: ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর ১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত সপ্তম সংসদ নির্বাচনে জিতে প্রথমবার শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এরপর ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট ২৬৩টি আসনে জয়লাভ করে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ পায় ২৩০টি আসন। ফলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসে দলটি। ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির অনুপস্থিতিতে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৩৪টি আসনে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ। তৃতীয় বার সরকার গঠন করেন শেখ হাসিনা। ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে এককভাবে ২৫৯ আসনে জয় পায় দলটি। ফলে ৪র্থ বার এবং একটানা ৩য় বার সরকার গঠন করতে সমর্থ হন শেখ হাসিনা।
স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালে প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয়, ১৯৮৬ সালে তৃতীয়, ১৯৮৮ সালে চতুর্থ, ১৯৯১ সালে পঞ্চম, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ, ১৯৯৬ সালের ১২ জুন সপ্তম, ২০০১ সালে অষ্টম, ২০০৮ সালে নবম, ২০১৪ সালে দশম ও ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধয়াক সরকারের অধীনে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমবারের মতো নিবন্ধন প্রক্রিয়া চালু করার পর সব শর্ত পালন করে ৩৯টি নিবন্ধিত দল নির্বাচনে অংশ নেয়। ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন করা হয়। সে অনুযায়ী মোট ভোটারের সংখ্যা দাঁড়ায় ৮ কোটি ১০ লাখ ৮৭ হাজার ৩ জন। ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন ৭ কোটি ৬ লাখ ৪৮ হাজার ৪৮৫ জন। ভোট পড়ার হার ছিল ৮৬.৩৪ শতাংশ। নির্বাচনের জামানতও ছিল ১০ হাজার টাকা।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২৩০টি আসনে জয়লাভ করে। অন্যদিকে, বিএনপি পায় ৩০টি আসন, জাতীয় পার্টি ২৭টি, জাসদ ৩টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ২টি, জামায়াত ২টি, বিজেপি ও লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি ১টি করে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পান ৪টি আসন। এরপর বিএনপিসহ কয়েকটি দলের নির্বাচন বর্জনের মধ্যেও ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সে নির্বাচনে ১১টি দল অংশ নেয়। আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। আওয়ামী লীগের ১৫৩ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। এককভাবে ২৩৪টি আসনে পায় তারা। নির্বাচনে ভোট পড়ার হার ছিল ৪১ শতাংশ।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। অনেকটা ‘একতরফা’ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ একাই ২৫৮টি আসন পায় বলে নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করে। জাতীয় পার্টি ২২টি এবং মহাজোটভুক্ত অন্য দলগুলো ৮টি আসনে জয়ী হয়। অপরদিকে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টভুক্ত বিএনপি ৬টি, গণফোরাম ২টি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৩টি আসনে জয়ী হন। এ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি দেখানো হয় ৮০.২০ শতাংশ। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ পায় মোট ভোটের ৭৪.৪৪ শতাংশ। অপরদিকে, বিএনপি পেয়েছে মাত্র ১২.০৭ শতাংশ ভোট। নির্বাচনের কয়েক দিন পর নির্বাচন কমিশন তাদের ওয়েবসাইটে কেন্দ্রভিত্তিক ফল প্রকাশ করে। এতে দেখা যায়, ২১৩টি কেন্দ্রে শতভাগ এবং ১৪১৮টি কেন্দ্রে ৯৬ শতাংশের ওপর ভোট পড়েছে।

 

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

নিরঙ্কুশ জয় আওয়ামী লীগের

আপডেট সময় : ০২:৪৩:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী আওয়ামী লীগ ২২৩টি আসনে জয় পেয়েছে। জাতীয় পার্টি থেকে ১১ জন, স্বতন্ত্র থেকে ৬২ জন এবং অন্যান্য দল থেকে তিনজন প্রার্থী জয় পেয়েছেন।
২২৩ আসনে জয় নিয়ে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতার মধ্য দিয়ে চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় বসতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ২০০৮ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দ্বিতীয় বারের মতো ক্ষমতায় এসেছিল দলটি। এর পর থেকে একটানা ক্ষমতায় রয়েছে আওয়ামী লীগ।
এবারের নির্বাচনে এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে নওগাঁ-২ আসনের ভোট স্থগিত করা হয়েছে। আর ভোটের দিন একটি কেন্দ্রে অনিয়ম হওয়ায় ময়মনসিংহ-৩ আসনের ভোটের ফল স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। বাকি ২৯৮টি আসনের ফল পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী— ৩০০ আসনের জাতীয় সংসদে কোনো দল যদি ১৫১ আসনে বিজয়ী হয় তাহলে তারা সরকার গঠনের যোগ্যতা অর্জন করে। সেই হিসেবে আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যে আগামী সরকার গঠনের যোগ্যতা অর্জন করেছে। এ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতার মধ্যদিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, এবারও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টানা চতুর্থবারের মতো মন্ত্রীসভা গঠন করা হবে।
শপথ ১০-১৪ জানুয়ারির মধ্যে: বিএনপিবিহীন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে। ফলে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ১০ থেকে ১৪ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচনে জয়ী সদস্যদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। জানা যায়, সংসদ সদস্যদের নির্বাচনের বিষয়টি নিশ্চিত করে গেজেট প্রকাশের কাজ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। সংবিধান অনুযায়ী, গেজেট প্রকাশের তিন দিনের মধ্যে শপথ পড়াতে হবে। নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের গেজেট প্রকাশের পরপর স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী তাদের শপথ পড়াবেন। একটি সূত্র জানিয়েছে, নতুন নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ আগামী ১৪ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ১০ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাঙালি বিজয় অর্জনের পর স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে ফেরেন। এ কারণে ১০ জানুয়ারি নতুন নির্বাচিত সংসদ সদসদের শপথ গ্রহণ না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
নতুন নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথের বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, এটি আমি বলতে পারবো না। তবে নতুন সরকারের মন্ত্রিসভা আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে হয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এদিকে শপথ পড়ানোর বিষয়ে সংবিধানে ১৪৮ এর ২ (ক) ১২৩ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘সংসদ সদস্যদের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপিত হইবার তারিখ হইতে পরবর্তী তিনদিনের মধ্যে এই সংবিধানের অধীন এতদুদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা তদুদ্দেশ্যে অনুরূপ ব্যক্তি কর্তৃক নির্ধারিত অন্য কোনো ব্যক্তি যে কোনো কারণে নির্বাচিত সদস্যদের শপথ পাঠ পরিচালনা করিতে ব্যর্থ হইলে বা না করিলে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার উহার পরবর্তী তিনদিনের মধ্যে উক্ত শপথ পাঠ পরিচালনা করিবেন, যেন এই সংবিধানের অধীন তিনিই ইহার জন্য নির্দিষ্ট ব্যক্তি’। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট বিরাট ব্যবধানে জয় পায়। আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও জোটসঙ্গীরা ২৮৮টি আসন পায়। বিপরীতে বিএনপি এবং ঐক্যফ্রন্ট পায় মাত্র সাতটি। বাকি তিনটি আসন পায় অন্যরা। এ নির্বাচনে জয় পাওয়া সংসদ সদস্যদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি। এর আগে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ না করায় আওয়ামী লীগ বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। এ নির্বাচনের পর ১২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও বিপুলসংখ্যক আসন নিয়ে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ।
গত রোববার (৭ জানুয়ারি) দেশের ২৯৯টি আসনে একযোগে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী, এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পেয়েছে ২২২টি আসন। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬২টি আসনে জয় পেয়েছেন। এছাড়া জাতীয় পার্টি ১১টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) একটি, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি একটি এবং বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি একটি আসনে জয় পেয়েছে। এখন এই নির্বাচনের ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে গেজেট আকারে প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশের পর তিনদিনের মধ্যে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ অনুষ্ঠিত হবে। তবে এবার জাতীয় সংসদে বিরোধীদল কারা হবে, সেটি এখন বেশ আলোচনায় রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, অবশ্যই সংবিধান অনুযায়ী যদি দেখা হয় তাহলে তো লাঙ্গল মার্কা হবে। বাকি স্বতন্ত্ররা থাকবেন। তাছাড়া পরিস্থিতি বুঝে বোঝা যাবে সামনের রাজনীতি কোন দিকে যায়। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা কি বিরোধী দল হিসেবে থাকবে? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, সে বিষয়ে তো এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। যতখন পর্যন্ত শপথ না হচ্ছে। বিএনপিবিহীন এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ জয় পেলেও বর্তমান মন্ত্রিপরিষদের তিন সদস্য হেরে গেছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের নিয়ে গঠিত বর্তমান মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও ২৩ জন মন্ত্রী, ১৮ জন প্রতিমন্ত্রী ও তিনজন উপমন্ত্রী রয়েছেন। এই মন্ত্রিপরিষদের তিনজন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি। বাকি সবাই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান। এবারের নির্বাচনে সব থেকে বড় চমক দেখিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পরিচিত মুখ ও যুবলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। তিনি প্রায় এক লাখ ভোটের ব্যবধানে বর্তমান বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলীকে পরাজিত করেছেন। হবিগঞ্জ-৪ (মাধবপুর-চুনারুঘাট) আসনে ব্যারিস্টার সুমন এক লাখ ৬৯ হাজার ৯৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। বিপরীতে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকের মাহবুব আলী পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৫৪৩ ভোট।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য’র ভাগ্যেও পরাজয় জুটেছে। যশোর-৫ আসনে নৌকার প্রার্থী হয়ে তিনি ভোট পেয়েছেন ৭২ হাজার ৩৩২টি। বিপরীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী ইয়াকুব আলী ঈগল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে পেয়েছেন ৭৭ হাজার ৪৬৮ ভোট। অর্থাৎ স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্যকে প্রায় ৫ হাজার ভোটে পরাজয় বরণ করতে হয়েছে। এছাড়া ঢাকা-১৯ আসনে (সাভার ও আমিনবাজারের একাংশ) আওয়ামী লীগের প্রার্থী ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমানও জিনতে পারেননি। নৌকা প্রতীক নিয়ে তিনি তৃতীয় হয়েছেন। আসনটিতে ৮৪ হাজার ৪১২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। তার প্রতীক ছিল ট্রাক। আসনটিতে ঈগল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা আরও এক স্বতন্ত্র প্রার্থী তালুকদার মো. তৌহিদ জং মুরাদ পেয়েছেন ৭৬ হাজার ২০২ ভোট। আর নৌকা প্রতীক নিয়ে এনামুর রহমান পেয়েছেন ৫৬ হাজার ৩৬১ ভোট।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় আসার ইতিহাস: ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর ১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত সপ্তম সংসদ নির্বাচনে জিতে প্রথমবার শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এরপর ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট ২৬৩টি আসনে জয়লাভ করে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ পায় ২৩০টি আসন। ফলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসে দলটি। ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির অনুপস্থিতিতে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৩৪টি আসনে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ। তৃতীয় বার সরকার গঠন করেন শেখ হাসিনা। ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে এককভাবে ২৫৯ আসনে জয় পায় দলটি। ফলে ৪র্থ বার এবং একটানা ৩য় বার সরকার গঠন করতে সমর্থ হন শেখ হাসিনা।
স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালে প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয়, ১৯৮৬ সালে তৃতীয়, ১৯৮৮ সালে চতুর্থ, ১৯৯১ সালে পঞ্চম, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ, ১৯৯৬ সালের ১২ জুন সপ্তম, ২০০১ সালে অষ্টম, ২০০৮ সালে নবম, ২০১৪ সালে দশম ও ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধয়াক সরকারের অধীনে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমবারের মতো নিবন্ধন প্রক্রিয়া চালু করার পর সব শর্ত পালন করে ৩৯টি নিবন্ধিত দল নির্বাচনে অংশ নেয়। ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন করা হয়। সে অনুযায়ী মোট ভোটারের সংখ্যা দাঁড়ায় ৮ কোটি ১০ লাখ ৮৭ হাজার ৩ জন। ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন ৭ কোটি ৬ লাখ ৪৮ হাজার ৪৮৫ জন। ভোট পড়ার হার ছিল ৮৬.৩৪ শতাংশ। নির্বাচনের জামানতও ছিল ১০ হাজার টাকা।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২৩০টি আসনে জয়লাভ করে। অন্যদিকে, বিএনপি পায় ৩০টি আসন, জাতীয় পার্টি ২৭টি, জাসদ ৩টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ২টি, জামায়াত ২টি, বিজেপি ও লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি ১টি করে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পান ৪টি আসন। এরপর বিএনপিসহ কয়েকটি দলের নির্বাচন বর্জনের মধ্যেও ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সে নির্বাচনে ১১টি দল অংশ নেয়। আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। আওয়ামী লীগের ১৫৩ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। এককভাবে ২৩৪টি আসনে পায় তারা। নির্বাচনে ভোট পড়ার হার ছিল ৪১ শতাংশ।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। অনেকটা ‘একতরফা’ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ একাই ২৫৮টি আসন পায় বলে নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করে। জাতীয় পার্টি ২২টি এবং মহাজোটভুক্ত অন্য দলগুলো ৮টি আসনে জয়ী হয়। অপরদিকে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টভুক্ত বিএনপি ৬টি, গণফোরাম ২টি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৩টি আসনে জয়ী হন। এ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি দেখানো হয় ৮০.২০ শতাংশ। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ পায় মোট ভোটের ৭৪.৪৪ শতাংশ। অপরদিকে, বিএনপি পেয়েছে মাত্র ১২.০৭ শতাংশ ভোট। নির্বাচনের কয়েক দিন পর নির্বাচন কমিশন তাদের ওয়েবসাইটে কেন্দ্রভিত্তিক ফল প্রকাশ করে। এতে দেখা যায়, ২১৩টি কেন্দ্রে শতভাগ এবং ১৪১৮টি কেন্দ্রে ৯৬ শতাংশের ওপর ভোট পড়েছে।